কুরআন তিলাওয়াত এর গুরুত্ব ও ফজিলত

কুরআন পাঠের গুরুত্ব ও ফজিলত

কুরআন পাঠের গুরুত্ব ও ফজিলত


মহাগ্রন্থ আল কুরআন আল্লাহ তাআলার পক্ষ থেকে মানব জাতির হেদায়াতের জন্য সর্বশেষ এবং সর্বশ্রেষ্ঠ গ্রন্থ সকল বিজ্ঞানের আঁধার এ মহাগ্রন্থ মানব জাতির সকল সমস্যার সমাধান দেয়া আছে এই কুরআনে এই কুরআন মানব জাতির হেদায়াতের উৎস, আল্লাহ বলেন,

الٓـمّٓ ۚ ذٰلِکَ الۡکِتٰبُ لَا رَیۡبَ ۚۖ  فِیۡہِ ۚۛ  ہُدًی لِّلۡمُتَّقِیۡنَ ۙ الَّذِیۡنَ یُؤۡمِنُوۡنَ بِالۡغَیۡبِ وَیُقِیۡمُوۡنَ الصَّلٰوۃَ وَمِمَّا رَزَقۡنٰہُمۡ یُنۡفِقُوۡنَ ۙ وَالَّذِیۡنَ یُؤۡمِنُوۡنَ بِمَاۤ اُنۡزِلَ اِلَیۡکَ وَمَاۤ اُنۡزِلَ مِنۡ قَبۡلِکَ ۚ  وَبِالۡاٰخِرَۃِ ہُمۡ یُوۡقِنُوۡنَ ؕ

আলিফ লাম মীম। এ সেই কিতাব যাতে কোনই সন্দেহ নেই। পথ প্রদর্শনকারী পরহেযগারদের জন্য, যারা অদেখা বিষয়ের উপর বিশ্বাস স্থাপন করে এবং নামায প্রতিষ্ঠা করে। আর আমি তাদেরকে যে রুযী দান করেছি তা থেকে ব্যয় করে এবং যারা বিশ্বাস স্থাপন করেছে সেসব বিষয়ের উপর যা কিছু তোমার প্রতি অবতীর্ণ হয়েছে এবং সেসব বিষয়ের উপর যা তোমার পূর্ববর্তীদের প্রতি অবতীর্ণ হয়েছে। আর আখেরাতকে যারা নিশ্চিত বলে বিশ্বাস করে। (সূরা বাক্বারা ২:১-৪)

এই কুরআন অনুধাবন এবং অনুসরণের মাধ্যমেই মানুষের কল্যাণ নিহিত এই কুরআন বুঝে বুঝে পড়ে কুরআন থেকে জ্ঞান আহরণের আদেশ দিয়ে আল্লাহ তাআলা বলেন,    

بِالۡبَیِّنٰتِ وَالزُّبُرِ ؕ وَاَنۡزَلۡنَاۤ اِلَیۡکَ الذِّکۡرَ لِتُبَیِّنَ لِلنَّاسِ مَا نُزِّلَ اِلَیۡہِمۡ وَلَعَلَّہُمۡ یَتَفَکَّرُوۡنَ

প্রেরণ করেছিলাম তাদেরকে প্রমানাদি  ও অবতীর্ণ গ্রন্থসহ এবং আপনার কাছে আমি স্মরণিকা অবতীর্ণ করেছি, যাতে আপনি লোকদের সামনে ঐসব বিষয় বিবৃত করেন, যে গুলো তোদের প্রতি নাযিল করা হয়েছে, যাতে তারা চিন্তা-ভাবনা করে। (সূরা আন নাহল ১৬:৪৪)

১। কুরআন নাজিলের তাৎপর্য

আল কুরআন নিছক কোন গল্প বা আলোচনার বই নয়। বরং জাহেলিয়াতের সকল অন্ধকার দূর করতে কেয়ামত পর্যন্ত চ্যালেঞ্জ হিসেবে মানুষকে সঠিক পথের দিশা দেয়ার জন্যই এই কুরআন নাজিল করা হয়েছে। কুরআন মানব জীবনের সকল সমস্যার সমাধানকল্পে আল্লাহ তাআলা বলেন,

وَقَالَ الَّذِیۡنَ کَفَرُوۡا لَوۡلَا نُزِّلَ عَلَیۡہِ الۡقُرۡاٰنُ جُمۡلَۃً وَّاحِدَۃً ۚۛ کَذٰلِکَ ۚۛ لِنُثَبِّتَ بِہٖ فُؤَادَکَ وَرَتَّلۡنٰہُ تَرۡتِیۡلًا وَلَا یَاۡتُوۡنَکَ بِمَثَلٍ اِلَّا جِئۡنٰکَ بِالۡحَقِّ وَاَحۡسَنَ تَفۡسِیۡرًا ؕ

সত্য প্রত্যাখানকারীরা বলে, তাঁর প্রতি সমগ্র কোরআন একদফায় অবতীর্ণ হল না কেন? আমি এমনিভাবে অবতীর্ণ করেছি এবং ক্রমে ক্রমে আবৃত্তি করেছি আপনার অন্তকরণকে মজবুত করার জন্যে। তারা আপনার কাছে কোন সমস্যা উপস্থাপিত করলেই আমি আপনাকে তার সঠিক জওয়াব ও সুন্দর ব্যাখ্যা দান করি। (সুরা আল ফুরক্বন ২৫:৩২-৩৩)

অন্য আয়াতে আল্লাহ তাআলা বলেন,

قُلۡ اٰمِنُوۡا بِہٖۤ اَوۡ لَا تُؤۡمِنُوۡا ؕ  اِنَّ الَّذِیۡنَ اُوۡتُوا الۡعِلۡمَ مِنۡ قَبۡلِہٖۤ اِذَا یُتۡلٰی عَلَیۡہِمۡ یَخِرُّوۡنَ لِلۡاَذۡقَانِ سُجَّدًا ۙ

বলুনঃ তোমরা কোরআনকে মান্য কর অথবা অমান্য কর; যারা এর পূর্ব থেকে এলেম প্রাপ্ত হয়েছে, যখন তাদের কাছে এর তেলাওয়াত করা হয়, তখন তারা নতমস্তকে সেজদায় লুটিয়ে পড়ে। (সূরা বনী ইসরাইল ১৭:১০৭)

২। কুরআন গবেষণার নির্দেশ

اَفَلَا یَتَدَبَّرُوۡنَ الۡقُرۡاٰنَ ؕ وَلَوۡ کَانَ مِنۡ عِنۡدِ غَیۡرِ اللّٰہِ لَوَجَدُوۡا فِیۡہِ اخۡتِلَافًا کَثِیۡرًا

এরা কি লক্ষ্য করে না কোরআনের প্রতি? পক্ষান্তরে এটা যদি আল্লাহ ব্যতীত অপর কারও পক্ষ থেকে হত, তবে এতো অবশ্যই বহু বৈপরিত্য দেখতে পেত। (সূরাহ নিসা ৪:৮২)

اَفَلَا یَتَدَبَّرُوۡنَ الۡقُرۡاٰنَ اَمۡ عَلٰی قُلُوۡبٍ اَقۡفَالُہَا

তারা কি কোরআন সম্পর্কে গভীর চিন্তা করে না? না তাদের অন্তর তালাবদ্ধ? (সূরাহ মুহাম্মাদ ৪৭:২৪)

بِالۡبَیِّنٰتِ وَالزُّبُرِ ؕ وَاَنۡزَلۡنَاۤ اِلَیۡکَ الذِّکۡرَ لِتُبَیِّنَ لِلنَّاسِ مَا نُزِّلَ اِلَیۡہِمۡ وَلَعَلَّہُمۡ یَتَفَکَّرُوۡنَ

প্রেরণ করেছিলাম তাদেরকে প্রমানাদি  ও অবতীর্ণ গ্রন্থসহ এবং আপনার কাছে আমি স্মরণিকা অবতীর্ণ করেছি, যাতে আপনি লোকদের সামনে ঐসব বিষয় বিবৃত করেন, যে গুলো তোদের প্রতি নাযিল করা হয়েছে, যাতে তারা চিন্তা-ভাবনা করে। (সূরা আন নাহল ১৬:৪৪)

৩। কুরআন মুমিনের জন্য রহমত

وَنُنَزِّلُ مِنَ الۡقُرۡاٰنِ مَا ہُوَ شِفَآءٌ وَّرَحۡمَۃٌ لِّلۡمُؤۡمِنِیۡنَ ۙ وَلَا یَزِیۡدُ الظّٰلِمِیۡنَ اِلَّا خَسَارًا

আমি কোরআনে এমন বিষয় নাযিল করি যা রোগের সুচিকিৎসা এবং মুমিনের জন্য রহমত। গোনাহগারদের তো এতে শুধু ক্ষতিই বৃদ্ধি পায়। (সূরা বনি ইসরাইল ১৭:৮২)

৪। কুরআন তিলাওয়াতের মাধ্যমে ইমান বৃদ্ধি পায়

اِنَّمَا الۡمُؤۡمِنُوۡنَ الَّذِیۡنَ اِذَا ذُکِرَ اللّٰہُ وَجِلَتۡ قُلُوۡبُہُمۡ وَاِذَا تُلِیَتۡ عَلَیۡہِمۡ اٰیٰتُہٗ زَادَتۡہُمۡ اِیۡمَانًا وَّعَلٰی رَبِّہِمۡ یَتَوَکَّلُوۡنَ ۚۖ

 যারা ঈমানদার, তারা এমন যে, যখন আল্লাহর নাম নেয়া হয় তখন ভীত হয়ে পড়ে তাদের অন্তর। আর যখন তাদের সামনে পাঠ করা হয় কালাম, তখন তাদের ঈমান বেড়ে যায় এবং তারা স্বীয় পরওয়ার দেগারের প্রতি ভরসা পোষণ করে। (সূরা আনফাল ৮:২)

৫। কুরআন থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়ার পরিণাম

وَمَنۡ اَعۡرَضَ عَنۡ ذِکۡرِیۡ فَاِنَّ لَہٗ مَعِیۡشَۃً ضَنۡکًا وَّنَحۡشُرُہٗ یَوۡمَ الۡقِیٰمَۃِ اَعۡمٰی قَالَ رَبِّ لِمَ حَشَرۡتَنِیۡۤ اَعۡمٰی وَقَدۡ کُنۡتُ بَصِیۡرًا قَالَ کَذٰلِکَ اَتَتۡکَ اٰیٰتُنَا فَنَسِیۡتَہَا ۚ وَکَذٰلِکَ الۡیَوۡمَ تُنۡسٰی

এবং যে আমার স্মরণ থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবে, তার জীবিকা সংকীর্ণ হবে এবং আমি তাকে কেয়ামতের দিন অন্ধ অবস্থায় উত্থিত করব। সে বলবেঃ হে আমার পালনকর্তা আমাকে কেন অন্ধ অবস্থায় উত্থিত করলেন? আমি তো চক্ষুমান ছিলাম। আল্লাহ বলবেনঃ এমনিভাবে তোমার কাছে আমার আয়াতসমূহ এসেছিল, অতঃপর তুমি সেগুলো ভুলে গিয়েছিলে। তেমনিভাবে আজ তোমাকে ভুলে যাব। (সূরা ত্বহা ২০:১২৪-১২৬)

৬। আল কুরআন নাজিলের বরকতময় মুহূর্ত

حٰمٓ ۚۛ  وَالۡکِتٰبِ الۡمُبِیۡنِ ۙۛ  اِنَّاۤ اَنۡزَلۡنٰہُ فِیۡ لَیۡلَۃٍ مُّبٰرَکَۃٍ اِنَّا کُنَّا مُنۡذِرِیۡنَ فِیۡہَا یُفۡرَقُ کُلُّ اَمۡرٍ حَکِیۡمٍ ۙ اَمۡرًا مِّنۡ عِنۡدِنَا ؕ  اِنَّا کُنَّا مُرۡسِلِیۡنَ ۚ رَحۡمَۃً مِّنۡ رَّبِّکَ ؕ  اِنَّہٗ ہُوَ السَّمِیۡعُ الۡعَلِیۡمُ ۙ

হা-মীম। শপথ সুস্পষ্ট কিতাবের। আমি একে নাযিল করেছি। এক বরকতময় রাতে, নিশ্চয় আমি সতর্ককারী। এ রাতে প্রত্যেক প্রজ্ঞাপূর্ণ বিষয় স্থিরীকৃত হয়। আমার পক্ষ থেকে আদেশক্রমে, আমিই প্রেরণকারী। আপনার পালনকর্তার পক্ষ থেকে রহমতস্বরূপ। তিনি সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞ। (সূরা আদ দুখান ৪৪:১-৬)

‏إِنَّآ أَنزَلْنَهُ فِى لَيْلَةِ ٱلْقَدْرِ‏وَمَآ أَدْرَىٰكَ مَا لَيْلَةُ ٱلْقَدْرِ‏لَيْلَةُ ٱلْقَدْرِ خَيْرٌۭ مِّنْ أَلْفِ شَهْرٍۢ‏تَنَزَّلُ ٱلْمَلَٓئِكَةُ وَٱلرُّوحُ فِيهَا بِإِذْنِ رَبِّهِم مِّن كُلِّ أَمْرٍۢ‏سَلَمٌ هِىَ حَتَّىٰ مَطْلَعِ ٱلْفَجْرِ

নিঃসন্দেহ আমরা এটি অবতারণ করেছি মহিমান্বিত রজনীতে। আর আপনি কি জানেন সেই মহিমান্বিত রজনীটি কি? মহিমান্বিত রজনী বা লাইলাতুল ক্বদর হল এক হাজার মাস অপেক্ষা শ্রেষ্ঠ। এতে প্রত্যেক কাজের জন্যে ফেরেশতাগণ ও রূহ অবতীর্ণ হয় তাদের পালনকর্তার নির্দেশক্রমে। এটা নিরাপত্তা, যা ফজরের উদয় পর্যন্ত অব্যাহত থাকে।  (সূরা আল ক্বদর ৯৭:১-৫)

৭। রমাদ্বান মাসে কুরআন নাজিল হয়

شَہۡرُ رَمَضَانَ الَّذِیۡۤ اُنۡزِلَ فِیۡہِ الۡقُرۡاٰنُ ہُدًی لِّلنَّاسِ وَبَیِّنٰتٍ مِّنَ الۡہُدٰی وَالۡفُرۡقَانِ ۚ فَمَنۡ شَہِدَ مِنۡکُمُ الشَّہۡرَ فَلۡیَصُمۡہُ ؕ

রমযান মাসই হল সে মাস, যাতে নাযিল করা হয়েছে কোরআন, যা মানুষের জন্য হেদায়েত এবং সত্যপথ যাত্রীদের জন্য সুষ্পষ্ট পথ নির্দেশ আর ন্যায় ও অন্যায়ের মাঝে পার্থক্য বিধানকারী। কাজেই তোমাদের মধ্যে যে লোক এ মাসটি পাবে, সে এ মাসের রোযা রাখবে। (সূরা বাক্বারা ২:১৮৫)

৮। আল কুরআন থেকে হেদায়েত প্রাপ্তির পূর্বশর্ত

اِنَّ ہٰذَا الۡقُرۡاٰنَ یَہۡدِیۡ لِلَّتِیۡ ہِیَ اَقۡوَمُ وَیُبَشِّرُ الۡمُؤۡمِنِیۡنَ الَّذِیۡنَ یَعۡمَلُوۡنَ الصّٰلِحٰتِ اَنَّ لَہُمۡ اَجۡرًا کَبِیۡرًا ۙ

এই কোরআন এমন পথ প্রদর্শন করে, যা সর্বাধিক সরল এবং সৎকর্ম পরায়ণ মুমিনদেরকে সুসংবাদ দেয় যে, তাদের জন্যে মহা পুরস্কার রয়েছে। (সূরা বনী ইসরাইল ১৭:৯)

৯। কুরআন আলোর পথে পরিচালিত করে

الٓرٰ ۟  کِتٰبٌ اَنۡزَلۡنٰہُ اِلَیۡکَ لِتُخۡرِجَ النَّاسَ مِنَ الظُّلُمٰتِ اِلَی النُّوۡرِ ۬ۙ  بِاِذۡنِ رَبِّہِمۡ اِلٰی صِرَاطِ الۡعَزِیۡزِ الۡحَمِیۡدِ ۙ

আলিফ-লাম-রা; এটি একটি গ্রন্থ, যা আমি আপনার প্রতি নাযিল করেছি-যাতে আপনি মানুষকে অন্ধকার থেকে আলোর দিকে বের করে আনেন-পরাক্রান্ত, প্রশংসার যোগ্য পালনকর্তার নির্দেশে তাঁরই পথের দিকে। (সূরা ইব্রাহিম ১৪:১)

১০। কুরআনকে সহজ করা হয়েছে

وَلَقَدۡ یَسَّرۡنَا الۡقُرۡاٰنَ لِلذِّکۡرِ فَہَلۡ مِنۡ مُّدَّکِرٍ

আমি কোরআনকে সহজ করে দিয়েছি বোঝার জন্যে। অতএব, কোন চিন্তাশীল আছে কি? (সূরা আল ক্বমার ৫৪:১৭)

১১। উত্তম ব্যক্তির পরিচয়

عَنْ عُثْمَانَ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ خَيْرُكُمْ مَنْ تَعَلَّمَ الْقُرْآنَ وَعَلَّمَهُ

উসমান (রাঃ) সূত্রে নবী (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, তোমাদের মধ্যে ঐ ব্যক্তি সবচেয়ে উত্তম যে কুরআন শিখে এবং অন্যকে শিখায়। (সহিহ বুখারী, হাদিস নং ৫০২৭ আধুনিক প্রকাশনীঃ ৪৬৫৩, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৪৬৫৭)

১২। কুরআন বিহীন হৃদয়ের তুলনা

عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏ "‏ إِنَّ الَّذِي لَيْسَ فِي جَوْفِهِ شَيْءٌ مِنَ الْقُرْآنِ كَالْبَيْتِ الْخَرِبِ ‏"‏

ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ যার হৃদয়ে কুরআনের কিছুই নেই সে বর্জিত ঘরের মত। (জামে' আত-তিরমিজি, হাদিস নং ২৯১৩)

১৩। প্রতিটি হরফে দশ নেকি

قَالَ سَمِعْتُ عَبْدَ اللَّهِ بْنَ مَسْعُودٍ، يَقُولُ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏ "‏ مَنْ قَرَأَ حَرْفًا مِنْ كِتَابِ اللَّهِ فَلَهُ بِهِ حَسَنَةٌ وَالْحَسَنَةُ بِعَشْرِ أَمْثَالِهَا لاَ أَقُولُ الم حَرْفٌ وَلَكِنْ أَلِفٌ حَرْفٌ وَلاَمٌ حَرْفٌ وَمِيمٌ حَرْفٌ ‏"‏

আবদুল্লাহ ইবনু মাসঊদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আল্লাহ তাআলার কিতাবের একটি হরফ যে ব্যক্তি পাঠ করবে তার জন্য এর সাওয়াব আছে। আর সাওয়াব হয় তার দশ গুণ হিসেবে। আমি বলি না যে, আলিফ-লাম-মীম একটি হরফ, বরং আলিফ একটি হরফ, লাম একটি হরফ এবং মীম একটি হরফ। (জামে' আত-তিরমিজি, হাদিস নং ২৯১০)

১৪। কুরআন কিয়ামতের দিন সুপারিশ করবে

عَنْ أَبِيْ أُمَامَةَ  قَالَ : سَمِعْتُ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللّٰهُ عَلَيْهِ وَسَلَّم يَقُولُ اقْرَؤُوا القُرْآنَ ؛ فَإِنَّهُ يَأتِي يَوْمَ القِيَامَةِ شَفِيعاً لأَصْحَابِهِرواه مسلم

আবূ উমামাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) কে এ কথা বলতে শুনেছি যে, তোমরা কুরআন পাঠ কর। কেননা, কিয়ামতের দিন কুরআন, তার পাঠকের জন্য সুপারিশকারী হিসাবে আগমন করবে। (মুসলিম ১৯১০)

عَنْ عَائِشَةَ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ مَثَلُ الَّذِيْ يَقْرَأُ الْقُرْآنَ وَهُوَ حَافِظٌ لَهُ مَعَ السَّفَرَةِ الْكِرَامِ الْبَرَرَةِ وَمَثَلُ الَّذِيْ يَقْرَأُ وَهُوَ يَتَعَاهَدُهُ وَهُوَ عَلَيْهِ شَدِيْدٌ فَلَهُ أَجْرَانِ.

আয়িশাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি  নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) থেকে বর্ণনা করেছেন, কুরআনের হাফিয পাঠক লিপিকর সম্মানিত মালাকের মত। খুব কষ্টদায়ক হওয়া সত্ত্বেও যে বারবার কুরআন মাজীদ পাঠ করে, সে দ্বিগুণ পুরস্কার পাবে। সহিহ বুখারী, হাদিস নং ৪৯৩৭

১৫। ঈর্ষার যোগ্য দুই ব্যক্তি

عَنْ سَالِمٍ عَنْ أَبِيهِ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ لاَ حَسَدَ إِلاَّ فِي اثْنَتَيْنِ رَجُلٌ آتَاهُ اللهُ الْقُرْآنَ فَهُوَ يَتْلُوهُ آنَاءَ اللَّيْلِ وَآنَاءَ النَّهَارِ وَرَجُلٌ آتَاهُ اللهُ مَالاً فَهُوَ يُنْفِقُهُ آنَاءَ اللَّيْلِ وَآنَاءَ النَّهَارِ

সালিম তার পিতা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেছেন, একমাত্র দুটি বিষয়েই হিংসা করা যায়। একজন হচ্ছে, যাকে আল্লাহ্ কুরআন দান করেছেন, আর সে তা রাতদিন তিলাওয়াত করে, আরেকজন হল, যাকে আল্লাহ্ সম্পদ দিয়েছেন আর সে রাতদিন তা ব্যয় করে। [৫০২৫; মুসলিম ৬/৪৭, হাঃ ৮১৫, আহমাদ ৪৫৫০] সহিহ বুখারী, হাদিস নং ৭৫২৯

১৬। ক্বিয়ামতের দিন মর্যাদা বৃদ্ধি

عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَمْرٍو، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏ "‏ يُقَالُ لِصَاحِبِ الْقُرْآنِ اقْرَأْ وَارْتَقِ وَرَتِّلْ كَمَا كُنْتَ تُرَتِّلُ فِي الدُّنْيَا فَإِنَّ مَنْزِلَكَ عِنْدَ آخِرِ آيَةٍ تَقْرَؤُهَا ‏"‏ ‏.

আবদুল্লাহ ইবনু আমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ (ক্বিয়ামাতে) কুরআন অধ্যয়নকারীকে বলা হবে, কুরআন পাঠ করতে করতে উপরে উঠতে থাকো। তুমি দুনিয়াতে যেভাবে ধীরেসুস্থে পাঠ করতে সেভাবে পাঠ করো। কেননা তোমার তিলাওয়াতের শেষ আয়াতেই (জান্নাতে) তোমার বাসস্থান হবে। (সুনানে আবু দাউদ, হাদিস নং ১৪৬৪)

সমাপনীঃ আল্লাহ রাব্বুল আলামিন আমাদেরকে কুরআন বুঝে বুঝে পড়ার তাউফিক দান করুন  

পিডিএফ ডাউনলোড করতে এখানে ক্লিক করুন।