বেশিরভাগ স্ট্রোকের কারন! এবং স্ট্রোক থেকে বাঁচতে হাদিসের ভূমিকা

সাধারণত বাথরুমেই বেশি স্ট্রোক হয়ে থাকে কেন? এবং স্ট্রোক থেকে বাঁচার ক্ষেত্রে হাদিসের ভূমিকা
বেশিরভাগ স্ট্রোকের কারন! এবং স্ট্রোক থেকে বাঁচতে হাদিসের ভূমিকা

 সাধারণত বাথরুমেই বেশি স্ট্রোক হয়ে থাকে কেন? এবং স্ট্রোক থেকে বাঁচার ক্ষেত্রে হাদিসের ভূমিকা

স্ট্রোক সাধারণত বাথরুমেই বেশি হয়ে থাকে কারন, বাথরুমে ঢুকে গোসল করার সময় আমরা প্রথমেই মাথা এবং চুল ভেজাই যা একদম উচিৎ নয়। চিকিৎসা বিজ্ঞানের মতে এটি একটি ভুল পদ্ধতি। এইভাবে প্রথমেই মাথায় পানি দিলে রক্ত দ্রুত মাথায় উঠে যায় এবং কৈশিক ও ধমনী একসাথে ছিঁড়ে যেতে পারে। ফলস্বরূপ ঘটে স্ট্রোক অতঃপর মাটিতে পড়ে যাওয়া।

কানাডার মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন জার্নালে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, স্ট্রোক বা মিনি স্ট্রোকের কারণে যে ধরনের ঝুঁকির কথা আগে ধারণা করা হতো, প্রকৃতপক্ষে এই ঝুঁকি দীর্ঘস্থায়ী এবং আরও ভয়াবহ। বিশ্বের একাধিক গবেষণা রিপোর্ট অনুযায়ী, গোসলের সময় স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু বা পক্ষাঘাতে আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা দিনের পর দিন বেড়েই চলেছে। চিকিৎসকদের মতে, গোসল করার সময় কিছু নিয়ম মেনে গোসল করা উচিত।

সঠিক নিয়ম মেনে গোসল না করলে হতে পারে মৃত্যুও। গোসল করার সময় প্রথমেই মাথা এবং চুল ভেজানো একদম উচিৎ নয়। কারণ, মানুষের শরীরে রক্ত সঞ্চালন একটা নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় হয়ে থাকে। শরীরের তাপমাত্রা বাইরের তাপমাত্রার সঙ্গে মানিয়ে নিতে কিছুটা সময় লাগে। চিকিৎসকদের মতে, মাথায় প্রথমেই পানি দিলে সঙ্গে সঙ্গে রক্ত সঞ্চালনের গতি বহু গুণ বেড়ে যায়। সেসময় বেড়ে যেতে পারে স্ট্রোকের ঝুঁকিও। তা ছাড়া মাত্রাতিরিক্ত রক্তচাপের ফলে মস্তিষ্কের ধমনী ছিঁড়ে যেতে পারে।

গোসলের সঠিক নিয়ম

প্রথমে পায়ের পাতা ভেজাতে হবে। এরপর আস্তে আস্তে উপর দিকে কাঁধ পর্যন্ত ভেজাতে হবে। তারপর মুখে পানি দিতে হবে। সবার শেষে মাথায় পানি দেওয়া উচিত। এই পদ্ধতি যাদের উচ্চ রক্তচাপ, উচ্চ কোলেস্টেরল এবং মাইগ্রেন আছে তাদের অবশ্যই পালন করা উচিৎ এই তথ্যগুলো বয়স্ক মা-বাবা এবং আত্মীয় পরিজনদের অবশ্যই জানিয়ে রাখুন।

(উপরের লিখা গুলো হল একজন ডাক্তারের ফেসবুক স্টাটাস।)

উনার কথার সারমর্ম হল গোছলের আগে সরাসরি মাথায় পানি না দিয়ে হাত, পা, মুখ ইত্যাদি ভেজাতে হবে। শরীরকে গোসলের জন্য এভাবেই প্রস্তুত করে তার পরেই মাথায় পানি ডালতে হবে।

অথচ, বিশ্বনবী (সাঃ) আজ থেকে প্রায় ১৪০০ বছর আগেই বলে গেছেন গোছলের আগে নামাজের অজুর মত অজু করার জন্য। সুবহানাল্লাহ!

عَنْ عَائِشَةَ، زَوْجِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم كَانَ إِذَا اغْتَسَلَ مِنَ الْجَنَابَةِ بَدَأَ فَغَسَلَ يَدَيْهِ، ثُمَّ يَتَوَضَّأُ كَمَا يَتَوَضَّأُ لِلصَّلاَةِ، ثُمَّ يُدْخِلُ أَصَابِعَهُ فِي الْمَاءِ، فَيُخَلِّلُ بِهَا أُصُولَ شَعَرِهِ ثُمَّ يَصُبُّ عَلَى رَأْسِهِ ثَلاَثَ غُرَفٍ بِيَدَيْهِ، ثُمَّ يُفِيضُ الْمَاءَ عَلَى جِلْدِهِ كُلِّهِ‏.

আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যখন জানাবাতের গোসল করতেন, তখন প্রথমে তাঁর হাত দু'টো ধুয়ে নিতেন। অতঃপর সালাতের উযূর মত উযূ করতেন। অতঃপর তাঁর আঙ্গুলগুলো পানিতে ডুবিয়ে নিয়ে চুলের গোড়া খিলাল করতেন। অতঃপর তাঁর উভয় হাতের তিন আঁজলা পানি মাথায় ঢালতেন। তারপর তাঁর সারা দেহের উপর পানি ঢেলে দিতেন।

(২৬২, ২৭২; মুসলিম ৩/৯, হাঃ ৩১৬, আহমাদ ২৫৭০৪) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ২৪১, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ২৪৬) সহিহ বুখারী, হাদিস নং ২৪৮

শেষকথাঃ রাসূল সাঃ এর সুন্নত অনুসরণ করার মাধ্যমে এভাবেই আমরা নানা সমস্যা থেকে বেঁচে থাকতে পারি। সুন্নত অনুসরণ করার কারনে শুধু যে পরকালে কল্যাণ বিষয়টা এমন নয়। পরকালে তো কল্যাণ আছেই। দুনিয়াতেও অনেক উপকার রয়েছে। তাই আমাদের উচিত প্রিয় নবী (সাঃ) এর সুন্নত অনুসরণ করার মাধ্যমে জীবন পরিচালিত করা।