পবিত্র মাহে রমজানের ২০ তম তারাবীতে
তেলাওয়াত করা হবে সূরা ইয়াসিন এর ২২ নং আয়াত থেকে শেষ পর্যন্ত। সূরা সাফফাত, সুরা সোয়াদ এবং সূরা যুমার এর ৩১
নং আয়াত পর্যন্ত। অর্থাৎ ২৩ তম পারার ১ম পৃষ্ঠা থেকে শেষ পর্যন্ত। তেলাওয়াতের অংশ
থেকে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি আয়াত
১। সকল জীব জোড়া জোড়া সৃষ্টি করেছেন
سُبۡحٰنَ الَّذِیۡ خَلَقَ الۡاَزۡوَاجَ کُلَّہَا
مِمَّا تُنۡۢبِتُ الۡاَرۡضُ وَمِنۡ اَنۡفُسِہِمۡ وَمِمَّا لَا یَعۡلَمُوۡنَ
পবিত্র তিনি যিনি
যমীন থেকে উৎপন্ন উদ্ভিদকে, তাদেরই মানুষকে এবং
যা তারা জানে না, তার প্রত্যেককে জোড়া
জোড়া করে সৃষ্টি করেছেন। (সূরা ইয়াসিন ৩৬:৩৬)
২। চন্দ্র, সূর্য আপন কক্ষপথে
বিচরণশীল
لَا الشَّمۡسُ یَنۡۢبَغِیۡ لَہَاۤ اَنۡ تُدۡرِکَ
الۡقَمَرَ وَلَا الَّیۡلُ سَابِقُ النَّہَارِ ؕ
وَکُلٌّ فِیۡ فَلَکٍ یَّسۡبَحُوۡنَ
সূর্য নাগাল পেতে
পারে না চন্দ্রের এবং রাত্রি অগ্রে চলে না দিনের প্রত্যেকেই আপন আপন কক্ষপথে সন্তরণ
করে। (সূরা ইয়াসিন ৩৬:৪০)
৩। শিংগায় ফুঁক দেয়া হলে সবাই কবর থেকে উঠে
যাবে
وَنُفِخَ فِی الصُّوۡرِ فَاِذَا ہُمۡ مِّنَ
الۡاَجۡدَاثِ اِلٰی رَبِّہِمۡ یَنۡسِلُوۡنَ
শিংগায় ফুঁক দেয়া
হবে,
তখনই তারা কবর থেকে তাদের পালনকর্তার দিকে ছুটে চলবে। (সূরা ইয়াসিন ৩৬:৫১)
৪। জান্নাতীরা আনন্দে থাকবে
اِنَّ اَصۡحٰبَ الۡجَنَّۃِ الۡیَوۡمَ فِیۡ شُغُلٍ
فٰکِہُوۡنَ ۚ
এদিন জান্নাতীরা
আনন্দে মশগুল থাকবে। (সূরা ইয়াসিন ৩৬:৫৫)
নোটঃ ৫৬ নং আয়াতে এসেছে জান্নাতিদের
স্ত্রীরা ছায়াময় পরিবেশে আসনে হেলান দিয়ে থাকবে, ৫৭ নং আয়াতে
জান্নাতিদের জন্য থাকবে অগণিত ফলমূল, যা চাইবে তাই পাবে এবং ৫৮ নং আয়াতে বলা হয়েছে
তাদের পালনকর্তার পক্ষ থেকে তাদেরকে বলা হবে ‘সালাম’।
৫। শয়তান প্রকাশ্য শত্রু
اَلَمۡ اَعۡہَدۡ اِلَیۡکُمۡ یٰبَنِیۡۤ اٰدَمَ اَنۡ
لَّا تَعۡبُدُوا الشَّیۡطٰنَ ۚ
اِنَّہٗ لَکُمۡ عَدُوٌّ مُّبِیۡنٌ ۙ
হে বনী-আদম! আমি
কি তোমাদেরকে বলে রাখিনি যে, শয়তানের এবাদত করো
না,
সে তোমাদের প্রকাশ্য শত্রু? (সূরা ইয়াসিন ৩৬:৬০)
৬। হাত পা কৃতকর্মের সাক্ষ্য দিবে
اَلۡیَوۡمَ نَخۡتِمُ عَلٰۤی اَفۡوَاہِہِمۡ
وَتُکَلِّمُنَاۤ اَیۡدِیۡہِمۡ وَتَشۡہَدُ اَرۡجُلُہُمۡ بِمَا کَانُوۡا
یَکۡسِبُوۡنَ
আজ আমি তাদের মুখে
মোহর এঁটে দেব তাদের হাত আমার সাথে কথা বলবে এবং তাদের পা তাদের কৃতকর্মের সাক্ষ্য
দেবে। (সূরা ইয়াসিন ৩৬:৬৫)
৭। জান্নাতি শরাবে কেউ মাতাল হবেনা
لَا فِیۡہَا غَوۡلٌ وَّلَا ہُمۡ عَنۡہَا
یُنۡزَفُوۡنَ
তাতে মাথা ব্যথার
উপাদান নেই এবং তারা তা পান করে মাতালও হবে না। (সূরা আছ ছাফফাত ৩৭:৪৭)
৮। পুত্র সন্তানের জন্য কুরআনিক দুয়া
رَبِّ ہَبۡ لِیۡ مِنَ الصّٰلِحِیۡنَ
হে আমার পরওয়ারদেগার!
আমাকে এক সৎপুত্র দান কর। (সূরা আছ ছাফফাত ৩৭:১০০)
৯। অবাধ্যতার কারনে অনেক জাতি ধ্বংস হয়েছে
کَمۡ اَہۡلَکۡنَا مِنۡ قَبۡلِہِمۡ مِّنۡ قَرۡنٍ
فَنَادَوۡا وَّلَاتَ حِیۡنَ مَنَاصٍ
তাদের আগে আমি কত
জনগোষ্ঠীকে ধ্বংস করেছি, অতঃপর তারা আর্তনাদ
করতে শুরু করেছে কিন্তু তাদের নিষ্কৃতি লাভের সময় ছিল না। (সূরা ছোয়াদ ৩৮:৩)
১০। সকল পয়গাম্বরগণের প্রতি তাদের
উম্মতরা মিথ্যারোপ করেছে
اِنۡ کُلٌّ اِلَّا کَذَّبَ الرُّسُلَ فَحَقَّ
عِقَابِ
এদের প্রত্যেকেই
পয়গম্বরগণের প্রতি মিথ্যারোপ করেছে। ফলে আমার আযাব প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। (সূরা ছোয়াদ ৩৮:১৮)
১০। কোন কিছুই অযথা সৃষ্টি করা হয়নি
وَمَا خَلَقۡنَا السَّمَآءَ وَالۡاَرۡضَ وَمَا
بَیۡنَہُمَا بَاطِلًا ؕ
ذٰلِکَ ظَنُّ الَّذِیۡنَ کَفَرُوۡا ۚ
فَوَیۡلٌ لِّلَّذِیۡنَ کَفَرُوۡا مِنَ النَّارِ ؕ
আমি আসমান-যমীন ও
এতদুভয়ের মধ্যবর্তী কোন কিছু অযথা সৃষ্টি করিনি। এটা কাফেরদের ধারণা। অতএব, কাফেরদের জন্যে রয়েছে দূর্ভোগ অর্থাৎ জাহান্নাম। (সূরা ছোয়াদ ৩৮:২৭)
১১। বাতাস ও হযরত সোলাইমান (আঃ) অনুগত ছিল
فَسَخَّرۡنَا لَہُ الرِّیۡحَ تَجۡرِیۡ بِاَمۡرِہٖ
رُخَآءً حَیۡثُ اَصَابَ ۙ
তখন আমি বাতাসকে
তার অনুগত করে দিলাম, যা তার হুকুমে অবাধে
প্রবাহিত হত যেখানে সে পৌছাতে চাইত। (সূরা ছোয়াদ ৩৮:৩৬)
১২। জাহান্নাম অনেক নিকৃষ্ট স্থান
جَہَنَّمَ ۚ
یَصۡلَوۡنَہَا ۚ
فَبِئۡسَ الۡمِہَادُ
তথা জাহান্নাম। তারা
সেখানে প্রবেশ করবে। অতএব, কত নিকৃষ্ট সেই আবাস
স্থল। (সূরা ছোয়াদ ৩৮:৫৬)
১৩। জাহান্নামীদের খাবার
ہٰذَا ۙ
فَلۡیَذُوۡقُوۡہُ حَمِیۡمٌ وَّغَسَّاقٌ ۙ
এটা উত্তপ্ত পানি
ও পূঁজ;
অতএব তারা একে আস্বাদন করুক। (সূরা ছোয়াদ ৩৮:৫৭)
১৪। ইবলিশের অহংকার
قَالَ اَنَا خَیۡرٌ مِّنۡہُ ؕ
خَلَقۡتَنِیۡ مِنۡ نَّارٍ وَّخَلَقۡتَہٗ مِنۡ طِیۡنٍ
সে বললঃ আমি তার
চেয়ে উত্তম আপনি আমাকে আগুনের দ্বারা সৃষ্টি করেছেন, আর তাকে সৃষ্টি করেছেন মাটির দ্বারা। (সূরা ছোয়াদ ৩৮:৭৬)
১৫। বিপদে পড়লে মানুষ আল্লাহকে ডাকে,
বিপদ কেটে গেলে ভুলে যায়
وَاِذَا مَسَّ الۡاِنۡسَانَ ضُرٌّ دَعَا رَبَّہٗ
مُنِیۡبًا اِلَیۡہِ ثُمَّ اِذَا خَوَّلَہٗ نِعۡمَۃً مِّنۡہُ نَسِیَ مَا کَانَ
یَدۡعُوۡۤا اِلَیۡہِ مِنۡ قَبۡلُ وَجَعَلَ لِلّٰہِ اَنۡدَادًا لِّیُضِلَّ
عَنۡ سَبِیۡلِہٖ ؕ
قُلۡ تَمَتَّعۡ بِکُفۡرِکَ قَلِیۡلًا ٭ۖ
اِنَّکَ مِنۡ اَصۡحٰبِ النَّارِ
যখন মানুষকে দুঃখ-কষ্ট
স্পর্শ করে, তখন সে একাগ্রচিত্তে তার পালনকর্তাকে
ডাকে,
অতঃপর তিনি যখন তাকে নেয়ামত দান করেন, তখন সে কষ্টের কথা বিস্মৃত হয়ে যায়, যার জন্যে পূর্বে ডেকেছিল এবং আল্লাহর সমকক্ষ স্থির করে; যাতে করে অপরকে আল্লাহর পথ থেকে বিভ্রান্ত করে। বলুন, তুমি তোমার কুফর সহকারে কিছুকাল জীবনোপভোগ করে নাও। নিশ্চয়
তুমি জাহান্নামীদের অন্তর্ভূক্ত। (সূরা আয যুমার ৩৯:৮)
১৬। আবেদ এবং জাহেল ব্যক্তি কখনো এক নয়
اَمَّنۡ ہُوَ قَانِتٌ اٰنَآءَ الَّیۡلِ سَاجِدًا
وَّقَآئِمًا یَّحۡذَرُ الۡاٰخِرَۃَ وَیَرۡجُوۡا رَحۡمَۃَ رَبِّہٖ ؕ
قُلۡ ہَلۡ یَسۡتَوِی الَّذِیۡنَ یَعۡلَمُوۡنَ وَالَّذِیۡنَ
لَا یَعۡلَمُوۡنَ ؕ
اِنَّمَا یَتَذَکَّرُ اُولُوا الۡاَلۡبَابِ
যে ব্যক্তি রাত্রিকালে
সেজদার মাধ্যমে অথবা দাঁড়িয়ে এবাদত করে, পরকালের আশংকা রাখে এবং তার পালনকর্তার রহমত প্রত্যাশা করে, সে কি তার সমান, যে এরূপ করে না; বলুন, যারা জানে এবং যারা জানে না; তারা কি সমান হতে পারে? চিন্তা-ভাবনা কেবল
তারাই করে, যারা বুদ্ধিমান। (সূরা আয যুমার ৩৯:৯)
১৭। আল্লাহ অভিমুখী ব্যক্তির জন্য
সুসংবাদ
وَالَّذِیۡنَ اجۡتَنَبُوا الطَّاغُوۡتَ اَنۡ
یَّعۡبُدُوۡہَا وَاَنَابُوۡۤا اِلَی اللّٰہِ لَہُمُ الۡبُشۡرٰی ۚ
فَبَشِّرۡ عِبَادِ ۙ
যারা শয়তানী শক্তির
পূজা-অর্চনা থেকে দূরে থাকে এবং আল্লাহ অভিমুখী হয়, তাদের জন্যে রয়েছে সুসংবাদ। অতএব, সুসংবাদ দিন আমার বান্দাদেরকে। (সূরা আয যুমার ৩৯:১৭)
১৮। যারা কুরআনের কথা মনযোগ দিয়ে শ্রবণ
করে তারাই বুদ্ধিমান
الَّذِیۡنَ یَسۡتَمِعُوۡنَ الۡقَوۡلَ
فَیَتَّبِعُوۡنَ اَحۡسَنَہٗ ؕ
اُولٰٓئِکَ الَّذِیۡنَ ہَدٰىہُمُ اللّٰہُ وَاُولٰٓئِکَ ہُمۡ اُولُوا الۡاَلۡبَابِ
যারা মনোনিবেশ সহকারে
কথা শুনে,
অতঃপর যা উত্তম, তার অনুসরণ করে। তাদেরকেই আল্লাহ সৎপথ প্রদর্শন করেন এবং তারাই বুদ্ধিমান। (সূরা আয যুমার ৩৯:১৮)
১৯। আল্লাহ যার বক্ষ ইসলামের জন্য
উন্মুক্ত করেছেন সে হেদায়েতের আলো প্রাপ্ত
اَفَمَنۡ شَرَحَ اللّٰہُ صَدۡرَہٗ لِلۡاِسۡلَامِ
فَہُوَ عَلٰی نُوۡرٍ مِّنۡ رَّبِّہٖ ؕ
فَوَیۡلٌ لِّلۡقٰسِیَۃِ قُلُوۡبُہُمۡ مِّنۡ ذِکۡرِ اللّٰہِ ؕ
اُولٰٓئِکَ فِیۡ ضَلٰلٍ مُّبِیۡنٍ
আল্লাহ যার বক্ষ
ইসলামের জন্যে উম্মুক্ত করে দিয়েছেন, অতঃপর সে তার পালনকর্তার পক্ষ থেকে আগত আলোর মাঝে রয়েছে। (সে কি তার সমান, যে এরূপ নয়) যাদের অন্তর আল্লাহ স্মরণের ব্যাপারে কঠোর, তাদের জন্যে দূর্ভোগ। তারা সুস্পষ্ঠ গোমরাহীতে রয়েছে। (সূরা আয যুমার ৩৯:২২)
২০। অনুধাবনকারীর জন্য কুরআনে সকল কিছুই
বর্ণিত আছে
وَلَقَدۡ ضَرَبۡنَا لِلنَّاسِ فِیۡ ہٰذَا
الۡقُرۡاٰنِ مِنۡ کُلِّ مَثَلٍ لَّعَلَّہُمۡ یَتَذَکَّرُوۡنَ ۚ
আমি এ কোরআনে মানুষের
জন্যে সব দৃষ্টান্তই বর্ণনা করেছি, যাতে তারা অনুধাবন করে; (সূরা আয যুমার ৩৯:২৭)
পিডিএফ ডাউনলোড লিংক
পরবর্তী সকল আপডেট পেতে এখানে ক্লিক করে আমাদের Facebook পেজে ফলো করুন।
WhatsApp গ্রুপ লিংক