রক্তদানের উপকারিতা

রক্তদানের উপকারিতা

ভূমিকাঃ রক্তদান হল কোন প্রাপ্তবয়স্ক সুস্থ মানুষের স্বেচ্ছায় রক্ত দেবার প্রক্রিয়া। এই দান করা রক্ত পরিসঞ্চালন করা হয় অথবা অংশীকরণের মাধ্যমে ঔষধে পরিণত করা হয়।

মোটিভেশন ক্লাসের বিষয় সমূহ - Motivation Class

মানবসেবা - জুমুয়ার খুতবা الخدمة الانسانية

মানবসেবা
মানবসেবা

 الحمد لله رب العالمين، والعاقبه للمتقين، والصلاة والسلام على سيد الانبياء والمرسلين وعلى اله واصحابه اجمعين، اشهد ان لا اله الا الله واشهد ان محمدا عبده ورسوله

) সমস্ত প্রশংসা বিশ্ব জাহানের প্রতিপালক আল্লাহর জন্য।

কুরআন-সুন্নাহর যেসব দোয়া ও আমল করার সময় এখনই

 

দোয়া ও আমল

কুরআনুল কারিমে আল্লাহ তাআলা অপরাধীদের শাস্তি ও অবাধ্যতার পরিণাম সম্পর্কে আয়াত নাজিল করেছেন। আল্লাহর পক্ষ থেকে অবাধ্যতার পাপে কী ধরনের মহামারি, দুর্যোগ ও বিপর্যয়ের মুখোমুখি হয় মানুষের অবগতির জন্য তা এভাবে তুলে ধরেছেন-

কুরআন ও হাদিসের আলোকে আনুগত্য

কুরআন ও হাদিসের আলোকে আনুগত্য
কুরআন ও হাদিসের আলোকে আনুগত্য

আনুগত্য অর্থ মান্য করা,মেনে চলা,আদেশ ও নিষেধ পালন করা,উপরন্তু কোন কর্তৃপক্ষের আদেশ অনুযায়ী কাজ করা। আল-কুরআন এবং রাসূলের হাদীসে এর প্রতি শব্দ হিসেবে আমরা যেটা পাই সেটা হল এতায়াত। যার বিপরীত শব্দ হল মাছিয়াত বা এহইয়ান। মাছিয়াত অর্থ নাফরমানী করা, হুকুম অমান্য করা প্রভৃতি। নেতার আনুগত্য ইসলামী সংগঠনের অন্তর্ভুক্ত ব্যক্তিদের ওপর অবশ্য কর্তব্য।

یٰۤاَیُّہَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡۤا اَطِیۡعُوا اللّٰہَ وَاَطِیۡعُوا الرَّسُوۡلَ وَاُولِی الۡاَمۡرِ مِنۡکُمۡ ۚ

হে ঈমানদারগণ! আল্লাহর নির্দেশ মান্য কর, নির্দেশ মান্য কর রসূলের এবং তোমাদের মধ্যে যারা বিচারক তাদের। (আন নিসা - 4:59)

জিকিরের গুরুত্ব ও ফজিলত, জুমুয়ার খুতবা The importance and virtue of Zikir

জিকিরের গুরুত্ব ও ফজিলত

জিকিরের গুরুত্ব ও ফজিলত

জিকির এমন একটি ইবাদত যা একজন মানুষকে খাঁটি মানুষ বানাতে পারে। তাকে পাপমুক্ত ধৈর্যশীল দুশ্চিন্তাহীন প্রশান্ত চিত্তের অধিকারী এবং জান্নাতের উপযুক্ত বানাতে পারে। কারণ যে সর্বাবস্থায় আল্লাহকে স্মরণ করতে পারবে, সে সর্বাবস্থায় আল্লাহর উপস্থিতি অনুভব করবে। তখন তার দ্বারা পাপ করা সম্ভব হবে না। মহান আল্লাহ তায়ালা বলেন,

فَاِذَا قُضِیَتِ الصَّلٰوۃُ فَانۡتَشِرُوۡا فِی الۡاَرۡضِ وَابۡتَغُوۡا مِنۡ فَضۡلِ اللّٰہِ وَاذۡکُرُوا اللّٰہَ کَثِیۡرًا لَّعَلَّکُمۡ تُفۡلِحُوۡنَ

অতঃপর নামায শেষ হয়ে গেলে তোমরা যমীনে ছড়িয়ে পড় এবং আল্লাহর অনুগ্রহ সন্ধান কর, এবং আল্লাহকে স্মরণ কর বেশি বেশি যাতে তোমরা সফলকাম হও। (আল জুমুআহ ৬২:১০)

উল্লেখ্য যে, জিকির হতে হবে মনের ভিতর থেকে। শুধু মুখের বুলি হলে হবে না। মুখে যদি জিকার করে আর কাজ করে আল্লাহর বিধান এর পরিপন্থী তবে তার নাম জিকির হবে না। তাই আগে আমরা জিকিরের পরিচয় জেনে নেই।

১। জিকিরের পরিচয়

জিকির অর্থ স্মরণ করা, মনে করা ইত্যাদি। সাধারণভাবে মহান আল্লাহ তায়ালার সম্মান ইজ্জত মর্যাদা প্রশংসা মহত্ব শ্রেষ্ঠত্ব একত্ব ইত্যাদি অর্থ প্রকাশক বাক্য বারংবার উচ্চারণ বা জপ করাকে জিকির বলা হয়। অবশ্য পবিত্র কুরআন ও হাদিসে কোরআন তেলাওয়াত, দ্বীনের নসিহত ইত্যাদিকেও জিকির বলা হয়েছে। এক কথায় আল্লাহর স্মরণে তার বিধান মতে যাই করা হয় তাই জিকির।

আল্লাহর জিকির আল্লাহর বান্দাদের জন্য খুবই প্রয়োজনীয় একটি আমল। বলা যায় জিকির হলো আল্লাহর নেক বান্দাদের কলবের খোরাক। এটি বান্দা ও রবের মাঝে যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম। যাবতীয় সৎ কর্মের প্রাণ হচ্ছে আল্লাহর জিকির। তাই আল্লাহ তার বান্দাদেরকে অধিক পরিমাণে জিকির করতে বলেছেন। কুরআনের ভাষায়,

 یٰۤاَیُّہَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوا اذۡکُرُوا اللّٰہَ ذِکۡرًا کَثِیۡرًا ۙ وَّسَبِّحُوۡہُ بُکۡرَۃً وَّاَصِیۡلًا

ঈমানদারগণ তোমরা বেশি পরিমাণে আল্লাহকে স্মরণ করো. এবং সকাল বিকাল আল্লাহর পবিত্রতা বর্ণনা কর। (সূরাহ আহ্‌যাব ৩৩:৪১-৪২)

অন্য আয়াতে আল্লাহ তাআলা বলেন,

فَاذۡکُرُوۡنِیۡۤ اَذۡکُرۡکُمۡ وَاشۡکُرُوۡا لِیۡ وَلَا تَکۡفُرُوۡنِ

সুতরাং তোমরা আমাকে স্মরণ কর, আমি তোমাদেরকে স্মরণ করব আর আমার শুকর আদায় কর, আমার অকৃতজ্ঞতা করো না। (আল বাকারা ২:১৫২)

ব্যাখ্যাঃ ক্বা'বা নির্মাণের পর হযরত ইব্‌রাহীম (আঃ) আল্লাহ্‌ পাকের নিকট এই জনপদ (মক্কা)-এর জন্য একজন রাসূল পাঠানোর জন্য দোয়া করেন। আমাদের প্রিয়নবী হযরত মুহাম্মাদ (সাঃ) উক্ত দোয়ার ফুলশ্রুতি। অতএব নবী করীম (সাঃ) ও তাঁর উম্মতের ক্বিবলা ক্বা'বা শরীফ হওয়াই অধিকতর যুক্তিযুক্ত। (মাঃ কোঃ, সামান্য পরিবর্তিত)

হাদিস শরীফের ভাষায়,

 وَعَنْ عَائِشَةَ قَالَتْ كَانَ النَّبِيُّ ﷺ يَذْكُرُ اللهَ عَزَّ وَجَلَّ عَلى كُلِّ أَحْيَانِه

আয়িশাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সবসময় আল্লাহর স্মরনে মগ্ন থাকতেন। (সহীহ  মুসলিম ৩৭৩, মিশকাতুল মাসাবিহ, হাদিস নং ৪৫৬)

২। কুরআনে বিভিন্ন অর্থে জিকির শব্দ

ক) স্মরণ অর্থেঃ যেমন আল্লাহ তা'আলা বলেন,

اِنَّاۤ اَخۡلَصۡنٰہُمۡ بِخَالِصَۃٍ ذِکۡرَی الدَّارِ ۚ

আমি একটি বিশেষ গুণের জন্য তাদেরকে বেছে নিয়েছিলাম। তা ছিল (আখেরাতের) প্রকৃত নিবাসের স্মরণ। (সূরা ছ্বদ ৩৭:৪৬)

اُتۡلُ مَاۤ اُوۡحِیَ اِلَیۡکَ مِنَ الۡکِتٰبِ وَاَقِمِ الصَّلٰوۃَ ؕ اِنَّ الصَّلٰوۃَ تَنۡہٰی عَنِ الۡفَحۡشَآءِ وَالۡمُنۡکَرِ ؕ وَلَذِکۡرُ اللّٰہِ اَکۡبَرُ ؕ وَاللّٰہُ یَعۡلَمُ مَا تَصۡنَعُوۡنَ

আপনি আপনার প্রতি প্রত্যাদিষ্ট কিতাব পাঠ করুন এবং নামায কায়েম করুন। নিশ্চয় নামায অশ্লীল ও গর্হিত কার্য থেকে বিরত রাখে। আল্লাহর স্মরণ সর্বশ্রেষ্ঠ। আল্লাহ জানেন তোমরা যা কর। (আল আনকাবুত ২৯:৪৫)

খ) কুরআন অর্থেঃ

اِنَّا نَحۡنُ نَزَّلۡنَا الذِّکۡرَ وَاِنَّا لَہٗ لَحٰفِظُوۡنَ

বস্তুত এ উপদেশ বাণী (কুরআন) আমিই অবতীর্ণ করেছি এবং আমিই এর রক্ষাকর্তা। (সূরা আল হিজ্‌র ১৫:৯)

ব্যাখ্যাঃ আল্লাহ স্বয়ং এই কোরআন রক্ষণাবেক্ষণ করার কারণে শত্রুরা হাজারও চেষ্টা করার পর এর একটি যের ও যবরে পার্থক্য আনতে পারে নি । ইমাম সুফিয়ান ইবনে উওয়াইনা (রঃ) বলেনঃ ইহুদি ও খৃষ্টানদেরকে আল্লাহর গ্রন্থ তাওরাত ও ইন্‌জীলের রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব দেয়ার পরও তারা তা পালন করতে ব্যর্থ হওয়ায় এই গ্রন্থদ্বয় বিকৃত ও পরিবর্তিত হয়ে গিয়েছে । পক্ষান্তরে পবিত্র কোরআন হেফাযতের দায়িত্ব স্বয়ং আল্লাহ গ্রহণ করেছেন । এজন্যই পবিত্র কোরআন মুখস্থ করার ধারা বিশ্ব জুড়ে অব্যাহত রয়েছে । (মাঃ কোঃ)

গ) সলাত অর্থে ব্যবহৃত

اِنَّنِیۡۤ اَنَا اللّٰہُ لَاۤ اِلٰہَ اِلَّاۤ اَنَا فَاعۡبُدۡنِیۡ ۙ وَاَقِمِ الصَّلٰوۃَ لِذِکۡرِیۡ

নিশ্চয় আমিই আল্লাহ। আমি ছাড়া কোন মাবুদ নেই। সুতরাং আমার ইবাদত কর এবং আমার স্মরণার্থে নামায কায়েম কর। (সূরা ত্বা-হা ২০:১৪)

৩। আল্লাহর জিকিরের ফজিলত

আল্লাহর জিকিরে অফুরন্ত সাওয়াব, মর্যাদা ও ফজিলত রয়েছে। নিম্নে কয়েকটি আলোচিত হলঃ

ক) আরশের নিচে আশ্রয়

হাদীস শরীফে এসেছে

عَنْ أَبِىْ هُرَيْرَةَ، عَنِ النَّبِيِّ ﷺ قَالَ :"سَبْعَةٌ يُظِلُّهُمُ اللهُ فِىْ ظِلِّهِ، يَوْمَ لاَ ظِلَّ إِلَّا ظِلُّهُ : الإِمَامُ العَادِلُ، وَشَابٌّ نَشَأَ فِىْ عِبَادَةِ رَبِّهِ، وَرَجُلٌ قَلْبُهُ مُعَلَّقٌ فِىْ المَسَاجِدِ، وَرَجُلاَنِ تَحَابَّا فِىْ اللهِ اجْتَمَعَا عَلَيْهِ وَتَفَرَّقَا عَلَيْهِ، وَرَجُلٌ طَلَبَتْهُ امْرَأَةٌ ذَاتُ مَنْصِبٍ وَجَمَالٍ، فَقَالَ : إِنِّىْ أَخَافُ اللهَ، وَرَجُلٌ تَصَدَّقَ، أَخْفَى حَتّٰى لاَ تَعْلَمَ شِمَالُهُ مَا تُنْفِقُ يَمِيْنُهُ، وَرَجُلٌ ذَكَرَ اللهَ خَالِيًا فَفَاضَتْ عَيْنَاهُ"

আবু হুরাইরাহ্ রা. হতে বর্ণিত। নবী সা. বলেছেন : যেদিন আল্লাহ তায়ালার (রহমতের) ছায়া ব্যতীত অন্য কোনো ছায়া থাকবে না, সেদিন সাত (শ্রেণীর) ব্যক্তিকে আল্লাহ তায়ালা তাঁর নিজের (আরশের) ছায়ায় আশ্রয় দেবেন-

১. ন্যায়পরায়ণ শাসক বা নেতা।

২. ঐ যুবক যার জীবন গড়ে উঠেছে তার রবের ইবাদতের মধ্যে।

৩. এমন (নামাজি) ব্যক্তি যার অন্তর মসজিদগুলোর সাথে লটকানো থাকে (অর্থাৎ মসজিদ থেকে বের হলে পুনরায় প্রত্যাবর্তন না করা পর্যন্ত ব্যাকুল থাকে)।

৪. এমন দুব্যক্তি যারা পরস্পরকে ভালোবাসে শুধুমাত্র আল্লাহর ওয়াস্তে, তারা একত্র হয় আল্লাহর জন্য আবার পৃথকও হয় আল্লাহর জন্য।

৫. সে ব্যক্তি যাকে উচ্চবংশীয় কোনো রূপসী-সুন্দরী রমণী তার সাথে মিলিত হওয়ার জন্য আহ্বান করে, কিন্তু সে (যুবক) এ কথা বলে রমণীর আহ্বান প্রত্যাখ্যান করে যে, আমি আল্লাহকে ভয় করি।

৬. সে ব্যক্তি যে এমন গোপনে দান করে যে, তার ডান হাত যা খরচ করে তা বাম হাত জানে না।

৭. সে ব্যক্তি যে একান্ত নির্জনে আল্লাহর স্মরণে চোখের অশ্রু প্রবাহিত করে। (সহীহ আল বুখারি-৬৬০)

খ) হজ্জ এবং ওমরাহ এর সওয়াব

عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏"‏ مَنْ صَلَّى الْغَدَاةَ فِي جَمَاعَةٍ ثُمَّ قَعَدَ يَذْكُرُ اللَّهَ حَتَّى تَطْلُعَ الشَّمْسُ ثُمَّ صَلَّى رَكْعَتَيْنِ كَانَتْ لَهُ كَأَجْرِ حَجَّةٍ وَعُمْرَةٍ ‏"‏ ‏

রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, যে ব্যক্তি ফজরের নামায জামাআতে আদায় করে, তারপর সূর্য উঠা পর্যন্ত বসে বসে আল্লাহ তাআলার যিকর করে, তারপর দুই রাকআত নামায আদায় করে- তার জন্য একটি হাজ্জ ও একটি উমরার সাওয়াব। (জামেআত-তিরমিজি, হাদিস নং ৫৮৬)

গ) অন্তর প্রশান্তি লাভ করে

মানুষ যখন কোন আপদ বিপদে পতিত হয় তখন সে মানসিকভাবে ভেঙ্গে পড়ে এবং তার আত্মিক স্থিরতা ছিন্ন ভিন্ন হয়ে যায়। ঠিক সে সময় সে আল্লাহ তাআলার গুণাবলী কার্যক্ষমতা ইত্যাদি অর্থ প্রকাশক বাক্য দ্বারা জিকির আজকারে লিপ্ত হয় তখন আল্লাহর প্রতি তার নতুন করে আস্থার সৃষ্টি হয়। একপর্যায়ে সে তার অন্তরে স্থিরতা অনুভব করতে শুরু করে এবং মনে একপ্রকার প্রশান্তি লাভ করে। তাইতো আল্লাহ তাআলা বলেন,

اَلَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا وَتَطۡمَئِنُّ قُلُوۡبُہُمۡ بِذِکۡرِ اللّٰہِ ؕ  اَلَا بِذِکۡرِ اللّٰہِ تَطۡمَئِنُّ الۡقُلُوۡبُ ؕ

এরা সেই সব লোক, যার ঈমান এনেছে এবং যাদের অন্তর আল্লাহর যিকিরে প্রশান্তি লাভ করে। স্মরণ রেখ, কেবল আল্লাহর যিকিরেই অন্তরে প্রশান্তি লাভ হয়। (সূরা আর রা'দ ১৩:২৮)

হাদীস শরীফে এসেছে

أَنَّهُ شَهِدَ عَلَى أَبِي هُرَيْرَةَ وَأَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ أَنَّهُمَا شَهِدَا عَلَى رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم أَنَّهُ قَالَ ‏ "‏ مَا مِنْ قَوْمٍ يَذْكُرُونَ اللَّهَ إِلاَّ حَفَّتْ بِهِمُ الْمَلاَئِكَةُ وَغَشِيَتْهُمُ الرَّحْمَةُ وَنَزَلَتْ عَلَيْهِمُ السَّكِينَةُ وَذَكَرَهُمُ اللَّهُ فِيمَنْ عِنْدَهُ ‏"‏

আবূ হুরাইরাহ্‌ ও আবূ সাঈদ আল-খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ আবূ হুরাইরাহ্‌ ও আবূ সাঈদ আল-খুদরী (রাঃ) প্রত্যেকে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) প্রসঙ্গে সাক্ষ্য দেন যে, তিনি বলেছেন : যখনই কোন এক স্থানে কিছু সংখ্যক লোক আল্লাহ তাআলার যিক্‌রে মাশগুল হয়, তখনই ফেরেশতাগণ তাদের আবৃত করে রাখে, তাদেরকে আল্লাহ তাআলার রাহমাত ও করুণা ছেয়ে ফেলে এবং তাদের প্রতি প্রশান্তি অবতীর্ণ হয়। আর আল্লাহ তাআলা স্বয়ং তাঁর সমীপে উপস্থিতদের কাছে তাদের আলোচনা করেন। (ইবনু মাজাহ ৩৭৯১, মুসলিম, জামে' আত-তিরমিজি ৩৩৭৮)

ঘ) শয়তানি ও নেফাকি দূর হয়

عَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، أَنَّهُ سَمِعَ النَّبِيَّ ـ صلى الله عليه وسلم ـ يَقُولُ ‏ "‏ إِذَا دَخَلَ الرَّجُلُ بَيْتَهُ فَذَكَرَ اللَّهَ عِنْدَ دُخُولِهِ وَعِنْدَ طَعَامِهِ قَالَ الشَّيْطَانُ لاَ مَبِيتَ لَكُمْ وَلاَ عَشَاءَ ‏.‏ وَإِذَا دَخَلَ وَلَمْ يَذْكُرِ اللَّهَ عِنْدَ دُخُولِهِ قَالَ الشَّيْطَانُ أَدْرَكْتُمُ الْمَبِيتَ ‏.‏ فَإِذَا لَمْ يَذْكُرِ اللَّهَ عِنْدَ طَعَامِهِ قَالَ أَدْرَكْتُمُ الْمَبِيتَ وَالْعَشَاءَ ‏"‏

জাবির বিন আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে বলতে শুনেছেনঃ কোন ব্যক্তি তার ঘরে প্রবেশকালে এবং খাবার গ্রহণকালে আল্লাহর নাম স্মরণ করলে শয়তান (তার সংগীদেরকে) বলে, তোমাদের রাত্রিবাস এবং রাতের আহারের কোন ব্যবস্থা হলো না। কিন্তু কোন ব্যক্তি তার ঘরে প্রবেশকালে আল্লাহকে স্মরণ না করলে শয়তান বলে, তোমরা রাত্রিবাসের জায়গা পেয়ে গেলে। সে আহারের সময় আল্লাহকে স্মরণ না করলে শয়তান বলে, তোমাদের রাতের আহার ও শয্যা গ্রহণের ব্যবস্থা হয়ে গেলো। (মুসলিম ২০১৮,আবূ সাঈদ ৩৭৬৫,আহমাদ ১৪৩১৯,১৪৬৮৮।আত তালীকুর ৩/১১৬। সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিস নং ৩৮৮৭)

وَعَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ قَالَ: قَالَ رَسُوْلُ اللّٰهِ ﷺ: الشَّيْطَانُ جَاثِمٌ عَلٰى قَلْبِ ابْنِ اٰدَمَ فَإِذَا ذَكَرَ اللّٰهَ خَنَسَ وَإِذَا غَفَلَ وَسْوَسَ. رَوَاهُ البُخَارِىُّ تَعْلِيْقًا

আবদুল্লাহ ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ শয়তান আদম সন্তানের কলবের বা অন্তরের উপর জেঁকে বসে থাকে। যখন সে আল্লাহর জিকির করে তখন সরে যায় আর যখন গাফিল বা অমনোযোগী হয় তখন শয়তান তার দিলে ওয়াস্ওয়াসা দিতে থাকে। (বুখারী তালীক হিসেবে) (মুসান্নাফ ইবনু আবী শায়বাহ্ ৩৪৭৭৪, মিশকাতুল মাসাবিহ ২২৮১)

عن أبي سعيد الخدري وأبي هريرة:] ومن أكثَرُ ذكرَ اللهِ، فقد برِئَ من النِّفاقِ. الألباني (ت ١٤٢٠)، ضعيف الترغيب ٩٤٣  •  ضعيف

যে ব্যক্তি অধিক পরিমাণে আল্লাহ তাআলার জিকির করে, সে নিফাকি থেকে দূরে থাকে। (বাইহাকী-শুয়াবুল ঈমান)

ঙ) জিকিরের মজলিস যেন জান্নাতের বাগিচা

عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، رضى الله عنه أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏"‏ إِذَا مَرَرْتُمْ بِرِيَاضِ الْجَنَّةِ فَارْتَعُوا ‏"‏ ‏.‏ قَالَ وَمَا رِيَاضُ الْجَنَّةِ قَالَ ‏"‏ حِلَقُ الذِّكْرِ ‏"‏ ‏.‏ قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ مِنْ هَذَا الْوَجْهِ مِنْ حَدِيثِ ثَابِتٍ عَنْ أَنَسٍ ‏.‏

আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন: তোমরা যখন জান্নাতের বাগানগুলোর পার্শ্ব দিয়ে যাবে সে সময় সেখান হতে পাকা ফল তুলে নিবে। লোকজন প্রশ্ন করল, জান্নাতের বাগানগুলো কি? তিনি বললেন, যিকিরের মাজলিস। (তালীকুল রাগীব ২/৩৩৫, জামে' আত-তিরমিজি, হাদিস নং ৩৫১০)

চ) স্বয়ং আল্লাহ জিকির কারীর জিকির করেন

وَعَنْ أَبِي هُرَيرَةَ رضي الله عنه: أَنَّ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم، قَالَ: «يَقُولُ اللهُ تَعَالَى: أَنَا عِنْدَ ظَنِّ عَبْدِيْ بِيْ، وَأَنَا مَعَهُ إِذَا ذَكَرَنِي، فَإِنْ ذَكَرَنِي فِي نَفْسِهِ، ذَكَرْتُهُ فِي نَفْسِي، وَإِنْ ذَكَرَنِي فِي مَلأٍ ذَكَرتُهُ فِي مَلأٍ خَيْرٍ مِنْهُمْ». متفق عَلَيْهِ

আবূ হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, আল্লাহ তাআলা বলেন, আমি আমার বান্দার ধারণার পাশে থাকি। (অর্থাৎ, সে যদি ধারণা রাখে যে, আল্লাহ তাকে ক্ষমা করবেন, তার তওবা কবুল করবেন, বিপদ আপদ থেকে উদ্ধার করবেন, তাহলে তাই করি।) আর আমি তার সাথে থাকি, যখন সে আমাকে স্মরণ করে। সুতরাং সে যদি তার মনে আমাকে স্মরণ করে, তাহলে আমি তাকে আমার মনে স্মরণ করি, সে যদি কোন সভায় আমাকে স্মরণ করে, তাহলে আমি তাকে তাদের চেয়ে উত্তম ব্যক্তিদের (ফিরিশতাদের) সভায় স্মরণ করি। (সহীহুল বুখারী ৭৪০৫, ৭৫০৫, ৭৫৩৬, ৭৫৩৬, ৭৫৩৭, মুসলিম ২৬৭৫, তিরমিযী ২৩৮৮, ৩৬০৩, ইবনু মাজাহ ৩৮২২, আহমাদ ৭৩৭৪, ৮৪৩৬, ৮৮৩৩, ৯০০১, ৯০৮৭, ৯৩৩৪, ৯৪৫৭, ১০১২০, ১০২৪১, ১০৩০৬, ১০৩২৬, ১০৪০৩, ১০৫২৬, ১০৫৮৫, ২৭২৭৯, ২৭২৮৩, রিয়াদুস সলেহিন ১৪৪৩)

ছ) প্রার্থনাকারীদের চেয়েও জাকিরিনদের প্রাপ্তি বেশি

عَنْ أَبِي سَعِيدٍ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏ "‏ يَقُولُ الرَّبُّ عَزَّ وَجَلَّ مَنْ شَغَلَهُ الْقُرْآنُ وَذِكْرِي عَنْ مَسْأَلَتِي أَعْطَيْتُهُ أَفْضَلَ مَا أُعْطِي السَّائِلِينَ وَفَضْلُ كَلاَمِ اللَّهِ عَلَى سَائِرِ الْكَلاَمِ كَفَضْلِ اللَّهِ عَلَى خَلْقِهِ ‏"‏ ‏.‏ قَالَ هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ ‏.

আবু সাঈদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ মহান রাব্বুল ইজ্জাত বলেন, কুরআন (চর্চার ব্যস্ততা) ও আমার যিকির যাকে আমার নিকটে কিছু আবেদন করা হতে নিবৃত্ত রেখেছে আমি তাকে আমার কাছে যারা চায় তাদের চাইতে অনেক উত্তম বখশিশ দিব। সব কালামের উপর আল্লাহ্ তা'আলার কালামের গৌরব এত বেশি যত বেশি আল্লাহ্ তা'আলার সম্মান তাঁর সকল সৃষ্টির উপর। (জামে' আত-তিরমিজি, হাদিস নং ২৯২৬)

৪। জিকির হতে উদাসীনতার অপকারিতা

ক) ক্ষতি ও অনুশোচনার কারণ

মুমিনের অন্তর জুড়ে থাকবে কেবল আল্লাহর জিকির, আল্লাহর ফিকির। তার জিহ্বা থাকবে সর্বদা আল্লাহর গুণকীর্তনে মশগুল। সামান্য সময়ের জন্য তারা আল্লাহর স্মরণ থেকে গাফিল হতে পারেনা। যারা আল্লাহর জিকিরে গাফিল হবে তারা হবে ক্ষতিগ্রস্থ। মহান আল্লাহ তা'আলা বলেন,

یٰۤاَیُّہَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا لَا تُلۡہِکُمۡ اَمۡوَالُکُمۡ وَلَاۤ اَوۡلَادُکُمۡ عَنۡ ذِکۡرِ اللّٰہِ ۚ وَمَنۡ یَّفۡعَلۡ ذٰلِکَ فَاُولٰٓئِکَ ہُمُ الۡخٰسِرُوۡنَ

হে মুমিনগণ! তোমাদের অর্থ-সম্পদ ও তোমাদের সন্তান-সন্ততি যেন তোমাদেরকে আল্লাহ সম্পর্কে গাফেল করতে না পারে। যারা এ রকম করবে (অর্থাৎ গাফেল হবে) তারাই ক্ষতিগ্রস্ত। (আল মুনাফিকূন ৬৩:৯)

সূরা হাশরের আল্লাহ তায়ালা বলেন,

وَلَا تَکُوۡنُوۡا کَالَّذِیۡنَ نَسُوا اللّٰہَ فَاَنۡسٰہُمۡ اَنۡفُسَہُمۡ ؕ اُولٰٓئِکَ ہُمُ الۡفٰسِقُوۡنَ

তোমরা তাদের মত হয়ো না, যারা আল্লাহকে ভুলে গিয়েছিল, ফলে আল্লাহ তাকে আত্মভোলা করে দেন। বস্তুত তারাই অবাধ্য। (আল হাশ্‌র ৫৯:১৯)

عن معاذ بن جبل: ليس يتحسَّرُ أهلُ الجنَّةِ إلّا على ساعةٍ مرَّتْ بهم لم يذكُروا اللهَ تعالى فيها. المنذري (ت ٦٥٦)، الترغيب والترهيب ٢‏/٣٣١  •  أخرجه الطبراني (٢٠/٩٣) (١٨٢)، والبيهقي في «شعب الإيمان» (٥١٢)

রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, জান্নাতিগণ কোন জিনিস নিয়েই আফসোস করবে না। তবে সেই মুহূর্তের জন্য তারা আফসোস করবে। যা তারা আল্লাহর জিকির ব্যতীত অতিবাহিত করেছে। (বায়হাক্বী, শুয়াবুল ঈমান, তিবরানী।)

عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللهُ  عَنْه عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ  عَلَيْهِ وَسَلَّم َ قَالَ  مَا جَلَسَ قَوْمٌ مَجْلِسًا لَمْ يَذْكُرُوا الله تَعَالَى فِيهِ وَلَمْ يُصَلُّوْا عَلَى نَبِيّهم فِيهِ إِلَّا كَانَ عَلَيْهِم ترة فَإِن شَاءَ عذبهم وَإِن شَاءَ غفر لَهُم

আবূ হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন, যে সম্প্রদায়ই এমন কোন মজলিসে বসে যেখানে তারা মহান আল্লাহর যিক্‌র করে না এবং নবীর (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) উপর দরূদ পাঠ করে না, সেই সম্প্রদায়েরই ক্ষতিকর পরিণাম হবে। আল্লাহ ইচ্ছা করলে তাদেরকে আযাব দেবেন, নচেৎ ইচ্ছা করলে মাফ করে দেবেন। (আবূ দাউদ ৪৮৫৮, সহীহ তিরমিযী ২৬৯১, বাইহাকী, আহমাদ, ইবনে হিব্বান, সিলসিলাহ সহীহাহ ৭৪, আর হাদীসের শব্দাবলী তিরমিযীর।) (হাদিস সম্ভার, হাদিস নং ১৭০৪)

وَعَنْ أَبِي هُرَيرَةَ رضي الله عنه، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم: «مَا مِنْ قَوْمٍ يَقُومُونَ مِنْ مَجْلِسٍ لاَ يَذْكُرُونَ الله تَعَالَى فِيهِ، إِلاَّ قَامُوا عَنْ مِثْل جِيفَةِ حِمَارٍ، وَكَانَ لَهُمْ حَسْرَةٌ ». رواه أَبُو داود بإسنادٍ صحيح

আবূ হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘‘যে জনগোষ্ঠীই কোন সভা থেকে, তাতে আল্লাহর যিকির না করেই উঠে যায়, আসলে তারা যেন মরা গাধা থেকে উঠে যায়। (অর্থাৎ যেন মৃত গাধার গোশ্ত ভক্ষণান্তে উঠে চলে যায়।) আর তাদের জন্য অনুতাপ হবে। (আবূ দাঊদ বিশুদ্ধ সূত্রে) (আবূ দাউদ ৪৮৫৫, ৪৮৫৬, তিরমিযী ৩৩৮০, আহমাদ ৯৩০০, ৯৪৮২, ৯৮৮৪ , ৯৯০৭, ১০০৫০, ১০০৪৪, রিয়াদুস সলেহিন ৮৩৯)

খ) প্রাণহীন দেহ

যে ব্যক্তি আল্লাহর জিকির করো না তার উদাহরণ হল প্রাণহীন দেহের মত। রসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেন,

وَعَنْ أَبي مُوسَى الأَشعَرِي رضي الله عنه، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم، قَالَ: مَثَلُ الَّذِي يَذْكُرُ رَبَّهُ وَالَّذِي لاَ يَذْكُرُهُ مَثَلُ الحَيِّ وَالمَيِّتِ . رواه البخاري

আবূ মুসা আশআরী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, যে আল্লাহর যিক্‌র করে আর যে যিক্‌র করে না, উভয়ের উদাহরণ মৃত ও জীবন্ত মানুষের মত। (সহীহুল বুখারী ৬৪০৭, মুসলিম ৭৭৯, রিয়াদুস সলেহিন, হাদিস নং ১৪৪২)

গ) আল্লাহর জিকিরের সাথে সম্পর্কহীন সবকিছুই অভিশপ্ত

وَعَنْ أَبيْ هُرَيْرَةَ قَالَ: سَمِعْتُ رَسُولَ اللهِ   صَلَّى اللّٰهُ عَلَيْهِ وَسَلَّم  يَقُولُ  أَلاَ إنَّ الدُّنْيَا مَلْعُونَةٌ مَلْعُونٌ مَا فِيهَا إِلاَّ ذِكْرَ اللهِ تَعَالَى وَمَا وَالاهُ وَعَالِماً وَمُتَعَلِّماً رواه الترمذي و قَالَ حديث حسنٌ

আবূ হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ আমি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছি, শোনো! নিঃসন্দেহে দুনিয়া অভিশপ্ত। অভিশপ্ত তার মধ্যে যা কিছু আছে (সবই)। তবে আল্লাহর যিক্‌র এবং তার সাথে সম্পৃক্ত জিনিস, আলেম ও তালেবে-ইল্‌ম নয়। (তিরমিযী ২৩২২, ইবনে মাজাহ ৪১১২, বাইহাক্বী সহীহ তারগীব ৭০, হাদিস সম্ভার, হাদিস নং ২৭৫)

ঘ) অন্তর কঠিন হয়

اَفَمَنۡ شَرَحَ اللّٰہُ صَدۡرَہٗ لِلۡاِسۡلَامِ فَہُوَ عَلٰی نُوۡرٍ مِّنۡ رَّبِّہٖ ؕ فَوَیۡلٌ لِّلۡقٰسِیَۃِ قُلُوۡبُہُمۡ مِّنۡ ذِکۡرِ اللّٰہِ ؕ اُولٰٓئِکَ فِیۡ ضَلٰلٍ مُّبِیۡنٍ

আল্লাহ ইসলামের জন্য যার বক্ষ খুলে দিয়েছেন, ফলে সে তার প্রতিপালকের দেওয়া আলোতে এসে গেছে (সে কি কঠোর হৃদয় ব্যক্তিদের সমতুল্য হতে পারে?) সুতরাং ধ্বংস সেই কঠোরপ্রাণদের জন্য, যারা আল্লাহর যিকির থেকে বিমুখ। তারা সুস্পষ্ট বিভ্রান্তিতে নিপতিত। (আয্‌-যুমার ৩৯:২২)

উপসংহার

আমাদেরকে আল্লাহ তায়ালার প্রিয় নেককার বান্দা হতে হলে অবশ্যই আল্লাহর জিকির বেশি বেশি করতে হবে। মনের মধ্যে আল্লাহর বিধানের কথা খেয়াল রেখে প্রতিটি কাজ করতে হবে।  বিধানের উল্টো কাজ করলে মুখে আল্লাহর জিকির থাকলেও তার নাম হবে না। তাই প্রকৃত জিকিরকারী বা জাকিরিন হওয়ার জন্য মনের জিকিরের সাথে কাজের মিল থাকতে হবে। আল্লাহ আমাদের সেই তৌফিক দান করুন।

পিডিএফ ডাউনলোড করুন