পবিত্র মাহে রমজানের ২৫ তম তারাবীতে তেলাওয়াত করা হবে সূরা
আল মুজাদালাহ, সূরা আল হাশর, সূরা আল মুমতাহিনাহ, সূরা আস সাফ, সূরা আল জুমুয়াহ,
সূরা আল মুনাফিকুন, সূরা আত তাগাবুন, সূরা আত-ত্বলাক এবং সূরা আত তাহরীম। অর্থাৎ ২৮
তম পারার ১ম পৃষ্ঠা থেকে শেষ পর্যন্ত। তেলাওয়াতের
অংশ থেকে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি আয়াত
১। যিহারের বিধান
وَالَّذِیۡنَ یُظٰہِرُوۡنَ
مِنۡ نِّسَآئِہِمۡ ثُمَّ یَعُوۡدُوۡنَ لِمَا قَالُوۡا فَتَحۡرِیۡرُ رَقَبَۃٍ
مِّنۡ قَبۡلِ اَنۡ یَّتَمَآسَّا ؕ ذٰلِکُمۡ تُوۡعَظُوۡنَ بِہٖ ؕ
وَاللّٰہُ بِمَا تَعۡمَلُوۡنَ خَبِیۡرٌ
যারা তাদের স্ত্রীগণকে
মাতা বলে ফেলে, অতঃপর নিজেদের উক্তি প্রত্যাহার করে, তাদের কাফফারা এই একে অপরকে স্পর্শ করার পূর্বে একটি দাসকে মুক্তি
দিবে। এটা তোমাদের জন্যে উপদেশ হবে। আল্লাহ খবর রাখেন তোমরা যা কর। (সূরা মুজাদালাহ ৫৮:৩)
নোটঃ ৪ নং আয়াতে যিহার করার পর যাদের দাস
মুক্ত করার সাধ্য নেই তাদের বিধান বর্ণিত হয়েছে।
২। সম্পদ পরকালে কাজে আসবেনা
لَنۡ تُغۡنِیَ عَنۡہُمۡ
اَمۡوَالُہُمۡ وَلَاۤ اَوۡلَادُہُمۡ مِّنَ اللّٰہِ شَیۡئًا ؕ اُولٰٓئِکَ اَصۡحٰبُ
النَّارِ ؕ ہُمۡ فِیۡہَا خٰلِدُوۡنَ
আল্লাহর কবল থেকে
তাদের ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি তাদেরকে মোটেই বাঁচাতে পারবেনা। তারাই জাহান্নামের
অধিবাসী তথায় তারা চিরকাল থাকবে। (সূরা মুজাদালাহ ৫৮:১৭)
৩। আল্লাহ এবং রাসূলের (সাঃ) বিরোধীতা কারীরা
ক্ষতিগ্রস্ত
اِنَّ الَّذِیۡنَ
یُحَآدُّوۡنَ اللّٰہَ وَرَسُوۡلَہٗۤ اُولٰٓئِکَ فِی الۡاَذَلِّیۡنَ
নিশ্চয় যারা আল্লাহ
ও তাঁর রসূলের বিরুদ্ধাচারণ করে, তারাই লাঞ্ছিতদের
দলভূক্ত। (সূরা
মুজাদালাহ ৫৮:২০)
৪। আল্লাহকে ভয় করার আদেশ
یٰۤاَیُّہَا الَّذِیۡنَ
اٰمَنُوا اتَّقُوا اللّٰہَ وَلۡتَنۡظُرۡ نَفۡسٌ مَّا قَدَّمَتۡ لِغَدٍ ۚ
وَاتَّقُوا اللّٰہَ ؕ اِنَّ اللّٰہَ خَبِیۡرٌۢ بِمَا تَعۡمَلُوۡنَ
মুমিনগণ, তোমরা আল্লাহ তা’আলাকে ভয় কর। প্রত্যেক ব্যক্তির উচিত, আগামী কালের জন্যে সে কি প্রেরণ করে, তা চিন্তা করা। আল্লাহ তা’আলাকে ভয় করতে থাক। তোমরা যা কর, আল্লাহ তা’আলা সে সম্পর্কে খবর রাখেন। (সূরা আল হাশর ৫৯:১৮)
৫। জান্নাতি এবং জাহান্নামীরা সমান নয়
لَا یَسۡتَوِیۡۤ اَصۡحٰبُ
النَّارِ وَاَصۡحٰبُ الۡجَنَّۃِ ؕ اَصۡحٰبُ الۡجَنَّۃِ ہُمُ الۡفَآئِزُوۡنَ
জাহান্নামের অধিবাসী
এবং জান্নাতের অধিবাসী সমান হতে পারে না। যারা জান্নাতের অধিবাসী, তারাই সফলকাম। (সূরা আল হাশর ৫৯:২০)
৬। কুরআন মানুষের উপর নাজিল হয়েছে
لَوۡ اَنۡزَلۡنَا ہٰذَا
الۡقُرۡاٰنَ عَلٰی جَبَلٍ لَّرَاَیۡتَہٗ خَاشِعًا مُّتَصَدِّعًا مِّنۡ خَشۡیَۃِ
اللّٰہِ ؕ وَتِلۡکَ الۡاَمۡثَالُ نَضۡرِبُہَا لِلنَّاسِ لَعَلَّہُمۡ
یَتَفَکَّرُوۡنَ
যদি আমি এই কোরআন
পাহাড়ের উপর অবতীর্ণ করতাম, তবে তুমি দেখতে যে, পাহাড় বিনীত হয়ে আল্লাহ তা’আলার ভয়ে বিদীর্ণ হয়ে গেছে। আমি এসব দৃষ্টান্ত মানুষের জন্যে
বর্ণনা করি, যাতে তারা চিন্তা-ভাবনা করে। (সূরা আল হাশর ৫৯:২১)
৭। কেয়ামতের দিন পরিবার পরিজন কাজে আসবে
না
لَنۡ تَنۡفَعَکُمۡ اَرۡحَامُکُمۡ
وَلَاۤ اَوۡلَادُکُمۡ ۚ یَوۡمَ الۡقِیٰمَۃِ ۚ یَفۡصِلُ بَیۡنَکُمۡ ؕ وَاللّٰہُ
بِمَا تَعۡمَلُوۡنَ بَصِیۡرٌ
তোমাদের স্বজন-পরিজন
ও সন্তান-সন্ততি কিয়ামতের দিন কোন উপকারে আসবে না। তিনি তোমাদের মধ্যে ফয়সালা করবেন।
তোমরা যা কর, আল্লাহ তা দেখেন। (সূরা মুমতাহিনা ৬০:৩)
৮। কথা এবং কাজে মিল রাখার নির্দেশ
یٰۤاَیُّہَا الَّذِیۡنَ
اٰمَنُوۡا لِمَ تَقُوۡلُوۡنَ مَا لَا تَفۡعَلُوۡنَ
মুমিনগণ! তোমরা
যা কর না,
তা কেন বল? (সূরা আস সাফ ৬১:২)
৯। কথা কাজে অমিল হলে আল্লাহ অসন্তুষ্ট হন
کَبُرَ مَقۡتًا عِنۡدَ
اللّٰہِ اَنۡ تَقُوۡلُوۡا مَا لَا تَفۡعَلُوۡنَ
তোমরা যা কর না, তা বলা আল্লাহর কাছে খুবই অসন্তোষজনক। (সূরা আস সাফ ৬১:৩)
১০। আল্লাহর পথে সীসাঢালা প্রাচীরের ন্যয়
দৃঢ় থাকার আদেশ
اِنَّ اللّٰہَ یُحِبُّ
الَّذِیۡنَ یُقَاتِلُوۡنَ فِیۡ سَبِیۡلِہٖ صَفًّا کَاَنَّہُمۡ بُنۡیَانٌ مَّرۡصُوۡصٌ
আল্লাহ তাদেরকে ভালবাসেন, যারা তাঁর পথে সারিবদ্ধভাবে লড়াই করে, যেন তারা সীসাগালানো প্রাচীর। (সূরা আস সাফ ৬১:৪)
১১। আল্লাহ তার নূরকে পূর্ণতা দিবেন
یُرِیۡدُوۡنَ لِیُطۡفِـُٔوۡا
نُوۡرَ اللّٰہِ بِاَفۡوَاہِہِمۡ وَاللّٰہُ مُتِمُّ نُوۡرِہٖ وَلَوۡ کَرِہَ
الۡکٰفِرُوۡنَ
তারা মুখের ফুঁৎকারে
আল্লাহর আলো নিভিয়ে দিতে চায়। আল্লাহ তাঁর আলোকে পূর্ণরূপে বিকশিত করবেন যদিও কাফেররা
তা অপছন্দ করে। (সূরা আস সাফ ৬১:৮)
১২। জুমুয়ার দিনের আদব
یٰۤاَیُّہَا الَّذِیۡنَ
اٰمَنُوۡۤا اِذَا نُوۡدِیَ لِلصَّلٰوۃِ مِنۡ یَّوۡمِ الۡجُمُعَۃِ فَاسۡعَوۡا اِلٰی
ذِکۡرِ اللّٰہِ وَذَرُوا الۡبَیۡعَ ؕ ذٰلِکُمۡ خَیۡرٌ لَّکُمۡ اِنۡ کُنۡتُمۡ
تَعۡلَمُوۡنَ
মুমিনগণ, জুমআর দিনে যখন নামাযের আযান দেয়া হয়, তখন তোমরা আল্লাহর স্মরণের পানে ত্বরা কর এবং বেচাকেনা বন্ধ
কর। এটা তোমাদের জন্যে উত্তম যদি তোমরা বুঝ। (সূরা আল জুমুয়াহ ৬২:৯)
১৩। জমিনে রিজিক তালাশের নির্দেশ
فَاِذَا قُضِیَتِ الصَّلٰوۃُ
فَانۡتَشِرُوۡا فِی الۡاَرۡضِ وَابۡتَغُوۡا مِنۡ فَضۡلِ اللّٰہِ وَاذۡکُرُوا
اللّٰہَ کَثِیۡرًا لَّعَلَّکُمۡ تُفۡلِحُوۡنَ
অতঃপর নামায সমাপ্ত
হলে তোমরা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড় এবং আল্লাহর অনুগ্রহ তালাশ কর ও আল্লাহকে অধিক স্মরণ
কর,
যাতে তোমরা সফলকাম হও। (সূরা আল জুমুয়াহ ৬২:১০)
১৪। মুনাফিকরা মিথ্যাবাদী
اِذَا جَآءَکَ
الۡمُنٰفِقُوۡنَ قَالُوۡا نَشۡہَدُ اِنَّکَ لَرَسُوۡلُ اللّٰہِ ۘ وَاللّٰہُ
یَعۡلَمُ اِنَّکَ لَرَسُوۡلُہٗ ؕ وَاللّٰہُ یَشۡہَدُ اِنَّ الۡمُنٰفِقِیۡنَ
لَکٰذِبُوۡنَ
মুনাফিকরা আপনার
কাছে এসে বলেঃ আমরা সাক্ষ্য দিচ্ছি যে আপনি নিশ্চয়ই আল্লাহর রসূল। আল্লাহ জানেন যে, আপনি অবশ্যই আল্লাহর রসূল এবং আল্লাহ সাক্ষ্য দিচ্ছেন যে, মুনাফিকরা অবশ্যই মিথ্যাবাদী। (সূরা আল মুনাফিকুন
৬৩:১)
১৫। আল্লাহর স্মরণ থেকে গাফেল হওয়া
যাবেনা
یٰۤاَیُّہَا الَّذِیۡنَ
اٰمَنُوۡا لَا تُلۡہِکُمۡ اَمۡوَالُکُمۡ وَلَاۤ اَوۡلَادُکُمۡ عَنۡ ذِکۡرِ
اللّٰہِ ۚ وَمَنۡ یَّفۡعَلۡ ذٰلِکَ فَاُولٰٓئِکَ ہُمُ الۡخٰسِرُوۡنَ
মুমিনগণ! তোমাদের
ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি যেন তোমাদেরকে আল্লাহর স্মরণ থেকে গাফেল না করে। যারা এ
কারণে গাফেল হয়, তারাই তো ক্ষতিগ্রস্ত। (সূরা আল মুনাফিকুন
৬৩:৯)
১৬। মৃত্যু আসার আগেই সম্পদ ব্যয় করতে
হবে
وَاَنۡفِقُوۡا مِنۡ مَّا
رَزَقۡنٰکُمۡ مِّنۡ قَبۡلِ اَنۡ یَّاۡتِیَ اَحَدَکُمُ الۡمَوۡتُ فَیَقُوۡلَ رَبِّ
لَوۡلَاۤ اَخَّرۡتَنِیۡۤ اِلٰۤی اَجَلٍ قَرِیۡبٍ ۙ فَاَصَّدَّقَ وَاَکُنۡ مِّنَ الصّٰلِحِیۡنَ
আমি তোমাদেরকে যা
দিয়েছি,
তা থেকে মৃত্যু আসার আগেই ব্যয় কর। অন্যথায় সে বলবেঃ হে আমার
পালনকর্তা, আমাকে আরও কিছুকাল অবকাশ দিলে না কেন? তাহলে আমি সদকা করতাম এবং সৎকর্মীদের অন্তর্ভুক্ত হতাম। (সূরা আল মুনাফিকুন
৬৩:১০)
১৭। মৃত্যুর সময় নির্দিষ্ট
وَلَنۡ یُّؤَخِّرَ اللّٰہُ
نَفۡسًا اِذَا جَآءَ اَجَلُہَا ؕ وَاللّٰہُ خَبِیۡرٌۢ بِمَا تَعۡمَلُوۡنَ
প্রত্যেক ব্যক্তির
নির্ধারিত সময় যখন উপস্থিত হবে, তখন আল্লাহ কাউকে
অবকাশ দেবেন না। তোমরা যা কর, আল্লাহ সে বিষয়ে
খবর রাখেন। (সূরা
আল মুনাফিকুন ৬৩:১১)
১৮। আল্লাহ আমাদেরকে সুন্দর আকৃতি
দিয়েছেন
خَلَقَ السَّمٰوٰتِ
وَالۡاَرۡضَ بِالۡحَقِّ وَصَوَّرَکُمۡ فَاَحۡسَنَ صُوَرَکُمۡ ۚ وَاِلَیۡہِ
الۡمَصِیۡرُ
তিনি নভোমন্ডল ও
ভূমন্ডলকে যথাযথভাবে সৃষ্টি করেছেন এবং তোমাদেরকে আকৃতি দান করেছেন, অতঃপর সুন্দর করেছেন তোমাদের আকৃতি। তাঁরই কাছে প্রত্যাবর্তন।
(সূরা আত-তাগাবুন
৬৪:৩)
১৯। ধন-সম্পদ কেবল পরীক্ষা মাত্র
اِنَّمَاۤ اَمۡوَالُکُمۡ
وَاَوۡلَادُکُمۡ فِتۡنَۃٌ ؕ وَاللّٰہُ عِنۡدَہٗۤ اَجۡرٌ عَظِیۡمٌ
তোমাদের ধন-সম্পদ
ও সন্তান-সন্ততি তো কেবল পরীক্ষাস্বরূপ। আর আল্লাহর কাছে রয়েছে মহাপুরস্কার। (সূরা আত-তাগাবুন
৬৪:১৫)
২০। রিযিক আল্লাহর পক্ষ থেকে
وَّیَرۡزُقۡہُ مِنۡ حَیۡثُ
لَا یَحۡتَسِبُ ؕ وَمَنۡ یَّتَوَکَّلۡ عَلَی اللّٰہِ فَہُوَ حَسۡبُہٗ ؕ اِنَّ
اللّٰہَ بَالِغُ اَمۡرِہٖ ؕ قَدۡ جَعَلَ اللّٰہُ لِکُلِّ شَیۡءٍ قَدۡرًا
এবং তাকে তার ধারণাতীত
জায়গা থেকে রিযিক দেবেন। যে ব্যক্তি আল্লাহর উপর ভরসা করে তার জন্যে তিনিই যথেষ্ট।
আল্লাহ তার কাজ পূর্ণ করবেন। আল্লাহ সবকিছুর জন্যে একটি পরিমাণ স্থির করে রেখেছেন।
(সূরা আত ত্বলাক্ব
৬৫:৩)
২১। পরিবার পরিজনকে ইসলামী হুকুম মানার
আদেশ দিতে হবে
یٰۤاَیُّہَا الَّذِیۡنَ
اٰمَنُوۡا قُوۡۤا اَنۡفُسَکُمۡ وَاَہۡلِیۡکُمۡ نَارًا وَّقُوۡدُہَا النَّاسُ
وَالۡحِجَارَۃُ عَلَیۡہَا مَلٰٓئِکَۃٌ غِلَاظٌ شِدَادٌ لَّا یَعۡصُوۡنَ اللّٰہَ
مَاۤ اَمَرَہُمۡ وَیَفۡعَلُوۡنَ
مَا یُؤۡمَرُوۡنَ
মুমিনগণ, তোমরা নিজেদেরকে এবং তোমাদের পরিবার-পরিজনকে সেই অগ্নি থেকে
রক্ষা কর,
যার ইন্ধন হবে মানুষ ও প্রস্তর, যাতে নিয়োজিত আছে পাষাণ হৃদয়, কঠোরস্বভাব ফেরেশতাগণ। তারা আল্লাহ তা’আলা যা আদেশ করেন, তা অমান্য করে না এবং যা করতে আদেশ করা হয়, তাই করে। (সূরা আত তাহরিম ৬৬:৬)
২২। মুনাফিকদের ঠিকানা জাহান্নাম
یٰۤاَیُّہَا النَّبِیُّ
جَاہِدِ الۡکُفَّارَ وَالۡمُنٰفِقِیۡنَ وَاغۡلُظۡ عَلَیۡہِمۡ ؕ وَمَاۡوٰىہُمۡ
جَہَنَّمُ ؕ وَبِئۡسَ الۡمَصِیۡرُ
হে নবী! কাফের ও
মুনাফিকদের বিরুদ্ধে জেহাদ করুন এবং তাদের প্রতি কঠোর হোন। তাদের ঠিকানা জাহান্নাম।
সেটা কতই না নিকৃষ্ট স্থান। (সূরা আত তাহরিম ৬৬:৯)
পিডিএফ ডাউনলোড লিংক
পরবর্তী সকল আপডেট পেতে এখানে ক্লিক করে আমাদের Facebook পেজে ফলো করুন।
WhatsApp গ্রুপ
লিংক