পবিত্র মাহে রমজানের ১৫তম তারাবীতে তেলাওয়াত করা হবে সূরা মুমিনুন, সুরা নুর, এবং সূরা ফুরক্বন এর ২০ নং আয়াত পর্যন্ত। অর্থাৎ ১৮ তম
পারার ১ম পৃষ্ঠা থেকে শেষ পর্যন্ত। তেলাওয়াতের অংশ থেকে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি আয়াত
১। মুমিনগণ সফলকাম
قَدۡ اَفۡلَحَ الۡمُؤۡمِنُوۡنَ ۙ
মুমিনগণ সফলকাম হয়ে
গেছে,
(সূরা
আল মুমিনূন ২৩:১)
নোটঃ এই সূরায় পরবর্তী ৯ নং আয়াত পর্যন্ত
মুমিনের গুণাবলী বর্ণনা করা হয়েছে।
২। পবিত্র বস্তু দ্বারা আহার করার আদেশ
یٰۤاَیُّہَا الرُّسُلُ کُلُوۡا مِنَ الطَّیِّبٰتِ
وَاعۡمَلُوۡا صَالِحًا ؕ
اِنِّیۡ بِمَا تَعۡمَلُوۡنَ عَلِیۡمٌ ؕ
হে রসূলগণ, পবিত্র বস্তু আহার করুন এবং সৎকাজ করুন। আপনারা যা করেন সে বিষয়ে
আমি পরিজ্ঞাত। (সূরা আল মুমিনূন ২৩:৫১)
৩। নিজ নিজ মতবাদ নিয়ে সবাই খুশি থাকে
فَتَقَطَّعُوۡۤا اَمۡرَہُمۡ بَیۡنَہُمۡ زُبُرًا ؕ
کُلُّ حِزۡبٍۭ بِمَا لَدَیۡہِمۡ فَرِحُوۡنَ
অতঃপর মানুষ তাদের
বিষয়কে বহুধা বিভক্ত করে দিয়েছে। প্রত্যেক সম্প্রদায় নিজ নিজ মতবাদ নিয়ে আনন্দিত হচ্ছে।
(সূরা
আল মুমিনূন ২৩:৫৩)
৪। সাধ্যাতীত দায়িত্ব অর্পন করা হয়না
وَلَا نُکَلِّفُ نَفۡسًا اِلَّا وُسۡعَہَا
وَلَدَیۡنَا کِتٰبٌ یَّنۡطِقُ بِالۡحَقِّ وَہُمۡ لَا یُظۡلَمُوۡنَ
আমি কাউকে তার সাধ্যাতীত
দায়িত্ব অর্পন করি না। আমার এক কিতাব আছে, যা সত্য ব্যক্ত করে এবং তাদের প্রতি জুলুম করা হবে না। (সূরা আল মুমিনূন
২৩:৬২)
৫। আয়াত শুনে অবিশ্বাসীরা অবহেলা করে
সরে যেত
قَدۡ کَانَتۡ اٰیٰتِیۡ تُتۡلٰی عَلَیۡکُمۡ
فَکُنۡتُمۡ عَلٰۤی اَعۡقَابِکُمۡ تَنۡکِصُوۡنَ ۙ
তোমাদেরকে আমার
আয়াতসমূহ শোনানো হত, তখন তোমরা উল্টো
পায়ে সরে পড়তে। (সূরা আল মুমিনূন ২৩:৬৬)
৬। কুরআন নিয়ে গবেষণা করার নির্দেশ
اَفَلَمۡ یَدَّبَّرُوا الۡقَوۡلَ اَمۡ جَآءَہُمۡ
مَّا لَمۡ یَاۡتِ اٰبَآءَہُمُ الۡاَوَّلِیۡنَ ۫
অতএব তারা কি এই
কালাম সম্পর্কে চিন্তা-ভাবনা করে না? না তাদের কাছে এমন কিছু এসেছে, যা তাদের পিতৃপুরুষদের কাছে আসেনি? (সূরা আল মুমিনূন
২৩:৬৮)
৭। যারা পরকালে বিশ্বাস করেনা তারাই সঠিক
পথ থেকে বিচ্যুত
وَاِنَّ الَّذِیۡنَ لَا یُؤۡمِنُوۡنَ بِالۡاٰخِرَۃِ
عَنِ الصِّرَاطِ لَنٰکِبُوۡنَ
আর যারা পরকালে বিশ্বাস
করে না,
তারা সোজা পথ থেকে বিচ্যুত হয়ে গেছে। (সূরা
আল মুমিনূন ২৩:৭৪)
৮। পুনরুত্থান নিয়ে অবিশ্বাসীরা
সন্দিহান
قَالُوۡۤا ءَاِذَا مِتۡنَا وَکُنَّا تُرَابًا
وَّعِظَامًا ءَاِنَّا لَمَبۡعُوۡثُوۡنَ
তারা বলেঃ যখন আমরা
মরে যাব এবং মৃত্তিকা ও অস্থিতে পরিণত হব, তখনও কি আমরা পুনরুত্থিত হব? (সূরা আল মুমিনূন ২৩:৮২)
৯। আল্লাহর সন্তান নেই বা কারো থেকে
জন্মগ্রহণ ও করেননি
مَا اتَّخَذَ اللّٰہُ مِنۡ وَّلَدٍ وَّمَا کَانَ
مَعَہٗ مِنۡ اِلٰہٍ اِذًا لَّذَہَبَ کُلُّ اِلٰہٍۭ بِمَا خَلَقَ وَلَعَلَا
بَعۡضُہُمۡ عَلٰی بَعۡضٍ ؕ
سُبۡحٰنَ اللّٰہِ عَمَّا یَصِفُوۡنَ ۙ
আল্লাহ কোন সন্তান
গ্রহণ করেননি এবং তাঁর সাথে কোন মাবুদ নেই। থাকলে প্রত্যেক মাবুদ নিজ নিজ সৃষ্টি নিয়ে
চলে যেত এবং একজন অন্যজনের উপর প্রবল হয়ে যেত। তারা যা বলে, তা থেকে আল্লাহ পবিত্র। (সূরা আল মুমিনূন
২৩:৯১)
১০। কুরআনিক দুয়া
رَبِّ فَلَا تَجۡعَلۡنِیۡ فِی الۡقَوۡمِ
الظّٰلِمِیۡنَ
হে আমার পালনকর্তা!
তবে আপনি আমাকে গোনাহগার সম্প্রদায়ের অন্তর্ভূক্ত করবেন না। (সূরা
আল মুমিনূন ২৩:৯৪)
১১। মন্দের জবাবে ভালো কথা বলুন
اِدۡفَعۡ بِالَّتِیۡ ہِیَ اَحۡسَنُ السَّیِّئَۃَ ؕ
نَحۡنُ اَعۡلَمُ بِمَا یَصِفُوۡنَ
মন্দের জওয়াবে তাই
বলুন,
যা উত্তম। তারা যা বলে, আমি সে বিষয়ে সবিশেষ অবগত। (সূরা আল মুমিনূন ২৩:৯৬)
১২। শয়তানের প্ররোচনা থেকে বাঁচতে
কুরআনিক দুয়া
وَقُلۡ رَّبِّ اَعُوۡذُ بِکَ مِنۡ ہَمَزٰتِ
الشَّیٰطِیۡنِ ۙ
বলুনঃ হে আমার পালনকর্তা!
আমি শয়তানের প্ররোচনা থেকে আপনার আশ্রয় প্রার্থনা করি, (সূরা
আল মুমিনূন ২৩:৯৭)
১৩। যাদের পাল্লা ভারী হবে, তারাই হবে সফলকাম
فَمَنۡ ثَقُلَتۡ مَوَازِیۡنُہٗ فَاُولٰٓئِکَ ہُمُ الۡمُفۡلِحُوۡنَ
যাদের পাল্লা ভারী
হবে,
তারাই হবে সফলকাম, (সূরা আল মুমিনূন
২৩:১০২)
১৪। যাদের পাল্লা হাল্কা হবে তারাই
ক্ষতিগ্রস্থ
وَمَنۡ خَفَّتۡ مَوَازِیۡنُہٗ فَاُولٰٓئِکَ
الَّذِیۡنَ خَسِرُوۡۤا اَنۡفُسَہُمۡ فِیۡ جَہَنَّمَ خٰلِدُوۡنَ ۚ
এবং যাদের পাল্লা
হাল্কা হবে তারাই নিজেদের ক্ষতিসাধন করেছে, তারা দোযখেই চিরকাল বসবাস করবে। (সূরা আল মুমিনূন ২৩:১০৩)
১৫। মানুষকে অনর্থক সৃষ্টি করা হয়নি
اَفَحَسِبۡتُمۡ اَنَّمَا خَلَقۡنٰکُمۡ عَبَثًا
وَّاَنَّکُمۡ اِلَیۡنَا لَا تُرۡجَعُوۡنَ
তোমরা কি ধারণা
কর যে,
আমি তোমাদেরকে অনর্থক সৃষ্টি করেছি এবং তোমরা আমার কাছে ফিরে
আসবে না?
(সূরা
আল মুমিনূন ২৩:১১৫)
১৬। অবিশ্বাসীরা আল্লাহ ছাড়া অন্যকে
ডাকে
وَمَنۡ یَّدۡعُ مَعَ اللّٰہِ اِلٰـہًا اٰخَرَ ۙ
لَا بُرۡہَانَ لَہٗ بِہٖ ۙ
فَاِنَّمَا حِسَابُہٗ عِنۡدَ رَبِّہٖ ؕ
اِنَّہٗ لَا یُفۡلِحُ الۡکٰفِرُوۡنَ
যে কেউ আল্লাহর সাথে
অন্য উপাস্যকে ডাকে, তার কাছে যার সনদ
নেই,
তার হিসাব তার পালণকর্তার কাছে আছে। নিশ্চয় কাফেররা সফলকাম হবে
না।(সূরা আল মুমিনূন ২৩:১১৭)
১৭। কুরআনিক দুয়া
وَقُلۡ رَّبِّ اغۡفِرۡ وَارۡحَمۡ وَاَنۡتَ خَیۡرُ
الرّٰحِمِیۡنَ
বলূনঃ হে আমার পালনকর্তা, ক্ষমা করুন ও রহম করুন। রহমকারীদের মধ্যে আপনি শ্রেষ্ট রহমকারী।
(সূরা
আল মুমিনূন ২৩:১১৮)
১৮। ব্যভিচার এর শাস্তি
اَلزَّانِیَۃُ وَالزَّانِیۡ فَاجۡلِدُوۡا کُلَّ
وَاحِدٍ مِّنۡہُمَا مِائَۃَ جَلۡدَۃٍ ۪
وَّلَا تَاۡخُذۡکُمۡ بِہِمَا رَاۡفَۃٌ فِیۡ دِیۡنِ اللّٰہِ اِنۡ کُنۡتُمۡ
تُؤۡمِنُوۡنَ بِاللّٰہِ وَالۡیَوۡمِ الۡاٰخِرِ ۚ
وَلۡیَشۡہَدۡ عَذَابَہُمَا طَآئِفَۃٌ مِّنَ الۡمُؤۡمِنِیۡنَ
ব্যভিচারিণী নারী
ব্যভিচারী পুরুষ; তাদের প্রত্যেককে
একশ’ করে বেত্রাঘাত কর। আল্লাহর বিধান কার্যকর কারণে তাদের প্রতি যেন তোমাদের মনে দয়ার
উদ্রেক না হয়, যদি তোমরা আল্লাহর প্রতি ও পরকালের
প্রতি বিশ্বাসী হয়ে থাক। মুসলমানদের একটি দল যেন তাদের শাস্তি প্রত্যক্ষ করে। (সূরা
আন নূর ২৪:২)
১৯। ব্যভিচারিণী ব্যভিচারিকেই বিয়ে করবে
اَلزَّانِیۡ لَا یَنۡکِحُ اِلَّا زَانِیَۃً اَوۡ مُشۡرِکَۃً ۫
وَّالزَّانِیَۃُ لَا یَنۡکِحُہَاۤ اِلَّا زَانٍ اَوۡ مُشۡرِکٌ ۚ
وَحُرِّمَ ذٰلِکَ عَلَی الۡمُؤۡمِنِیۡنَ
ব্যভিচারী পুরুষ
কেবল ব্যভিচারিণী নারী অথবা মুশরিকা নারীকেই বিয়ে করে এবং ব্যভিচারিণীকে কেবল ব্যভিচারী
অথবা মুশরিক পুরুষই বিয়ে করে এবং এদেরকে মুমিনদের জন্যে হারাম করা হয়েছে।(সূরা আন নূর
২৪:৩)
২০। যারা অশ্লীলতা প্রসার ঘটায় তাদের জন্য
যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি
اِنَّ الَّذِیۡنَ یُحِبُّوۡنَ اَنۡ تَشِیۡعَ
الۡفَاحِشَۃُ فِی الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا لَہُمۡ عَذَابٌ اَلِیۡمٌ ۙ
فِی الدُّنۡیَا وَالۡاٰخِرَۃِ ؕ
وَاللّٰہُ یَعۡلَمُ وَاَنۡتُمۡ لَا تَعۡلَمُوۡنَ
যারা পছন্দ করে যে, ঈমানদারদের মধ্যে ব্যভিচার প্রসার লাভ করুক, তাদের জন্যে ইহাকাল ও পরকালে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি রয়েছে। আল্লাহ
জানেন,
তোমরা জান না। (সূরা আন নূর ২৪:১৯)
২১। ভালোর জন্য ভালো, খারাপের জন্য
খারাপ
اَلۡخَبِیۡثٰتُ لِلۡخَبِیۡثِیۡنَ وَالۡخَبِیۡثُوۡنَ
لِلۡخَبِیۡثٰتِ ۚ
وَالطَّیِّبٰتُ لِلطَّیِّبِیۡنَ وَالطَّیِّبُوۡنَ لِلطَّیِّبٰتِ ۚ
اُولٰٓئِکَ مُبَرَّءُوۡنَ مِمَّا یَقُوۡلُوۡنَ ؕ
لَہُمۡ مَّغۡفِرَۃٌ وَّرِزۡقٌ کَرِیۡمٌ
দুশ্চরিত্রা নারীকূল
দুশ্চরিত্র পুরুষকুলের জন্যে এবং দুশ্চরিত্র পুরুষকুল দুশ্চরিত্রা নারীকুলের জন্যে।
সচ্চরিত্রা নারীকুল সচ্চরিত্র পুরুষকুলের জন্যে এবং সচ্চরিত্র পুরুষকুল সচ্চরিত্রা
নারীকুলের জন্যে। তাদের সম্পর্কে লোকে যা বলে, তার সাথে তারা সম্পর্কহীন। তাদের জন্যে আছে ক্ষমা ও সম্মানজনক জীবিকা। (সূরা
আন নূর ২৪:২৬)
২২। দৃষ্টি অবনত রাখা ও লজ্জাস্থানের
হেফাজত করার নির্দেশ
قُلۡ لِّلۡمُؤۡمِنِیۡنَ یَغُضُّوۡا مِنۡ
اَبۡصَارِہِمۡ وَیَحۡفَظُوۡا فُرُوۡجَہُمۡ ؕ
ذٰلِکَ اَزۡکٰی لَہُمۡ ؕ
اِنَّ اللّٰہَ خَبِیۡرٌۢ بِمَا یَصۡنَعُوۡنَ
মুমিনদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টি নত রাখে এবং তাদের যৌনাঙ্গর হেফাযত করে।
এতে তাদের জন্য খুব পবিত্রতা আছে। নিশ্চয় তারা যা করে আল্লাহ তা অবহিত আছেন। (সূরা
আন নূর ২৪:৩০)
২৩। মুত্তাক্বীরাই সফলকাম
وَمَنۡ یُّطِعِ اللّٰہَ وَرَسُوۡلَہٗ وَیَخۡشَ
اللّٰہَ وَیَتَّقۡہِ فَاُولٰٓئِکَ ہُمُ الۡفَآئِزُوۡنَ
যারা আল্লাহ ও তাঁর
রসূলের আনুগত্য করে আল্লাহকে ভয় করে ও তাঁর শাস্তি থেকে বেঁচে থাকে তারাই কৃতকার্য।
(সূরা
আন নূর ২৪:৫২)
২৪। রাসূল (সাঃ) সম্পর্কে অবিশ্বাসীদের
ভুল ধারণা
وَقَالُوۡا مَالِ ہٰذَا الرَّسُوۡلِ یَاۡکُلُ
الطَّعَامَ وَیَمۡشِیۡ فِی الۡاَسۡوَاقِ ؕ
لَوۡلَاۤ اُنۡزِلَ اِلَیۡہِ مَلَکٌ فَیَکُوۡنَ مَعَہٗ نَذِیۡرًا ۙ
তারা বলে, এ কেমন রসূল যে, খাদ্য আহার করে এবং হাটে-বাজারে চলাফেরা করে? তাঁর কাছে কেন কোন ফেরেশতা নাযিল করা হল না যে, তাঁর সাথে সতর্ককারী হয়ে থাকত? (সূরা আল ফুরক্বান
২৫:৭)
পিডিএফ ডাউনলোড লিংক
পরবর্তী সকল আপডেট পেতে এখানে ক্লিক করে আমাদের Facebook পেজে ফলো করুন।
WhatsApp গ্রুপ লিংক