পবিত্র মাহে রমজানের ২২ তম তারাবীতে তেলাওয়াত করা হবে সূরা
হামীম সেজদাহ এর ৪৭ নং আয়াত থেকে শেষ পর্যন্ত। সূরা শুরা, সূরা যুখরুফ, সূরা দুখান এবং সূরা জাসিয়াহ
এর শেষ আয়াত পর্যন্ত। অর্থাৎ ২৫ তম পারার ১ম
পৃষ্ঠা থেকে শেষ পর্যন্ত। তেলাওয়াতের অংশ থেকে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি আয়াত
১। সামান্য দুঃখে মানুষ নিরাশ হয়ে যায়
لَا یَسۡـَٔمُ الۡاِنۡسَانُ مِنۡ دُعَآءِ الۡخَیۡرِ ۫
وَاِنۡ مَّسَّہُ الشَّرُّ فَیَـُٔوۡسٌ قَنُوۡطٌ
মানুষ উন্নতি কামনায়
ক্লান্ত হয় না; যদি তাকে অমঙ্গল স্পর্শ করে, তবে সে সম্পূর্ণ রূপে নিরাশ হয়ে পড়ে। (সূরা হামিম সাজদা
৪১:৪৯)
২। বিপদে পড়লে মানুষ দীর্ঘ দোয়া করে
وَاِذَاۤ اَنۡعَمۡنَا عَلَی الۡاِنۡسَانِ اَعۡرَضَ
وَنَاٰ بِجَانِبِہٖ ۚ وَاِذَا مَسَّہُ الشَّرُّ فَذُوۡ دُعَآءٍ عَرِیۡضٍ
আমি যখন মানুষের
প্রতি অনুগ্রহ করি তখন সে মুখ ফিরিয়ে নেয় এবং পার্শ্ব পরিবর্তন করে। আর যখন তাকে অনিষ্ট
স্পর্শ করে, তখন সুদীর্ঘ দোয়া করতে থাকে। (সূরা হামিম সাজদা
৪১:৫১)
৩। পালনকর্তার সাথে সাক্ষাতের বিষয়ে
অনেকে সন্দিহান
اَلَاۤ اِنَّہُمۡ فِیۡ مِرۡیَۃٍ مِّنۡ لِّقَآءِ
رَبِّہِمۡ ؕ اَلَاۤ اِنَّہٗ بِکُلِّ شَیۡءٍ مُّحِیۡطٌ
শুনে রাখ, তারা তাদের পালনকর্তার সাথে সাক্ষাতের ব্যাপারে সন্দেহে পতিত
রয়েছে। শুনে রাখ, তিনি সবকিছুকে পরিবেষ্টন
করে রয়েছেন। (সূরা
হামিম সাজদা ৪১:৫৪)
৪। আরবী ভাষায় কুরআন নাজিল হয়
وَکَذٰلِکَ اَوۡحَیۡنَاۤ اِلَیۡکَ قُرۡاٰنًا عَرَبِیًّا
لِّتُنۡذِرَ اُمَّ الۡقُرٰی وَمَنۡ حَوۡلَہَا وَتُنۡذِرَ یَوۡمَ الۡجَمۡعِ لَا رَیۡبَ
فِیۡہِ ؕ فَرِیۡقٌ فِی الۡجَنَّۃِ وَفَرِیۡقٌ فِی السَّعِیۡرِ
এমনি ভাবে আমি আপনার
প্রতি আরবী ভাষায় কোরআন নাযিল করেছি, যাতে আপনি মক্কা ও তার আশ-পাশের লোকদের সতর্ক করেন এবং সতর্ক করেন সমাবেশের দিন
সম্পর্কে,
যাতে কোন সন্দেহ নেই। একদল জান্নাতে এবং একদল জাহান্নামে প্রবেশ
করবে। (সূরা আশ্ শুরা ৪২:৭)
৫। আল্লাহই একমাত্র অভিভাবক
اَمِ اتَّخَذُوۡا مِنۡ دُوۡنِہٖۤ اَوۡلِیَآءَ ۚ
فَاللّٰہُ ہُوَ الۡوَلِیُّ وَہُوَ یُحۡیِ الۡمَوۡتٰی ۫ وَہُوَ عَلٰی کُلِّ شَیۡءٍ قَدِیۡرٌ
তারা কি আল্লাহ ব্যতীত
অপরকে অভিভাবক স্থির করেছে? পরন্তু আল্লাহই তো
একমাত্র অভিভাবক। তিনি মৃতদেরকে জীবিত করেন। তিনি সর্ববিষয়ে ক্ষমতাবান। (সূরা আশ্ শুরা ৪২:৯)
৬। তিনি কাউকে বেশি বা কাউকে পরিমিত
রিযিক দেন
لَہٗ مَقَالِیۡدُ السَّمٰوٰتِ وَالۡاَرۡضِ ۚ یَبۡسُطُ
الرِّزۡقَ لِمَنۡ یَّشَآءُ وَیَقۡدِرُ ؕ اِنَّہٗ بِکُلِّ شَیۡءٍ
عَلِیۡمٌ
আকাশ ও পৃথিবীর চাবি
তাঁর কাছে। তিনি যার জন্যে ইচ্ছা রিযিক বৃদ্ধি করেন এবং পরিমিত করেন। তিনি সর্ব বিষয়ে
জ্ঞানী। (সূরা আশ্ শুরা ৪২:১২)
৭। আল্লাহ মুমিনের দোয়া শোনেন
وَیَسۡتَجِیۡبُ الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا وَعَمِلُوا
الصّٰلِحٰتِ وَیَزِیۡدُہُمۡ مِّنۡ فَضۡلِہٖ ؕ وَالۡکٰفِرُوۡنَ لَہُمۡ عَذَابٌ
شَدِیۡدٌ
তিনি মুমিন ও সৎকর্মীদের
দোয়া শোনেন এবং তাদের প্রতি স্বীয় অনুগ্রহ বাড়িয়ে দেন। আর কাফেরদের জন্যে রয়েছে কঠোর
শাস্তি। (সূরা আশ্ শুরা ৪২:২৬)
৮। আল্লাহ ইচ্ছা করেই কিছু মানুষকে অল্প
রিযিক দেন
وَلَوۡ بَسَطَ اللّٰہُ الرِّزۡقَ لِعِبَادِہٖ
لَبَغَوۡا فِی الۡاَرۡضِ وَلٰکِنۡ یُّنَزِّلُ بِقَدَرٍ مَّا یَشَآءُ ؕ اِنَّہٗ
بِعِبَادِہٖ خَبِیۡرٌۢ بَصِیۡرٌ
যদি আল্লাহ তাঁর
সকল বান্দাকে প্রচুর রিযিক দিতেন, তবে তারা পৃথিবীতে
বিপর্যয় সৃষ্টি করত। কিন্তু তিনি যে পরিমাণ ইচ্ছা সে পরিমাণ নাযিল করেন। নিশ্চয় তিনি
তাঁর বান্দাদের খবর রাখেন ও সবকিছু দেখেন। (সূরা আশ্ শুরা ৪২:২৭)
৯। বিপদাপদ মানুষের কর্মের ফল
وَمَاۤ اَصَابَکُمۡ مِّنۡ مُّصِیۡبَۃٍ فَبِمَا
کَسَبَتۡ اَیۡدِیۡکُمۡ وَیَعۡفُوۡا عَنۡ کَثِیۡرٍ ؕ
তোমাদের উপর যেসব
বিপদ-আপদ পতিত হয়, তা তোমাদের কর্মেরই
ফল এবং তিনি তোমাদের অনেক গোনাহ ক্ষমা করে দেন। (সূরা আশ্ শুরা ৪২:৩০)
১০। পরকালের জীবনই উত্তম
فَمَاۤ اُوۡتِیۡتُمۡ مِّنۡ شَیۡءٍ فَمَتَاعُ الۡحَیٰوۃِ
الدُّنۡیَا ۚ وَمَا عِنۡدَ اللّٰہِ خَیۡرٌ وَّاَبۡقٰی لِلَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا وَعَلٰی
رَبِّہِمۡ یَتَوَکَّلُوۡنَ ۚ
অতএব, তোমাদেরকে যা দেয়া হয়েছে তা পার্থিব জীবনের ভোগ মাত্র। আর
আল্লাহর কাছে যা রয়েছে, তা উৎকৃষ্ট ও স্থায়ী
তাদের জন্যে যারা বিশ্বাস স্থাপন করে ও তাদের পালনকর্তার উপর ভরসা করে। (সূরা আশ্ শুরা ৪২:৩৬)
১১। ক্ষমা করা সাহসিকতার কাজ
وَلَمَنۡ صَبَرَ وَغَفَرَ اِنَّ ذٰلِکَ لَمِنۡ
عَزۡمِ الۡاُمُوۡرِ
অবশ্যই যে সবর করে
ও ক্ষমা করে নিশ্চয় এটা সাহসিকতার কাজ। (সূরা আশ্ শুরা ৪২:৪৩)
১২। আল্লাহ উত্তম সাহায্যকারী
وَمَا کَانَ لَہُمۡ مِّنۡ اَوۡلِیَآءَ یَنۡصُرُوۡنَہُمۡ
مِّنۡ دُوۡنِ اللّٰہِ ؕ وَمَنۡ یُّضۡلِلِ اللّٰہُ فَمَا لَہٗ مِنۡ سَبِیۡلٍ ؕ
আল্লাহ তাআলা ব্যতীত
তাদের কোন সাহায্যকারী থাকবে না, যে তাদেরকে সাহায্য
করবে। আল্লাহ তাআলা যাকে পথভ্রষ্ট করেন, তার কোন গতি নেই। (সূরা আশ্ শুরা ৪২:৪৬)
১৩। তিনি যাকে ইচ্ছা কন্যা আবার যাকে
ইচ্ছা পুত্র দান করেন
لِلّٰہِ مُلۡکُ السَّمٰوٰتِ وَالۡاَرۡضِ ؕ یَخۡلُقُ
مَا یَشَآءُ ؕ یَہَبُ لِمَنۡ یَّشَآءُ اِنَاثًا وَّیَہَبُ
لِمَنۡ یَّشَآءُ الذُّکُوۡرَ ۙ
নভোমন্ডল ও ভূমন্ডলের
রাজত্ব আল্লাহ তাআলারই। তিনি যা ইচ্ছা, সৃষ্টি করেন, যাকে ইচ্ছা কন্যা-সন্তান
এবং যাকে ইচ্ছা পুত্র সন্তান দান করেন। (সূরা আশ্ শুরা ৪২:৪৯)
১৪। যাকে ইচ্ছা পুত্র কন্যা উভয়ই দান
করেন আবার কাউকে বন্ধ্যা রাখেন
اَوۡ یُزَوِّجُہُمۡ ذُکۡرَانًا وَّاِنَاثًا ۚ وَیَجۡعَلُ
مَنۡ یَّشَآءُ عَقِیۡمًا ؕ اِنَّہٗ عَلِیۡمٌ قَدِیۡرٌ
অথবা তাদেরকে দান
করেন পুত্র ও কন্যা উভয়ই এবং যাকে ইচ্ছা বন্ধ্যা করে দেন। নিশ্চয় তিনি সর্বজ্ঞ, ক্ষমতাশীল। (সূরা আশ্ শুরা ৪২:৫০)
১৫। তিনি সব কিছু জোড়া জোড়া সৃষ্টি করেছেন
وَالَّذِیۡ خَلَقَ الۡاَزۡوَاجَ کُلَّہَا وَجَعَلَ
لَکُمۡ مِّنَ الۡفُلۡکِ وَالۡاَنۡعَامِ مَا تَرۡکَبُوۡنَ ۙ
এবং যিনি সবকিছুর
যুগল সৃষ্টি করেছেন এবং নৌকা ও চতুস্পদ জন্তুকে তোমাদের জন্যে যানবাহনে পরিণত করেছেন, (সূরা আয্-যুখরূফ ৪৩:১২)
১৬। কুরআন সম্পর্কে অবিশ্বাসীদের উদ্ভট প্রশ্ন
وَقَالُوۡا لَوۡلَا نُزِّلَ ہٰذَا الۡقُرۡاٰنُ عَلٰی
رَجُلٍ مِّنَ الۡقَرۡیَتَیۡنِ عَظِیۡمٍ
তারা বলে, কোরআন কেন দুই জনপদের কোন প্রধান ব্যক্তির উপর অবতীর্ণ হল
না? (সূরা আয্-যুখরূফ ৪৩:৩১)
১৭। আল্লাহর স্মরণ থেকে চোখ ফিরিয়ে নিলে
তার জন্য শয়তান নিয়োজিত করে দেয়া হয়
وَمَنۡ یَّعۡشُ عَنۡ ذِکۡرِ الرَّحۡمٰنِ نُقَیِّضۡ
لَہٗ شَیۡطٰنًا فَہُوَ لَہٗ قَرِیۡنٌ
যে ব্যক্তি দয়াময়
আল্লাহর স্মরণ থেকে চোখ ফিরিয়ে নেয়, আমি তার জন্যে এক শয়তান নিয়োজিত করে দেই, অতঃপর সে-ই হয় তার সঙ্গী। (সূরা আয্-যুখরূফ ৪৩:৩৬)
১৮। শয়তান মানুষকে সৎপথে বাঁধা দেয়
وَاِنَّہُمۡ لَیَصُدُّوۡنَہُمۡ عَنِ السَّبِیۡلِ وَیَحۡسَبُوۡنَ
اَنَّہُمۡ مُّہۡتَدُوۡنَ
শয়তানরাই মানুষকে
সৎপথে বাধা দান করে, আর মানুষ মনে করে
যে,
তারা সৎপথে রয়েছে। (সূরা আয্-যুখরূফ ৪৩:৩৭)
১৯। জান্নাতিরা তাদের স্ত্রীসহ জান্নাতে
প্রবেশ করবে
اُدۡخُلُوا الۡجَنَّۃَ اَنۡتُمۡ وَاَزۡوَاجُکُمۡ
تُحۡبَرُوۡنَ
জান্নাতের প্রবেশ
কর তোমরা এবং তোমাদের বিবিগণ সানন্দে। (সূরা আয্-যুখরূফ ৪৩:৭০)
২০। কুরআন বরকতময় রাতে নাজিল হয়েছে
اِنَّاۤ اَنۡزَلۡنٰہُ فِیۡ لَیۡلَۃٍ مُّبٰرَکَۃٍ
اِنَّا کُنَّا مُنۡذِرِیۡنَ
আমি একে নাযিল করেছি।
এক বরকতময় রাতে, নিশ্চয় আমি সতর্ককারী। (সূরা আদ দুখান ৪৪:৩)
২১। আখেরাতে আর কাউকে মৃত্য স্পর্শ
করবেনা
لَا یَذُوۡقُوۡنَ فِیۡہَا الۡمَوۡتَ اِلَّا
الۡمَوۡتَۃَ الۡاُوۡلٰی ۚ وَوَقٰہُمۡ عَذَابَ الۡجَحِیۡمِ ۙ
তারা সেখানে মৃত্যু
আস্বাদন করবে না, প্রথম মৃত্যু ব্যতীত
এবং আপনার পালনকর্তা তাদেরকে জাহান্নামের আযাব থেকে রক্ষা করবেন। (সূরা আদ দুখান ৪৪:৫৬)
২২। সবাইকে আমলনামা দেখানো হবে
وَتَرٰی کُلَّ اُمَّۃٍ جَاثِیَۃً ۟ کُلُّ اُمَّۃٍ
تُدۡعٰۤی اِلٰی کِتٰبِہَا ؕ اَلۡیَوۡمَ تُجۡزَوۡنَ مَا کُنۡتُمۡ تَعۡمَلُوۡنَ
আপনি প্রত্যেক উম্মতকে
দেখবেন নতজানু অবস্থায়। প্রত্যেক উম্মতকে তাদের আমলনামা দেখতে বলা হবে। তোমরা যা করতে, অদ্য তোমারদেরকে তার প্রতিফল দেয়া হবে। (সূরা আল জাসিয়াহ
৪৫:২৮)
পিডিএফ ডাউনলোড লিংক
পরবর্তী সকল আপডেট পেতে এখানে ক্লিক করে আমাদের Facebook পেজে ফলো করুন।
WhatsApp গ্রুপ
লিংক