পবিত্র মাহে রমজানের ১৬তম তারাবীতে তেলাওয়াত করা হবে সূরা ফুরক্বন
এর ২১ নং আয়াত থেকে শেষ পর্যন্ত। সূরা শুয়ারা এবং সূরা নমল এর ৫৯ নং আয়াত পর্যন্ত।
অর্থাৎ ১৯ তম পারার ১ম পৃষ্ঠা থেকে শেষ পর্যন্ত। তেলাওয়াতের অংশ থেকে উল্লেখযোগ্য
কয়েকটি আয়াত
১। জান্নাতীদের বাসস্থান
اَصۡحٰبُ الۡجَنَّۃِ یَوۡمَئِذٍ خَیۡرٌ مُّسۡتَقَرًّا
وَّاَحۡسَنُ مَقِیۡلًا
সেদিন জান্নাতীদের
বাসস্থান হবে উত্তম এবং বিশ্রামস্থল হবে মনোরম। (সূরা আল ফুরক্বন ২৫:২৪)
২। কেয়ামত দিনের রাজত্ব
اَلۡمُلۡکُ یَوۡمَئِذِۣ الۡحَقُّ لِلرَّحۡمٰنِ ؕ
وَکَانَ یَوۡمًا عَلَی الۡکٰفِرِیۡنَ عَسِیۡرًا
সেদিন সত্যিকার রাজত্ব
হবে দয়াময় আল্লাহর এবং কাফেরদের পক্ষে দিনটি হবে কঠিন। (সূরা আল ফুরক্বান
২৫:২৬)
৩। অবিশ্বাসীরা আফসোস করবে
وَیَوۡمَ یَعَضُّ الظَّالِمُ عَلٰی یَدَیۡہِ یَقُوۡلُ
یٰلَیۡتَنِی اتَّخَذۡتُ مَعَ الرَّسُوۡلِ سَبِیۡلًا
জালেম সেদিন আপন
হস্তদ্বয় দংশন করতে করতে বলবে, হায় আফসোস! আমি
যদি রসূলের সাথে পথ অবলম্বন করতাম। (সূরা আল ফুরক্বান ২৫:২৭)
৪। দুনিয়ার বন্ধু নিয়ে আফসোস করবে
یٰوَیۡلَتٰی لَیۡتَنِیۡ لَمۡ اَتَّخِذۡ فُلَانًا
خَلِیۡلًا
হায় আমার দূর্ভাগ্য, আমি যদি অমুককে বন্ধুরূপে গ্রহণ না করতাম। (সূরা আল ফুরক্বান
২৫:২৮)
৫। রাসূল কে নিয়ে তারা বিদ্রুপ করতো
وَاِذَا رَاَوۡکَ اِنۡ یَّتَّخِذُوۡنَکَ اِلَّا
ہُزُوًا ؕ اَہٰذَا الَّذِیۡ بَعَثَ اللّٰہُ رَسُوۡلًا
তারা যখন আপনাকে
দেখে,
তখন আপনাকে কেবল বিদ্রুপের পাত্ররূপে গ্রহণ করে, বলে, এ-ই কি সে যাকে আল্লাহ
রসূল করে প্রেরণ করেছেন? (সূরা আল ফুরক্বান ২৫:৪১)
৬। কুরআনের ভাষায় যারা চতুষ্পদ জন্তুর মত
اَمۡ تَحۡسَبُ اَنَّ اَکۡثَرَہُمۡ یَسۡمَعُوۡنَ اَوۡ
یَعۡقِلُوۡنَ ؕ اِنۡ ہُمۡ اِلَّا کَالۡاَنۡعَامِ بَلۡ ہُمۡ اَضَلُّ سَبِیۡلًا
আপনি কি মনে করেন
যে,
তাদের অধিকাংশ শোনে অথবা বোঝে ? তারা তো চতুস্পদ জন্তুর মত; বরং আরও পথভ্রান্ত। (সূরা আল ফুরক্বান ২৫:৪৪)
৭। দুই নদীর মাঝে অদৃশ্য পর্দা
وَہُوَ الَّذِیۡ مَرَجَ الۡبَحۡرَیۡنِ ہٰذَا عَذۡبٌ
فُرَاتٌ وَّہٰذَا مِلۡحٌ اُجَاجٌ ۚ وَجَعَلَ بَیۡنَہُمَا بَرۡزَخًا وَّحِجۡرًا
مَّحۡجُوۡرًا
তিনিই সমান্তরালে
দুই সমুদ্র প্রবাহিত করেছেন, এটি মিষ্ট, তৃষ্ণা নিবারক ও এটি লোনা, বিস্বাদ; উভয়ের মাঝখানে রেখেছেন একটি অন্তরায়, একটি দুর্ভেদ্য আড়াল। (সূরা আল ফুরক্বান ২৫:৫৩)
৮। নবী রাসূলরা সুসংবাদ দাতা ও সতর্ককারী
وَمَاۤ اَرۡسَلۡنٰکَ اِلَّا مُبَشِّرًا وَّنَذِیۡرًا
আমি আপনাকে সুসংবাদ
ও সতর্ককারীরূপেই প্রেরণ করেছি। (সূরা আল ফুরক্বান ২৫:৫৬)
৯। মহাবিশ্ব ছয়দিনে সৃষ্টি করেছেন
ۣالَّذِیۡ
خَلَقَ السَّمٰوٰتِ وَالۡاَرۡضَ وَمَا بَیۡنَہُمَا فِیۡ سِتَّۃِ اَیَّامٍ ثُمَّ اسۡتَوٰی
عَلَی الۡعَرۡشِ ۚۛ اَلرَّحۡمٰنُ فَسۡـَٔلۡ بِہٖ خَبِیۡرًا
তিনি নভোমন্ডল, ভূমন্ডল ও এতদুভয়ের অন্তর্বর্তী সবকিছু ছয়দিনে সৃস্টি করেছেন, অতঃপর আরশে সমাসীন হয়েছেন। তিনি পরম দয়াময়। তাঁর সম্পর্কে যিনি
অবগত,
তাকে জিজ্ঞেস কর। (সূরা আল ফুরক্বান ২৫:৫৯)
১০। রহমানের বান্দাদের গুণাবলী
وَعِبَادُ الرَّحۡمٰنِ الَّذِیۡنَ یَمۡشُوۡنَ عَلَی
الۡاَرۡضِ ہَوۡنًا وَّاِذَا خَاطَبَہُمُ الۡجٰہِلُوۡنَ قَالُوۡا سَلٰمًا
রহমান-এর বান্দা
তারাই,
যারা পৃথিবীতে নম্রভাবে চলাফেরা করে এবং তাদের সাথে যখন মুর্খরা
কথা বলতে থাকে, তখন তারা বলে, সালাম। (সূরা আল ফুরক্বান ২৫:৬৩)
নোটঃ সূরা ফুরক্বন এর ৬৩ নং আয়াত থেকে ৬৮
নং আয়াত পর্যন্ত আল্লাহর বান্দাদের বিশেষ কয়েকটি গুণাবলী বর্ণনা করা হয়েছে। ৬৪ নং আয়াতে, রাত্রি জেগে সালাত
আদায় করা, সেজদা দেয়া। ৬৫ নং আয়াতে জাহান্নাম থেকে আশ্রয় চাওয়া। ৬৭
নং আয়াতে বলা হয়েছে ব্যয় করার ক্ষেত্রে কৃপণতা করা যাবেনা আবার অপচয় ও করা যাবেনা।
এবং ৬৮ নং আয়াতে বলা হয়েছে আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো ইবাদাত করা যাবেনা, অন্যায়ভাবে কাউকে
হত্যা করা যাবে এবং ব্যভিচার করা যাবেনা।
১১। স্ত্রী সন্তানের জন্য কুরআনীক দোয়া
وَالَّذِیۡنَ یَقُوۡلُوۡنَ رَبَّنَا ہَبۡ لَنَا مِنۡ
اَزۡوَاجِنَا وَذُرِّیّٰتِنَا قُرَّۃَ اَعۡیُنٍ وَّاجۡعَلۡنَا لِلۡمُتَّقِیۡنَ
اِمَامًا
এবং যারা বলে, হে আমাদের পালনকর্তা, আমাদের স্ত্রীদের পক্ষ থেকে এবং আমাদের সন্তানের পক্ষ থেকে আমাদের জন্যে চোখের
শীতলতা দান কর এবং আমাদেরকে মুত্তাকীদের জন্যে আদর্শস্বরূপ কর। (সূরা আল ফুরক্বান
২৫:৭৪)
১২। সবরের প্রতিদানে জান্নাত
اُولٰٓئِکَ یُجۡزَوۡنَ الۡغُرۡفَۃَ بِمَا صَبَرُوۡا
وَیُلَقَّوۡنَ فِیۡہَا تَحِیَّۃً وَّسَلٰمًا ۙ
তাদেরকে তাদের সবরের
প্রতিদানে জান্নাতে কক্ষ দেয়া হবে এবং তাদেরকে তথায় দোয়া ও সালাম সহকারে অভ্যর্থনা
করা হবে। (সূরা
আল ফুরক্বান ২৫:৭৫)
১৩। মুসা (আঃ) এর মোজেজা
فَاَلۡقٰی عَصَاہُ فَاِذَا ہِیَ ثُعۡبَانٌ مُّبِیۡنٌ ۚۖ
অতঃপর তিনি লাঠি
নিক্ষেপ করলে মুহূর্তের মধ্যে তা সুস্পষ্ট অজগর হয়ে গেল। (সূরা আশ শুআরা ২৬:৩২)
নোটঃ মুসা আঃ ফেরাউনকে
আল্লাহর এবাদত করার আহবান করলে ফেরাউন মুসা (আঃ) এর নবুওতের প্রমাণ চায়। আল্লাহর হুকুমে
মুসা আঃ এর লাঠি সাপ হয়ে গেলে ফেরাউন বলল এতো স্পষ্ট জাদুকর।
১৪। কুরআনীক দোয়া
رَبِّ ہَبۡ لِیۡ حُکۡمًا وَّاَلۡحِقۡنِیۡ
بِالصّٰلِحِیۡنَ ۙ
হে আমার পালনকর্তা, আমাকে প্রজ্ঞা দান কর এবং আমাকে সৎকর্মশীলদের অন্তর্ভুক্ত কর।
(সূরা আশ শুআরা ২৬:৮৩)
১৫। ওজনে কম দেয়া নিষেধ
اَوۡفُوا الۡکَیۡلَ وَلَا تَکُوۡنُوۡا مِنَ
الۡمُخۡسِرِیۡنَ ۚ
মাপ পূর্ণ কর এবং
যারা পরিমাপে কম দেয়, তাদের অন্তর্ভুক্ত
হয়ো না। (সূরা
আশ শুআরা ২৬:১৮১)
১৬। নিকটতম আত্মীয়দের সতর্ক করা
وَاَنۡذِرۡ عَشِیۡرَتَکَ الۡاَقۡرَبِیۡنَ ۙ
আপনি নিকটতম আত্মীয়দেরকে
সতর্ক করে দিন। (সূরা আশ শুআরা ২৬:২১৪)
১৭। নামাজীদের বন্ধু রূপে গ্রহণ করা
وَتَقَلُّبَکَ فِی السّٰجِدِیۡنَ
এবং নামাযীদের সাথে
উঠাবসা করেন। (সূরা
আশ শুআরা ২৬:২১৯)
১৮। কথা এবং কাজে মিল থাকা
وَاَنَّہُمۡ یَقُوۡلُوۡنَ مَا لَا یَفۡعَلُوۡنَ ۙ
এবং এমন কথা বলে, যা তারা করে না। (সূরা আশ শুআরা ২৬:২২৬)
১৯। মুসা (আঃ) এর মুজিজা
وَاَدۡخِلۡ یَدَکَ فِیۡ جَیۡبِکَ تَخۡرُجۡ بَیۡضَآءَ
مِنۡ غَیۡرِ سُوۡٓءٍ ۟ فِیۡ تِسۡعِ اٰیٰتٍ اِلٰی فِرۡعَوۡنَ وَقَوۡمِہٖ ؕ
اِنَّہُمۡ کَانُوۡا قَوۡمًا فٰسِقِیۡنَ
আপনার হাত আপনার
বগলে ঢুকিয়ে দিন, সুশুভ্র হয়ে বের
হবে নির্দোষ অবস্থায়। এগুলো ফেরাউন ও তার সম্প্রদায়ের কাছে আনীত নয়টি নিদর্শনের অন্যতম।
নিশ্চয় তারা ছিল পাপাচারী সম্প্রদায়। (সূরা আন নমল ২৭:১২)
২০। হযরত সোলাইমান (আঃ) পিপীলিকার ভাষা বুঝতেন
حَتّٰۤی اِذَاۤ اَتَوۡا عَلٰی وَادِ النَّمۡلِ ۙ
قَالَتۡ نَمۡلَۃٌ یّٰۤاَیُّہَا النَّمۡلُ ادۡخُلُوۡا مَسٰکِنَکُمۡ ۚ لَا
یَحۡطِمَنَّکُمۡ سُلَیۡمٰنُ وَجُنُوۡدُہٗ ۙ وَہُمۡ لَا یَشۡعُرُوۡنَ
যখন তারা পিপীলিকা
অধ্যূষিত উপত্যকায় পৌঁছাল, তখন এক পিপীলিকা
বলল,
হে পিপীলিকার দল, তোমরা তোমাদের গৃহে প্রবেশ কর। অন্যথায় সুলায়মান ও তার বাহিনী অজ্ঞাতসারে তোমাদেরকে
পিষ্ট করে ফেলবে। (সূরা আন নমল ২৭:১৯)
পিডিএফ ডাউনলোড লিংক
পরবর্তী সকল আপডেট পেতে এখানে ক্লিক করে আমাদের Facebook পেজে
ফলো করুন।
WhatsApp গ্রুপ লিংক