পবিত্র মাহে রমজানের ১৮
তম তারাবীতে তেলাওয়াত করা হবে সূরা আনকাবুত এর ৪৫ নং আয়াত থেকে শেষ পর্যন্ত। সূরা রুম, সুরা লোকমান, সুরা
আস সাজদাহ এবং সূরা আহযাব এর ৩০ নং আয়াত পর্যন্ত। অর্থাৎ ২১ তম পারার ১ম পৃষ্ঠা থেকে
শেষ পর্যন্ত। তেলাওয়াতের অংশ থেকে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি আয়াত
১। সালাত অশ্লীল কাজ থেকে বিরত রাখে
اُتۡلُ مَاۤ اُوۡحِیَ اِلَیۡکَ مِنَ الۡکِتٰبِ
وَاَقِمِ الصَّلٰوۃَ ؕ
اِنَّ الصَّلٰوۃَ تَنۡہٰی عَنِ الۡفَحۡشَآءِ وَالۡمُنۡکَرِ ؕ
وَلَذِکۡرُ اللّٰہِ اَکۡبَرُ ؕ
وَاللّٰہُ یَعۡلَمُ مَا تَصۡنَعُوۡنَ
আপনি আপনার প্রতি
প্রত্যাদিষ্ট কিতাব পাঠ করুন এবং নামায কায়েম করুন। নিশ্চয় নামায অশ্লীল ও গর্হিত কার্য
থেকে বিরত রাখে। আল্লাহর স্মরণ সর্বশ্রেষ্ঠ। আল্লাহ জানেন তোমরা যা কর। (সূরা আনকাবুত ২৯:৪৫)
২। কুরআন রাসুলের বানানো কিতাব নয়
وَمَا کُنۡتَ تَتۡلُوۡا مِنۡ قَبۡلِہٖ مِنۡ کِتٰبٍ
وَّلَا تَخُطُّہٗ بِیَمِیۡنِکَ اِذًا لَّارۡتَابَ الۡمُبۡطِلُوۡنَ
আপনি তো এর পূর্বে
কোন কিতাব পাঠ করেননি এবং স্বীয় দক্ষিণ হস্ত দ্বারা কোন কিতাব লিখেননি। এরূপ হলে
মিথ্যাবাদীরা অবশ্যই সন্দেহ পোষণ করত। (সূরা আনকাবুত ২৯:৪৮)
৩। জাহান্নাম অবিশ্বাসীদেরকে ঘিরে রেখেছে
یَسۡتَعۡجِلُوۡنَکَ بِالۡعَذَابِ ؕ
وَاِنَّ جَہَنَّمَ لَمُحِیۡطَۃٌۢ بِالۡکٰفِرِیۡنَ ۙ
তারা আপনাকে আযাব
ত্বরান্বিত করতে বলে; অথচ জাহান্নাম কাফেরদেরকে
ঘেরাও করছে। (সূরা
আনকাবুত ২৯:৫৪)
৪। আল্লাহর জমিন বিশাল
یٰعِبَادِیَ الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡۤا اِنَّ اَرۡضِیۡ
وَاسِعَۃٌ فَاِیَّایَ فَاعۡبُدُوۡنِ
হে আমার ঈমানদার
বান্দাগণ,
আমার পৃথিবী প্রশস্ত। অতএব তোমরা আমারই এবাদত কর। (সূরা আনকাবুত ২৯:৫৬)
৫। সকল প্রাণীই মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করবে
کُلُّ نَفۡسٍ ذَآئِقَۃُ الۡمَوۡتِ ۟
ثُمَّ اِلَیۡنَا تُرۡجَعُوۡنَ
জীবমাত্রই মৃত্যুর
স্বাদ গ্রহণ করবে। অতঃপর তোমরা আমারই কাছে প্রত্যাবর্তিত হবে। (সূরা আনকাবুত ২৯:৫৭)
৬। রিজিক আল্লাহর হাতে
وَکَاَیِّنۡ مِّنۡ دَآبَّۃٍ لَّا تَحۡمِلُ
رِزۡقَہَا ٭ۖ
اَللّٰہُ یَرۡزُقُہَا وَاِیَّاکُمۡ ۫ۖ
وَہُوَ السَّمِیۡعُ الۡعَلِیۡمُ
এমন অনেক জন্তু আছে, যারা তাদের খাদ্য সঞ্চিত রাখে না। আল্লাহই রিযিক দেন তাদেরকে
এবং তোমাদেরকেও। তিনি সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞ। (সূরা
আনকাবুত ২৯:৬০)
৭। আল্লাহ কাউকে রিজিক বেশি দেন কাউকে কম
দেন
اَللّٰہُ یَبۡسُطُ الرِّزۡقَ لِمَنۡ یَّشَآءُ مِنۡ عِبَادِہٖ
وَیَقۡدِرُ لَہٗ ؕ
اِنَّ اللّٰہَ بِکُلِّ شَیۡءٍ عَلِیۡمٌ
আল্লাহ তাঁর বান্দাদের
মধ্যে যার জন্য ইচ্ছা রিযিক প্রশস্ত করে দেন এবং যার জন্য ইচ্ছা হ্রাস করেন। নিশ্চয়, আল্লাহ সর্ববিষয়ে সম্যক পরিজ্ঞাত। (সূরা আনকাবুত ২৯:৬২)
৮। দুনিয়ার জীবন খুবই নগণ্য
وَمَا ہٰذِہِ الۡحَیٰوۃُ الدُّنۡیَاۤ اِلَّا لَہۡوٌ
وَّلَعِبٌ ؕ
وَاِنَّ الدَّارَ الۡاٰخِرَۃَ لَہِیَ الۡحَیَوَانُ ۘ
لَوۡ کَانُوۡا یَعۡلَمُوۡنَ
এই পার্থিব জীবন
ক্রীড়া-কৌতুক বৈ তো কিছুই নয়। পরকালের গৃহই প্রকৃত জীবন; যদি তারা জানত। (সূরা আনকাবুত ২৯:৬৪)
৯। বিপদে পড়লে মানুষ আল্লাহকে ডাকে, বিপদ দূর হলে ভুলে
যায়
فَاِذَا رَکِبُوۡا فِی الۡفُلۡکِ دَعَوُا اللّٰہَ
مُخۡلِصِیۡنَ لَہُ الدِّیۡنَ ۬ۚ
فَلَمَّا نَجّٰہُمۡ اِلَی الۡبَرِّ اِذَا ہُمۡ یُشۡرِکُوۡنَ ۙ
তারা যখন জলযানে
আরোহণ করে তখন একনিষ্ঠভাবে আল্লাহকে ডাকে। অতঃপর তিনি যখন স্থলে এনে তাদেরকে উদ্ধার
করেন,
তখনই তারা শরীক করতে থাকে। (সূরা আনকাবুত ২৯:৬৫)
১০। কুরআনের ভবিষ্যত বাণী
غُلِبَتِ الرُّوۡمُ ۙ
রোমকরা পরাজিত হয়েছে, (সূরা আর রুম ৩০:২)
১১। আল্লাহ যাকে ইচ্ছা সাহায্য করেন
بِنَصۡرِ اللّٰہِ ؕ
یَنۡصُرُ مَنۡ یَّشَآءُ ؕ
وَہُوَ الۡعَزِیۡزُ الرَّحِیۡمُ ۙ
আল্লাহর সাহায্যে।
তিনি যাকে ইচ্ছা সাহায্য করেন এবং তিনি পরাক্রমশালী, পরম দয়ালু। (সূরা আর রুম ৩০:৫)
১২। দুঃখে মানুষ আল্লাহকে ডাকে, সুখের
সময় অন্যায়ে লিপ্ত হয়
وَاِذَا مَسَّ النَّاسَ ضُرٌّ دَعَوۡا رَبَّہُمۡ
مُّنِیۡبِیۡنَ اِلَیۡہِ ثُمَّ اِذَاۤ اَذَاقَہُمۡ مِّنۡہُ رَحۡمَۃً اِذَا فَرِیۡقٌ
مِّنۡہُمۡ بِرَبِّہِمۡ یُشۡرِکُوۡنَ ۙ
মানুষকে যখন দুঃখ-কষ্ট
স্পর্শ করে, তখন তারা তাদের পালনকর্তাকে আহবান
করে তাঁরই অভিমুখী হয়ে। অতঃপর তিনি যখন তাদেরকে রহমতের স্বাদ আস্বাদন করান, তখন তাদের একদল তাদের পালনকর্তার সাথে শিরক করতে থাকে, (সূরা আর রুম ৩০:৩৩)
১৩। স্থলে, জলের বিপর্যয় মানুষের হাতের
কামাই
ظَہَرَ الۡفَسَادُ فِی الۡبَرِّ وَالۡبَحۡرِ بِمَا
کَسَبَتۡ اَیۡدِی النَّاسِ لِیُذِیۡقَہُمۡ بَعۡضَ الَّذِیۡ عَمِلُوۡا لَعَلَّہُمۡ
یَرۡجِعُوۡنَ
স্থলে ও জলে মানুষের
কৃতকর্মের দরুন বিপর্যয় ছড়িয়ে পড়েছে। আল্লাহ তাদেরকে তাদের কর্মের শাস্তি আস্বাদন করাতে
চান,
যাতে তারা ফিরে আসে। (সূরা আর রুম ৩০:৪১)
১৪। কুরআন সৎকর্মপরায়ণদের জন্য হেদায়েত
ও রহমত
ہُدًی وَّرَحۡمَۃً لِّلۡمُحۡسِنِیۡنَ ۙ
হেদায়েত ও রহমত সৎকর্মপরায়ণদের
জন্য। (সূরা লোকমান ৩১:৩)
নোটঃ সৎকর্মপরায়ণদের
পরিচয় সম্পর্কে ৪ ও ৫ নং আয়াতে আলোচনা করা হয়েছে।
১৫। কুরআন শ্রবণ থেকে যারা মুখ ফিরিয়ে নেয়
তাদের জন্য যন্ত্রণাদায়ক শাস্তির ঘোষণা
وَاِذَا تُتۡلٰی عَلَیۡہِ اٰیٰتُنَا وَلّٰی
مُسۡتَکۡبِرًا کَاَنۡ لَّمۡ یَسۡمَعۡہَا کَاَنَّ فِیۡۤ اُذُنَیۡہِ وَقۡرًا ۚ
فَبَشِّرۡہُ بِعَذَابٍ اَلِیۡمٍ
যখন ওদের সামনে আমার
আয়তসমূহ পাঠ করা হয়, তখন ওরা দম্ভের সাথে
এমনভাবে মুখ ফিরিয়ে নেয়, যেন ওরা তা শুনতেই
পায়নি অথবা যেন ওদের দু’কান বধির। সুতরাং ওদেরকে কষ্টদায়ক আযাবের সংবাদ দাও। (সূরা লোকমান ৩১:৭)
১৬। পুত্রকে হযরত লোকমান এর উপদেশ
وَاِذۡ قَالَ لُقۡمٰنُ لِابۡنِہٖ وَہُوَ یَعِظُہٗ
یٰبُنَیَّ لَا تُشۡرِکۡ بِاللّٰہِ ؕؔ
اِنَّ الشِّرۡکَ لَظُلۡمٌ عَظِیۡمٌ
যখন লোকমান উপদেশচ্ছলে
তার পুত্রকে বললঃ হে বৎস, আল্লাহর সাথে শরীক
করো না। নিশ্চয় আল্লাহর সাথে শরীক করা মহা অন্যায়। (সূরা লোকমান ৩১:১৩)
১৭। মধ্যপন্থা অবলম্বন
وَاقۡصِدۡ فِیۡ مَشۡیِکَ وَاغۡضُضۡ مِنۡ صَوۡتِکَ ؕ
اِنَّ اَنۡکَرَ الۡاَصۡوَاتِ لَصَوۡتُ الۡحَمِیۡرِ
পদচারণায় মধ্যবর্তিতা
অবলম্বন কর এবং কন্ঠস্বর নীচু কর। নিঃসন্দেহে গাধার স্বরই সর্বাপেক্ষা অপ্রীতিকর। (সূরা লোকমান ৩১:১৯)
১৮। ঈমানদার এবং ফাসেক সমান নয়
اَفَمَنۡ کَانَ مُؤۡمِنًا کَمَنۡ کَانَ فَاسِقًا ؕؔ
لَا یَسۡتَوٗنَ
ঈমানদার ব্যক্তি
কি অবাধ্যের অনুরূপ? তারা সমান নয়। (সূরা আস সেজদা ৩২:১৮)
নোটঃ এর পরের দুই
আয়াতে ঈমানদার এবং ফাসেক এর পরিণতি আলোচনা করা হয়েছে
১৯। নবীর (সাঃ) স্ত্রীগণ মুমিনদের মা
اَلنَّبِیُّ اَوۡلٰی بِالۡمُؤۡمِنِیۡنَ مِنۡ
اَنۡفُسِہِمۡ وَاَزۡوَاجُہٗۤ اُمَّہٰتُہُمۡ ؕ
وَاُولُوا الۡاَرۡحَامِ بَعۡضُہُمۡ اَوۡلٰی بِبَعۡضٍ فِیۡ کِتٰبِ اللّٰہِ مِنَ
الۡمُؤۡمِنِیۡنَ وَالۡمُہٰجِرِیۡنَ اِلَّاۤ اَنۡ تَفۡعَلُوۡۤا اِلٰۤی
اَوۡلِیٰٓئِکُمۡ مَّعۡرُوۡفًا ؕ
کَانَ ذٰلِکَ فِی الۡکِتٰبِ مَسۡطُوۡرًا
নবী মুমিনদের নিকট
তাদের নিজেদের অপেক্ষা অধিক ঘনিষ্ঠ এবং তাঁর স্ত্রীগণ তাদের মাতা। আল্লাহর বিধান অনুযায়ী
মুমিন ও মুহাজিরগণের মধ্যে যারা আত্নীয়, তারা পরস্পরে অধিক ঘনিষ্ঠ। তবে তোমরা যদি তোমাদের বন্ধুদের প্রতি দয়া-দাক্ষিণ্য
করতে চাও,
করতে পার। এটা লওহে-মাহফুযে লিখিত আছে। (সূরা আল আহযাব ৩৩:৬)
২০। রাসূলের (সাঃ) জীবনে রয়েছে উত্তম আদর্শ
لَقَدۡ کَانَ لَکُمۡ فِیۡ رَسُوۡلِ اللّٰہِ اُسۡوَۃٌ
حَسَنَۃٌ لِّمَنۡ کَانَ یَرۡجُوا اللّٰہَ وَالۡیَوۡمَ الۡاٰخِرَ وَذَکَرَ اللّٰہَ
کَثِیۡرًا ؕ
যারা আল্লাহ ও শেষ দিবসের আশা রাখে এবং আল্লাহকে অধিক স্মরণ করে, তাদের জন্যে রসূলুল্লাহর মধ্যে উত্তম নমুনা রয়েছে। (সূরা আল আহযাব ৩৩:২১)
পিডিএফ ডাউনলোড লিংক
পরবর্তী সকল আপডেট পেতে এখানে ক্লিক করে আমাদের Facebook পেজে ফলো করুন।
WhatsApp গ্রুপ লিংক