কিভাবে বন্ধ করবেন আপনার বিকাশ একাউন্টের সুদ ?

 

বিকাশ একাউন্টের সুদ
বিকাশ একাউন্টের সুদ

আপনি কি জানেন? আপনার বিকাশ একাউন্টের লেনদেন এর উপর বিকাশের পক্ষ থেকে একটা নির্দিষ্ট পরিমাণে সুদ দেয়া হয়। আপনি যদি বিকাশের লেনদেনের উপর আপনার একাউন্টে সুদ আসা বন্ধ করতে চান তাহলে নিচের পদ্ধতি অনুসরণ করুন। 

বিকাশ একাউন্টের সুদ বন্ধ করার পদ্ধতি 

১। আপনার বিকাশ একাউন্ট নম্বর থেকে 16247 এ কল করুন।

২। ভাষা নির্বাচন করুন (বাংলার জন্যে ১ চাপুন )।

৩। জমানো টাকার উপর ইন্টারেস্ট এবং অন্যান্য তথ্যের জন্য ৫ চাপুন।

দায়িত্ব ও কর্তব্য সম্পাদনের ক্ষেত্রে আমানতদারী | জুমুয়ার খুতবা

আল্লাহ কর্তৃক আমানত

দায়িত্ব ও কর্তব্য সম্পাদনের ক্ষেত্রে আমানতদারী
দায়িত্ব ও কর্তব্য সম্পাদনের ক্ষেত্রে আমানতদারী

اِنَّا عَرَضۡنَا الۡاَمَانَۃَ عَلَی السَّمٰوٰتِ وَالۡاَرۡضِ وَالۡجِبَالِ فَاَبَیۡنَ اَنۡ یَّحۡمِلۡنَہَا وَاَشۡفَقۡنَ مِنۡہَا وَحَمَلَہَا الۡاِنۡسَانُ ؕ  اِنَّہٗ کَانَ ظَلُوۡمًا جَہُوۡلًا ۙ

আমি আকাশ পৃথিবী ও পর্বতমালার সামনে এই আমানত পেশ করেছিলাম, অতঃপর তারা একে বহন করতে অস্বীকার করল এবং এতে ভীত হল; কিন্তু মানুষ তা বহণ করল। নিশ্চয় সে জালেম-অজ্ঞ।

(আল আহ্‌যাব - 33:72)

আল্লাহর আহকামগুলো মুমিনের নিকট আমানত

عن عبد الله بن مسعود - رضي الله عنه - أنه قال: الصلاة أمانة، والوضوء أمانة، والوزن أمانة، والكيل أمانة

 وأشياء عدّدها، (وأشدّ من ذلك الودائع) أخرجه البيهقي في شعب الإيمان

সালাত আমানত অজু আমানত গোসল আমানত সঠিক পরিমাপ আমানত সঠিকভাবে দাও আমানত আর বড় আমানত হচ্ছে কারো কাছে সম্পদ গচ্ছিত রাখা। (মুসনাদে আহমদ আল বায়হাকী)

কর্মক্ষেত্রে দায়িত্ব

যোগ্য ব্যক্তিদের হাতে দায়িত্বপূর্ণ পদগুলো সমর্পণ করা আমানত

اِنَّ اللّٰہَ یَاۡمُرُکُمۡ اَنۡ تُؤَدُّوا الۡاَمٰنٰتِ اِلٰۤی اَہۡلِہَا ۙ وَاِذَا حَکَمۡتُمۡ بَیۡنَ النَّاسِ اَنۡ تَحۡکُمُوۡا بِالۡعَدۡلِ ؕ اِنَّ اللّٰہَ نِعِمَّا یَعِظُکُمۡ بِہٖ ؕ اِنَّ اللّٰہَ کَانَ سَمِیۡعًۢا بَصِیۡرًا

নিশ্চয়ই আল্লাহ তোমাদিগকে নির্দেশ দেন যে, তোমরা যেন প্রাপ্য আমানতসমূহ প্রাপকদের নিকট পৌছে দাও আর যখন তোমরা মানুষের কোন বিচার-মীমাংসা করতে আরম্ভ কর, তখন মীমাংসা কর ন্যায় ভিত্তিক। আল্লাহ তোমাদিগকে সদুপদেশ দান করেন। নিশ্চয়ই আল্লাহ শ্রবণকারী, দর্শনকারী।  (আন নিসা - 4:58)

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ ـ رضى الله عنه ـ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏"‏ إِذَا ضُيِّعَتِ الأَمَانَةُ فَانْتَظِرِ السَّاعَةَ ‏"‏‏.‏ قَالَ كَيْفَ إِضَاعَتُهَا يَا رَسُولَ اللَّهِ قَالَ ‏"‏ إِذَا أُسْنِدَ الأَمْرُ إِلَى غَيْرِ أَهْلِهِ، فَانْتَظِرِ السَّاعَةَ ‏"‏‏.

আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)  বলেছেনঃ যখন আমানত নষ্ট হয়ে যাবে তখন ক্বিয়ামাতের অপেক্ষা করবে। সে বলল : হে আল্লাহ্‌র রসূল! আমানত কিভাবে নষ্ট হয়ে যাবে? তিনি  বললেনঃ যখন কোন দায়িত্ব অযোগ্য ব্যক্তির উপর ন্যস্ত করা হবে, তখনই ক্বিয়ামাতের অপেক্ষা করবে।

(আধুনিক প্রকাশনী- ৬০৫৬, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬০৫২) (সহিহ বুখারী, হাদিস নং ৬৪৯৬)

مَا مِنْ وَالٍ يَلِي رَعِيَّةً مِنْ الْمُسْلِمِينَ فَيَمُوتُ وَهُوَ غَاشٌّ لَهُمْ إِلاَّ حَرَّمَ اللهُ عَلَيْهِ الْجَنَّةَ.

হাসান বাস্‌রী (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন,  আমরা মাকিল ইব্‌নু ইয়াসারের  কাছে তার সেবা-শুশ্রূষার জন্য আসলাম। এ সময় উবাইদুল্লাহ্‌ প্রবেশ করল। তখন মাকিল (রাঃ) বললেন, আমি তোমাকে এমন একটি হাদিস বর্ণনা করে শোনাবো যা আমি  রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে শুনেছি। তিনি বলেন, কোন দায়িত্বশীল ব্যক্তি মুসলিম জনসাধারণের দায়িত্ব লাভ করল আর তার মৃত্যু হল এই হালতে যে, সে ছিল খিয়ানাতকারী, তাহলে আল্লাহ্‌ তার জন্য জান্নাত হারাম করে দেবেন। (সহিহ বুখারী, হাদিস নং ৭১৫১)

প্রত্যেক ব্যক্তি নিজ দায়িত্বের ব্যাপারে আমানতদার

عَنْ عَبْدِ اللَّهِ ـ رضى الله عنه ـ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏ "‏ كُلُّكُمْ رَاعٍ فَمَسْئُولٌ عَنْ رَعِيَّتِهِ، فَالأَمِيرُ الَّذِي عَلَى النَّاسِ رَاعٍ وَهْوَ مَسْئُولٌ عَنْهُمْ، وَالرَّجُلُ رَاعٍ عَلَى أَهْلِ بَيْتِهِ وَهْوَ مَسْئُولٌ عَنْهُمْ، وَالْمَرْأَةُ رَاعِيَةٌ عَلَى بَيْتِ بَعْلِهَا وَوَلَدِهِ وَهْىَ مَسْئُولَةٌ عَنْهُمْ، وَالْعَبْدُ رَاعٍ عَلَى مَالِ سَيِّدِهِ وَهْوَ مَسْئُولٌ عَنْهُ، أَلاَ فَكُلُّكُمْ رَاعٍ وَكُلُّكُمْ مَسْئُولٌ عَنْ رَعِيَّتِهِ ‏"‏‏.‏

আবদুল্লাহ [ইবনু উমর (রাঃ)] থেকে বর্ণিতঃ নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, তোমরা প্রত্যেকেই দায়িত্বশীল। কাজেই প্রত্যেকেই নিজ অধীনস্থদের বিষয়ে জিজ্ঞাসার সম্মুখীন হবে। যেমন- জনগণের শাসক তাদের দায়িত্বশীল, কাজেই সে তাদের বিষয়ে জিজ্ঞাসিত হবে। একজন পুরুষ তার পরিবার পরিজনদের দায়িত্বশীল, কাজেই সে তাদের বিষয়ে জিজ্ঞাসিত হবে। স্ত্রী স্বামীর ঘরের এবং তার সন্তানের দায়িত্বশীল, কাজেই সে তাদের বিষয়ে জিজ্ঞাসিত হবে। আর ক্রীতদাস আপন মনিবের সম্পদের রক্ষণাবেক্ষণকারী। কাজেই সে বিষয়ে জিজ্ঞাসিত হবে। শোন! তোমরা প্রত্যেকেই দায়িত্বশীল। কাজেই প্রত্যেকেই আপন অধীনস্থদের বিষয়ে জিজ্ঞাসিত হবে। (সহিহ বুখারী, হাদিস নং ২৫৫৪)

প্রাতিষ্ঠানিক ও রাষ্ট্রীয় গোপনীয়তা ও আমানত

یٰۤاَیُّہَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا لَا تَتَّخِذُوۡا عَدُوِّیۡ وَعَدُوَّکُمۡ اَوۡلِیَآءَ تُلۡقُوۡنَ اِلَیۡہِمۡ بِالۡمَوَدَّۃِ وَقَدۡ کَفَرُوۡا بِمَا جَآءَکُمۡ مِّنَ الۡحَقِّ ۚ یُخۡرِجُوۡنَ الرَّسُوۡلَ وَاِیَّاکُمۡ اَنۡ تُؤۡمِنُوۡا بِاللّٰہِ رَبِّکُمۡ ؕ اِنۡ کُنۡتُمۡ خَرَجۡتُمۡ جِہَادًا فِیۡ سَبِیۡلِیۡ وَابۡتِغَآءَ مَرۡضَاتِیۡ ٭ۖ تُسِرُّوۡنَ اِلَیۡہِمۡ بِالۡمَوَدَّۃِ ٭ۖ وَاَنَا اَعۡلَمُ بِمَاۤ اَخۡفَیۡتُمۡ وَمَاۤ اَعۡلَنۡتُمۡ ؕ وَمَنۡ یَّفۡعَلۡہُ مِنۡکُمۡ فَقَدۡ ضَلَّ سَوَآءَ السَّبِیۡلِ

اِنۡ یَّثۡقَفُوۡکُمۡ یَکُوۡنُوۡا لَکُمۡ اَعۡدَآءً وَّیَبۡسُطُوۡۤا اِلَیۡکُمۡ اَیۡدِیَہُمۡ وَاَلۡسِنَتَہُمۡ بِالسُّوۡٓءِ وَوَدُّوۡا لَوۡ تَکۡفُرُوۡنَ ؕ

মুমিনগণ, তোমরা আমার ও তোমাদের শত্রুদেরকে বন্ধরূপে গ্রহণ করো না। তোমরা তো তাদের প্রতি বন্ধুত্বের বার্তা পাঠাও, অথচ তারা যে সত্য তোমাদের কাছে আগমন করেছে, তা অস্বীকার করছে। তারা রসূলকে ও তোমাদেরকে বহিস্কার করে এই অপরাধে যে, তোমরা তোমাদের পালনকর্তার প্রতি বিশ্বাস রাখ। যদি তোমরা আমার সন্তুষ্টিলাভের জন্যে এবং আমার পথে জেহাদ করার জন্যে বের হয়ে থাক, তবে কেন তাদের প্রতি গোপনে বন্ধুত্বের পয়গাম প্রেরণ করছ? তোমরা যা গোপন কর এবং যা প্রকাশ কর, ত আমি খুব জানি। তোমাদের মধ্যে যে এটা করে, সে সরলপথ থেকে বিচ্যুত হয়ে যায়।

তোমাদেরকে করতলগত করতে পারলে তারা তোমাদের শত্রু হয়ে যাবে এবং মন্দ উদ্দেশ্যে তোমাদের প্রতি বাহু ও রসনা প্রসারিত করবে এবং চাইবে যে, কোনরূপে তোমরা ও কাফের হয়ে যাও।

(আল মুম্‌তাহিনাহ্‌ - 60:1-2)

নিজেদের গোপন বিষয় গুলো নিজেদের মধ্যে আমানত

یٰۤاَیُّہَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا لَا تَخُوۡنُوا اللّٰہَ وَالرَّسُوۡلَ وَتَخُوۡنُوۡۤا اَمٰنٰتِکُمۡ وَاَنۡتُمۡ تَعۡلَمُوۡنَ

হে ঈমানদারগণ, খেয়ানত করোনা আল্লাহর সাথে ও রসূলের সাথে এবং খেয়ানত করো না নিজেদের পারস্পরিক আমানতে জেনে-শুনে। (আল আনফাল  - 8:27)

وَاِنۡ کُنۡتُمۡ عَلٰی سَفَرٍ وَّلَمۡ تَجِدُوۡا کَاتِبًا فَرِہٰنٌ مَّقۡبُوۡضَۃٌ ؕ  فَاِنۡ اَمِنَ بَعۡضُکُمۡ بَعۡضًا فَلۡیُؤَدِّ الَّذِی اؤۡتُمِنَ اَمَانَتَہٗ وَلۡیَتَّقِ اللّٰہَ رَبَّہٗ ؕ  وَلَا تَکۡتُمُوا الشَّہَادَۃَ ؕ  وَمَنۡ یَّکۡتُمۡہَا فَاِنَّہٗۤ اٰثِمٌ قَلۡبُہٗ ؕ  وَاللّٰہُ بِمَا تَعۡمَلُوۡنَ عَلِیۡمٌ ٪

আর তোমরা যদি প্রবাসে থাক এবং কোন লেখক না পাও তবে বন্ধকী বন্তু হস্তগত রাখা উচিত। যদি একে অন্যকে বিশ্বাস করে, তবে যাকে বিশ্বাস করা হয়, তার উচিত অন্যের প্রাপ্য পরিশোধ করা এবং স্বীয় পালনকর্তা আল্লাহকে ভয় কর! তোমরা সাক্ষ্য গোপন করো না। যে কেউ তা গোপন করবে, তার অন্তর পাপপূর্ণ হবে। তোমরা যা করা, আল্লাহ সে সম্পর্কে খুব জ্ঞাত। (আল বাকারা 2:283)

রাসুল (সাঃ) খিয়ানত করা থেকে বেঁচে থাকার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ: كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ: «اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنَ الْجُوعِ، فَإِنَّهُ بِئْسَ الضَّجِيعُ، وَأَعُوذُ بِكَ مِنَ الْخِيَانَةِ، فَإِنَّهَا بِئْسَتِ الْبِطَانَةُ»

আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলতেনঃ হে আল্লাহ! আমি ক্ষুধা হতে আপনার নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করছি। কেননা তা অতি নিকৃষ্ট সঙ্গী। আর আমি আমানতে খিয়ানত করা হতে আপনার নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করছি। কেননা, তা অতি মন্দ চরিত্র। (সুনানে আন-নাসায়ী, হাদিস নং ৫৪৬৮)

আমানতের খেয়ানত ঈমানের ত্রুটি নির্দেশ করে

عَنْ أَنَسٍ قَالَ قَلَّمَا خَطَبَنَا رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللّٰهُ عَلَيْهِ وَسَلَّم إِلاَّ قَالَ لاَ إِيْمَانَ لِمَنْ لاَ أَمَانَةَ لَهُ وَلاَ دِيْنَ لِمَنْ لاَ عَهْدَ لَهُ.

আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আমাদেরকে এরূপ উপদেশ খুব কমই দিয়েছেন, যাতে একথাগুলি বলেননি যে, যার আমানতদারী নেই তার ঈমান নেই এবং যার অঙ্গীকারের মূল্য নেই তার দ্বীন-ধর্ম নেই (আহমাদ হা/১১৯৩৫, মিশকাত হা/৩৫, বাংলা মিশকাত হা/৩১)

আমানতের খিয়ানত করা মুনাফিকের লক্ষণ

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ ـ رضى الله عنه ـ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏ "‏ آيَةُ الْمُنَافِقِ ثَلاَثٌ إِذَا حَدَّثَ كَذَبَ، وَإِذَا اؤْتُمِنَ خَانَ، وَإِذَا وَعَدَ أَخَلَفَ ‏"‏‏.‏

আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, মুনাফিকের আলামত তিনটি- বলতে গেলে মিথ্যা বলে, আমানত রাখলে খিয়ানত করে, আর ওয়াদা করলে তা ভঙ্গ করে। (সহিহ বুখারী, হাদিস নং ২৬৮২)

খেয়ানত না করা পর্যন্ত দুই অংশীদারির মধ্যে আল্লাহ তাআলা তৃতীয়জন হিসেবে থাকেন

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ - رضي الله عنه - قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ - صلى الله عليه وسلم -: «قَالَ اللَّهُ: أَنَا ثَالِثُ الشَّرِيكَيْنِ مَا لَمْ يَخُنْ أَحَدُهُمَا صَاحِبَهُ، فَإِذَا خَانَ خَرَجْتُ مِنْ بَيْنِهِمَا» رَوَاهُ أَبُو دَاوُدَ، وَصَحَّحَهُ الْحَاكِمُ

আবূ হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)  বলেছেন, মহান আল্লাহ বলেছেন- যতক্ষণ দু'জন শরীকদার ব্যবসায়ে একে অপরের সাথে খিয়ানত (বিশ্বাসঘাতকতা) না করে ততক্ষণ আমি তাদের তৃতীয় শরীক হিসাবে (তাদের সহযোগিতা করতে) থাকি অতঃপর যখন খিয়ানত করে, তখন আমি তাদের মধ্য থেকে বেরিয়ে যাই (তারা আমাদের সহযোগিতা থেকে বঞ্চিত হয়) (বুলুগুল মারাম, হাদিস নং ৮৮০)


Download

Word | PDF | PowerPoint 

সহকর্মীদের সাথে ভালো ব্যবহারের গুরুত্ব | জুমুয়ার খুতবা

সহকর্মীদের সাথে ভালো ব্যবহারের গুরুত্ব
সহকর্মীদের সাথে ভালো ব্যবহারের গুরুত্ব
الحمد لله رب العالمين، والعاقبه للمتقين، والصلاه والسلام على سيدالانبياء والمرسلين وعلى اله واصحابه اجمعين، اشهدان لااله الاالله واشهدان محمداعبده ورسوله

সমস্ত প্রশংসা বিশ্ব জাহানের প্রতিপালক আল্লাহর জন্য। আর আল্লাহ ভীরুদের জন্য রয়েছে শুভ পরিণাম। দুরুদ ও সালাম প্রিয় নবী (সাঃ), তাঁর পরিবারবর্গ ও সমস্ত সাহাবাকেরামের প্রতি। আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, এক আল্লাহ ছাড়া অন্য কোন ইলাহ নেই। তাঁর কোন অংশীদার নেই। আমি আরো সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, মুহাম্মদ (সাঃ) আল্লাহর বান্দা ও রাসূল।

ايهاالحاضرون الكرام، موضوع الخطبه في هذه اليوم " أهمية السلوك الجيد مع الزملاء"

সম্মানিত উপস্থিতি! আজকে আমাদের খুতবার আলোচ্য বিষয় সহকর্মীদের সাথে ভালো ব্যবহারের গুরুত্ব

وَاعۡبُدُوا اللّٰہَ وَلَا تُشۡرِکُوۡا بِہٖ شَیۡئًا وَّبِالۡوَالِدَیۡنِ اِحۡسَانًا وَّبِذِی الۡقُرۡبٰی وَالۡیَتٰمٰی وَالۡمَسٰکِیۡنِ وَالۡجَارِ ذِی الۡقُرۡبٰی وَالۡجَارِ الۡجُنُبِ وَالصَّاحِبِ بِالۡجَنۡۢبِ وَابۡنِ السَّبِیۡلِ ۙ  وَمَا مَلَکَتۡ اَیۡمَانُکُمۡ ؕ  اِنَّ اللّٰہَ لَا یُحِبُّ مَنۡ کَانَ مُخۡتَالًا فَخُوۡرَا ۙ

(আন নিসা -4:36)

আর উপাসনা কর আল্লাহর, শরীক করো না তাঁর সাথে অপর কাউকে। পিতা-মাতার সাথে সৎ ও সদয় ব্যবহার কর এবং নিকটাত্নীয়, এতীম-মিসকীন, প্রতিবেশী, অসহায় মুসাফির এবং নিজের দাস-দাসীর প্রতিও। নিশ্চয়ই আল্লাহ পছন্দ করেন না দাম্ভিক-গর্বিতজনকে।

১। অধস্তন সহকর্মীর সাথে উর্ধ্বতন সহকর্মীর ভালো ব্যবহারের গুরুত্ব

ক) উর্ধ্বতন সহকর্মী অধিনস্থদের রক্ষক

عَنْ عَبْدِ اللَّهِ ـ رضى الله عنه ـ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ " كُلُّكُمْ رَاعٍ فَمَسْئُولٌ عَنْ رَعِيَّتِهِ، فَالأَمِيرُ الَّذِي عَلَى النَّاسِ رَاعٍ وَهْوَ مَسْئُولٌ عَنْهُمْ، وَالرَّجُلُ رَاعٍ عَلَى أَهْلِ بَيْتِهِ وَهْوَ مَسْئُولٌ عَنْهُمْ، وَالْمَرْأَةُ رَاعِيَةٌ عَلَى بَيْتِ بَعْلِهَا وَوَلَدِهِ وَهْىَ مَسْئُولَةٌ عَنْهُمْ، وَالْعَبْدُ رَاعٍ عَلَى مَالِ سَيِّدِهِ وَهْوَ مَسْئُولٌ عَنْهُ، أَلاَ فَكُلُّكُمْ رَاعٍ وَكُلُّكُمْ مَسْئُولٌ عَنْ رَعِيَّتِهِ "‏‏.

আবদুল্লাহ [ইবনু উমর (রাঃ)] থেকে বর্ণিতঃ নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, তোমরা প্রত্যেকেই দায়িত্বশীল। কাজেই প্রত্যেকেই নিজ অধীনস্থদের বিষয়ে জিজ্ঞাসার সম্মুখীন হবে। যেমন- জনগণের শাসক তাদের দায়িত্বশীল, কাজেই সে তাদের বিষয়ে জিজ্ঞাসিত হবে। একজন পুরুষ তার পরিবার পরিজনদের দায়িত্বশীল, কাজেই সে তাদের বিষয়ে জিজ্ঞাসিত হবে। স্ত্রী স্বামীর ঘরের এবং তার সন্তানের দায়িত্বশীল, কাজেই সে তাদের বিষয়ে জিজ্ঞাসিত হবে। আর ক্রীতদাস আপন মনিবের সম্পদের রক্ষণাবেক্ষণকারী। কাজেই সে বিষয়ে জিজ্ঞাসিত হবে। শোন! তোমরা প্রত্যেকেই দায়িত্বশীল। কাজেই প্রত্যেকেই আপন অধীনস্থদের বিষয়ে জিজ্ঞাসিত হবে। (সহিহ বুখারী, হাদিস নং ২৫৫৪)

খ) উর্ধ্বতন সহকর্মী অধিনস্থদের আমানতদার

عَنْ أَبِي ذَرٍّ، قَالَ قُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ أَلاَ تَسْتَعْمِلُنِي قَالَ فَضَرَبَ بِيَدِهِ عَلَى مَنْكِبِي ثُمَّ قَالَ " يَا أَبَا ذَرٍّ إِنَّكَ ضَعِيفٌ وَإِنَّهَا أَمَانَةٌ وَإِنَّهَا يَوْمَ الْقِيَامَةِ خِزْىٌ وَنَدَامَةٌ إِلاَّ مَنْ أَخَذَهَا بِحَقِّهَا وَأَدَّى الَّذِي عَلَيْهِ فِيهَا " .

আবূ যার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, আমি আবেদন করলাম, হে আল্লাহ্‌র রসূল! আপনি কি আমাকে প্রশাসক পদে প্রদান করবেন? রাবী বলেন, তিনি তখন তাঁর হাত দিয়ে আমার কাঁধে আঘাত করে বললেনঃ হে আবূ যার! তুমি দুর্বল অথচ এটি হচ্ছে একটি আমানাত। আর কিয়ামাতের দিন এ হবে লাঞ্ছনা ও অনুশোচনা। তবে যে এর হক সম্পূর্ণ আদায় করবে তার কথা ভিন্ন। (ই.ফা. ৪৫৬৮, ই.সে. ৪৫৭১) (সহিহ মুসলিম, হাদিস নং ৪৬১৩)

গ) অধিনস্থদের প্রতি নরম ও কোমল ব্যবহার করা

اللَّهُمَّ مَنْ وَلِيَ مِنْ أَمْرِ أُمَّتِي شَيْئًا فَشَقَّ عَلَيْهِمْ فَاشْقُقْ عَلَيْهِ وَمَنْ وَلِيَ مِنْ أَمْرِ أُمَّتِي شَيْئًا فَرَفَقَ بِهِمْ فَارْفُقْ بِهِ " .

রাসুলুল্লাহ (সাঃ) দোয়া করেন, হে আল্লাহ! যে আমার উম্মাতের কোনরূপ কর্তৃত্বভার লাভ করে এবং তাদের প্রতি কঠোরতা প্রদর্শন করে তুমি তার প্রতি কঠোর হও, আর যে আমার উম্মাতের উপর কোনরূপ কর্তৃত্ব লাভ করে তাদের প্রতি নম্র আচরণ করে তুমি তার প্রতি নম্র ও সদয় হও। (ই.ফা. ৪৫৭১, ই.সে. ৪৫৭৪)  (মুসলিম, হাদিস নং ৪৬১৬)

ঘ) অধিনস্থদের প্রতি সু-ধারণা পোষণ করা

عَنْ عَوْفِ بْنِ مَالِكٍ، عَنْ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ " خِيَارُ أَئِمَّتِكُمُ الَّذِينَ تُحِبُّونَهُمْ وَيُحِبُّونَكُمْ وَيُصَلُّونَ عَلَيْكُمْ وَتُصَلُّونَ عَلَيْهِمْ وَشِرَارُ أَئِمَّتِكُمُ الَّذِينَ تُبْغِضُونَهُمْ وَيُبْغِضُونَكُمْ وَتَلْعَنُونَهُمْ وَيَلْعَنُونَكُمْ " . قِيلَ يَا رَسُولَ اللَّهِ أَفَلاَ نُنَابِذُهُمْ بِالسَّيْفِ فَقَالَ " لاَ مَا أَقَامُوا فِيكُمُ الصَّلاَةَ وَإِذَا رَأَيْتُمْ مِنْ وُلاَتِكُمْ شَيْئًا تَكْرَهُونَهُ فَاكْرَهُوا عَمَلَهُ وَلاَ تَنْزِعُوا يَدًا مِنْ طَاعَةٍ " .

আওফ ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, তোমাদের সর্বোত্তম নেতা হচ্ছে তারাই যাদেরকে তোমরা ভালবাস আর তারাও তোমাদের ভালবাসে। তারা তোমাদের জন্য দুআ করে, তোমরাও তাদের জন্য দুআ কর। পক্ষান্তরে তোমাদের সর্ব নিকৃষ্ট নেতা হচ্ছে তারাই যাদেরকে তোমরা ঘৃণা কর আর তারাও তোমাদের ঘৃণা করে। তোমরা তাদেরকে অভিশাপ দাও আর তারাও তোমাদেরকে অভিশাপ দেয়। বলা হল, হে আল্লাহর রসূল! আমরা কি তাদেরকে তরবারি দ্বারা প্রতিহত করব না? তখন তিনি বললেন, না, যতক্ষণ পর্যন্ত তারা তোমাদের মধ্যে সলাত কায়িম রাখবে। আর যখন তোমাদের শাসকদের মধ্যে কোনরূপ অপছন্দনীয় কাজ দেখবে; তখন  তোমারা তাদের সে কাজকে ঘৃণা করবে; কিন্তু (তাদের) আনুগত্য থেকে হাত গুটিয়ে নেবে না। (ই.ফা. ৪৬৫১; ই.সে. ৪৬৫৩) (সহিহ মুসলিম, হাদিস নং ৪৬৯৮)

 

ঙ)  সৎ পরামর্শদাতা নিয়োগ ও পরামর্শ গ্রহণ করা

وَالَّذِیۡنَ اسۡتَجَابُوۡا لِرَبِّہِمۡ وَاَقَامُوا الصَّلٰوۃَ ۪  وَاَمۡرُہُمۡ شُوۡرٰی بَیۡنَہُمۡ ۪  وَمِمَّا رَزَقۡنٰہُمۡ یُنۡفِقُوۡنَ ۚ

যারা তাদের পালনকর্তার আদেশ মান্য করে, নামায কায়েম করে; পারস্পরিক পরামর্শক্রমে কাজ করে এবং আমি তাদেরকে যে রিযিক দিয়েছি, তা থেকে ব্যয় করে( আশ্‌-শূরা  42:38 )

عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " إِذَا أَرَادَ اللَّهُ بِالأَمِيرِ خَيْرًا جَعَلَ لَهُ وَزِيرَ صِدْقٍ إِنْ نَسِيَ ذَكَّرَهُ وَإِنْ ذَكَرَ أَعَانَهُ وَإِذَا أَرَادَ اللَّهُ بِهِ غَيْرَ ذَلِكَ جَعَلَ لَهُ وَزِيرَ سُوءٍ إِنْ نَسِيَ لَمْ يُذَكِّرْهُ وَإِنْ ذَكَرَ لَمْ يُعِنْهُ " .

আয়িশাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ আল্লাহ কোন রাষ্ট্রপ্রধানের কল্যাণের ইচ্ছা করলে তার জন্য একজন সৎপন্থী মন্ত্রীর ব্যবস্থা করেন। রাষ্ট্রপ্রধান ভুল করলে সে তা স্মরণ করিয়ে দেয়। আর তার স্মরণ থাকলে মন্ত্রী তাকে সহযোগিতা করেন। আর আল্লাহ তার অকল্যাণ চাইলে একজন খারাপ লোককে তার মন্ত্রী নিযুক্ত করেন। সে (আল্লাহর নির্দেশ) ভুলে গেলে মন্ত্রী তাকে তা স্মরণ করিয়ে দেয় না, আর তার স্মরণ থাকলে সে তাকে সহযোগিতা করে না।

(সুনানে আবু দাউদ, হাদিস নং ২৯৩২)

২। উর্ধ্বতন সহকর্মীর সাথে অধস্তন সহকর্মীর ভাল ব্যবহার

ক) আনুগত্য

یٰۤاَیُّہَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡۤا اَطِیۡعُوا اللّٰہَ وَاَطِیۡعُوا الرَّسُوۡلَ وَاُولِی الۡاَمۡرِ مِنۡکُمۡ ۚ  فَاِنۡ تَنَازَعۡتُمۡ فِیۡ شَیۡءٍ فَرُدُّوۡہُ اِلَی اللّٰہِ وَالرَّسُوۡلِ اِنۡ کُنۡتُمۡ تُؤۡمِنُوۡنَ بِاللّٰہِ وَالۡیَوۡمِ الۡاٰخِرِ ؕ  ذٰلِکَ خَیۡرٌ وَّاَحۡسَنُ تَاۡوِیۡلًا

হে ঈমানদারগণ! আল্লাহর নির্দেশ মান্য কর, নির্দেশ মান্য কর রসূলের এবং তোমাদের মধ্যে যারা বিচারক তাদের। তারপর যদি তোমরা কোন বিষয়ে বিবাদে প্রবৃত্ত হয়ে পড়, তাহলে তা আল্লাহ ও তাঁর রসূলের প্রতি প্রত্যর্পণ কর-যদি তোমরা আল্লাহ ও কেয়ামত দিবসের উপর বিশ্বাসী হয়ে থাক। আর এটাই কল্যাণকর এবং পরিণতির দিক দিয়ে উত্তম। (আন নিসা - 4:59)

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " عَلَيْكَ السَّمْعَ وَالطَّاعَةَ فِي عُسْرِكَ وَيُسْرِكَ وَمَنْشَطِكَ وَمَكْرَهِكَ وَأَثَرَةٍ عَلَيْكَ " .

আবূ হুরাইরাহ্‌ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, তুমি অবশ্যই আমীরের কথা শুনবে এবং মানবে তোমার সংকটকালে ও স্বাভাবিক সময়ে, অনুরাগ ও বিরাগে এবং যখন তোমার উপর অন্যকে অগ্রাধিকার দেয়া হচ্ছে তখনও। (ই.ফা. ৪৬০২, ই.সে. ৪৬০৪) (সহিহ মুসলিম, হাদিস নং ৪৬৪৮)

খ) অবাধ্য না হওয়া

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، عَنْ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم أَنَّهُ قَالَ " مَنْ أَطَاعَنِي فَقَدْ أَطَاعَ اللَّهَ وَمَنْ عَصَانِي فَقَدْ عَصَى اللَّهَ وَمَنْ أَطَاعَ أَمِيرِي فَقَدْ أَطَاعَنِي وَمَنْ عَصَى أَمِيرِي فَقَدْ عَصَانِي " .

আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) সূত্রে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, যে আমার আনুগত্য করলো, সে প্রকৃতপক্ষে আল্লাহরই আনুগত্য করলো। আর যে আমার অবাধ্যতা করলো সে প্রকৃতপক্ষে আল্লাহরই অবাধ্যতা করলো। আর যে ব্যক্তি আমার নিযুক্ত আমীরের আনুগত্য করলো সে আমারই আনুগত্য করলো, আর যে ব্যক্তি আমার নিযুক্ত আমীরের অবাধ্যতা করলো সে আমারই অবাধ্যতা করলো। (সহিহ মুসলিম, হাদিস নং ৪৬৪৩)

গ) কল্যাণ কামনা করা

 عَنْ تَمِيمٍ الدَّارِيِّ أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " الدِّينُ النَّصِيحَةُ " قُلْنَا لِمَنْ قَالَ " لِلَّهِ وَلِكِتَابِهِ وَلِرَسُولِهِ وَلأَئِمَّةِ الْمُسْلِمِينَ وَعَامَّتِهِمْ " .

তামীম আদ্‌ দারী (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ সদুপদেশ দেয়াই দীন। আমরা আরয করলাম, কার জন্য উপদেশ? তিনি বললেনঃ আল্লাহ ও তাঁর কিতাবের, তাঁর রসূলের, মুসলিম শাসক এবং মুসলিম জনগণের।  (ই.ফা. ১০২; ই.সে. ১০৪)(সহিহ মুসলিম, হাদিস নং ১০০)

৩। ধর্মীয় দৃষ্টিতে সহকর্মীদের সাথে ভালো ব্যবহার

ক) সহকর্মীদের প্রতি দায়িত্ব

کُنۡتُمۡ خَیۡرَ اُمَّۃٍ اُخۡرِجَتۡ لِلنَّاسِ تَاۡمُرُوۡنَ بِالۡمَعۡرُوۡفِ وَتَنۡہَوۡنَ عَنِ الۡمُنۡکَرِ وَتُؤۡمِنُوۡنَ بِاللّٰہِ ؕ وَلَوۡ اٰمَنَ اَہۡلُ الۡکِتٰبِ لَکَانَ خَیۡرًا لَّہُمۡ ؕ مِنۡہُمُ الۡمُؤۡمِنُوۡنَ وَاَکۡثَرُہُمُ الۡفٰسِقُوۡنَ

তোমরাই হলে সর্বোত্তম উম্মত, মানবজাতির কল্যানের জন্যেই তোমাদের উদ্ভব ঘটানো হয়েছে। তোমরা সৎকাজের নির্দেশ দান করবে ও অন্যায় কাজে বাধা দেবে এবং আল্লাহর প্রতি ঈমান আনবে। আর আহলে-কিতাবরা যদি ঈমান আনতো, তাহলে তা তাদের জন্য মঙ্গলকর হতো। তাদের মধ্যে কিছু তো রয়েছে ঈমানদার আর অধিকাংশই হলো পাপাচারী। (আল ইমরান  3:110)

 

وَالۡمُؤۡمِنُوۡنَ وَالۡمُؤۡمِنٰتُ بَعۡضُہُمۡ اَوۡلِیَآءُ بَعۡضٍ ۘ یَاۡمُرُوۡنَ بِالۡمَعۡرُوۡفِ وَیَنۡہَوۡنَ عَنِ الۡمُنۡکَرِ وَیُقِیۡمُوۡنَ الصَّلٰوۃَ وَیُؤۡتُوۡنَ الزَّکٰوۃَ وَیُطِیۡعُوۡنَ اللّٰہَ وَرَسُوۡلَہٗ ؕ اُولٰٓئِکَ سَیَرۡحَمُہُمُ اللّٰہُ ؕ اِنَّ اللّٰہَ عَزِیۡزٌ حَکِیۡمٌ

আর ঈমানদার পুরুষ ও ঈমানদার নারী একে অপরের সহায়ক। তারা ভাল কথার শিক্ষা দেয় এবং মন্দ থেকে বিরত রাখে। নামায প্রতিষ্ঠা করে, যাকাত দেয় এবং আল্লাহ ও তাঁর রসূলের নির্দেশ অনুযায়ী জীবন যাপন করে। এদেরই উপর আল্লাহ তাআলা দয়া করবেন। নিশ্চয়ই আল্লাহ পরাক্রমশীল, সুকৌশলী। (আত তাওবাহ্ - 9:71)

قَالَ أَبُو سَعِيدٍ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ " مَنْ رَأَى مِنْكُمْ مُنْكَرًا فَلْيُغَيِّرْهُ بِيَدِهِ فَإِنْ لَمْ يَسْتَطِعْ فَبِلِسَانِهِ فَإِنْ لَمْ يَسْتَطِعْ فَبِقَلْبِهِ وَذَلِكَ أَضْعَفُ الإِيمَانِ " .

 আবূ সাঈদ আল খুদরী (রাঃ)  বললেন,  আমি রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছি, তোমাদের কেউ গর্হিত কাজ হতে দেখলে সে যেন স্বহস্তে (শক্তি প্রয়োগে) পরিবর্তন করে দেয়, যদি তার সে ক্ষমতা না থাকে, তবে মুখ (বাক্য) দ্বারা এর পরিবর্তন করবে। আর যদি সে সাধ্যও না থাকে, তখন অন্তর দ্বারা করবে, তবে এটা ঈমানের দুর্বলতম পরিচায়ক। (ই.ফা. ৮৩; ই.সে. ৮৫) (সহিহ মুসলিম, হাদিস নং ৮১)

খ) পরস্পর সম্মান প্রদর্শন ও স্নেহ করা

 عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " مَنْ لَمْ يَرْحَمْ صَغِيرَنَا وَيَعْرِفْ حَقَّ كَبِيرِنَا فَلَيْسَ مِنَّا " .

আবদুল্লাহ ইবনু আমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি আমাদের ছোটদেরকে স্নেহ করে না এবং আমাদের বড়দেরকে সম্মান করে না সে আমাদের অন্তর্ভুক্ত নয়। (সুনানে আবু দাউদ, হাদিস নং ৪৯৪৩)

৪। সামাজিকতার দৃষ্টিতে সহকর্মীদের সাথে ভালো ব্যবহার

ক) ভ্রাতৃত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তোলা

اِنَّمَا الۡمُؤۡمِنُوۡنَ اِخۡوَۃٌ فَاَصۡلِحُوۡا بَیۡنَ اَخَوَیۡکُمۡ وَاتَّقُوا اللّٰہَ لَعَلَّکُمۡ تُرۡحَمُوۡنَ

মুমিনরা তো পরস্পর ভাই-ভাই। অতএব, তোমরা তোমাদের দুই ভাইয়ের মধ্যে মীমাংসা করবে এবং আল্লাহকে ভয় করবে-যাতে তোমরা অনুগ্রহপ্রাপ্ত হও। (আল হুজরাত - 49:10)

খ) সহযোগীতার মনোভাব রাখা

 ۘ وَتَعَاوَنُوۡا عَلَی الۡبِرِّ وَالتَّقۡوٰی ۪ وَلَا تَعَاوَنُوۡا عَلَی الۡاِثۡمِ وَالۡعُدۡوَانِ ۪ وَاتَّقُوا اللّٰہَ ؕ اِنَّ اللّٰہَ شَدِیۡدُ الۡعِقَابِ


 সৎকর্ম ও খোদাভীতিতে একে অন্যের সাহায্য কর। পাপ ও সীমালঙ্ঘনের ব্যাপারে একে অন্যের সহায়তা করো না। আল্লাহকে ভয় কর। নিশ্চয় আল্লাহ তাআলা কঠোর শাস্তিদাতা। (আল মায়িদাহ - 5:2)

গ) স্বার্থপরতা পরিত্যাগ করা

 وَیُؤۡثِرُوۡنَ عَلٰۤی اَنۡفُسِہِمۡ وَلَوۡ کَانَ بِہِمۡ خَصَاصَۃٌ ؕ۟  وَمَنۡ یُّوۡقَ شُحَّ نَفۡسِہٖ فَاُولٰٓئِکَ ہُمُ الۡمُفۡلِحُوۡنَ ۚ

নিজেরা অভাবগ্রস্ত হলেও তাদেরকে অগ্রাধিকার দান করে। যারা মনের কার্পণ্য থেকে মুক্ত, তারাই সফলকাম। (আল হাশ্‌র - 59:9)

ঘ)  পরমত সহিষ্ণুতা

یٰۤاَیُّہَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوا اصۡبِرُوۡا وَصَابِرُوۡا وَرَابِطُوۡا ۟  وَاتَّقُوا اللّٰہَ لَعَلَّکُمۡ تُفۡلِحُوۡنَ

হে ঈমানদানগণ! ধৈর্য্য ধারণ কর এবং মোকাবেলায় দৃঢ়তা অবলম্বন কর। আর আল্লাহকে ভয় করতে থাক যাতে তোমরা তোমাদের উদ্দেশ্য লাভে সমর্থ হতে পার। (আল ইমরান - 3:200)

بارك الله لي ولكم في القرآن العظيم، ونفعني وإياكم بالآيات والذكر الحكيم،  أستغفر الله لي ولكم، ولسائر المسلمين من كل ذنب فاستغفروه إنه هو الغفور الرحيم.

মহান আল্লাহ তাআলা মহাগ্রন্থ আল কুরআনের মাধ্যমে আমাকে ও আপনাকে বরকত দান করুন এবং তাঁর আয়াত সমূহ ও শিক্ষণীয় বাণী দ্বারা উপকৃত করুন।আমি আল্লাহর কাছে আমার নিজের,আপনাদের এবং পৃথিবীর সকল মুসলমানের পক্ষ থেকে সকল পাপের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করছি। আমি আবারো ক্ষমা প্রার্থনা করছি কেননা তিনি ক্ষমাশীল এবং দয়াময়।

Download

Word | PDF |  PowerPoint