আল কুরআনের ১০০ টি মোটিভেশন | 100 motivations of Al Quran | মুহাঃ আবুবকর ছিদ্দিক

100 motivations of Al Quran,  আল কুরআনের ১০০ টি মোটিভেশন
আল কুরআনের ১০০ টি মোটিভেশন

পবিত্র কোরআনুল কারিম মানবজাতির সর্বাঙ্গীণ কল্যাণ ও মুক্তির দিশারি বা পথপ্রদর্শক। মহান রাব্বুল আলামিন আল্লাহ তায়ালা ওহীর মাধ্যমে- সর্বকালের, সর্বদেশের, সর্বলোকের জীবনবিধান ও মুক্তির সনদ হিসেবে কোরআনকে নাজিল করেছেন। তো চলুন মানবজাতির জীবনবিধান ও মুক্তির সনদ পবিত্র কোরআনুল কারিমের আদেশ নিষেধ বিষয়ক ১০০টি (মোটিভেশন) নির্দেশনা আজ আমরা জেনে নিই-

০১. কথাবার্তায় কর্কশ হবেন না। (০৩:১৫৯)

০২. রাগকে নিয়ন্ত্রণ করুন (০৩:১৩৪)

০৩. অন্যের সঙ্গে ভালো ব্যবহার করুন। (০৪:৩৬)

০৪. অহংকার করবেন না। (০৭:১৩)

২০২০ - ২০২১ শিক্ষাবর্ষে বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষায় মাদ্রাসা ছাত্রের সাফল্য | Success of Madrasa students in University Admission Test in 2020-2021 aca

 

২০২০ - ২০২১ শিক্ষাবর্ষে বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষায় মাদ্রাসা ছাত্রের সাফল্য
বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষায় মাদ্রাসা ছাত্রের সাফল্য

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ইউনিটে প্রথম মাদ্রাসা শিক্ষার্থী জাকারিয়া

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ‘খ’ ইউনিটে প্রথম মাদ্রাসা শিক্ষার্থী জাকারিয়া
মো. জাকারিয়া
২০২০-২০২১ শিক্ষাবর্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) কলা অনুষদভুক্ত ইউনিট ভর্তি পরীক্ষায় প্রথম হয়েছেন মাদরাসা শিক্ষার্থী মো. জাকারিয়া। তিনি রাজধানীর দারুননাজাত সিদ্দিকিয়া কামিল মাদরাসার শিক্ষার্থী।
গতকাল মঙ্গলবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কলা অনুষদভুক্ত
ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হয়। এতে পাসের হার ১৬.৮৯ শতাংশ। পরীক্ষায় প্রথম স্থান অর্জন করেন মো. জাকারিয়া। তার স্কোর ১২০ এর মধ্যে ১০০ দশমিক ৫। জাকারিয়া মূল পরীক্ষায় ১০০ নম্বরের মধ্যে ৮০ দশমিক ৫০ পেয়েছেন।

গুগল সার্চের কিছু স্মার্ট টেকনিক | Some smart techniques of Google search

Some smart techniques of Google search  গুগল সার্চের কিছু স্মার্ট টেকনিক
গুগল সার্চের কিছু স্মার্ট টেকনিক

সারা বিশ্বে নানা কারনে লক্ষ লক্ষ মানুষ গুগল ব্যবহার করে। শিক্ষার্থীরা শিক্ষার কাজে ব্যবহার করে, ব্যবসায়ীরা ব্যবসার কাজে এবং আরো লক্ষ লক্ষ মানুষ বিনোদনের জন্য এটি ব্যবহার করে। কিন্তু গুগলের যে নানা রকম সার্চ টেকনিক রয়েছে সেটা অনেকেরই অজানা। তাইতো সার্চ করতে গিয়ে কাক্ষিত তথ্যটি পেতে অনেকেই হিমসিম খায়। গুগলকে আরো স্মার্ট ভাবে ব্যবহার করার জন্য আমি আজ আলোচনা করবো ২০ টি স্মার্ট পদ্ধতি। যেগুলো ফলো করে আপনি অতি দ্রুত স্মার্টলি আপনার প্রয়োজনীয় তথ্য গুগল থেকে পেতে পারেন।

হাদীসের নামে জালিয়াতি । ড. খোন্দকার আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর

হাদীসের নামে জালিয়াতি, ড. খোন্দকার আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর, আস-সুন্নাহ পাবলিকেশন্স, আল হাদিস, হাদিস বিষয়ক আলোচনা
হাদীসের নামে জালিয়াতি

কুরআন কারীমের পরে রাসূলুলাহ (সাঃ)-এর হাদীস ইসলামী জ্ঞানের দ্বিতীয় উৎস ও ইসলামী জীবন ব্যবস্থার দ্বিতীয় ভিত্তি। মুমিনের জীবন আবর্তিত হয় রাসূলুলাহ (সাঃ)-এর হাদীসকে কেন্দ্র করে। হাদীস ছাড়া কুরাআন বুঝা ও বাস্তাবায়ন করাও সম্ভব নয়। হাদীসের প্রতি এই স্বভাবজাত ভালবাসা ও নির্ভরতার সুযোগে অনেক জালিয়াত বিভিন প্রকারের বানোয়াট কথা হাদীস নামে সমাজে প্রচার করেছে। সকল যুগে আলিমগণ এসকল জাল ও বানোয়াট কথা নিরীক্ষার মাধ্যমে চিহ্নিত করে মুসলমানদেরকে সচেতন করেছেন।

বই রিভিউ: বেলা ফুরাবার আগে : আরিফ আজাদ | Arif Azad

বই রিভিউ: বেলা ফুরাবার আগে   : আরিফ আজাদ | Arif Azad
বই রিভিউ: বেলা ফুরাবার আগে

প্রিয় বন্ধুরা আশা করি সবাই ভালো আছেন। আজকে আপনাদের সাথে একটি সাড়া জাগানো ইসলামিক বই নিয়ে আমার একান্ত ব্যক্তিগত মতামত বা রিভিউ শেয়ার করব।  বইটির নাম "বেলা ফুরাবার আগে"।  বইটির লেখক আরিফ আজাদ।  এটি একুশে বই মেলা ২০২০ এর আরিফ আজাদ এর লেখা নতুন বই। বইটি প্রকাশ করেছে সমকালীন প্রকাশনী।

কোরআন হাদিসের দৃষ্টিতে গর্ভবতীর ওপর চন্দ্রগ্রহণের প্রভাব

কোরআন হাদিসের দৃষ্টিতে গর্ভবতীর ওপর চন্দ্রগ্রহণের প্রভাব Effect of lunar eclipse on pregnant women

কোরআন হাদিসের দৃষ্টিতে গর্ভবতীর ওপর চন্দ্রগ্রহণের প্রভাব

প্রশ্নঃ

আবদুর রহমান। পেশায় নির্মাণ শ্রমিক। সদ্যবিবাহিত ২৫ বছর বয়সী যুবকটি কাজের ফাঁকে নাশতা করার জন্য একটি দোকানে এলেন। এক টুকরা কেক আর একটি কলা খাবেন। একটি জোড়া কলা নিতে গেলে পাশে বসা একজন বৃদ্ধ বলে উঠলেন, না! জোড়া কলা খাবেন না। খেলে যমজ সন্তান হবে। জোড়া কলা খেলে যমজ সন্তান হবে’—এমন অনেক বিশ্বাস সমাজে প্রচলিত। এগুলোর একটি হলো চন্দ্র বা সূর্যগ্রহণের সময় গর্ভবতী মা যদি কিছু কাটাকাটি করেন, তাহলে গর্ভস্থ সন্তান কান কাটা বা ঠোঁট কাটা অবস্থায় জন্ম নেয়। এ সময় গর্ভবতী নারীদের ঘুম বা পানাহার থেকে বারণ করা হয়। আসলে কোরআন ও হাদিসে এ ধরনের বিশ্বাসের অস্তিত্ব কতটুকু?

উত্তরঃ

প্রতিনিয়ত মহান আল্লাহ তাআলার অস্তিত্বের জানান দিতে থাকা সৃষ্টিগুলোর বড় দুটি হলো সূর্য ও চন্দ্র। চাঁদের আলোর উৎস হলো সূর্য।

১৩ লাখ ৯৪ হাজার কিলোমিটার ব্যাসের এ নক্ষত্রের সঙ্গে পৃথিবী ও জীবজগতের সম্পর্ক সুনিবিড়। সূর্যের তাপে মহান আল্লাহ সতেজ আর সজীব রেখেছেন পৃথিবীর সব কিছু। উদ্ভিদ এই সূর্যালোক থেকে খাদ্য গ্রহণ করে। যদি পৃথিবীতে সূর্যের তাপ ও আলো না আসত, তাহলে বিপন্ন হতো প্রাণিকুলের জীবন। পুরো পৃথিবী পরিণত হতো একখণ্ড বরফে। অন্যদিকে সূর্য যদি তার ভেতরকার সব তাপ পৃথিবীর ওপর উগড়ে দিত, তাহলেও পৃথিবী পরিণত হতো শ্মশানে। পবিত্র কোরআনে গুরুত্বের সঙ্গে স্থান পেয়েছে সূর্য ও চন্দ্র প্রসঙ্গ। আমরা বাংলায় সূর্যালোক অথবা চন্দ্রালোক বলি। ইংরেজিতে বলি Sunlight এবং Moonlightকিন্তু পবিত্র কোরআনুল কারিমে ইরশাদ হয়েছে,

তিনিই সত্তা, যিনি সূর্যকে কিরণোজ্জ্বল ও চাঁদকে স্নিগ্ধ আলোয় আলোকিত করেছেন।

(সুরা ইউনুস : ৫)

অন্যত্র ইরশাদ হয়েছে,

আর আমি সৃষ্টি করেছি একটি প্রজ্বলিত বাতি।

(সুরা নাবা : ১৩)

সূর্যের আলোচনায় কোরআনুল কারিমে সব জায়গায়ই প্রজ্বলিত বাতি, তেজোদীপ্ত, উজ্জ্বল জ্যোতি, চমক/ঝলক, শিখা বলা হয়েছে। যার অর্থ সূর্য নিজে দহনক্রিয়ার মাধ্যমে প্রচণ্ড তাপ ও আলো উৎপন্ন করে; পক্ষান্তরে চাঁদের আলোচনায় বলা হয়েছে, স্নিগ্ধ আলো। বিজ্ঞানও গবেষণা করে ঠিক তা-ই বলেছে। বিজ্ঞান বলছে, সূর্য তার কেন্দ্রভাগে নিউক্লীয় সংযোজন বিক্রিয়ার মাধ্যমে প্রতি সেকেন্ডে ৬২ কোটি মেট্রিক টন হাইড্রোজেন পুড়িয়ে হিলিয়াম উৎপাদন করে। সূর্যপৃষ্ঠের তাপমাত্রা ৫৭৭৮ কেলভিন বা ৫৫০৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। অর্থাৎ বিজ্ঞানের বক্তব্যেও সূর্যই তাপশক্তির ও আলোর প্রধান উৎস। পক্ষান্তরে চাঁদের ব্যাপারে বিজ্ঞানের বক্তব্য হলো, চাঁদের নিজস্ব কোনো আলো নেই। সূর্যের প্রতিফলিত আলোই তার সম্বল। পবিত্র কোরআন আরো স্পষ্ট করে বলছে,

আল্লাহ চাঁদকে স্থাপন করেছেন আলোরূপে, আর সূর্যকে স্থাপন করেছেন প্রদীপরূপে।

(সুরা নুহ : ১৬)

চন্দ্র ও সূর্যগ্রহণ হলো আল্লাহ তাআলা কর্তৃক নির্ধারিত একটি প্রক্রিয়া। চাঁদ যখন পরিভ্রমণ অবস্থায় কিছুক্ষণের জন্য পৃথিবী ও সূর্যের মাঝখানে এসে পড়ে, তখন পৃথিবীর কোনো দর্শকের কাছে কিছু সময়ের জন্য সূর্য আংশিক বা সম্পূর্ণরূপে অদৃশ্য হয়ে যায়। এটাই সূর্যগ্রহণ (Solar eclipse) বা কুসুফ। আর পৃথিবী যখন তার পরিভ্রমণ অবস্থায় চাঁদ ও সূর্যের মাঝখানে এসে পড়ে, তখনই পৃথিবীপৃষ্ঠ থেকে চাঁদ কিছুক্ষণের জন্য অদৃশ্য হয়ে যায়। এটাই চন্দ্রগ্রহণ (Lunar eclipse) বা খুসুফ।

সূর্য ও চন্দ্রগ্রহণ নিয়ে আমাদের সমাজে অনেক কুসংস্কার আছে। ওই সময় খেতে নেই, তৈরি করা খাবার ফেলে দিতে হবে, গর্ভবতী মায়েরা এ সময় যা করেন, তার প্রভাব সন্তানের ওপর পড়ে, চন্দ্র বা সূর্যগ্রহণের সময় যদি গর্ভবতী নারী কিছু কাটাকাটি করেন, তাহলে গর্ভস্থ সন্তানের ক্ষতি হয়এটি ভুল বিশ্বাস। এ সময় কোনো নারীকে ঘুম বা পানাহার থেকে বারণ করাও অন্যায়। ইসলামী শরিয়াহ ও বাস্তবতার সঙ্গে এগুলোর কোনো মিল নেই। জাহেলি যুগেও এ ধরনের কিছু ধারণা ছিল। সেকালে মানুষ ধারণা করত যে চন্দ্রগ্রহণ কিংবা সূর্যগ্রহণ হলে অচিরেই দুর্যোগ বা দুর্ভিক্ষ হবে। চন্দ্র বা সূর্যগ্রহণ পৃথিবীতে কোনো মহাপুরুষের জন্ম বা মৃত্যুর বার্তাও বহন করে বলে তারা মনে করত। বিশ্বমানবতার পরম বন্ধু, মহান সংস্কারক, প্রিয়নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) সেগুলোকে ভ্রান্ত ধারণা হিসেবে আখ্যায়িত করে প্রত্যাখ্যান করেছেন। মুগিরা ইবনু শুবা (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর পুত্র ইবরাহিমের ইন্তিকালের দিনটিতেই সূর্যগ্রহণ হলে আমরা বলাবলি করছিলাম যে নবীপুত্রের মৃত্যুর কারণেই সূর্যগ্রহণ হয়েছে। এসব কথা শুনে নবীজি (সা.) বললেন,

সূর্য ও চন্দ্র আল্লাহ তাআলার অগণিত নিদর্শনের দুটি। কারো মৃত্যু বা জন্মের কারণে চন্দ্রগ্রহণ বা সূর্যগ্রহণ হয় না।

(সহিহ বুখারি : ১০৪৩)

চন্দ্র বা সূর্যগ্রহণকে আল্লাহ তাআলার কুদরত হিসেবে অভিহিত করে অন্য হদিসে নবীজি (সা.) সাহাবিদের চন্দ্র বা সূর্যগ্রহণের সময় নামাজ আদায়ের নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি বলেন,

কোনো লোকের মৃত্যুর কারণে কখনো সূর্যগ্রহণ বা চন্দ্রগ্রহণ হয় না। তবে তা আল্লাহ তাআলার নিদর্শনগুলোর দুটি। তোমরা সূর্যগ্রহণ বা চন্দ্রগ্রহণ হতে দেখলে নামাজে দাঁড়িয়ে যাবে।

(সহিহ বুখারি : ৯৮৪)

নবীজি (সা.)-এর হাদিসগুলো থেকে এটিই প্রতীয়মান হয় যে চন্দ্রগ্রহণ বা সূর্যগ্রহণের কোনো প্রভাব সৃষ্টির ওপর পড়ে না। সমাজে প্রচলিত বিশ্বাসগুলো নিছকই কুসংস্কার।

কিন্তু প্রশ্ন হলো, যদি এর নেতিবাচক কোনো প্রভাব সৃষ্টির ওপর না-ই পড়বে, তাহলে কেন নবীজি (সা.) এ সময় নামাজে দাঁড়িয়ে আল্লাহ তাআলার সাহায্য চাইতে বলেছেন? শুধু নামাজে দাঁড়াতেই বলেননি, বরং চন্দ্র বা সূর্যগ্রহণে তিনি কিয়ামতের মহাপ্রলয়ের আশঙ্কাও করেছেন। হজরত আবু মুসা (রা.) বলেন, নবীজি (সা.)-এর সময় সূর্যগ্রহণ হলে তিনি এ আশঙ্কায় করলেন যে কিয়ামতের মহাপ্রলয় বুঝি সংঘটিত হবে। তিনি (তাড়াতাড়ি) মসজিদে এলেন। অত্যন্ত দীর্ঘ কিয়াম, দীর্ঘ রুকু, সিজদাসহ নামাজ আদায় করলেন। (বর্ণনাকারী বলেন) আমি নবীজি (সা.)-কে এমন করতে আগে আর কখনো দেখিনি। অতঃপর তিনি বললেন,

আল্লাহর প্রেরিত এসব নিদর্শন কারো মৃত্যু বা জন্মের (ক্ষতি করার) জন্য হয় না। যখন তোমরা তা দেখবে, তখনই আতঙ্কিত হৃদয়ে আল্লাহ তাআলার জিকির ও ইস্তিগফারে মশগুল হবে।

(সহিহ মুসলিম : ১৯৮৯)

অন্য হাদিসে চন্দ্র বা সূর্যগ্রহণকে আল্লাহর পক্ষ থেকে ভীতি প্রদর্শন হিসেবে উল্লেখ করে তা থেকে দ্রুত উদ্ধারে সদকা করার কথা বলেছেন।

নবীজি (সা.) তাঁর উম্মতকে চন্দ্র বা সূর্যগ্রহণে আতঙ্কিত হয়ে তা থেকে উদ্ধার পাওয়ার জন্য নামাজের নির্দেশ দিয়েছেন। আধুনিক বিজ্ঞানও বলছে যে সত্যি চন্দ্র বা সূর্যগ্রহণ পৃথিবীর জন্য আতঙ্কের বিষয়। সৌরজগতে মঙ্গল ও বৃহস্পতির কক্ষপথের মধ্যবলয়ে অ্যাস্টেরয়েড (Asteroid), মিটিওরাইট (Meteorite), উল্কাপিণ্ড প্রভৃতি পাথরের এক সুবিশাল বেল্ট আছে বলে বিজ্ঞানীরা ১৮০১ সালে আবিষ্কার করেন। এ বেল্টে ঝুলন্ত একেকটা পাথরের ব্যাস ১২০ থেকে ৪৫০ মাইল। গ্রহাণুপুঞ্জের এ পাথরখণ্ডগুলো পরস্পর সংঘর্ষের ফলে অনেক ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র পাথরখণ্ড প্রতিনিয়ত পৃথিবীর দিকে ধেয়ে আসে। কিন্তু সেগুলো বায়ুমণ্ডলে এসে জ্বলে-পুড়ে ভস্ম হয়ে যায়। কিন্তু গ্রহাণুপুঞ্জের বৃহদাকারের পাথরগুলো যদি পৃথিবীতে আঘাত করে, তাহলে ভয়াবহ হুমকির সম্মুখীন হবে পৃথিবী। বিজ্ঞানীরা বলেন, সূর্য ও চন্দ্রগ্রহণের সময় সূর্য, চন্দ্র ও পৃথিবী একই সমান্তরালে, একই অক্ষ বরাবর থাকে বলে এ সময়ই গ্রহাণুপুঞ্জের ঝুলন্ত বড় পাথরগুলো পৃথিবীতে আঘাত হানার আশঙ্কা বেশি। বৃহদাকারের পাথর পৃথিবীর দিকে ছুটে এলে পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের পক্ষে তা প্রতিহত করা অসম্ভব। ধ্বংসই হবে পৃথিবীর পরিণতি।

তাই তো মহাবিজ্ঞানী আল্লাহ তাআলার প্রিয়তম হাবিব মুহাম্মদ (সা.) এ সময় আল্লাহর কাছে সাহায্য চেয়েছেন। আমাদের উচিত কুসংস্কারগুলো পরিহার করে সুন্নত অনুযায়ী চন্দ্র বা সূর্যগ্রহণের সময় এর ক্ষতিকর প্রভাব থেকে নামাজের মাধ্যমে আল্লাহর কাছে নিরাপত্তা চাওয়া।

আরো পড়ুনঃ

শতাব্দীর দীর্ঘতম চন্দ্রগ্রহণ

চন্দ্রগ্রহণ - সূর্যগ্রহণ এবং আমাদের করণীয় ও বর্জনীয় 

.

সূর্যগ্রহণ কি, সূর্যগ্রহণ কয় প্রকার ও কি কি, চন্দ্রগ্রহণ ও সূর্যগ্রহণ কাকে বলে, চন্দ্রগ্রহণ ও সূর্যগ্রহণ কেন হয়, সূর্যগ্রহণ ও চন্দ্রগ্রহণ পার্থক্য, চন্দ্রগ্রহণের সময় গর্ভবতী, চন্দ্রগ্রহণের সময় সহবাস করলে কি হয়, Lunar eclipse, lunar eclipse meaning, total lunar eclipse meaning, lunar eclipse meaning spiritual,  what does total lunar eclipse mean, solar eclipse and lunar eclipse, solar eclipse meaning, types of solar eclipse, 3 types of solar eclipse, 

.

চন্দ্রগ্রহণ – সূর্যগ্রহণ এবং আমাদের করণীয়-বর্জনীয় "Lunar eclipse - solar eclipse" and our do's and don'ts | মুহাঃ আবুবকর ছিদ্দিক | Abubokar Siddik

"চন্দ্রগ্রহণ" এবং আমাদের করণীয়-বর্জনীয় "Lunar eclipse - solar eclipse" and our do's and don'ts
"চন্দ্রগ্রহণ  সূর্যগ্রহণ" এবং আমাদের করণীয়-বর্জনীয়

মহান আল্লাহর কুদরতের অনন্য নির্দশন ও সৃষ্টির মধ্যে চন্দ্র-সূর্য অন্যতম। প্রতিদিনই মানুষ চন্দ্র সূর্য দেখে থাকে। সময়ের ব্যবধানে চন্দ্রগ্রহণ ও সূর্যগ্রহণ হয়ে থাকে। এই চন্দ্রগ্রহণ এবং সূর্যগ্রহণ আল্লাহ তাআলার কুদরতের দুটি অন্যতম নিদর্শন। এসব নিয়ে রয়েছে ইসলামের সুস্পষ্ট নির্দেশনা ও করণীয়। কী সেসব করণীয় ও দিকনির্দেশনা?

সূর্যগ্রহণ কী?

চাঁদ যখন পরিভ্রমণরত অবস্থায় কিছু সময়ের জন্য পৃথিবী ও সূর্যের মাঝখানে এসে পড়ে, তখন পৃথিবীর কোন দর্শকের কাছে সূর্য আংশিক বা সম্পূর্ণরূপে অদৃশ্য হয়ে যায় (কিছু সময়ের জন্য)। এই ঘটনাকে সূর্যগ্রহণ বলা হয়।

চন্দ্র গ্রহণ কী?

চন্দ্রগ্রহণকে আরবিতে খুসুফ বলা হয়। গ্রহণ লাগলে সূর্য যেমন অন্ধকার ছায়ার আবর্তে পতিত হয়ে অন্ধকার হয়ে যায়, তেমনি চন্দ্রও বছরে দুইবার স্বীয় কক্ষপথে পরিভ্রমণরত অবস্থায় অন্ধকারের ছায়ায় আচ্ছাদিত হয়ে থাকে। ইহার আংশিক রূপ কখনো দৃশ্যমান হয়। আবার কখনো সার্বিক রূপ পরিদৃষ্ট হয়। চন্দ্রের এ কালো রঙ বা অন্ধকারের হাতছানিকেই চন্দ্রগ্রহণরূপে আখ্যায়িত করা হয়।

কুরআনুল কারিমে আল্লাহ তাআলা এ সম্পর্কে সুস্পষ্ট বর্ণনা দিয়েছেন। আল্লাহ তাআলা বলেন-

فَإِذَا بَرِقَ الْبَصَرُ - وَخَسَفَ الْقَمَرُ - وَجُمِعَ الشَّمْسُ وَالْقَمَرُ

যখন দৃষ্টি চমকে যাবে। চন্দ্র জ্যোতিহীন হয়ে যাবে। এবং সূর্য ও চন্দ্রকে একত্রিত করা হবে।

(সুরা কিয়ামাহ : আয়াত ৭-৯)

উল্লেখিত আয়াতে চন্দ্র জ্যোতিহীন হয়ে পড়ার বাস্তব রূপই হচ্ছে চন্দ্রগ্রহণ।

চন্দ্রগ্রহণ সম্পর্কে বিশ্বনবির নির্দেশনা

জাহেলি যুগে চন্দ্রগ্রহণ কিংবা সূর্যগ্রহণ সম্পর্কে বিরূপ ধারণা ছিল। তারা মনে করত দুনিয়ায় বড় বড় ব্যক্তিত্বের অধিকারী লোকদের কোনো অঘটন ঘটলে এসব হয়। আর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ছেলে ইবরাহিম-এর মৃত্যুর দিনে সুর্যগ্রহণ হয়। তখন সাহাবায়ে কেরাম তা বলাবললি করছিল। তা শুনে বিশ্বনবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম চন্দ্রগ্রহণ ও সূর্যগ্রহণ সম্পর্কে তাদের সুস্পষ্ট বর্ণনা দেন। হাদিসে এসেছে-

> হজরত মুগিরা ইবনে শুবা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন-

إِنَّ الشَّمْسَ وَالْقَمَرَ آيَتَانِ مِنْ آياتِ اللهِ، لاَ يَنْخَسِفَانِ لِمَوْتِ أَحَدٍ وَلاَ لِحَيَاتِهِ، فَإِذَا رَأَيْتُمْ ذلِكَ فَادْعُوا اللهَ وَكَبِّرُوا وَصَلُّوا وَتَصَدَّقُوا

সূর্য ও চন্দ্র আল্লাহর নিদর্শনসমূহের মধ্যে দুটি নিদর্শন। কারো মৃত্যু বা জন্মের কারণে সূর্যগ্রহণ ও চন্দ্রগ্রহণ হয় না। কাজেই যখন তোমরা তা দেখবে তখন-

১. তোমরা আল্লাহর কাছে দোয়া করবে।

২. তাঁর মহত্ব ঘোষণা করবে আর

৩. নামাজ আদায় করবে এবং

৪. সাদকা প্রদান করবে। (বুখারি ও মুসলিম)

> হজরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন-

إِنَّ الشَّمْسَ وَالْقَمَرَ مِنْ آيَاتِ اللهِ، وَإِنَّهُمَا لَا يَنْخَسِفَانِ لِمَوْتِ أَحَدٍ، وَلَا لِحَيَاتِهِ، فَإِذَا رَأَيْتُمُوهُمَا فَكَبِّرُوا، وَادْعُوا اللهَ وَصَلُّوا وَتَصَدَّقُوا،

সূর্য ও চন্দ্র আল্লাহর কুদর (ক্ষমতার) বিশেষ নিদর্শন। কারো মৃত্যু বা জন্মের কারণে সূর্যগ্রহণ হয় না। অতঃপর যখন তোমরা চন্দ্রগ্রহণ বা সূর্যগ্রহণ দেখতে পাও, তখন-

১. তাকবির (اَللهُ اَكْبَر) বল;

২. আল্লাহর কাছে দোয়া কর;

৩. নামাজ আদায় কর এবং

৪. দান-সদকা কর। (মুসলিম)

হাদিসের নির্দেশনা থেকে এ কথা সুস্পষ্ট যে, চন্দ্র ও সূর্য মহান আল্লাহ তাআলার নিদর্শনসমূহের মধ্যে দুটি নিদর্শন। আর তাতে গ্রহণ লাগা আল্লাহ তাআলার হুকুমেই হয়। তাদের নিজস্ব কোনো শক্তি বা ক্ষমতা নেই। আল্লাহ তাআলার হুকুমের অধীনেই তাদের চলাচল এবং কার্যক্রম।

তাতে গ্রহণ লাগলে মুমিন মুসলমানের করণীয় সম্পর্কে সুস্পষ্ট দিকনির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সুতরাং চন্দ্রগ্রহণের এ সময়ে বেশি বেশি দোয়া করা, তাসবিহ পড়া, তাওবাহ-ইসতেগফার করা, নামাজ পড়া এবং দান-সাদকার আবশ্যক কর্তব্য।

এ সময় অযথা অনর্থক গল্প-গুজব, হাসি-তামাশায় সময় অতিবাহিত না করে অন্তরে মহান আল্লাহর প্রতি ভয় রাখা জরুরি। কেননা এসবই মহান আল্লাহর পক্ষ থেকে বান্দার জন্য সতর্কতা। অনেক হাদিসে চন্দ্রগ্রহণ ও সূর্যগ্রহণকে বিশেষ বিপদের সময় বা ক্রান্তিকাল বলে গণ্য করা হয়েছে।

চন্দ্রগ্রহণের নামাজ

হাদিসে পাকে সূর্যগ্রহণের নামাজের মতো চন্দ্রগ্রহণের নামাজও প্রমাণিত এবং সুন্নাত। তবে এ নামাজ জামাআতে ও একাকি পড়া নিয়ে মতভেদ রয়েছে। হানাফি অনুসারীরা এ নামাজ একাকি নিজ নিজ ঘরে পড়ার ওপর তাগিদ দিয়েছেন। এ সম্পর্কে ফিকহের বিখ্যাত গ্রন্থ বাদায়েউস সানাঈ-তে এসেছে-

ﺃَﻣَّﺎ ﻓِﻲ ﺧُﺴُﻮﻑِ ﺍﻟْﻘَﻤَﺮِ ﻓَﻴُﺼَﻠُّﻮﻥَ ﻓِﻲ ﻣَﻨَﺎﺯِﻟِﻬِﻢْ؛ ﻟِﺄَﻥَّ ﺍﻟﺴُّﻨَّﺔَ ﻓِﻴﻬَﺎ ﺃَﻥْ ﻳُﺼَﻠُّﻮﺍ ﻭُﺣْﺪَﺍﻧًﺎ

চন্দ্রগ্রহণের সময় ঘরে নামাজ আদায় করা হবে। কেননা সুন্নাহ হচ্ছে, তখন একাকি নামাজ পড়া। (বাদায়েউস সানাঈ : ১/২৮২)

চন্দ্রগ্রহণের সময় নারীদের করণীয়

নারীরাও চন্দ্রগ্রহণ বা সূর্যগ্রহণের সময় ঘরে একাকি নামাজ আদায় করবেন। গ্রহণ চলাকালীন সময়ে জিকির-আজকার ও তাসবিহ-তাহলিল, দোয়া এবং তাওবাহ-ইসতেগফারে নিয়োজিত থাকবেন।

কুসংস্কারে বিশ্বাস না করা জরুরি

চন্দ্রগ্রহণ ও সূর্যগ্রহণ নিয়ে সমাজে ব্যাপক কুসংস্কার, বিভ্রান্তি ও অমূলক ধারণা রয়েছে। বিশেষ করে গর্ভবর্তী ও কুমারী নারীদের ক্ষেত্রে এ কুসংস্কার অনেক বেশি। সমাজে প্রচলিত কুসংস্কারগুলো হলো-

১. এ সময় কোনো কিছু খেতে নেই। বলা হয়- চন্দ্রগ্রহণের ৯ ঘণ্টা আগে এবং সূর্যগ্রহণের ১২ ঘণ্টা আগে থেকে খাবার গ্রহণ করা নিষেধ!

২. এ সময় তৈরি করা খাবার ফেলে দিতে হবে!

৩. এ সময় যৌন সম্ভোগ করা যাবে না!

৪. গর্ভবতী মায়েরা এ সময় যা করে, তার প্রভাব গর্ভের সন্তানের ওপর পড়বে!

৫. গ্রহণের সময় গর্ভবতী মায়েদের কাত হয়ে শোয়া নিষেধ; কারণ এভাবে শোয়ার ফলে নাকি গর্ভের শিশু বিকলাঙ্গ হয়!

৬. চন্দ্রগ্রহণ ও সূর্যগ্রহণের সময় জন্ম নেওয়া শিশুদের ব্যাপারে দুই ধরনের গপ্প শুনতে পাওয়া যায়। প্রথমত : শিশুটি অসুস্থ হবে এবং দ্বিতীয়ত : শিশুটি চালাক হবে!

৭. প্রসূতি মা চন্দ্রগ্রহণ বা সূর্যগ্রহণ দেখলে তার অনাগত সন্তানের বিকলঙ্গ হবে!

৮. চন্দ্র বা সূর্যগ্রহণের সময় যদি গর্ভবতী নারী কিছু কাটাকাটি করেন, তাহলে গর্ভস্থ সন্তানের ক্ষতি হয়।

৯. এ সময় কোনো নারীকে ঘুম বা পানাহার থেকে বারণ করাও অন্যায়।

১০. চলা-ফেরায় বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।

এ রকম অনেক কুসংস্কারমূলক কথা প্রচলিত রয়েছে। এ সবই কুসংস্কার ও ভুল বিশ্বাস। ইসলামের এ সবের কোনো অস্তিত্ব নেই। বরং এ সবে বিশ্বাস করা ঈমানহীনতার শামিল।

মূল কথা হলো

চন্দ্র গ্রহণ বা সূর্যগ্রহণের সময় কুমারী কিংবা গর্ভবতী মায়েদের ভয় কিংবা আশঙ্কার কিছু নেই। অন্যান্য দিনের মতো তারা স্বাভাবিক জীবন-যাপন করবে। তবে হাদিসে নির্দেশিত আমলে গ্রহণের সময় অতিবাহিত করাই হচ্ছে উত্তম।

মুমিন মুসলমানের উচিত, চন্দ্রগ্রহণের সময় হাদিসে ঘোষিত আমলগুলো যথাযথভাবে আদায় করা। সমাজে প্রচলিত কুসংস্কারে বিশ্বাস না করা। কেননা এসব কুসংস্কারে বিশ্বাস করা ঈমানের জন্য ক্ষতিকারক।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে চন্দ্রগ্রহণের সময় দোয়া, তাসবিহ, তাওবাহ, ইসতেগয়ার, নামাজ ও দান-সাদকা করার তাওফিক দান করুন। দুনিয়ার যাবতীয় অনিষ্টতা থেকে আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনার তাওফিক দান করুন। আমিন।

সংকলিত

আরো পড়ুনঃ

শতাব্দীর দীর্ঘতম চন্দ্রগ্রহণ।

গর্ভবতীর উপর চন্দ্রগ্রহণের প্রভাব। 

.

সূর্যগ্রহণ কি, সূর্যগ্রহণ কয় প্রকার ও কি কি, চন্দ্রগ্রহণ ও সূর্যগ্রহণ কাকে বলে, চন্দ্রগ্রহণ ও সূর্যগ্রহণ কেন হয়, সূর্যগ্রহণ ও চন্দ্রগ্রহণ পার্থক্য, চন্দ্রগ্রহণের সময় গর্ভবতী, চন্দ্রগ্রহণের সময় সহবাস করলে কি হয়, Lunar eclipse, lunar eclipse meaning, total lunar eclipse meaning, lunar eclipse meaning spiritual,  what does total lunar eclipse mean, solar eclipse and lunar eclipse, solar eclipse meaning, types of solar eclipse, 3 types of solar eclipse, 

.