আসসালামুআলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহ ওয়াবারাকাতুহ, পবিত্র মাহে রমজানের ৩য় তারাবীতে তেলাওয়াত করা হবে কুরআন মাজিদের তৃতীয় সূরা, সুরা নিসা ৮১ নং আয়াত থেকে সুরা মায়িদাহ এর ৮২ নং আয়াত পর্যন্ত। অর্থাৎ পঞ্চম পারার ১০ম পৃষ্ঠা থেকে ৬ষ্ঠ পারার শেষ পর্যন্ত।
তেলাওয়াতের অংশ থেকে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি আয়াত
১। কুরআন গবেষণার নির্দেশ
اَفَلَا
یَتَدَبَّرُوۡنَ الۡقُرۡاٰنَ ؕ وَلَوۡ کَانَ مِنۡ عِنۡدِ غَیۡرِ اللّٰہِ
لَوَجَدُوۡا فِیۡہِ اخۡتِلَافًا کَثِیۡرًا
এরা কি লক্ষ্য করে না কোরআনের প্রতি? পক্ষান্তরে এটা যদি আল্লাহ ব্যতীত অপর কারও পক্ষ থেকে হত, তবে এতো অবশ্যই বহু বৈপরিত্য দেখতে পেত। (সূরাহ আন নিসা ৪:৮২)
২। ভালো কাজে পরামর্শ দেয়া
مَنۡ
یَّشۡفَعۡ شَفَاعَۃً حَسَنَۃً یَّکُنۡ لَّہٗ نَصِیۡبٌ مِّنۡہَا ۚ وَمَنۡ یَّشۡفَعۡ
شَفَاعَۃً سَیِّئَۃً یَّکُنۡ لَّہٗ کِفۡلٌ مِّنۡہَا ؕ وَکَانَ اللّٰہُ عَلٰی کُلِّ
شَیۡءٍ مُّقِیۡتًا
যে লোক সৎকাজের জন্য কোন সুপারিশ করবে, তা থেকে সেও একটি অংশ পাবে। আর যে লোক সুপারিশ করবে মন্দ কাজের জন্যে সে তার বোঝারও একটি অংশ পাবে। বস্তুতঃ আল্লাহ সর্ব বিষয়ে ক্ষমতাশীল। (সূরা আন নিসা ৪:৮৫)
৩। মুসলমানকে হত্যা করার শাস্তি
وَمَنۡ
یَّقۡتُلۡ مُؤۡمِنًا مُّتَعَمِّدًا فَجَزَآؤُہٗ جَہَنَّمُ خٰلِدًا فِیۡہَا
وَغَضِبَ اللّٰہُ عَلَیۡہِ وَلَعَنَہٗ وَاَعَدَّ لَہٗ عَذَابًا عَظِیۡمًا
যে ব্যক্তি স্বেচ্ছাক্রমে মুসলমানকে হত্যা করে, তার শাস্তি জাহান্নাম, তাতেই সে চিরকাল থাকবে। আল্লাহ তার প্রতি ক্রুদ্ধ হয়েছেন, তাকে অভিসম্পাত করেছেন এবং তার জন্যে ভীষণ শাস্তি প্রস্তুত রেখেছেন। (সূরা আন নিসা ৪:৯৩)
৪। সালাত কসর করার বিধান
وَاِذَا
ضَرَبۡتُمۡ فِی الۡاَرۡضِ فَلَیۡسَ عَلَیۡکُمۡ جُنَاحٌ اَنۡ تَقۡصُرُوۡا مِنَ
الصَّلٰوۃِ ٭ۖ اِنۡ خِفۡتُمۡ اَنۡ یَّفۡتِنَکُمُ الَّذِیۡنَ کَفَرُوۡا ؕ اِنَّ
الۡکٰفِرِیۡنَ کَانُوۡا لَکُمۡ عَدُوًّا مُّبِیۡنًا
যখন তোমরা কোন দেশ সফর কর, তখন নামাযে কিছুটা হ্রাস করলে তোমাদের কোন গোনাহ নেই, যদি তোমরা আশঙ্কা কর যে, কাফেররা তোমাদেরকে উত্ত্যক্ত করবে। নিশ্চয় কাফেররা তোমাদের প্রকাশ্য শত্রু। (সূরা আন নিসা ৪:১০১)
৫। নির্দিষ্ট সময়ে সালাত আদায় করা ফরজ
فَاِذَا
قَضَیۡتُمُ الصَّلٰوۃَ فَاذۡکُرُوا اللّٰہَ قِیٰمًا وَّقُعُوۡدًا وَّعَلٰی
جُنُوۡبِکُمۡ ۚ فَاِذَا اطۡمَاۡنَنۡتُمۡ فَاَقِیۡمُوا الصَّلٰوۃَ ۚ اِنَّ الصَّلٰوۃَ
کَانَتۡ عَلَی الۡمُؤۡمِنِیۡنَ کِتٰبًا مَّوۡقُوۡتًا
অতঃপর যখন তোমরা নামায সম্পন্ন কর, তখন দন্ডায়মান, উপবিষ্ট ও শায়িত অবস্থায় আল্লাহকে স্মরণ কর। অতঃপর যখন বিপদমুক্ত হয়ে যাও, তখন নামায ঠিক করে পড়। নিশ্চয় নামায মুসলমানদের উপর ফরয নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে। (সূরা আন নিসা ৪:১০৩)
৬। ভুলক্রমে পাপ করে ক্ষমা চাওয়া
وَمَنۡ
یَّعۡمَلۡ سُوۡٓءًا اَوۡ یَظۡلِمۡ نَفۡسَہٗ ثُمَّ یَسۡتَغۡفِرِ اللّٰہَ یَجِدِ
اللّٰہَ غَفُوۡرًا رَّحِیۡمًا
যে গোনাহ, করে কিংবা নিজের অনিষ্ট করে, অতঃপর আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করে, সে আল্লাহকে ক্ষমাশীল, করুণাময় পায়। (সূরা আন নিসা ৪:১১০)
৭। শিরক ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ
اِنَّ
اللّٰہَ لَا یَغۡفِرُ اَنۡ یُّشۡرَکَ بِہٖ وَیَغۡفِرُ مَا دُوۡنَ ذٰلِکَ لِمَنۡ یَّشَآءُ ؕ
وَمَنۡ یُّشۡرِکۡ بِاللّٰہِ فَقَدۡ ضَلَّ ضَلٰلًۢا بَعِیۡدًا
নিশ্চয় আল্লাহ তাকে ক্ষমা করেন না, যে তাঁর সাথে কাউকে শরীক করে। এছাড়া যাকে ইচ্ছা, ক্ষমা করেন। যে আল্লাহর সাথে শরীক করে সে সুদূর ভ্রান্তিতে পতিত হয়। (সূরা আন নিসা ৪:১১৬)
৮। মুনাফিকের শাস্তি
بَشِّرِ
الۡمُنٰفِقِیۡنَ بِاَنَّ لَہُمۡ عَذَابًا اَلِیۡمَۨا ۙ
সেসব মুনাফেককে সুসংবাদ শুনিয়ে দিন যে, তাদের জন্য নির্ধারিত রয়েছে বেদনাদায়ক আযাব। (সূরা আন নিসা ৪:১৩৮)
৯। অমুসলিমকে বন্ধু হিসেবে গ্রহণ করার
বিধান
الَّذِیۡنَ
یَتَّخِذُوۡنَ الۡکٰفِرِیۡنَ اَوۡلِیَآءَ مِنۡ دُوۡنِ الۡمُؤۡمِنِیۡنَ ؕ اَیَبۡتَغُوۡنَ
عِنۡدَہُمُ الۡعِزَّۃَ فَاِنَّ الۡعِزَّۃَ لِلّٰہِ جَمِیۡعًا ؕ
যারা মুসলমানদের বর্জন করে কাফেরদেরকে নিজেদের বন্ধু বানিয়ে নেয় এবং তাদেরই কাছে সম্মান প্রত্যাশা করে, অথচ যাবতীয় সম্মান শুধুমাত্র আল্লাহরই জন্য। (সূরা আন নিসা ৪:১৩৯)
১০। জাহান্নামে মুনাফিকদের অবস্থান
اِنَّ
الۡمُنٰفِقِیۡنَ فِی الدَّرۡکِ الۡاَسۡفَلِ مِنَ النَّارِ ۚ وَلَنۡ تَجِدَ لَہُمۡ
نَصِیۡرًا ۙ
নিঃসন্দেহে মুনাফেকরা রয়েছে দোযখের সর্বনিম্ন স্তরে। আর তোমরা তাদের জন্য কোন সাহায্যকারী কখনও পাবে না। (সূরা আন নিসা ৪:১৪৫)
১১। মন্দ বিষয় প্রকাশ করা আল্লাহ পছন্দ
করেন না
لَا
یُحِبُّ اللّٰہُ الۡجَہۡرَ بِالسُّوۡٓءِ مِنَ الۡقَوۡلِ اِلَّا مَنۡ ظُلِمَ ؕ
وَکَانَ اللّٰہُ سَمِیۡعًا عَلِیۡمًا
আল্লাহ কোন মন্দ বিষয় প্রকাশ করা পছন্দ করেন না। তবে কারো প্রতি জুলুম হয়ে থাকলে সে কথা আলাদা। আল্লাহ শ্রবণকারী, বিজ্ঞ। (সূরা আন নিসা ৪:১৪৮)
১২। প্রকৃত কাফের
اِنَّ
الَّذِیۡنَ یَکۡفُرُوۡنَ بِاللّٰہِ وَرُسُلِہٖ وَیُرِیۡدُوۡنَ اَنۡ یُّفَرِّقُوۡا
بَیۡنَ اللّٰہِ وَرُسُلِہٖ وَیَقُوۡلُوۡنَ نُؤۡمِنُ بِبَعۡضٍ وَّنَکۡفُرُ
بِبَعۡضٍ ۙ وَّیُرِیۡدُوۡنَ اَنۡ یَّتَّخِذُوۡا بَیۡنَ ذٰلِکَ سَبِیۡلًا ۙ
যারা আল্লাহ ও তার রসূলের প্রতি অস্বীকৃতি জ্ঞাপনকারী তদুপরি আল্লাহ ও রসূলের প্রতি বিশ্বাসে তারতম্য করতে চায় আর বলে যে, আমরা কতককে বিশ্বাস করি কিন্তু কতককে প্রত্যাখ্যান করি এবং এরই মধ্যবর্তী কোন পথ অবলম্বন করতে চায়। (সূরা আন নিসা ৪:১৫০)
১৩। প্রকৃত কাফের
اُولٰٓئِکَ
ہُمُ الۡکٰفِرُوۡنَ حَقًّا ۚ وَاَعۡتَدۡنَا لِلۡکٰفِرِیۡنَ عَذَابًا مُّہِیۡنًا
প্রকৃতপক্ষে এরাই সত্য প্রত্যাখ্যাকারী। আর যারা সত্য প্রত্যাখ্যানকারী তাদের জন্য তৈরী করে রেখেছি অপমানজনক আযাব। (সূরা আন নিসা ৪:১৫১)
১৪। হযরত ঈসা (আঃ) কে আল্লাহ উঠিয়ে নিয়েছেন
بَلۡ
رَّفَعَہُ اللّٰہُ اِلَیۡہِ ؕ وَکَانَ اللّٰہُ عَزِیۡزًا حَکِیۡمًا
বরং তাঁকে উঠিয়ে নিয়েছেন আল্লাহ তা’আলা নিজের কাছে। আর আল্লাহ হচ্ছেন মহাপরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়। (সূরা আন নিসা ৪:১৫৮)
১৫। আল্লাহর পথে যারা বাধা সৃষ্টি করে
اِنَّ
الَّذِیۡنَ کَفَرُوۡا وَصَدُّوۡا عَنۡ سَبِیۡلِ اللّٰہِ قَدۡ ضَلُّوۡا ضَلٰلًۢا
بَعِیۡدًا
যারা কুফরী অবলম্বন করেছে, এবং আল্লাহর পথে বাধার সৃষ্টি করেছে, তারা বিভ্রান্তিতে সুদূরে পতিত হয়েছে। (সূরা আন নিসা ৪:১৬৭)
১৬। চুরির শাস্তির বিধান
وَالسَّارِقُ
وَالسَّارِقَۃُ فَاقۡطَعُوۡۤا اَیۡدِیَہُمَا جَزَآءًۢ بِمَا کَسَبَا نَکَالًا
مِّنَ اللّٰہِ ؕ وَاللّٰہُ عَزِیۡزٌ حَکِیۡمٌ
যে পুরুষ চুরি করে এবং যে নারী চুরি করে তাদের হাত কেটে দাও তাদের কৃতকর্মের সাজা হিসেবে। আল্লাহর পক্ষ থেকে হুশিয়ারী। আল্লাহ পরাক্রান্ত, জ্ঞানময়। (সূরা আল মায়িদাহ ৫:৩৮)
১৭। ইহুদি ও খ্রিষ্টান কে বন্ধু না বানানো
یٰۤاَیُّہَا
الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا لَا تَتَّخِذُوا الۡیَہُوۡدَ وَالنَّصٰرٰۤی اَوۡلِیَآءَ ۘؔ
بَعۡضُہُمۡ اَوۡلِیَآءُ بَعۡضٍ ؕ وَمَنۡ یَّتَوَلَّہُمۡ مِّنۡکُمۡ فَاِنَّہٗ
مِنۡہُمۡ ؕ اِنَّ اللّٰہَ لَا یَہۡدِی الۡقَوۡمَ الظّٰلِمِیۡنَ
হে মুমিণগণ! তোমরা ইহুদী ও খ্রীষ্টানদেরকে বন্ধু হিসাবে গ্রহণ করো না। তারা একে অপরের বন্ধু। তোমাদের মধ্যে যে তাদের সাথে বন্ধুত্ব করবে, সে তাদেরই অন্তর্ভুক্ত। আল্লাহ জালেমদেরকে পথ প্রদর্শন করেন না। (সূরা আল মায়িদাহ ৫:৫১)
১৮। আল্লাহর দল বিজয়ী
وَمَنۡ
یَّتَوَلَّ اللّٰہَ وَرَسُوۡلَہٗ وَالَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا فَاِنَّ حِزۡبَ اللّٰہِ
ہُمُ الۡغٰلِبُوۡنَ
আর যারা আল্লাহ তাঁর রসূল এবং বিশ্বাসীদেরকে বন্ধুরূপে গ্রহণ করে, তারাই আল্লাহর দল এবং তারাই বিজয়ী। (সূরা আল মায়িদাহ ৫:৫৬)
১৯। রাসূল (সাঃ) এর দায়িত্ব
یٰۤاَیُّہَا
الرَّسُوۡلُ بَلِّغۡ مَاۤ اُنۡزِلَ اِلَیۡکَ مِنۡ رَّبِّکَ ؕ وَاِنۡ لَّمۡ
تَفۡعَلۡ فَمَا بَلَّغۡتَ رِسَالَتَہٗ ؕ وَاللّٰہُ یَعۡصِمُکَ مِنَ النَّاسِ ؕ
اِنَّ اللّٰہَ لَا یَہۡدِی الۡقَوۡمَ الۡکٰفِرِیۡنَ
হে রসূল, পৌছে দিন আপনার প্রতিপালকের পক্ষ থেকে আপনার প্রতি যা অবতীর্ণ হয়েছে। আর যদি আপনি এরূপ না করেন, তবে আপনি তাঁর পয়গাম কিছুই পৌছালেন না। আল্লাহ আপনাকে মানুষের কাছ থেকে রক্ষা করবেন। নিশ্চয় আল্লাহ কাফেরদেরকে পথ প্রদর্শন করেন না। (সূরা আল মায়িদাহ ৫:৬৭)
২০। খৃস্টানদের ত্রিত্ববাদ
لَقَدۡ
کَفَرَ الَّذِیۡنَ قَالُوۡۤا اِنَّ اللّٰہَ ثَالِثُ ثَلٰثَۃٍ ۘ وَمَا مِنۡ اِلٰہٍ
اِلَّاۤ اِلٰہٌ وَّاحِدٌ ؕ وَاِنۡ لَّمۡ یَنۡتَہُوۡا عَمَّا یَقُوۡلُوۡنَ لَیَمَسَّنَّ
الَّذِیۡنَ کَفَرُوۡا مِنۡہُمۡ عَذَابٌ اَلِیۡمٌ
নিশ্চয় তারা কাফের, যারা বলেঃ আল্লাহ তিনের এক; অথচ এক উপাস্য ছাড়া কোন উপাস্য নেই। যদি তারা স্বীয় উক্তি থেকে নিবৃত্ত না হয়, তবে তাদের মধ্যে যারা কুফরে অটল থাকবে, তাদের উপর যন্ত্রনাদায়ক শাস্তি পতিত হবে। (সূরা আল মায়িদাহ ৫:৭৩)
পিডিএফ ডাউনলোড লিংক
পরবর্তী সকল আপডেট পেতে এখানে ক্লিক করে আমাদের Facebook পেজে ফলো করুন।
WhatsApp গ্রুপ
লিংক