কারবালা / আশুরা / ১০ই মুহাররাম

কারবালা, আশুরা বা ১০ই মুহাররম
কারবালা, আশুরা বা ১০ই মুহাররম 

আশুরা বা ১০ই মুহাররম মুসলমানদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ দিন। এই আশুরার আলোচনা দুই ভাবে করা যায়।

১) হাদিসের আলোকে।

২) ইতিহাসের আলোকে।

হাদিসের আলোকেঃ অর্থাৎ মুহাররম মাসের দশ তারিখে রাসুল (সাঃ) কোন আমল করতেন কিনাএই দিন সম্পর্কে রাসুল (সাঃ) এর কোন দিকনির্দেশনা আছে কিনা?


ইতিহাসের আলোকেঃ রাসুল (সাঃ) ইন্তিকাল করার পরে যেহেতু ঐতিহাসিক কারবালার হৃদয় বিদারক ঘটনা ঘটেছিল তাই কারবালার ইতিহাসের বিষয়টি রাসুল সাঃ এর হাদিসের আলোকে আলোচনা করার সুযোগ নেই। সেটা আলোচনা করতে হবে ইতিহাসের আলোকে।

আমলঃ ইসলামে যে কোন ফরজওয়াজিবসুন্নত নফল আমল সাব্যস্ত হওয়ার জন্য কুরআন এবং হাদিসের দলিল প্রয়োজন হয়। 

যেহেতু রাসুল (সাঃ) ইন্তেকাল করেছেন ১১ হিজরি সালে এবং কারবালার ঘটনা ঘটেছিল ৬১ হিজরিতে। অর্থাৎ প্রায় ৫০ বছর পর। তাই কারবালার ইতিহাস নিয়ে রাসুল (সাঃ) এর মুখ নিঃসৃত কোন হাদিস না থাকাই স্বাভাবিক এবং নির্ভরযোগ্য সনদে কোন ভবিষ্যতবাণী ও পাওয়া যায়না। 

সে অনুযায়ী কারবালার ইতিহাস নিয়ে ইসলামে কোন আমল চালু হতে পারেনা। একজন মুসলমান হিসেবে অবশ্যই রাসুল সাঃ এর পরিবারের প্রতি সকলের ভালোবাসা থাকবে,  কারবালার দুঃখজনক ইতিহাস নিয়ে একজন মুসলমানের মন কাঁদবে  এটাই ঈমানি দাবী। কিন্তু সেটার জন্য নতুন কোন আমল চালু করা কুরআন হাদিস সম্মত নয়।

যারা বলেন রাসুলের পরিবার পরিজনকে(আহলে বায়েত)  শহিদ করা হয়েছে তাই আমরা উনাদের ভালোবাসায় নিজেকে আঘাত করি। উনাদের স্মৃতিতে তাজিয়া মিছিল করে দুঃখ প্রকাশ করি।

তাদের নিকট আমার প্রশ্নঃ আপনি রাসুল সাঃ কে বেশি ভালোবাসেননাকি উনার নাতিদেরকেহযরত হুসাইন রাঃ এর কারনে আপনি নিজেকে আঘাত করছেন। যুদ্ধে রাসুল সাঃ এর দাঁত ভেঙ্গে গিয়েছিল সেদিন এর কথা স্বরণ করে আপনি নিজের কয়টা দাঁত ভেঙ্গেছেন?

হাদিসের আলোকে আশুরাঃ হাদিসের আলোকে জানা যায় হযরত মুসা (আঃ) কে মুহাররম এর দশ তারিখে আল্লাহ তা'য়ালা ফিরআউনের কবল থেকে রক্ষা করেন। তাই ইহুদীরা এই দিনে সিয়াম পালন করতো। রাসুল সাঃ তাই সাহাবাদের আদেশ করেন তারা যেন এই দিন সিয়াম পালন করে কারন মুসা (আঃ) তাদের চাইতে আমাদের কাছে বেশি প্রিয়। তবে সিয়াম পালন করার ক্ষেত্রে ইহুদিদেরকে অনুস্বরণ করা যাবেনা। অর্থাৎ তারা দশ তারিখে রোজা থাকলে মুসলমানরা যেন নয় তারিখেও একটি রোজা রাখে। তাহলে ইহুদীদের সাথে মিল থাকলোনা।

নয় তারিখ+ দশ তারিখ। মোট দুইটি রোজা রাখতে হবে।

হাদিসের আলোকে জানা যায় রমজানের রোজা ফরজ হওয়ার আগে আশুরার রোজা ফরজ ছিল। সুতরাং এই রোজার গুরুত্ব অনেক বেশি। 

হাদিসের আলোকে আরো একটি আমল হল পরিবার পরিজনের জন্য ভালো খাবারের ব্যবস্থা করা। যদিও এটার সনদ কিছুটা দুর্বল।

সাহাবারা তাদের ছোট ছোট বাচ্চাকে এই আশুরার রোজা রাখার জন্য উৎসাহ দিতেন। তাদের হাতে খেলনা দিতেন। যেন খেলতে গিয়ে ক্ষুধার কথা ভুলে যায়। 

২০২১ সালে আশুরার দশ তারিখ হল শুক্রবার। তাই কেউ রোজা রাখতে চাইলে আগামি কাল বৃহস্পতিবার  এবং শুক্রবার রোজা রাখতে পারেন। মনে রাখবেন এই রোজা (এবং দুর্বল সনদে) ভালো খাবার  ছাড়া আশুরার অন্য কোন আমল হাদিস দ্বারা সাব্যস্ত নয়।