লাইলাতুল বারাআত এর তাৎপর্য

লাইলাতুল বারাআত এর তাৎপর্য

মহান আল্লাহ উম্মাতে মোহাম্মদী এর গুনাহ মাফ ও মর্যাদা বৃদ্ধির জন্য কিছু দিবস ও রাতকে বরকতময়, সম্মানিত ও তাৎপর্যময় করেছেন। দিনের মধ্যে দুই ঈদআশুরাআরাফাত ও জুমুআর দিন উল্লেখযোগ্য।  আর রাতের মধ্যে লাইলাতুল কদরদুই ঈদের রাতজুমুয়ার রাত ও লাইলাতুল বরাআত। এসব দিবস ও রজনী আমাদের প্রিয় রাসূল (সাঃ) কে দেওয়া আল্লাহ তাআলার পক্ষ থেকে বিশেষ উপহার। যে সমস্ত রাত গুরুত্বপূর্ণ ও তাৎপর্যময় তার মদ্যে শবে বারাআত বা লাইলাতুন নিসফি মিন শাবান অন্যতম।

শাবান মাসের ফজীলতঃ

শাবান মাস আরবী ১২টি মাসের মধ্যে একটি বরকতময় ফজীলতপূর্ণ মাস মাসে রসূলুল্লাহ (সাঃ) অধিক পরিমাণে সাওম পালন করতেন এই সম্পর্কে হাদিসে এসেছে,

عَن عَائِشَة رَضِيَ اللهُ عَنهَا، قَالَتْ: لَمْ يَكُنِ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم يَصُومُ مِنْ شَهْرٍ أَكْثَرَ مِنْ شَعْبَانَ، فَإِنَّهُ كَانَ يَصُومُ شَعْبَانَ كُلَّهُ . وفي رواية: كَانَ يَصُومُ شَعْبَانَ إِلاَّ قَلِيلاً . متفقٌ عَلَيْهِ

আয়েশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) শাবান মাস চাইতে বেশি নফল রোযা অন্য কোন মাসে রাখতেন না। নিঃসন্দেহে তিনি পূর্ণ শাবান মাস রোযা রাখতেন।

অন্য বর্ণনায় আছে, অল্প কিছুদিন ছাড়া তিনি পূর্ণ শাবান মাস রোযা রাখতেন।

(বুখারী- শাবানের সাওম অধ্যায়, মুসলিম, রিয়াদুস সালেহিন)

অন্য হাদিস শরিফে এসেছে,

وَعَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا قَالَتْ: كَانَ رَسُولُ اللَّهِ - صلى الله عليه وسلم - يَصُومُ حَتَّى نَقُولَ لَا يُفْطِرُ، وَيُفْطِرُ حَتَّى نَقُولَ لَا يَصُومُ، وَمَا رَأَيْتُ رَسُولَ اللَّهِ - صلى الله عليه وسلم - اسْتَكْمَلَ صِيَامَ شَهْرٍ قَطُّ إِلَّا رَمَضَانَ، وَمَا رَأَيْتُهُ فِي شَهْرٍ أَكْثَرَ مِنْهُ صِيَامًا فِي شَعْبَانَ. مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ، وَاللَّفْظُ لِمُسْلِمٍ

আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একাধারে (এত অধিক) সওম পালন করতেন যে, আমরা বলাবলি করতাম, তিনি আর সওম পরিত্যাগ করবেন না। (আবার কখনো এত বেশি) সওম পালন না করা অবস্থায় একাধারে কাটাতেন যে, আমরা বলাবলি করতাম, তিনি আর (নফল) সওম পালন করবেন না। আমি আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে রমাযান ব্যতীত কোন পুরা মাসের সওম পালন করতে দেখিনি এবং শা'বান মাসের চেয়ে কোন মাসে অধিক (নফল) সওম পালন করতে দেখিনি।

(বুখারী- শাবানের সাওম অধ্যায়, মুসলিম, বুলুগুল মারাম, হাদিস নং ৬৮৩)

রাসূল (সাঃ) গোটা শাবান মাসে রোজা রাখতেন,

عَنْ رَبِيعَةَ بْنِ الْغَازِ أَنَّهُ سَأَلَ عَائِشَةَ عَنْ صِيَامِ رَسُولِ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَتْ كَانَ يَصُومُ شَعْبَانَ كُلَّهُ حَتَّى يَصِلَهُ بِرَمَضَانَ

রবীআহ ইবনুল গায (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি আয়িশা (রাঃ) এর নিকট রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সিয়াম সম্পর্কে জিজ্ঞেস করেন। তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) প্রায় গোটা শাবান মাস সিয়াম রাখতেন, এমনকি এভাবে রমজান মাসে উপনীত হতেন।

(সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিস নং ১৬৪৯)

عَنْ أَنَسٍ، قَالَ سُئِلَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم أَىُّ الصَّوْمِ أَفْضَلُ بَعْدَ رَمَضَانَ فَقَالَ ‏"‏ شَعْبَانُ لِتَعْظِيمِ رَمَضَانَ ‏"‏ ‏.‏ قِيلَ فَأَىُّ الصَّدَقَةِ أَفْضَلُ قَالَ ‏"‏ صَدَقَةٌ فِي رَمَضَانَ ‏"‏ ‏.‏ قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ غَرِيبٌ ‏.‏ وَصَدَقَةُ بْنُ مُوسَى لَيْسَ عِنْدَهُمْ بِذَاكَ الْقَوِيِّ ‏.‏

আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে প্রশ্ন করা হল, রামাযানের রোযার পর কোন রোযা সবচাইতে বেশী মর্যাদা সম্পন্ন? তিনি বলেনঃ  রামাযানের সম্মানার্থে শা'বানের রোযা। প্রশ্নকারী আবার বলল, কোন (সময়ের) দান-খাইরাত সবচাইতে বেশী মর্যাদা সম্পন্ন? তিনি বললেনঃ রামাযান মাসের দান-খাইরাত।  (জামে' আত-তিরমিজি, হাদিস নং ৬৬৩)

أُسَامَةُ بْنُ زَيْدٍ، قَالَ: قُلْتُ: يَا رَسُولَ اللَّهِ، لَمْ أَرَكَ تَصُومُ شَهْرًا مِنَ الشُّهُورِ مَا تَصُومُ مِنْ شَعْبَانَ، قَالَ: «ذَلِكَ شَهْرٌ يَغْفُلُ النَّاسُ عَنْهُ بَيْنَ رَجَبٍ وَرَمَضَانَ، وَهُوَ شَهْرٌ تُرْفَعُ فِيهِ الْأَعْمَالُ إِلَى رَبِّ الْعَالَمِينَ، فَأُحِبُّ أَنْ يُرْفَعَ عَمَلِي وَأَنَا صَائِمٌ»

উসামা ইব্‌ন যায়দ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, আমি জিজ্ঞাসা করলাম, ইয়া রাসুলুল্লাহ্‌! আমি আপনাকে তো শাবান মাসে যে পরিমাণ সাওম (রোযা) পালন করতে দেখি বছরের অন্য কোন মাসে সে পরিমাণ সাওম (রোযা) পালন করতে দেখি না। তিনি বললেন শাবান মাস রজব এবং রমযানের মধ্যবর্তী এমন একটি মাস যে মাসের (গুরুত্ব সম্পর্কে) মানুষ খবর রাখে না অথচ এ মাসে আমলনামা সমূহ আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের নিকটে উত্তলোন করা হয়। তাই আমি পছন্দ করি যে, আমার আমলনামা আল্লাহ তাআলার নিকটে উত্তোলন করা হবে আমার সাওম (রোযা) পালনরত অবস্হায়। (সুনানে আন-নাসায়ী, হাদিস নং ২৩৫৭)

লাইলাতুল বারাআত বা লাইলাতুন নিসফি শা’বান

সাবান মাসের উল্লেখযোগ্য বিশেষ রাত হলো ১৫ই শাবানের রাত। যাকে লাইলাতুল বারাআত বা শবে বারাআত বলা হয়। শব শব্দটি ফার্সী ভাষার শব্দ। আর আরবীতে বারাআত অর্থ নাজাত বা মুক্তি। শবে বারাআত অর্থ ক্ষমার রাত। এ রাতে আল্লাহর বান্দাহগণ তাওবা ও ইবাদত এর মাধ্যমে ক্ষমাপ্রাপ্ত হয়ে জাহান্নাম থেকে মুক্তি লাভ করে থাকেন। হাদিসের ভাষায় লাইলাতুন নিসফি শাবান বা অর্ধ শাবানের রজনী।

عَنْ أَبِي مُوسَى الأَشْعَرِيِّ، عَنْ رَسُولِ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ قَالَ ‏ "‏ إِنَّ اللَّهَ لَيَطَّلِعُ فِي لَيْلَةِ النِّصْفِ مِنْ شَعْبَانَ فَيَغْفِرُ لِجَمِيعِ خَلْقِهِ إِلاَّ لِمُشْرِكٍ أَوْ مُشَاحِنٍ ‏"‏ ‏.‏

আবূ মূসা আল-আশআরী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, আল্লাহ মধ্য শাবানের রাতে আত্নপ্রকাশ করেন এবং মুশরিক ও হিংসুক ব্যতীত তাঁর সৃষ্টির সকলকে ক্ষমা করেন।

(সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিস নং ১৩৯০)

عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ فَقَدْتُ النَّبِيَّ ـ صلى الله عليه وسلم ـ ذَاتَ لَيْلَةٍ فَخَرَجْتُ أَطْلُبُهُ فَإِذَا هُوَ بِالْبَقِيعِ رَافِعٌ رَأْسَهُ إِلَى السَّمَاءِ فَقَالَ ‏"‏ يَا عَائِشَةُ أَكُنْتِ تَخَافِينَ أَنْ يَحِيفَ اللَّهُ عَلَيْكِ وَرَسُولُهُ ‏"‏ ‏.‏ قَالَتْ قَدْ قُلْتُ وَمَا بِي ذَلِكَ وَلَكِنِّي ظَنَنْتُ أَنَّكَ أَتَيْتَ بَعْضَ نِسَائِكَ ‏.‏ فَقَالَ ‏"‏ إِنَّ اللَّهَ تَعَالَى يَنْزِلُ لَيْلَةَ النِّصْفِ مِنْ شَعْبَانَ إِلَى السَّمَاءِ الدُّنْيَا فَيَغْفِرُ لأَكْثَرَ مِنْ عَدَدِ شَعَرِ غَنَمِ كَلْبٍ ‏"‏

আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, এক রাতে আমি নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে (বিছানায়) না পেয়ে তাঁর খোঁজে বের হলাম। আমি লক্ষ্য করলাম, তিনি জান্নাতুল বাকিতে, তাঁর মাথা আকাশের দিকে তুলে আছেন। তিনি বলেন, হে আয়িশা! তুমি কি আশঙ্কা করেছো যে, আল্লাহ ও তাঁর রাসূল তোমার প্রতি অবিচার করবেন? আয়িশা (রাঃ) বলেন, তা নয়, বরং আমি ভাবলাম যে, আপনি হয়তো আপনার কোন স্ত্রীর কাছে গেছেন। তিনি বলেন, মহান আল্লাহ মধ্য শাবানের রাতে দুনিয়ার নিকটবর্তী আকাশে অবতরণ করেন এবং কালব গোত্রের মেষপালের পশমের চাইতেও অধিক সংখ্যক লোকের গুনাহ মাফ করেন।  (ইবনে মাজাহ, হাদিস নং ১৩৮৯)

লাইলাতুল বারাআতে করণীয় ও বর্জনীয়

লাইলাতুল বারাআতে আমরা নফল নামাজ আদায় করবো, কুরআন তিলাওয়াত করবো, বেশি করে ইসতেগফার পড়বো। এছাড়া মৃত মাতা পিতাসহ অন্যান্য আত্মীয় স্বজনের জন্য দোয়া করবো।

লাইলাতুল বারাআতে আমাদের সমাজে কিছু কুসংস্কার প্রচলিত আছে, সেগুলো থেকে বিরত থাকবো। পটকাবাজী, আলোকসজ্জা, জাঁকজমক অনুষ্ঠান, কবর ও মাজারে মোমবাতি জ্বালানোসহ শরীয়ত বিরোধী কোন কাজে জড়াবো না। রজব মাসে রসূলুল্লাহ (সাঃ) এই দোয়া বেশি করে পড়তেন। এই বিষয়ে হাদিস শরীফে এসেছে, 

وَعَنْ أَنَسٍ قَالَ: كَانَ رَسُولُ اللّهِ ﷺ إِذَا دَخَلَ رَجَبٌ قَالَ: «اللّهُمَّ بَارِكْ لَنَا فِي رَجَبٍ وَشَعْبَانَ وَبَلِّغْنَا رَمَضَانَ»

আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রজব মাস আসলে এ দুআ পড়তেন, হে আল্লাহ! রজব ও শাবান মাসের (ইবাদাতে) আমাদেরকে বারাকাত দান করো। আর আমাদেরকে রমাযান মাস পর্যন্ত পৌঁছাও।  (মিশকাতুল মাসাবিহ, হাদিস নং ১৩৬৯)

ভালো কাজে সময় অতিবাহিত করতে হবে, অন্যায় কাজে নিজেও জড়ানো যাবেনা এবং পরিবার পরিজনকে কোন অন্যায় কাজে উৎসাহ দেয়া যাবেনা।

یٰبَنِیۡۤ اٰدَمَ اِمَّا یَاۡتِیَنَّکُمۡ رُسُلٌ مِّنۡکُمۡ یَقُصُّوۡنَ عَلَیۡکُمۡ اٰیٰتِیۡ ۙ فَمَنِ اتَّقٰی وَاَصۡلَحَ فَلَا خَوۡفٌ عَلَیۡہِمۡ وَلَا ہُمۡ یَحۡزَنُوۡنَ

হে বনী-আদম, যদি তোমাদের কাছে তোমাদেরই মধ্য থেকে পয়গম্বর আগমন করে তোমাদেরকে আমার আয়াত সমূহ শুনায়, তবে যে ব্যক্তি সংযত হয় এবং সৎকাজ অবলম্বন করে, তাদের কোন আশঙ্কা নেই এবং তারা দুঃখিত হবে না। (সূরা আল আরাফ ৭:৩৫)

বেশি করে তাওবা ইস্তেগফার দ্বারা কৃত গুনাহ সমূহের জন্য মহান রবের দরবারে ক্ষমা চাইতে হবে।

اِلَّا مَنۡ تَابَ وَاٰمَنَ وَعَمِلَ عَمَلًا صَالِحًا فَاُولٰٓئِکَ یُبَدِّلُ اللّٰہُ سَیِّاٰتِہِمۡ حَسَنٰتٍ ؕ وَکَانَ اللّٰہُ غَفُوۡرًا رَّحِیۡمًا

কিন্তু যারা তওবা করে বিশ্বাস স্থাপন করে এবং সৎকর্ম করে, আল্লাহ তাদের গোনাহকে পুন্য দ্বারা পরিবর্তত করে এবং দেবেন। আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। (সূরা আল ফুরক্বান ২৫:৭০)

وَمَا کَانَ اللّٰہُ لِیُعَذِّبَہُمۡ وَاَنۡتَ فِیۡہِمۡ ؕ وَمَا کَانَ اللّٰہُ مُعَذِّبَہُمۡ وَہُمۡ یَسۡتَغۡفِرُوۡنَ

অথচ আল্লাহ কখনই তাদের উপর আযাব নাযিল করবেন না যতক্ষণ আপনি তাদের মাঝে অবস্থান করবেন। তাছাড়া তারা যতক্ষণ ক্ষমা প্রার্থনা করতে থাকবে আল্লাহ কখনও তাদের উপর আযাব দেবেন না। (সূরা আনফাল ৮:৩৩)

یٰۤاَیُّہَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا تُوۡبُوۡۤا اِلَی اللّٰہِ تَوۡبَۃً نَّصُوۡحًا ؕ عَسٰی رَبُّکُمۡ اَنۡ یُّکَفِّرَ عَنۡکُمۡ سَیِّاٰتِکُمۡ وَیُدۡخِلَکُمۡ جَنّٰتٍ تَجۡرِیۡ مِنۡ تَحۡتِہَا الۡاَنۡہٰرُ ۙ

মুমিনগণ! তোমরা আল্লাহ তাআলার কাছে তওবা কর-আন্তরিক তওবা। আশা করা যায়, তোমাদের পালনকর্তা তোমাদের মন্দ কর্মসমূহ মোচন করে দেবেন এবং তোমাদেরকে দাখিল করবেন জান্নাতে, যার তলদেশে নদী প্রবাহিত।  (সূরা আত তাহরীম ৬৬:৮)

ইস্তেগফার করার সময় অবশ্যই আল্লাহর রহমতের আশা করতে হবে। নিরাশ হওয়া যাবেনা। আল্লাহ সূরা যুমারে বলেন,

قُلۡ یٰعِبَادِیَ الَّذِیۡنَ اَسۡرَفُوۡا عَلٰۤی اَنۡفُسِہِمۡ لَا تَقۡنَطُوۡا مِنۡ رَّحۡمَۃِ اللّٰہِ ؕ اِنَّ اللّٰہَ یَغۡفِرُ الذُّنُوۡبَ جَمِیۡعًا ؕ اِنَّہٗ ہُوَ الۡغَفُوۡرُ الرَّحِیۡمُ

বলুন, হে আমার বান্দাগণ যারা নিজেদের উপর যুলুম করেছ তোমরা আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হয়ো না। নিশ্চয় আল্লাহ সমস্ত গোনাহ মাফ করেন। তিনি ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। (সূরাহ আয যুমার ৩৯:৫৩)

ভূলবশতঃ মন্দ কাজ করে ফেললে দ্রুত তাওবা করতে হবে এই বিষয়ে আল্লাহ সুবহানাহু ওতাআলা বলেন

اِنَّمَا التَّوۡبَۃُ عَلَی اللّٰہِ لِلَّذِیۡنَ یَعۡمَلُوۡنَ السُّوۡٓءَ بِجَہَالَۃٍ ثُمَّ یَتُوۡبُوۡنَ مِنۡ قَرِیۡبٍ فَاُولٰٓئِکَ یَتُوۡبُ اللّٰہُ عَلَیۡہِمۡ ؕ وَکَانَ اللّٰہُ عَلِیۡمًا حَکِیۡمًا

অবশ্যই আল্লাহ তাদের তওবা কবুল করবেন, যারা ভূলবশতঃ মন্দ কাজ করে, অতঃপর অনতিবিলম্বে তওবা করে; এরাই হল সেসব লোক যাদেরকে আল্লাহ ক্ষমা করে দেন। আল্লাহ মহাজ্ঞানী, রহস্যবিদ। (সূরাহ নিসা ৪:১৭)

وَلَیۡسَتِ التَّوۡبَۃُ لِلَّذِیۡنَ یَعۡمَلُوۡنَ السَّیِّاٰتِ ۚ حَتّٰۤی اِذَا حَضَرَ اَحَدَہُمُ الۡمَوۡتُ قَالَ اِنِّیۡ تُبۡتُ الۡـٰٔنَ وَلَا الَّذِیۡنَ یَمُوۡتُوۡنَ وَہُمۡ کُفَّارٌ ؕ اُولٰٓئِکَ اَعۡتَدۡنَا لَہُمۡ عَذَابًا اَلِیۡمًا

আর এমন লোকদের জন্য কোন ক্ষমা নেই, যারা মন্দ কাজ করতেই থাকে, এমন কি যখন তাদের কারো মাথার উপর মৃত্যু উপস্থিত হয়, তখন বলতে থাকেঃ আমি এখন তওবা করছি। আর তওবা নেই তাদের জন্য, যারা কুফরী অবস্থায় মৃত্যুবরণ করে। আমি তাদের জন্য যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি প্রস্তুত করে রেখেছি। (সূরাহ নিসা ৪:১৮)

সর্বদা আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করতে হবে। আল্লাহ সূরা নিসায় বলেন,

مَا یَفۡعَلُ اللّٰہُ بِعَذَابِکُمۡ اِنۡ شَکَرۡتُمۡ وَاٰمَنۡتُمۡ ؕ وَکَانَ اللّٰہُ شَاکِرًا عَلِیۡمًا

তোমাদের আযাব দিয়ে আল্লাহ কি করবেন যদি তোমরা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ কর এবং ঈমানের উপর প্রতিষ্ঠিত থাক! আর আল্লাহ হচ্ছেন সমুচিত মূল্যদানকারী সর্বজ্ঞ। (সূরাহ নিসা ৪:১৪৭)

          আল্লাহ আমাদেরকে সঠিক পদ্ধতি অনুসরন করে ইবাদাত বন্দেগী করার তাউফিক দান করুন। আমিন

ডাউনলোড পিডিএফ