পবিত্র মাহে রমজানের
৮ম তারাবীতে তেলাওয়াত করা হবে সুরা তাওবার এর ৯৪ নং আয়াত থেকে সূরা হুদ এর ৫ নং পর্যন্ত।
অর্থাৎ ১১ম পারার ১ম পৃষ্ঠা থেকে শেষ পর্যন্ত। তেলাওয়াতের অংশ থেকে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি
আয়াত
১।
জিদের বশে মসজিদ নির্মাণ
وَالَّذِیۡنَ اتَّخَذُوۡا مَسۡجِدًا
ضِرَارًا وَّکُفۡرًا وَّتَفۡرِیۡقًۢا بَیۡنَ الۡمُؤۡمِنِیۡنَ وَاِرۡصَادًا لِّمَنۡ
حَارَبَ اللّٰہَ وَرَسُوۡلَہٗ مِنۡ قَبۡلُ ؕ وَلَیَحۡلِفُنَّ اِنۡ اَرَدۡنَاۤ
اِلَّا الۡحُسۡنٰی ؕ وَاللّٰہُ یَشۡہَدُ اِنَّہُمۡ لَکٰذِبُوۡنَ
আর যারা নির্মাণ
করেছে মসজিদ জিদের বশে এবং কুফরীর তাড়নায় মুমিনদের মধ্যে বিভেদ সৃস্টির উদ্দেশ্যে
এবং ঐ লোকের জন্য ঘাটি স্বরূপ যে পূর্ব থেকে আল্লাহ ও তাঁর রসূলের সাথে যুদ্ধ করে
আসছে,
আর তারা অবশ্যই শপথ করবে যে, আমরা কেবল কল্যাণই চেয়েছি। পক্ষান্তরে আল্লাহ সাক্ষী যে, তারা সবাই মিথ্যুক। (সুরা আত তাওবাহ ৯:১০৭)
২।
মুমিনের জান-মালের বিনিময়ে জান্নাত
اِنَّ اللّٰہَ اشۡتَرٰی مِنَ
الۡمُؤۡمِنِیۡنَ اَنۡفُسَہُمۡ وَاَمۡوَالَہُمۡ بِاَنَّ لَہُمُ الۡجَنَّۃَ ؕ
یُقَاتِلُوۡنَ فِیۡ سَبِیۡلِ اللّٰہِ فَیَقۡتُلُوۡنَ وَیُقۡتَلُوۡنَ ۟ وَعۡدًا
عَلَیۡہِ حَقًّا فِی التَّوۡرٰىۃِ وَالۡاِنۡجِیۡلِ وَالۡقُرۡاٰنِ ؕ وَمَنۡ اَوۡفٰی
بِعَہۡدِہٖ مِنَ اللّٰہِ فَاسۡتَبۡشِرُوۡا بِبَیۡعِکُمُ الَّذِیۡ بَایَعۡتُمۡ
بِہٖ ؕ وَذٰلِکَ ہُوَ الۡفَوۡزُ الۡعَظِیۡمُ
আল্লাহ ক্রয় করে
নিয়েছেন মুসলমানদের থেকে তাদের জান ও মাল এই মূল্যে যে, তাদের জন্য রয়েছে জান্নাত। তারা যুদ্ধ করে আল্লাহর রাহেঃ
অতঃপর মারে ও মরে। তওরাত, ইঞ্জিল ও
কোরআনে তিনি এ সত্য প্রতিশ্রুতিতে অবিচল। আর আল্লাহর চেয়ে প্রতিশ্রুতি রক্ষায় কে
অধিক?
সুতরাং তোমরা আনন্দিত হও সে লেন-দেনের উপর, যা তোমরা করছ তাঁর সাথে। আর এ হল মহান সাফল্য। (সুরা আত তাওবাহ
৯:১১১)
৩।
মুমিনের গুণাবলী
اَلتَّآئِبُوۡنَ الۡعٰبِدُوۡنَ
الۡحٰمِدُوۡنَ السَّآئِحُوۡنَ الرّٰکِعُوۡنَ السّٰجِدُوۡنَ الۡاٰمِرُوۡنَ
بِالۡمَعۡرُوۡفِ وَالنَّاہُوۡنَ عَنِ الۡمُنۡکَرِ وَالۡحٰفِظُوۡنَ لِحُدُوۡدِ
اللّٰہِ ؕ وَبَشِّرِ الۡمُؤۡمِنِیۡنَ
তারা তওবাকারী, এবাদতকারী, শোকরগোযার, (দুনিয়ার সাথে) সম্পর্কচ্ছেদকারী, রুকু ও সিজদা আদায়কারী, সৎকাজের আদেশ দানকারী ও মন্দ কাজ থেকে নিবৃতকারী এবং আল্লাহর দেওয়া সীমাসমূহের
হেফাযতকারী। বস্তুতঃ সুসংবাদ দাও ঈমানদারদেরকে। (সুরা আত তাওবাহ ৯:১১২)
৪।
মুশরিকদের জন্য মাগফিরাত কামনা করা অবৈধ
مَا کَانَ لِلنَّبِیِّ وَالَّذِیۡنَ
اٰمَنُوۡۤا اَنۡ یَّسۡتَغۡفِرُوۡا لِلۡمُشۡرِکِیۡنَ وَلَوۡ کَانُوۡۤا اُولِیۡ
قُرۡبٰی مِنۡۢ بَعۡدِ مَا تَبَیَّنَ لَہُمۡ اَنَّہُمۡ اَصۡحٰبُ الۡجَحِیۡمِ
নবী ও মুমিনের
উচিত নয় মুশরেকদের মাগফেরাত কামনা করে, যদিও তারা আত্নীয় হোক একথা সুস্পষ্ট হওয়ার পর যে তারা দোযখী। (সুরা আত তাওবাহ
৯:১১৩)
৫।
সত্যবাদীদের সাথে থাকা
یٰۤاَیُّہَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوا
اتَّقُوا اللّٰہَ وَکُوۡنُوۡا مَعَ الصّٰدِقِیۡنَ
হে ঈমানদারগণ, আল্লাহকে ভয় কর এবং সত্যবাদীদের সাথে থাক। (সুরা আত তাওবাহ
৯:১১৯)
৬।
চন্দ্রকে আলো এবং সূর্যকে বাতি স্বরূপ বানিয়েছেন
ہُوَ الَّذِیۡ جَعَلَ الشَّمۡسَ
ضِیَآءً وَّالۡقَمَرَ نُوۡرًا وَّقَدَّرَہٗ مَنَازِلَ لِتَعۡلَمُوۡا عَدَدَ
السِّنِیۡنَ وَالۡحِسَابَ ؕ مَا خَلَقَ اللّٰہُ ذٰلِکَ اِلَّا بِالۡحَقِّ ۚ یُفَصِّلُ
الۡاٰیٰتِ لِقَوۡمٍ یَّعۡلَمُوۡنَ
তিনিই সে মহান
সত্তা,
যিনি বানিয়েছেন সুর্যকে উজ্জল আলোকময়, আর চন্দ্রকে স্নিগ্ধ আলো বিতরণকারীরূপে এবং অতঃপর
নির্ধারিত করেছেন এর জন্য মনযিল সমূহ, যাতে করে তোমরা চিনতে পার বছরগুলোর সংখ্যা ও হিসাব। আল্লাহ এই সমস্ত কিছু
এমনিতেই সৃষ্টি করেননি, কিন্তু
যথার্থতার সাথে। তিনি প্রকাশ করেন লক্ষণসমূহ সে সমস্ত লোকের জন্য যাদের জ্ঞান
আছে। (সুরা ইউনুস
১০:৫)
৭।
বিপদে পড়লে মানুষ আল্লাহকে ডাকে, বিপদ কেটে গেলে ভুলে যায়
وَاِذَا مَسَّ الۡاِنۡسَانَ الضُّرُّ
دَعَانَا لِجَنۡۢبِہٖۤ اَوۡ قَاعِدًا اَوۡ قَآئِمًا ۚ فَلَمَّا کَشَفۡنَا عَنۡہُ
ضُرَّہٗ مَرَّ کَاَنۡ لَّمۡ یَدۡعُنَاۤ اِلٰی ضُرٍّ مَّسَّہٗ ؕ کَذٰلِکَ زُیِّنَ
لِلۡمُسۡرِفِیۡنَ مَا کَانُوۡا یَعۡمَلُوۡنَ
আর যখন মানুষ
কষ্টের সম্মুখীন হয়, শুয়ে বসে, দাঁড়িয়ে আমাকে ডাকতে থাকে। তারপর আমি যখন তা থেকে মুক্ত করে
দেই,
সে কষ্ট যখন চলে যায় তখন মনে হয় কখনো কোন কষ্টেরই
সম্মুখীন হয়ে যেন আমাকে ডাকেইনি। এমনিভাবে মনঃপুত হয়েছে নির্ভয় লোকদের যা তারা
করেছে। (সুরা ইউনুস
১০:১২)
৮।
আল্লাহর প্রতি মিথ্যাচার কারী
فَمَنۡ اَظۡلَمُ مِمَّنِ افۡتَرٰی
عَلَی اللّٰہِ کَذِبًا اَوۡ کَذَّبَ بِاٰیٰتِہٖ ؕ اِنَّہٗ لَا یُفۡلِحُ
الۡمُجۡرِمُوۡنَ
অতঃপর তার চেয়ে
বড় জালেম,
কে হবে, যে আল্লাহর
প্রতি অপবাদ আরোপ করেছে কিংবা তাঁর আয়াতসমূহকে মিথ্যা বলে অভিহিত করছে? কস্মিনকালেও পাপীদের কোন কল্যাণ হয় না। (সুরা ইউনুস
১০:১৭)
৯। গায়েবের
মালিক শুধুমাত্র আল্লাহ
وَیَقُوۡلُوۡنَ لَوۡلَاۤ اُنۡزِلَ
عَلَیۡہِ اٰیَۃٌ مِّنۡ رَّبِّہٖ ۚ فَقُلۡ اِنَّمَا الۡغَیۡبُ لِلّٰہِ
فَانۡتَظِرُوۡا ۚ اِنِّیۡ مَعَکُمۡ مِّنَ الۡمُنۡتَظِرِیۡنَ
বস্তুতঃ তারা
বলে,
তাঁর কাছে তাঁর পরওয়ারদেগারের পক্ষ থেকে কোন নির্দেশ এল না
কেন?
বলে দাও গায়েবের কথা আল্লাহই জানেন। আমি ও তোমাদের সাথে
অপেক্ষায় রইলাম। (সুরা ইউনুস ১০:২০)
১০।
আন্দাজ অনুমান পরিত্যাগ করা
وَمَا یَتَّبِعُ اَکۡثَرُہُمۡ اِلَّا
ظَنًّا ؕ اِنَّ الظَّنَّ لَا یُغۡنِیۡ مِنَ الۡحَقِّ شَیۡئًا ؕ اِنَّ اللّٰہَ
عَلِیۡمٌۢ بِمَا یَفۡعَلُوۡنَ
বস্তুতঃ তাদের
অধিকাংশই শুধু আন্দাজ-অনুমানের উপর চলে, অথচ আন্দাজ-অনুমান সত্যের বেলায় কোন কাজেই আসে না। আল্লাহ ভাল করেই জানেন, তারা যা কিছু করে। (সুরা ইউনুস ১০:৩৬)
১১।
একটি সূরা রচনার চ্যালেঞ্জ
اَمۡ یَقُوۡلُوۡنَ افۡتَرٰىہُ ؕ قُلۡ فَاۡتُوۡا
بِسُوۡرَۃٍ مِّثۡلِہٖ وَادۡعُوۡا مَنِ اسۡتَطَعۡتُمۡ مِّنۡ دُوۡنِ اللّٰہِ اِنۡ
کُنۡتُمۡ صٰدِقِیۡنَ
মানুষ কি বলে যে, এটি বানিয়ে এনেছ? বলে দাও, তোমরা নিয়ে এসো একটিই সূরা, আর ডেকে নাও, যাদেরকে নিতে সক্ষম হও আল্লাহ ব্যতীত, যদি তোমরা সত্যবাদী হয়ে থাক। (সুরা ইউনুস ১০:৩৮)
১২।
মানুষ নিজের উপর জুলুম করে
اِنَّ اللّٰہَ لَا یَظۡلِمُ النَّاسَ
شَیۡئًا وَّلٰکِنَّ النَّاسَ اَنۡفُسَہُمۡ یَظۡلِمُوۡنَ
আল্লাহ জুলুম
করেন না মানুষের উপর, বরং মানুষ নিজেই
নিজের উপর জুলুম করে। (সুরা ইউনুস ১০:৪৪)
১৩।
আল্লাহ জীবন এবং মরন দান করেন
ہُوَ یُحۡیٖ وَیُمِیۡتُ وَاِلَیۡہِ
تُرۡجَعُوۡنَ
তিনিই জীবন ও
মরণ দান করেন এবং তাঁরই কাছে প্রত্যাবর্তন করতে হবে। (সুরা ইউনুস
১০:৫৬)
১৪।
আল্লাহর বন্ধুদের কোন ভয় নেই
اَلَاۤ اِنَّ اَوۡلِیَآءَ اللّٰہِ
لَا خَوۡفٌ عَلَیۡہِمۡ وَلَا ہُمۡ یَحۡزَنُوۡنَ ۚۖ
মনে রেখো যারা
আল্লাহর বন্ধু, তাদের না কোন ভয় ভীতি আছে, না তারা চিন্তান্বিত হবে। (সুরা ইউনুস ১০:৬২)
১৫।
আল্লাহর বন্ধুর পরিচয়
الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا وَکَانُوۡا
یَتَّقُوۡنَ ؕ
যারা ঈমান এনেছে
এবং ভয় করতে রয়েছে। (সুরা ইউনুস ১০:৬৩)
১৬।
আল্লাহর বন্ধুদের জন্য সুসংবাদ
لَہُمُ الۡبُشۡرٰی فِی الۡحَیٰوۃِ
الدُّنۡیَا وَفِی الۡاٰخِرَۃِ ؕ لَا تَبۡدِیۡلَ لِکَلِمٰتِ اللّٰہِ ؕ ذٰلِکَ
ہُوَ الۡفَوۡزُ الۡعَظِیۡمُ ؕ
তাদের জন্য
সুসংবাদ পার্থিব জীবনে ও পরকালীন জীবনে। আল্লাহর কথার কখনো হের-ফের হয় না। এটাই
হল মহা সফলতা। (সুরা
ইউনুস ১০:৬৪)
১৭।
ফেরআউনের দেহ
فَالۡیَوۡمَ نُنَجِّیۡکَ بِبَدَنِکَ
لِتَکُوۡنَ لِمَنۡ خَلۡفَکَ اٰیَۃً ؕ وَاِنَّ کَثِیۡرًا مِّنَ النَّاسِ عَنۡ
اٰیٰتِنَا لَغٰفِلُوۡنَ
অতএব আজকের দিনে
বাঁচিয়ে দিচ্ছি আমি তোমার দেহকে যাতে তোমার পশ্চাদবর্তীদের জন্য নিদর্শন হতে
পারে। আর নিঃসন্দেহে বহু লোক আমার মহাশক্তির প্রতি লক্ষ্য করে না। (সুরা ইউনুস
১০:৯২)
পিডিএফ ডাউনলোড লিংক
পরবর্তী সকল আপডেট পেতে এখানে ক্লিক করে আমাদের Facebook পেজে ফলো করুন।
WhatsApp গ্রুপ
লিংক