Showing posts with label Amal. Show all posts
Showing posts with label Amal. Show all posts

Dua for Pain Relief | Dua of Pain | According to the Sunnah

 

Dua for Pain Relief | Dua of Pain | According to the Sunnah
Dua for Pain Relief

It is the duty of every Muslim to follow the methods that the Prophet (peace and blessings of Allaah be upon him) taught to cure diseases. The prayer for healing of pain in the light of Sahih Hadith is mentioned below.

চন্দ্রগ্রহণ – সূর্যগ্রহণ এবং আমাদের করণীয়-বর্জনীয় "Lunar eclipse - solar eclipse" and our do's and don'ts | মুহাঃ আবুবকর ছিদ্দিক | Abubokar Siddik

"চন্দ্রগ্রহণ" এবং আমাদের করণীয়-বর্জনীয় "Lunar eclipse - solar eclipse" and our do's and don'ts
"চন্দ্রগ্রহণ  সূর্যগ্রহণ" এবং আমাদের করণীয়-বর্জনীয়

মহান আল্লাহর কুদরতের অনন্য নির্দশন ও সৃষ্টির মধ্যে চন্দ্র-সূর্য অন্যতম। প্রতিদিনই মানুষ চন্দ্র সূর্য দেখে থাকে। সময়ের ব্যবধানে চন্দ্রগ্রহণ ও সূর্যগ্রহণ হয়ে থাকে। এই চন্দ্রগ্রহণ এবং সূর্যগ্রহণ আল্লাহ তাআলার কুদরতের দুটি অন্যতম নিদর্শন। এসব নিয়ে রয়েছে ইসলামের সুস্পষ্ট নির্দেশনা ও করণীয়। কী সেসব করণীয় ও দিকনির্দেশনা?

সূর্যগ্রহণ কী?

চাঁদ যখন পরিভ্রমণরত অবস্থায় কিছু সময়ের জন্য পৃথিবী ও সূর্যের মাঝখানে এসে পড়ে, তখন পৃথিবীর কোন দর্শকের কাছে সূর্য আংশিক বা সম্পূর্ণরূপে অদৃশ্য হয়ে যায় (কিছু সময়ের জন্য)। এই ঘটনাকে সূর্যগ্রহণ বলা হয়।

চন্দ্র গ্রহণ কী?

চন্দ্রগ্রহণকে আরবিতে খুসুফ বলা হয়। গ্রহণ লাগলে সূর্য যেমন অন্ধকার ছায়ার আবর্তে পতিত হয়ে অন্ধকার হয়ে যায়, তেমনি চন্দ্রও বছরে দুইবার স্বীয় কক্ষপথে পরিভ্রমণরত অবস্থায় অন্ধকারের ছায়ায় আচ্ছাদিত হয়ে থাকে। ইহার আংশিক রূপ কখনো দৃশ্যমান হয়। আবার কখনো সার্বিক রূপ পরিদৃষ্ট হয়। চন্দ্রের এ কালো রঙ বা অন্ধকারের হাতছানিকেই চন্দ্রগ্রহণরূপে আখ্যায়িত করা হয়।

কুরআনুল কারিমে আল্লাহ তাআলা এ সম্পর্কে সুস্পষ্ট বর্ণনা দিয়েছেন। আল্লাহ তাআলা বলেন-

فَإِذَا بَرِقَ الْبَصَرُ - وَخَسَفَ الْقَمَرُ - وَجُمِعَ الشَّمْسُ وَالْقَمَرُ

যখন দৃষ্টি চমকে যাবে। চন্দ্র জ্যোতিহীন হয়ে যাবে। এবং সূর্য ও চন্দ্রকে একত্রিত করা হবে।

(সুরা কিয়ামাহ : আয়াত ৭-৯)

উল্লেখিত আয়াতে চন্দ্র জ্যোতিহীন হয়ে পড়ার বাস্তব রূপই হচ্ছে চন্দ্রগ্রহণ।

চন্দ্রগ্রহণ সম্পর্কে বিশ্বনবির নির্দেশনা

জাহেলি যুগে চন্দ্রগ্রহণ কিংবা সূর্যগ্রহণ সম্পর্কে বিরূপ ধারণা ছিল। তারা মনে করত দুনিয়ায় বড় বড় ব্যক্তিত্বের অধিকারী লোকদের কোনো অঘটন ঘটলে এসব হয়। আর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ছেলে ইবরাহিম-এর মৃত্যুর দিনে সুর্যগ্রহণ হয়। তখন সাহাবায়ে কেরাম তা বলাবললি করছিল। তা শুনে বিশ্বনবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম চন্দ্রগ্রহণ ও সূর্যগ্রহণ সম্পর্কে তাদের সুস্পষ্ট বর্ণনা দেন। হাদিসে এসেছে-

> হজরত মুগিরা ইবনে শুবা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন-

إِنَّ الشَّمْسَ وَالْقَمَرَ آيَتَانِ مِنْ آياتِ اللهِ، لاَ يَنْخَسِفَانِ لِمَوْتِ أَحَدٍ وَلاَ لِحَيَاتِهِ، فَإِذَا رَأَيْتُمْ ذلِكَ فَادْعُوا اللهَ وَكَبِّرُوا وَصَلُّوا وَتَصَدَّقُوا

সূর্য ও চন্দ্র আল্লাহর নিদর্শনসমূহের মধ্যে দুটি নিদর্শন। কারো মৃত্যু বা জন্মের কারণে সূর্যগ্রহণ ও চন্দ্রগ্রহণ হয় না। কাজেই যখন তোমরা তা দেখবে তখন-

১. তোমরা আল্লাহর কাছে দোয়া করবে।

২. তাঁর মহত্ব ঘোষণা করবে আর

৩. নামাজ আদায় করবে এবং

৪. সাদকা প্রদান করবে। (বুখারি ও মুসলিম)

> হজরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন-

إِنَّ الشَّمْسَ وَالْقَمَرَ مِنْ آيَاتِ اللهِ، وَإِنَّهُمَا لَا يَنْخَسِفَانِ لِمَوْتِ أَحَدٍ، وَلَا لِحَيَاتِهِ، فَإِذَا رَأَيْتُمُوهُمَا فَكَبِّرُوا، وَادْعُوا اللهَ وَصَلُّوا وَتَصَدَّقُوا،

সূর্য ও চন্দ্র আল্লাহর কুদর (ক্ষমতার) বিশেষ নিদর্শন। কারো মৃত্যু বা জন্মের কারণে সূর্যগ্রহণ হয় না। অতঃপর যখন তোমরা চন্দ্রগ্রহণ বা সূর্যগ্রহণ দেখতে পাও, তখন-

১. তাকবির (اَللهُ اَكْبَر) বল;

২. আল্লাহর কাছে দোয়া কর;

৩. নামাজ আদায় কর এবং

৪. দান-সদকা কর। (মুসলিম)

হাদিসের নির্দেশনা থেকে এ কথা সুস্পষ্ট যে, চন্দ্র ও সূর্য মহান আল্লাহ তাআলার নিদর্শনসমূহের মধ্যে দুটি নিদর্শন। আর তাতে গ্রহণ লাগা আল্লাহ তাআলার হুকুমেই হয়। তাদের নিজস্ব কোনো শক্তি বা ক্ষমতা নেই। আল্লাহ তাআলার হুকুমের অধীনেই তাদের চলাচল এবং কার্যক্রম।

তাতে গ্রহণ লাগলে মুমিন মুসলমানের করণীয় সম্পর্কে সুস্পষ্ট দিকনির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সুতরাং চন্দ্রগ্রহণের এ সময়ে বেশি বেশি দোয়া করা, তাসবিহ পড়া, তাওবাহ-ইসতেগফার করা, নামাজ পড়া এবং দান-সাদকার আবশ্যক কর্তব্য।

এ সময় অযথা অনর্থক গল্প-গুজব, হাসি-তামাশায় সময় অতিবাহিত না করে অন্তরে মহান আল্লাহর প্রতি ভয় রাখা জরুরি। কেননা এসবই মহান আল্লাহর পক্ষ থেকে বান্দার জন্য সতর্কতা। অনেক হাদিসে চন্দ্রগ্রহণ ও সূর্যগ্রহণকে বিশেষ বিপদের সময় বা ক্রান্তিকাল বলে গণ্য করা হয়েছে।

চন্দ্রগ্রহণের নামাজ

হাদিসে পাকে সূর্যগ্রহণের নামাজের মতো চন্দ্রগ্রহণের নামাজও প্রমাণিত এবং সুন্নাত। তবে এ নামাজ জামাআতে ও একাকি পড়া নিয়ে মতভেদ রয়েছে। হানাফি অনুসারীরা এ নামাজ একাকি নিজ নিজ ঘরে পড়ার ওপর তাগিদ দিয়েছেন। এ সম্পর্কে ফিকহের বিখ্যাত গ্রন্থ বাদায়েউস সানাঈ-তে এসেছে-

ﺃَﻣَّﺎ ﻓِﻲ ﺧُﺴُﻮﻑِ ﺍﻟْﻘَﻤَﺮِ ﻓَﻴُﺼَﻠُّﻮﻥَ ﻓِﻲ ﻣَﻨَﺎﺯِﻟِﻬِﻢْ؛ ﻟِﺄَﻥَّ ﺍﻟﺴُّﻨَّﺔَ ﻓِﻴﻬَﺎ ﺃَﻥْ ﻳُﺼَﻠُّﻮﺍ ﻭُﺣْﺪَﺍﻧًﺎ

চন্দ্রগ্রহণের সময় ঘরে নামাজ আদায় করা হবে। কেননা সুন্নাহ হচ্ছে, তখন একাকি নামাজ পড়া। (বাদায়েউস সানাঈ : ১/২৮২)

চন্দ্রগ্রহণের সময় নারীদের করণীয়

নারীরাও চন্দ্রগ্রহণ বা সূর্যগ্রহণের সময় ঘরে একাকি নামাজ আদায় করবেন। গ্রহণ চলাকালীন সময়ে জিকির-আজকার ও তাসবিহ-তাহলিল, দোয়া এবং তাওবাহ-ইসতেগফারে নিয়োজিত থাকবেন।

কুসংস্কারে বিশ্বাস না করা জরুরি

চন্দ্রগ্রহণ ও সূর্যগ্রহণ নিয়ে সমাজে ব্যাপক কুসংস্কার, বিভ্রান্তি ও অমূলক ধারণা রয়েছে। বিশেষ করে গর্ভবর্তী ও কুমারী নারীদের ক্ষেত্রে এ কুসংস্কার অনেক বেশি। সমাজে প্রচলিত কুসংস্কারগুলো হলো-

১. এ সময় কোনো কিছু খেতে নেই। বলা হয়- চন্দ্রগ্রহণের ৯ ঘণ্টা আগে এবং সূর্যগ্রহণের ১২ ঘণ্টা আগে থেকে খাবার গ্রহণ করা নিষেধ!

২. এ সময় তৈরি করা খাবার ফেলে দিতে হবে!

৩. এ সময় যৌন সম্ভোগ করা যাবে না!

৪. গর্ভবতী মায়েরা এ সময় যা করে, তার প্রভাব গর্ভের সন্তানের ওপর পড়বে!

৫. গ্রহণের সময় গর্ভবতী মায়েদের কাত হয়ে শোয়া নিষেধ; কারণ এভাবে শোয়ার ফলে নাকি গর্ভের শিশু বিকলাঙ্গ হয়!

৬. চন্দ্রগ্রহণ ও সূর্যগ্রহণের সময় জন্ম নেওয়া শিশুদের ব্যাপারে দুই ধরনের গপ্প শুনতে পাওয়া যায়। প্রথমত : শিশুটি অসুস্থ হবে এবং দ্বিতীয়ত : শিশুটি চালাক হবে!

৭. প্রসূতি মা চন্দ্রগ্রহণ বা সূর্যগ্রহণ দেখলে তার অনাগত সন্তানের বিকলঙ্গ হবে!

৮. চন্দ্র বা সূর্যগ্রহণের সময় যদি গর্ভবতী নারী কিছু কাটাকাটি করেন, তাহলে গর্ভস্থ সন্তানের ক্ষতি হয়।

৯. এ সময় কোনো নারীকে ঘুম বা পানাহার থেকে বারণ করাও অন্যায়।

১০. চলা-ফেরায় বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।

এ রকম অনেক কুসংস্কারমূলক কথা প্রচলিত রয়েছে। এ সবই কুসংস্কার ও ভুল বিশ্বাস। ইসলামের এ সবের কোনো অস্তিত্ব নেই। বরং এ সবে বিশ্বাস করা ঈমানহীনতার শামিল।

মূল কথা হলো

চন্দ্র গ্রহণ বা সূর্যগ্রহণের সময় কুমারী কিংবা গর্ভবতী মায়েদের ভয় কিংবা আশঙ্কার কিছু নেই। অন্যান্য দিনের মতো তারা স্বাভাবিক জীবন-যাপন করবে। তবে হাদিসে নির্দেশিত আমলে গ্রহণের সময় অতিবাহিত করাই হচ্ছে উত্তম।

মুমিন মুসলমানের উচিত, চন্দ্রগ্রহণের সময় হাদিসে ঘোষিত আমলগুলো যথাযথভাবে আদায় করা। সমাজে প্রচলিত কুসংস্কারে বিশ্বাস না করা। কেননা এসব কুসংস্কারে বিশ্বাস করা ঈমানের জন্য ক্ষতিকারক।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে চন্দ্রগ্রহণের সময় দোয়া, তাসবিহ, তাওবাহ, ইসতেগয়ার, নামাজ ও দান-সাদকা করার তাওফিক দান করুন। দুনিয়ার যাবতীয় অনিষ্টতা থেকে আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনার তাওফিক দান করুন। আমিন।

সংকলিত

আরো পড়ুনঃ

শতাব্দীর দীর্ঘতম চন্দ্রগ্রহণ।

গর্ভবতীর উপর চন্দ্রগ্রহণের প্রভাব। 

.

সূর্যগ্রহণ কি, সূর্যগ্রহণ কয় প্রকার ও কি কি, চন্দ্রগ্রহণ ও সূর্যগ্রহণ কাকে বলে, চন্দ্রগ্রহণ ও সূর্যগ্রহণ কেন হয়, সূর্যগ্রহণ ও চন্দ্রগ্রহণ পার্থক্য, চন্দ্রগ্রহণের সময় গর্ভবতী, চন্দ্রগ্রহণের সময় সহবাস করলে কি হয়, Lunar eclipse, lunar eclipse meaning, total lunar eclipse meaning, lunar eclipse meaning spiritual,  what does total lunar eclipse mean, solar eclipse and lunar eclipse, solar eclipse meaning, types of solar eclipse, 3 types of solar eclipse, 

.

সুন্নাত ও আধুনিক বিজ্ঞান | Sunnah and Modern Science

রাসূল (সাঃ) এর  সুন্নাত ও আধুনিক বিজ্ঞান , السنة النبوية والعلم الحديث للنبي صلى الله عليه وسلم , Sunnah and modern science of the Prophet (peace be upon him),
সুন্নাত ও আধুনিক বিজ্ঞান

দিন যত যাচ্ছে, বিজ্ঞানীরা মানুষের কল্যাণের জন্য অত্যাধুনিক পদ্ধতি আবিষ্কার করে চলছেন। তবে মজার বিষয় হলো বিজ্ঞানীরা আধুনিক যুগে যা কেবল আবিষ্কার করছেন বিশ্বনবী মোহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম চৌদ্দশ বছর আগে সেগুলো উম্মতকে বাতলে দিয়েছেন। সেগুলোর উপর আমলের জোর তাগিদ দিয়েছেন। এ জন্যই তো আধুনিক এই যুগে রাসূলের সুন্নত গবেষণা করে বিজ্ঞানীরা নিত্যনতুন বস্তু আবিষ্কার করে চলছেন। কয়েকটি সূন্নাত নিয়ে সংক্ষেপে আলোচনা করা হলঃ 

কারবালা / আশুরা / ১০ই মুহাররাম

কারবালা, আশুরা বা ১০ই মুহাররম
কারবালা, আশুরা বা ১০ই মুহাররম 

আশুরা বা ১০ই মুহাররম মুসলমানদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ দিন। এই আশুরার আলোচনা দুই ভাবে করা যায়।

১) হাদিসের আলোকে।

২) ইতিহাসের আলোকে।

হাদিসের আলোকেঃ অর্থাৎ মুহাররম মাসের দশ তারিখে রাসুল (সাঃ) কোন আমল করতেন কিনাএই দিন সম্পর্কে রাসুল (সাঃ) এর কোন দিকনির্দেশনা আছে কিনা?


ইতিহাসের আলোকেঃ রাসুল (সাঃ) ইন্তিকাল করার পরে যেহেতু ঐতিহাসিক কারবালার হৃদয় বিদারক ঘটনা ঘটেছিল তাই কারবালার ইতিহাসের বিষয়টি রাসুল সাঃ এর হাদিসের আলোকে আলোচনা করার সুযোগ নেই। সেটা আলোচনা করতে হবে ইতিহাসের আলোকে।

আমলঃ ইসলামে যে কোন ফরজওয়াজিবসুন্নত নফল আমল সাব্যস্ত হওয়ার জন্য কুরআন এবং হাদিসের দলিল প্রয়োজন হয়। 

যেহেতু রাসুল (সাঃ) ইন্তেকাল করেছেন ১১ হিজরি সালে এবং কারবালার ঘটনা ঘটেছিল ৬১ হিজরিতে। অর্থাৎ প্রায় ৫০ বছর পর। তাই কারবালার ইতিহাস নিয়ে রাসুল (সাঃ) এর মুখ নিঃসৃত কোন হাদিস না থাকাই স্বাভাবিক এবং নির্ভরযোগ্য সনদে কোন ভবিষ্যতবাণী ও পাওয়া যায়না। 

সে অনুযায়ী কারবালার ইতিহাস নিয়ে ইসলামে কোন আমল চালু হতে পারেনা। একজন মুসলমান হিসেবে অবশ্যই রাসুল সাঃ এর পরিবারের প্রতি সকলের ভালোবাসা থাকবে,  কারবালার দুঃখজনক ইতিহাস নিয়ে একজন মুসলমানের মন কাঁদবে  এটাই ঈমানি দাবী। কিন্তু সেটার জন্য নতুন কোন আমল চালু করা কুরআন হাদিস সম্মত নয়।

যারা বলেন রাসুলের পরিবার পরিজনকে(আহলে বায়েত)  শহিদ করা হয়েছে তাই আমরা উনাদের ভালোবাসায় নিজেকে আঘাত করি। উনাদের স্মৃতিতে তাজিয়া মিছিল করে দুঃখ প্রকাশ করি।

তাদের নিকট আমার প্রশ্নঃ আপনি রাসুল সাঃ কে বেশি ভালোবাসেননাকি উনার নাতিদেরকেহযরত হুসাইন রাঃ এর কারনে আপনি নিজেকে আঘাত করছেন। যুদ্ধে রাসুল সাঃ এর দাঁত ভেঙ্গে গিয়েছিল সেদিন এর কথা স্বরণ করে আপনি নিজের কয়টা দাঁত ভেঙ্গেছেন?

হাদিসের আলোকে আশুরাঃ হাদিসের আলোকে জানা যায় হযরত মুসা (আঃ) কে মুহাররম এর দশ তারিখে আল্লাহ তা'য়ালা ফিরআউনের কবল থেকে রক্ষা করেন। তাই ইহুদীরা এই দিনে সিয়াম পালন করতো। রাসুল সাঃ তাই সাহাবাদের আদেশ করেন তারা যেন এই দিন সিয়াম পালন করে কারন মুসা (আঃ) তাদের চাইতে আমাদের কাছে বেশি প্রিয়। তবে সিয়াম পালন করার ক্ষেত্রে ইহুদিদেরকে অনুস্বরণ করা যাবেনা। অর্থাৎ তারা দশ তারিখে রোজা থাকলে মুসলমানরা যেন নয় তারিখেও একটি রোজা রাখে। তাহলে ইহুদীদের সাথে মিল থাকলোনা।

নয় তারিখ+ দশ তারিখ। মোট দুইটি রোজা রাখতে হবে।

হাদিসের আলোকে জানা যায় রমজানের রোজা ফরজ হওয়ার আগে আশুরার রোজা ফরজ ছিল। সুতরাং এই রোজার গুরুত্ব অনেক বেশি। 

হাদিসের আলোকে আরো একটি আমল হল পরিবার পরিজনের জন্য ভালো খাবারের ব্যবস্থা করা। যদিও এটার সনদ কিছুটা দুর্বল।

সাহাবারা তাদের ছোট ছোট বাচ্চাকে এই আশুরার রোজা রাখার জন্য উৎসাহ দিতেন। তাদের হাতে খেলনা দিতেন। যেন খেলতে গিয়ে ক্ষুধার কথা ভুলে যায়। 

২০২১ সালে আশুরার দশ তারিখ হল শুক্রবার। তাই কেউ রোজা রাখতে চাইলে আগামি কাল বৃহস্পতিবার  এবং শুক্রবার রোজা রাখতে পারেন। মনে রাখবেন এই রোজা (এবং দুর্বল সনদে) ভালো খাবার  ছাড়া আশুরার অন্য কোন আমল হাদিস দ্বারা সাব্যস্ত নয়।

 


নেককার সন্তান লাভের কয়েকটি কুরআনিক দু'য়া

দোয়া-১

হযরত জাকারিয়া আঃ এর দোয়া

নেককার সন্তান লাভের কুরআনিক দু'য়া

সন্তান লাভের কুরআনিক দুআ 


رَبِّ
هَبْ لِي مِنْ لَدُنْكَ ذُرِّيَّةً طَيِّبَةً إِنَّكَ سَمِيعُ الدُّعَاءِ

অর্থাৎ হে আমাদের প্রভু! আপনার নিকট থেকে আমাকে পূত-পবিত্র সন্তান দান করুন। নিশ্চয় আপনি প্রার্থনা কবুলকারী। [সূরা আল-ইমরান ৩:৩৮]

তাফসিরঃ

হযরত যাকারিয়া (আঃ) দেখেন যে, আল্লাহ তা'আলা হযরত মারইয়াম (আঃ)-কে অসময়ের ফল দান করছেন। শীতকালে গ্রীষ্মকালের ফল এবং গ্রীষ্মকালে শীতকালের ফল তাঁর নিকট বিদ্যমান থাকছে। সুতরাং তিনিও স্বীয় বার্ধক্য ও স্বীয় সহধর্মিণীর বন্ধ্যাত্ব জানা সত্ত্বেও আল্লাহ তা'আলার নিকট অসময়ে ফল অর্থাৎ সুসন্তান লাভের প্রার্থনা জানাতে থাকেন। আর যেহেতু এটা বাহ্যতঃ অসম্ভব জিনিস ছিল, তাই তিনি অতি সন্তর্পণে এ প্রার্থনা জানান। যেমন অন্য জায়গায় রয়েছেঃ নেদায়ান খাফীয়া অর্থাৎ গোপন প্রার্থনা।(তাফসিরে ইবনে কাসির।)

হযরত ইব্রাহিম আঃ এর দোয়া

দোয়া-২

নেককার সন্তান লাভের কুরআনিক দু'আ

সন্তান লাভের কুরআনিক দুআ 


رَبِّ
اجۡعَلۡنِیۡ مُقِیۡمَ الصَّلٰوۃِ وَمِنۡ ذُرِّیَّتِیۡ ٭ۖ رَبَّنَا وَتَقَبَّلۡ دُعَآءِ 

হে আমার পালনকর্তা, আমাকে নামায কায়েমকারী করুন এবং আমার সন্তানদের মধ্যে থেকেও। হে আমাদের পালনকর্তা, এবং কবুল করুন আমাদের দোয়া। [সুরা ইব্রাহিম ১৪:৪০]

তাফসির

ইবনু জারীর (রঃ) বলেনঃ এখানে আল্লাহ তাআলা স্বীয় বন্ধু ইবরাহীম খালীলের (আঃ) সম্পর্কে খবর দিচ্ছেন যে, তিনি বলেনঃ হে আমার প্রতিপালক! আমার ইচ্ছা ও মনের বাসনা আমার চেয়ে আপনিই ভাল জানেন। আমি চাই যে, এখানকার অধিবাসীরা যেন আপনার সন্তুষ্টি কামনাকারী হয় এবং শুধুমাত্র আপনারই প্রতি অনুরাগী হয়। প্রকাশ্য ও গোপনীয় সবই আপনার কাছে পূর্ণরূপে জ্বাজ্জল্যমান। যমীন ও আসমানের প্রতিটি জিনিসের অবস্থা সম্পর্কে আপনি ওয়াকিফহাল। এটা আমার প্রতি আপনার বড় অনুগ্রহ যে, এই বৃদ্ধ বয়সেও আপনি আমাকে ইসমাঈল (আঃ) ও ইসহাকের (আঃ) । নয় দুটি সুসন্তান দান করেছেন। আপনি প্রার্থনা কবুলকারী বটে। আমি চেয়েছি আর আপনি দিয়েছেন। সুতরাং হে আমার প্রতিপালক! এজন্যে আমি আপনার নিকট বড়ই কৃতজ্ঞ হে আমার প্রতিপালক! আমাকে আপনি নামায প্রতিষ্ঠিতকারী বানিয়ে দিন এবং আমার সন্তানদের মধ্যেও এই সিলসিলা বা ক্ৰম কায়েম রাখুন! আমার সমস্ত প্রার্থনা কবুল করুন।” (তাফসিরে ইবনে কাসির)

 দোয়া-৩

সন্তান লাভের কুরআনিক দুআ 


رَبِّ
لَا تَذَرْنِي فَرْدًا وَأَنتَ خَيْرُ الْوَارِثِينَ

অর্থাৎ হে আমার পালনকর্তা আমাকে একা রেখো না। তুমি তো উত্তম ওয়ারিস। [ সুরা আম্বিয়া ২১:৮৯ ]

তাফসির

আল্লাহ তাআলা স্বীয় বান্দা হযরত যাকারিয়্যার (আঃ) খবর দিচ্ছেন যে, তিনি প্রার্থনা করেছিলেনঃ আমাকে একটি সন্তান দান করুন, যে আমার পরে নবী হবে। সূরায়ে মারইয়াম ও সূরায়ে আল-ইমরানে এই ঘটনা বিস্তারিত ভাবে বর্ণিত হয়েছে। তিনি এই দুআ নির্জনে করেছিলেন। 

আমাকে একা ছেড়ে দিয়েন না, এই উক্তির তাৎপর্য হচ্ছেঃ আমাকে সন্তানহীন করবেন না। দুআ ও চাওয়ার জন্যে তিনি আল্লাহর যথাযোগ্য প্রশংসা করেছিলেন। আল্লাহ তাআলা তাঁর প্রার্থনা কবূল করেন এবং তার যে স্ত্রী বার্ধক্যে উপনীত হয়েছিলেন তাকে তিনি সন্তানের যোগ্যা করে তোলেন। হযরত ইবন আব্বাস (রাঃ), হযরত মুজাহিদ (রঃ) এবং হযরত সাঈদ ইবনু জুবাইর (রঃ) বলেন যে, তিনি বন্ধ্যা ছিলেন, অতঃপর তিনি সন্তান প্রসব করেন। (তাফসির ইবনে কাসির)

নেককার সন্তানের জন্য দোয়া

দোয়া-৪

সন্তান লাভের কুরআনিক দুআ 


رَبَّنَا
هَبْ لَنَا مِنْ أَزْوَاجِنَا وَذُرِّيَّاتِنَا قُرَّةَ أَعْيُنٍ وَاجْعَلْنَا لِلْمُتَّقِينَ إِمَامًا

অর্থাৎ হে আমাদের প্রতিপালক! আমাদের স্ত্রী ও সন্তান-সন্ততিদের আমাদের জন্য নয়ন প্রীতিকর করো এবং আমাদেরকে সংযমীদের আদর্শস্বরূপ করো। [সুরা ফুরকান ২৫:৭৪]

তাফসির

তারা আল্লাহ তা'আলার নিকট প্রার্থনা করে- হে আমাদের প্রতিপালক! আমাদের জন্যে এমন স্ত্রী ও সন্তান-সন্ততি দান করুন যারা আমাদের জন্যে নয়ন প্রীতিকর হয়। অর্থাৎ তারা মহান আল্লাহর নিকট প্রার্থনা করে যে, তাদের সন্তান-সন্ততিও যেন তাদের মত একত্ববাদী হয় এবং মুশরিক না হয়, যাতে দুনিয়াতেও ঐ সুসন্তানদের কারণে তাদের অন্তর ঠাণ্ডা থাকে এবং আখিরাতেও তাদের ভাল অবস্থা দেখে তারা খুশী হতে পারে। এই প্রার্থনার উদ্দেশ্য তাদের দৈহিক সৌন্দর্য নয়, বরং সততা ও সুন্দর চরিত্রই উদ্দেশ্য। মুসলমানদের প্রকৃত আনন্দ এতেই রয়েছে যে, তারা তাদের সন্তানদেরকে ও বন্ধু-বান্ধবদেরকে আল্লাহর অনুগত বান্দারূপে দেখতে পায়। তারা যেন যালিম না হয়, দুষ্কৃতিকারী না হয়, বরং খাটি মুসলমান হয়। (তাফসিরে ইবনে কাসির)

হযরত ইব্রাহিম আঃ এর দোয়া

দোয়া-৫

সন্তান লাভের কুরআনিক দুআ 

رَبِّ هَبْ لِي مِنَ الصَّالِحِينَ

অর্থাৎ হে পরওয়ারদিগার! আমাকে একটি সৎকর্মশীল  সন্তান দাও৷ [সুরা সফফাত ৩৭:১০০]

তাফসির

আল্লাহ তা'আলা সংবাদ প্রদান করছেন যে, যখন হযরত ইবরাহীম (আঃ) স্বীয় সম্প্রদায়ের ঈমান আনয়ন হতে নিরাশ হয়ে গেলেন, কারণ তারা আল্লাহর ক্ষমতা প্রকাশক বহু নিদর্শন দেখার পরও ঈমান আনলো না, তখন তিনি সেখান থেকে হিজরত করে অন্যত্র চলে যেতে ইচ্ছা করে প্রকাশ্যভাবে তাদেরকে বললেনঃ আমি আমার প্রতিপালকের দিকে চললাম। তিনি অবশ্যই আমাকে সৎপথে পরিচালিত করবেন। আর তিনি প্রার্থনা করলেনঃ হে আমার প্রতিপালক! আমাকে একটি সৎকর্মশীল সন্তান দান করুন! অর্থাৎ ঐ সন্তান যেন একত্ববাদে তাঁর সঙ্গী হয়। মহান আল্লাহ বলেনঃ আমি তাকে এক স্থিরবুদ্ধি পুত্রের সুসংবাদ দিলাম। ইনিই ছিলেন হযরত ইসমাঈল (আঃ), হযরত ইবরাহীম (আঃ)-এর প্রথম সন্তান। (তফসির ইবনে কাসির)