পবিত্র মাহে রমজানের ২৩ তম তারাবীতে তেলাওয়াত
করা হবে সূরা আহক্বফ, সূরা মুহাম্মাদ, সূরা ফাতহ, সূরা হুজুরাত, সূরা ক্বফ এবং সূরা আয-যারিয়াত এর ৩০ নং
আয়াত পর্যন্ত। অর্থাৎ ২৬ তম পারার ১ম পৃষ্ঠা
থেকে শেষ পর্যন্ত। তেলাওয়াতের অংশ থেকে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি আয়াত
১। সবকিছুই নির্দিষ্ট সময়ের জন্য সৃষ্টি
করা হয়েছে
مَا خَلَقۡنَا السَّمٰوٰتِ
وَالۡاَرۡضَ وَمَا بَیۡنَہُمَاۤ اِلَّا بِالۡحَقِّ وَاَجَلٍ مُّسَمًّی ؕ
وَالَّذِیۡنَ کَفَرُوۡا عَمَّاۤ اُنۡذِرُوۡا مُعۡرِضُوۡنَ
নভোমন্ডল, ভূ-মন্ডল ও এতদুভয়ের মধ্যবর্তী সবকিছু আমি যথাযথভাবেই এবং নির্দিষ্ট
সময়ের জন্যেই সৃষ্টি করেছি। আর কাফেররা যে বিষয়ে তাদেরকে সতর্ক করা হয়েছে, তা থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়। (সূরা আল আহক্বফ ৪৬:৩)
২। আল্লাহ ব্যতীত অন্য কারো এবাদতকারী সর্বাধিক
পথভ্রষ্ট
وَمَنۡ اَضَلُّ مِمَّنۡ
یَّدۡعُوۡا مِنۡ دُوۡنِ اللّٰہِ مَنۡ لَّا یَسۡتَجِیۡبُ لَہٗۤ اِلٰی یَوۡمِ
الۡقِیٰمَۃِ وَہُمۡ عَنۡ دُعَآئِہِمۡ غٰفِلُوۡنَ
যে ব্যক্তি আল্লাহর
পরিবর্তে এমন বস্তুর পূজা করে, যে কেয়ামত পর্যন্তও
তার ডাকে সাড়া দেবে না, তার চেয়ে অধিক পথভ্রষ্ট
আর কে?
তারা তো তাদের পুজা সম্পর্কেও বেখবর। (সূরা আল আহক্বফ ৪৬:৫)
৩। যারা আল্লাহকে প্রভু হিসেবে মেনে নেয়
তাদের কোন ভয় নেই
اِنَّ الَّذِیۡنَ قَالُوۡا
رَبُّنَا اللّٰہُ ثُمَّ اسۡتَقَامُوۡا فَلَا خَوۡفٌ عَلَیۡہِمۡ وَلَا ہُمۡ
یَحۡزَنُوۡنَ
নিশ্চয় যারা বলে, আমাদের পালনকর্তা আল্লাহ অতঃপর অবিচল থাকে, তাদের কোন ভয় নেই এবং তারা চিন্তিত হবে না। (সূরা আল আহক্বফ ৪৬:১৩)
নোটঃ ১৫ নং আয়াতে পিতা-মাতার সাথে ভালো
ব্যবহারের কথা আলোচিত হয়েছে।
৪। আল্লাহর পথে বাধা সৃষ্টিকারীর সকল কর্ম
ব্যর্থ
اَلَّذِیۡنَ کَفَرُوۡا
وَصَدُّوۡا عَنۡ سَبِیۡلِ اللّٰہِ اَضَلَّ اَعۡمَالَہُمۡ
যারা কুফরী করে এবং
আল্লাহর পথে বাধা সৃষ্টি করে, আল্লাহ তাদের সকল
কর্ম ব্যর্থ করে দেন। (সূরা মুহাম্মাদ ৪৭:১)
৫। বিশ্বাসিদের ভুলগুলো ক্ষমা করে দেয়া
হয়
وَالَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا
وَعَمِلُوا الصّٰلِحٰتِ وَاٰمَنُوۡا بِمَا نُزِّلَ عَلٰی مُحَمَّدٍ وَّہُوَ
الۡحَقُّ مِنۡ رَّبِّہِمۡ ۙ کَفَّرَ عَنۡہُمۡ سَیِّاٰتِہِمۡ وَاَصۡلَحَ
بَالَہُمۡ
আর যারা বিশ্বাস
স্থাপন করে, সৎকর্ম সম্পাদন করে এবং তাদের পালনকর্তার
পক্ষ থেকে মুহাম্মদের প্রতি অবতীর্ণ সত্যে বিশ্বাস করে, আল্লাহ তাদের মন্দ কর্মসমূহ মার্জনা করেন এবং তাদের অবস্থা ভাল
করে দেন। (সূরা
মুহাম্মাদ ৪৭:২)
৬। আল্লাহকে সাহায্য করলে আল্লাহ তাকে সাহায্য
করেন
یٰۤاَیُّہَا الَّذِیۡنَ
اٰمَنُوۡۤا اِنۡ تَنۡصُرُوا اللّٰہَ یَنۡصُرۡکُمۡ وَیُثَبِّتۡ اَقۡدَامَکُمۡ
হে বিশ্বাসীগণ! যদি
তোমরা আল্লাহকে সাহায্য কর, আল্লাহ তোমাদেরকে
সাহায্য করবেন এবং তোমাদের পা দৃঢ়প্রতিষ্ঠ করবেন। (সূরা মুহাম্মাদ ৪৭:৭)
৭। আল্লাহ বিশ্বাসিদের বন্ধু
ذٰلِکَ بِاَنَّ اللّٰہَ
مَوۡلَی الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا وَاَنَّ الۡکٰفِرِیۡنَ لَا مَوۡلٰی لَہُمۡ
এটা এজন্যে যে, আল্লাহ মুমিনদের হিতৈষী বন্ধু এবং কাফেরদের কোন হিতৈষী বন্ধু
নাই। (সূরা মুহাম্মাদ ৪৭:১১)
নোটঃ ১৫ নং আয়াতে জান্নাতের নেয়ামত সমূহ
বিষয়ে বর্ণনা করা হয়েছে।
৮। কুরআন নিয়ে গবেষণা করার নির্দেশ
اَفَلَا یَتَدَبَّرُوۡنَ
الۡقُرۡاٰنَ اَمۡ عَلٰی قُلُوۡبٍ اَقۡفَالُہَا
তারা কি কোরআন সম্পর্কে
গভীর চিন্তা করে না? না তাদের অন্তর তালাবদ্ধ? (সূরা মুহাম্মাদ ৪৭:২৪)
৯। আল্লাহ পরীক্ষা করবেন
وَلَنَبۡلُوَنَّکُمۡ حَتّٰی
نَعۡلَمَ الۡمُجٰہِدِیۡنَ مِنۡکُمۡ وَالصّٰبِرِیۡنَ ۙ وَنَبۡلُوَا۠ اَخۡبَارَکُمۡ
আমি অবশ্যই তোমাদেরকে
পরীক্ষা করব যে পর্যন্ত না ফুটিয়ে তুলি তোমাদের জেহাদকারীদেরকে এবং সবরকারীদেরকে এবং
যতক্ষণ না আমি তোমাদের অবস্থান সমূহ যাচাই করি। (সূরা মুহাম্মাদ ৪৭:৩১)
১০। আল্লাহ এবং রাসূলের আনুগত্য করার নির্দেশ
یٰۤاَیُّہَا الَّذِیۡنَ
اٰمَنُوۡۤا اَطِیۡعُوا اللّٰہَ وَاَطِیۡعُوا الرَّسُوۡلَ وَلَا تُبۡطِلُوۡۤا
اَعۡمَالَکُمۡ
হে মুমিনগণ! তোমরা
আল্লাহর আনুগত্য কর, রসূলের (সাঃ) আনুগত্য
কর এবং নিজেদের কর্ম বিনষ্ট করো না। (সূরা মুহাম্মাদ ৪৭:৩৩)
১১। অবিশ্বাসী অবস্থায় মারা গেলে তাদের
ক্ষমা নেই
اِنَّ الَّذِیۡنَ کَفَرُوۡا
وَصَدُّوۡا عَنۡ سَبِیۡلِ اللّٰہِ ثُمَّ مَاتُوۡا وَہُمۡ کُفَّارٌ فَلَنۡ
یَّغۡفِرَ اللّٰہُ لَہُمۡ
নিশ্চয় যারা কাফের
এবং আল্লাহর পথ থেকে মানুষকে ফিরিয়ে রাখে, অতঃপর কাফের অবস্থায় মারা যায়, আল্লাহ কখনই তাদেরকে ক্ষমা করবেন না। (সূরা মুহাম্মাদ ৪৭:৩৪)
১২। রাসুলকে (সাঃ) পাঠানো হয়েছে সুসংবাদদাতা ও ভয় প্রদর্শনকারী হিসেবে
اِنَّاۤ اَرۡسَلۡنٰکَ
شَاہِدًا وَّمُبَشِّرًا وَّنَذِیۡرًا
আমি আপনাকে প্রেরণ
করেছি অবস্থা ব্যক্তকারীরূপে, সুসংবাদদাতা ও ভয়
প্রদর্শনকারীরূপে। (সূরা আল ফাতহ ৪৮:৮)
১৩। রাসূলকে (সাঃ) পাঠানো হয়েছে সত্য দ্বীন
সহকারে
ہُوَ الَّذِیۡۤ اَرۡسَلَ
رَسُوۡلَہٗ بِالۡہُدٰی وَدِیۡنِ الۡحَقِّ لِیُظۡہِرَہٗ عَلَی الدِّیۡنِ کُلِّہٖ ؕ
وَکَفٰی بِاللّٰہِ شَہِیۡدًا
তিনিই তাঁর রসূলকে
হেদায়েত ও সত্য ধর্মসহ প্রেরণ করেছেন, যাতে একে অন্য সমস্ত ধর্মের উপর জয়যুক্ত করেন। সত্য প্রতিষ্ঠাতারূপে আল্লাহ যথেষ্ট।
(সূরা আল ফাতহ ৪৮:২৮)
১৪। রাসূলের (সাঃ) সামনে উচ্চস্বরে কথা বলা
বৈধ নয়
یٰۤاَیُّہَا الَّذِیۡنَ
اٰمَنُوۡا لَا تَرۡفَعُوۡۤا اَصۡوَاتَکُمۡ فَوۡقَ صَوۡتِ النَّبِیِّ وَلَا
تَجۡہَرُوۡا لَہٗ بِالۡقَوۡلِ کَجَہۡرِ بَعۡضِکُمۡ لِبَعۡضٍ اَنۡ تَحۡبَطَ
اَعۡمَالُکُمۡ وَاَنۡتُمۡ لَا تَشۡعُرُوۡنَ
মুমিনগণ! তোমরা
নবীর কন্ঠস্বরের উপর তোমাদের কন্ঠস্বর উঁচু করো না এবং তোমরা একে অপরের সাথে যেরূপ
উঁচুস্বরে কথা বল, তাঁর সাথে সেরূপ
উঁচুস্বরে কথা বলো না। এতে তোমাদের কর্ম নিস্ফল হয়ে যাবে এবং তোমরা টেরও পাবে না।
(সূরা হুজুরাত ৪৯:২)
১৫। সত্যতা যাচাই না করে গুজবে কান দেয়া
যাবে না
یٰۤاَیُّہَا الَّذِیۡنَ
اٰمَنُوۡۤا اِنۡ جَآءَکُمۡ فَاسِقٌۢ بِنَبَاٍ فَتَبَیَّنُوۡۤا اَنۡ تُصِیۡبُوۡا
قَوۡمًۢا بِجَہَالَۃٍ فَتُصۡبِحُوۡا عَلٰی مَا فَعَلۡتُمۡ نٰدِمِیۡنَ
মুমিনগণ! যদি কোন
পাপাচারী ব্যক্তি তোমাদের কাছে কোন সংবাদ আনয়ন করে, তবে তোমরা পরীক্ষা করে দেখবে, যাতে অজ্ঞতাবশতঃ তোমরা কোন সম্প্রদায়ের ক্ষতিসাধনে প্রবৃত্ত
না হও এবং পরে নিজেদের কৃতকর্মের জন্যে অনুতপ্ত না হও। (সূরা হুজুরাত ৪৯:৬)
১৬। মুমিনরা পরস্পর ভাই ভাই
اِنَّمَا الۡمُؤۡمِنُوۡنَ
اِخۡوَۃٌ فَاَصۡلِحُوۡا بَیۡنَ اَخَوَیۡکُمۡ وَاتَّقُوا اللّٰہَ لَعَلَّکُمۡ
تُرۡحَمُوۡنَ
মুমিনরা তো পরস্পর
ভাই-ভাই। অতএব, তোমরা তোমাদের দুই ভাইয়ের মধ্যে
মীমাংসা করবে এবং আল্লাহকে ভয় করবে-যাতে তোমরা অনুগ্রহপ্রাপ্ত হও। (সূরা হুজুরাত ৪৯:১০)
নোটঃ ১১ নং আয়াতে কাউকে মন্দ নামে ডাকতে
নিষেধ করা হয়েছে। ১২ নং আয়াতে অধিক ধারণা করা এবং গীবত থেকে
বেঁচে থাকার জন্য আদেশ করা হয়েছে।
১৭। সৃষ্টি সম্পর্কে গবেষণা করার নির্দেশ
اَفَلَمۡ یَنۡظُرُوۡۤا اِلَی
السَّمَآءِ فَوۡقَہُمۡ کَیۡفَ بَنَیۡنٰہَا وَزَیَّنّٰہَا وَمَا لَہَا مِنۡ
فُرُوۡجٍ
তারা কি তাদের উপরস্থিত
আকাশের পানে দৃষ্টিপাত করে না আমি কিভাবে তা নির্মাণ করেছি এবং সুশোভিত করেছি? তাতে কোন ছিদ্রও নেই। (সূরা ক্বফ ৫০:৬)
১৮। আল্লাহ মানুষের ঘাড়ের রগ থেকেও নিকটবর্তী
وَلَقَدۡ خَلَقۡنَا
الۡاِنۡسَانَ وَنَعۡلَمُ مَا تُوَسۡوِسُ بِہٖ نَفۡسُہٗ ۚ وَنَحۡنُ اَقۡرَبُ
اِلَیۡہِ مِنۡ حَبۡلِ الۡوَرِیۡدِ
আমি মানুষ সৃষ্টি
করেছি এবং তার মন নিভৃতে যে কুচিন্তা করে, সে সম্বন্ধেও আমি অবগত আছি। আমি তার গ্রীবাস্থিত ধমনী থেকেও অধিক নিকটবর্তী। (সূরা ক্বফ ৫০:১৬)
১৯। মানুষের উচ্চারিত সকল কথা সংরক্ষণের
জন্য প্রহরী নিযুক্ত রয়েছে
مَا یَلۡفِظُ مِنۡ قَوۡلٍ
اِلَّا لَدَیۡہِ رَقِیۡبٌ عَتِیۡدٌ
সে যে কথাই উচ্চারণ
করে,
তাই গ্রহণ করার জন্যে তার কাছে সদা প্রস্তুত প্রহরী রয়েছে। (সূরা ক্বফ ৫০:১৮)
২০। জান্নাতীদের জন্য সম্ভাষণ হবে সালাম
ادۡخُلُوۡہَا بِسَلٰمٍ ؕ
ذٰلِکَ یَوۡمُ الۡخُلُوۡدِ
তোমরা এতে শান্তিতে
প্রবেশ কর। এটাই অনন্তকাল বসবাসের জন্য প্রবেশ করার দিন। (সূরা ক্বফ ৫০:৩৪)
পিডিএফ ডাউনলোড লিংক
পরবর্তী সকল আপডেট পেতে এখানে ক্লিক করে আমাদের Facebook পেজে ফলো করুন।
WhatsApp গ্রুপ
লিংক