পবিত্র মাহে রমজানের
৭ম তারাবীতে তেলাওয়াত করা হবে সুরা আনফাল এর ৪১ নং আয়াত থেকে সুরা তাওবার এর ৯৩ নং
আয়াত পর্যন্ত। অর্থাৎ ১০ম পারার ১ম পৃষ্ঠা থেকে শেষ পর্যন্ত। তেলাওয়াতের অংশ থেকে
উল্লেখযোগ্য কয়েকটি আয়াত
১। শত্রুর
মোকাবেলায় সুদৃঢ় থাকার নির্দেশ
یٰۤاَیُّہَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡۤا اِذَا لَقِیۡتُمۡ
فِئَۃً فَاثۡبُتُوۡا وَاذۡکُرُوا اللّٰہَ کَثِیۡرًا لَّعَلَّکُمۡ تُفۡلِحُوۡنَ ۚ
হে ঈমানদারগণ, তোমরা যখন কোন বাহিনীর সাথে সংঘাতে লিপ্ত হও, তখন সুদৃঢ় থাক এবং আল্লাহকে অধিক পরিমাণে স্মরণ কর যাতে তোমরা
উদ্দেশ্যে কৃতকার্য হতে পার। (সূরা আনফাল ৮:৪৫)
২। আল্লাহ
এবং রাসূল (সাঃ) এর আনুগত্য
وَاَطِیۡعُوا اللّٰہَ وَرَسُوۡلَہٗ وَلَا تَنَازَعُوۡا
فَتَفۡشَلُوۡا وَتَذۡہَبَ رِیۡحُکُمۡ وَاصۡبِرُوۡا ؕ اِنَّ اللّٰہَ مَعَ
الصّٰبِرِیۡنَ ۚ
আর আল্লাহ তা’আলার নির্দেশ মান্য
কর এবং তাঁর রসূলের। তাছাড়া তোমরা পরস্পরে বিবাদে লিপ্ত হইও না। যদি তা কর, তবে তোমরা কাপুরুষ হয়ে পড়বে এবং তোমাদের প্রভাব চলে যাবে।
আর তোমরা ধৈর্য্যধারণ কর। নিশ্চয়ই আল্লাহ তা'আলা রয়েছেন ধৈর্য্যশীলদের সাথে। (সূরা আনফাল ৮:৪৬)
৩। কাফেরদের
সাথে সন্ধির আদেশ
وَاِنۡ جَنَحُوۡا لِلسَّلۡمِ فَاجۡنَحۡ لَہَا
وَتَوَکَّلۡ عَلَی اللّٰہِ ؕ اِنَّہٗ ہُوَ السَّمِیۡعُ الۡعَلِیۡمُ
আর যদি তারা সন্ধি
করতে আগ্রহ প্রকাশ করে, তাহলে তুমিও সে দিকেই
আগ্রহী হও এবং আল্লাহর উপর ভরসা কর। নিঃসন্দেহে তিনি শ্রবণকারী; পরিজ্ঞাত। (সূরা আনফাল ৮:৬১)
৪। মুমিনদের
জন্য আল্লাহই যথেষ্ঠ
یٰۤاَیُّہَا النَّبِیُّ حَسۡبُکَ اللّٰہُ وَمَنِ
اتَّبَعَکَ مِنَ الۡمُؤۡمِنِیۡنَ
হে নবী, আপনার জন্য এবং যেসব মুসলমান আপনার সাথে রয়েছে তাদের সবার জন্য
আল্লাহ যথেষ্ট। (সূরা আনফাল ৮:৬৪)
৫। মুমিনদের
যুদ্ধের জন্য উৎসাহিত করা
یٰۤاَیُّہَا النَّبِیُّ حَرِّضِ الۡمُؤۡمِنِیۡنَ عَلَی
الۡقِتَالِ ؕ اِنۡ یَّکُنۡ مِّنۡکُمۡ عِشۡرُوۡنَ صٰبِرُوۡنَ یَغۡلِبُوۡا مِائَتَیۡنِ ۚ
وَاِنۡ یَّکُنۡ مِّنۡکُمۡ مِّائَۃٌ یَّغۡلِبُوۡۤا اَلۡفًا مِّنَ الَّذِیۡنَ
کَفَرُوۡا بِاَنَّہُمۡ قَوۡمٌ لَّا یَفۡقَہُوۡنَ
হে নবী, আপনি মুসলমানগণকে উৎসাহিত করুন জেহাদের জন্য। তোমাদের মধ্যে
যদি বিশ জন দৃঢ়পদ ব্যক্তি থাকে, তবে জয়ী হবে দু’শর মোকাবেলায়। আর
যদি তোমাদের মধ্যে থাকে একশ লোক, তবে জয়ী হবে হাজার কাফেরের উপর থেকে তার কারণ ওরা জ্ঞানহীন। (সূরা আনফাল ৮:৬৫)
৬। অবিশ্বাসীরা
পরস্পর বন্ধু
وَالَّذِیۡنَ کَفَرُوۡا بَعۡضُہُمۡ اَوۡلِیَآءُ
بَعۡضٍ ؕ اِلَّا تَفۡعَلُوۡہُ تَکُنۡ فِتۡنَۃٌ فِی الۡاَرۡضِ وَفَسَادٌ کَبِیۡرٌ ؕ
আর যারা কাফের তারা
পারস্পরিক সহযোগী, বন্ধু। তোমরা যদি
এমন ব্যবস্থা না কর, তবে দাঙ্গা-হাঙ্গামা
বিস্তার লাভ করবে এবং দেশময় বড়ই অকল্যাণ হবে। (সূরা আনফাল ৮:৭৩)
৭। সত্যিকার
মুসলমান
وَالَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا وَہَاجَرُوۡا وَجٰہَدُوۡا فِیۡ
سَبِیۡلِ اللّٰہِ وَالَّذِیۡنَ اٰوَوۡا وَّنَصَرُوۡۤا اُولٰٓئِکَ ہُمُ
الۡمُؤۡمِنُوۡنَ حَقًّا ؕ لَہُمۡ مَّغۡفِرَۃٌ وَّرِزۡقٌ کَرِیۡمٌ
আর যারা ঈমান এনেছে, নিজেদের ঘর-বাড়ী ছেড়েছে এবং আল্লাহর রাহে জেহাদ করেছে এবং যারা
তাদেরকে আশ্রয় দিয়েছে, সাহায্য-সহায়তা করেছে, তাঁরা হলো সত্যিকার মুসলমান। তাঁদের জন্যে রয়েছে, ক্ষমা ও সম্মানজনক রুযী। (সূরা আনফাল ৮:৭৪)
৮। যে
কেউ আশ্রয় চাইলে আশ্রয় দেয়া
وَاِنۡ اَحَدٌ مِّنَ الۡمُشۡرِکِیۡنَ اسۡتَجَارَکَ
فَاَجِرۡہُ حَتّٰی یَسۡمَعَ کَلٰمَ اللّٰہِ ثُمَّ اَبۡلِغۡہُ مَاۡمَنَہٗ ؕ ذٰلِکَ
بِاَنَّہُمۡ قَوۡمٌ لَّا یَعۡلَمُوۡنَ ٪
আর মুশরিকদের কেউ
যদি তোমার কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করে, তবে তাকে আশ্রয় দেবে, যাতে সে আল্লাহর
কালাম শুনতে পায়, অতঃপর তাকে তার নিরাপদ
স্থানে পৌছে দেবে। এটি এজন্যে যে এরা জ্ঞান রাখে না। (সূরা আত তাওবাহ ৯:৬)
৯। কুরআনের
আয়াত বিক্রি
اِشۡتَرَوۡا بِاٰیٰتِ اللّٰہِ ثَمَنًا قَلِیۡلًا
فَصَدُّوۡا عَنۡ سَبِیۡلِہٖ ؕ اِنَّہُمۡ سَآءَ مَا کَانُوۡا یَعۡمَلُوۡنَ
তারা আল্লাহর আয়াত
সমূহ নগন্য মুল্যে বিক্রয় করে, অতঃপর লোকদের নিবৃত
রাখে তাঁর পথ থেকে, তারা যা করে চলছে, তা অতি নিকৃষ্ট। (সূরা আত তাওবাহ
৯:৯)
১০। দ্বীনি
ভাই কারা?
فَاِنۡ تَابُوۡا وَاَقَامُوا الصَّلٰوۃَ وَاٰتَوُا
الزَّکٰوۃَ فَاِخۡوَانُکُمۡ فِی الدِّیۡنِ ؕ وَنُفَصِّلُ الۡاٰیٰتِ لِقَوۡمٍ یَّعۡلَمُوۡنَ
অবশ্য তারা যদি তওবা
করে,
নামায কায়েম করে আর যাকাত আদায় করে, তবে তারা তোমাদের দ্বীনী ভাই। আর আমি বিধানসমূহে জ্ঞানী লোকদের
জন্যে সর্বস্তরে র্বণনা করে থাকি। (সূরা আত তাওবাহ
৯:১১)
১১। বন্ধু
হিসেবে কাদেরকে বাছাই করতে হবে?
اَمۡ حَسِبۡتُمۡ اَنۡ تُتۡرَکُوۡا وَلَمَّا یَعۡلَمِ
اللّٰہُ الَّذِیۡنَ جٰہَدُوۡا مِنۡکُمۡ وَلَمۡ یَتَّخِذُوۡا مِنۡ دُوۡنِ اللّٰہِ
وَلَا رَسُوۡلِہٖ وَلَا الۡمُؤۡمِنِیۡنَ وَلِیۡجَۃً ؕ وَاللّٰہُ خَبِیۡرٌۢ بِمَا
تَعۡمَلُوۡنَ
তোমরা কি মনে কর
যে,
তোমাদের ছেড়ে দেয়া হবে এমনি, যতক্ষণ না আল্লাহ জেনে নেবেন তোমাদের কে যুদ্ধ করেছে এবং কে আল্লাহ, তাঁর রসূল ও মুসলমানদের ব্যতীত অন্য কাউকে অন্তরঙ্গ বন্ধুরূপে
গ্রহণ করা থেকে বিরত রয়েছে। আর তোমরা যা কর সে বিষয়ে আল্লাহ সবিশেষ অবহিত। (সূরা আত তাওবাহ ৯:১৬)
১২। মসজিদ
কারা পরিচালনা করবে?
اِنَّمَا یَعۡمُرُ مَسٰجِدَ اللّٰہِ مَنۡ اٰمَنَ
بِاللّٰہِ وَالۡیَوۡمِ الۡاٰخِرِ وَاَقَامَ الصَّلٰوۃَ وَاٰتَی الزَّکٰوۃَ وَلَمۡ یَخۡشَ
اِلَّا اللّٰہَ فَعَسٰۤی اُولٰٓئِکَ اَنۡ یَّکُوۡنُوۡا مِنَ الۡمُہۡتَدِیۡنَ
নিঃসন্দেহে তারাই
আল্লাহর মসজিদ আবাদ করবে যারা ঈমান এনেছে আল্লাহর প্রতি ও শেষ দিনের প্রতি এবং কায়েম
করেছে নামায ও আদায় করে যাকাত; আল্লাহ ব্যতীত আর
কাউকে ভয় করে না। অতএব, আশা করা যায়, তারা হেদায়েত প্রাপ্তদের অন্তর্ভূক্ত হবে। (সূরা আত তাওবাহ ৯:১৮)
১৩। আপনজন
অবিশ্বাসী হলে তাদের অনুসরণ করা যাবেনা
یٰۤاَیُّہَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا لَا تَتَّخِذُوۡۤا
اٰبَآءَکُمۡ وَاِخۡوَانَکُمۡ اَوۡلِیَآءَ اِنِ اسۡتَحَبُّوا الۡکُفۡرَ عَلَی
الۡاِیۡمَانِ ؕ وَمَنۡ یَّتَوَلَّہُمۡ مِّنۡکُمۡ فَاُولٰٓئِکَ ہُمُ الظّٰلِمُوۡنَ
হে ঈমানদারগণ! তোমরা
স্বীয় পিতা ও ভাইদের অভিভাবকরূপে গ্রহণ করো না, যদি তারা ঈমান অপেক্ষা কুফরকে ভালবাসে। আর তোমাদের যারা তাদের অভিভাবকরূপে গ্রহণ
করে তারা সীমালংঘনকারী। (সূরা আত তাওবাহ ৯:২৩)
১৪। মুশরিকরা
অপবিত্র
یٰۤاَیُّہَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡۤا اِنَّمَا
الۡمُشۡرِکُوۡنَ نَجَسٌ فَلَا یَقۡرَبُوا الۡمَسۡجِدَ الۡحَرَامَ بَعۡدَ عَامِہِمۡ
ہٰذَا ۚ وَاِنۡ خِفۡتُمۡ عَیۡلَۃً فَسَوۡفَ یُغۡنِیۡکُمُ اللّٰہُ مِنۡ فَضۡلِہٖۤ
اِنۡ شَآءَ ؕ اِنَّ اللّٰہَ عَلِیۡمٌ حَکِیۡمٌ
হে ঈমানদারগণ! মুশরিকরা
তো অপবিত্র। সুতরাং এ বছরের পর তারা যেন মসজিদুল-হারামের নিকট না আসে। আর যদি তোমরা
দারিদ্রের আশংকা কর, তবে আল্লাহ চাইলে
নিজ করুনায় ভবিষ্যতে তোমাদের অভাবমুক্ত করে দেবেন। নিঃসন্দেহে আল্লাহ সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়। (সূরা আত তাওবাহ
৯:২৮)
১৫। আল্লাহর
নূরকে কেউ নেভাতে পারবে না
یُرِیۡدُوۡنَ اَنۡ یُّطۡفِـُٔوۡا نُوۡرَ اللّٰہِ
بِاَفۡوَاہِہِمۡ وَیَاۡبَی اللّٰہُ اِلَّاۤ اَنۡ یُّتِمَّ نُوۡرَہٗ وَلَوۡ کَرِہَ
الۡکٰفِرُوۡنَ
তারা তাদের মুখের
ফুৎকারে আল্লাহর নূরকে নির্বাপিত করতে চায়। কিন্তু আল্লাহ অবশ্যই তাঁর নূরের পূর্ণতা
বিধান করবেন, যদিও কাফেররা তা অপ্রীতিকর মনে করে।
(সূরা আত তাওবাহ ৯:৩২)
১৬। যাকাত
আদায়ের খাতসমূহ
اِنَّمَا الصَّدَقٰتُ لِلۡفُقَرَآءِ وَالۡمَسٰکِیۡنِ
وَالۡعٰمِلِیۡنَ عَلَیۡہَا وَالۡمُؤَلَّفَۃِ قُلُوۡبُہُمۡ وَفِی الرِّقَابِ
وَالۡغٰرِمِیۡنَ وَفِیۡ سَبِیۡلِ اللّٰہِ وَابۡنِ السَّبِیۡلِ ؕ فَرِیۡضَۃً مِّنَ
اللّٰہِ ؕ وَاللّٰہُ عَلِیۡمٌ حَکِیۡمٌ
যাকাত হল কেবল ফকির, মিসকীন, যাকাত আদায় কারী
ও যাদের চিত্ত আকর্ষণ প্রয়োজন তাদে হক এবং তা দাস-মুক্তির জন্যে-ঋণ গ্রস্তদের জন্য, আল্লাহর পথে জেহাদকারীদের জন্যে এবং মুসাফিরদের জন্যে, এই হল আল্লাহর নির্ধারিত বিধান। আল্লাহ সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়। (সূরা আত তাওবাহ
৯:৬০)
১৭। ঈমানদারের
বৈশিষ্ট্য
وَالۡمُؤۡمِنُوۡنَ وَالۡمُؤۡمِنٰتُ بَعۡضُہُمۡ اَوۡلِیَآءُ
بَعۡضٍ ۘ یَاۡمُرُوۡنَ بِالۡمَعۡرُوۡفِ وَیَنۡہَوۡنَ عَنِ الۡمُنۡکَرِ وَیُقِیۡمُوۡنَ
الصَّلٰوۃَ وَیُؤۡتُوۡنَ الزَّکٰوۃَ وَیُطِیۡعُوۡنَ اللّٰہَ وَرَسُوۡلَہٗ ؕ
اُولٰٓئِکَ سَیَرۡحَمُہُمُ اللّٰہُ ؕ اِنَّ اللّٰہَ عَزِیۡزٌ حَکِیۡمٌ
আর ঈমানদার পুরুষ
ও ঈমানদার নারী একে অপরের সহায়ক। তারা ভাল কথার শিক্ষা দেয় এবং মন্দ থেকে বিরত রাখে।
নামায প্রতিষ্ঠা করে, যাকাত দেয় এবং আল্লাহ
ও তাঁর রসূলের নির্দেশ অনুযায়ী জীবন যাপন করে। এদেরই উপর আল্লাহ তা’আলা দয়া করবেন। নিশ্চয়ই
আল্লাহ পরাক্রমশীল, সুকৌশলী। (সূরা আত তাওবাহ ৯:৭১)
১৮। মুনাফিকদের
সাথে কঠোর হওয়ার নির্দেশ
یٰۤاَیُّہَا النَّبِیُّ جَاہِدِ الۡکُفَّارَ
وَالۡمُنٰفِقِیۡنَ وَاغۡلُظۡ عَلَیۡہِمۡ ؕ وَمَاۡوٰىہُمۡ جَہَنَّمُ ؕ وَبِئۡسَ
الۡمَصِیۡرُ
হে নবী, কাফেরদের সাথে যুদ্ধ করুন এবং মুনাফেকদের সাথে তাদের সাথে কঠোরতা
অবলম্বন করুন। তাদের ঠিকানা হল দোযখ এবং তাহল নিকৃষ্ট ঠিকানা। (সূরা আত তাওবাহ ৯:৭৩)
পরবর্তী সকল আপডেট পেতে এখানে ক্লিক করে আমাদের Facebook পেজে ফলো করুন।
WhatsApp গ্রুপ
লিংক