১২তম তারাবীতে তিলাওয়াতকৃত উল্লেখযোগ্য কিছু আয়াত | পিডিএফ ডাউনলোড

১২তম তারাবীতে তিলাওয়াতকৃত উল্লেখযোগ্য কিছু আয়াত

আসসালামুআলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহ, পবিত্র মাহে রমজানের ১২ তম তারাবীতে তেলাওয়াত করা হবে সূরা বানী ইসরাইলের প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত এবং সূরা কাহাফ এর শুরু থেকে ৭৪ নং আয়াত পর্যন্ত অর্থাৎ ১৫ পারার শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত তেলাওয়াতের অংশ থেকে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি আয়াত দেয়া হল,

১। মিরাজের বিষয়

سُبۡحٰنَ الَّذِیۡۤ اَسۡرٰی بِعَبۡدِہٖ لَیۡلًا مِّنَ الۡمَسۡجِدِ الۡحَرَامِ اِلَی الۡمَسۡجِدِ الۡاَقۡصَا الَّذِیۡ بٰرَکۡنَا حَوۡلَہٗ لِنُرِیَہٗ مِنۡ اٰیٰتِنَا ؕ اِنَّہٗ ہُوَ السَّمِیۡعُ الۡبَصِیۡرُ

পরম পবিত্র ও মহিমাময় সত্তা তিনি, যিনি স্বীয় বান্দাকে রাত্রি বেলায় ভ্রমণ করিয়েছিলেন মসজিদে হারাম থেকে মসজিদে আকসা পর্যান্ত-যার চার দিকে আমি পর্যাপ্ত বরকত দান করেছি যাতে আমি তাঁকে কুদরতের কিছু নিদর্শন দেখিয়ে দেই। নিশ্চয়ই তিনি পরম শ্রবণকারী ও দর্শনশীল। (সূরা বনী ইসরাঈল ১৭:১)

২। কুরআন মুমিনের জন্য পথপ্রদর্শক

اِنَّ ہٰذَا الۡقُرۡاٰنَ یَہۡدِیۡ لِلَّتِیۡ ہِیَ اَقۡوَمُ وَیُبَشِّرُ الۡمُؤۡمِنِیۡنَ الَّذِیۡنَ یَعۡمَلُوۡنَ الصّٰلِحٰتِ اَنَّ لَہُمۡ اَجۡرًا کَبِیۡرًا ۙ

এই কোরআন এমন পথ প্রদর্শন করে, যা সর্বাধিক সরল এবং সৎকর্ম পরায়ণ মুমিনদেরকে সুসংবাদ দেয় যে, তাদের জন্যে মহা পুরস্কার রয়েছে। (সূরা বনী ইসরাঈল ১৭:৯)

৩। আখিরাতের প্রতি যারা বিশ্বাসী তাদের শাস্তি

وَّاَنَّ الَّذِیۡنَ لَا یُؤۡمِنُوۡنَ بِالۡاٰخِرَۃِ اَعۡتَدۡنَا لَہُمۡ عَذَابًا اَلِیۡمًا

এবং যারা পরকালে বিশ্বাস করে না, আমি তাদের জন্যে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি প্রস্তুত করেছি। (সূরা বনী ইসরাঈল ১৭:১০)

৪। মানুষ খুব দ্রুততা প্রিয়

وَیَدۡعُ الۡاِنۡسَانُ بِالشَّرِّ دُعَآءَہٗ بِالۡخَیۡرِ ؕ وَکَانَ الۡاِنۡسَانُ عَجُوۡلًا

মানুষ যেভাবে কল্যাণ কামনা করে, সেভাবেই অকল্যাণ কামনা করে। মানুষ তো খুবই দ্রুততা প্রিয়। (সূরা বনী ইসরাঈল ১৭:১১)

৫। কিয়ামতের দিন সবার আমলনামা খোলা অবস্থায় পাবে

وَکُلَّ اِنۡسَانٍ اَلۡزَمۡنٰہُ طٰٓئِرَہٗ فِیۡ عُنُقِہٖ ؕ وَنُخۡرِجُ لَہٗ یَوۡمَ الۡقِیٰمَۃِ کِتٰبًا یَّلۡقٰىہُ مَنۡشُوۡرًا

আমি প্রত্যেক মানুষের কর্মকে তার গ্রীবলগ্ন করে রেখেছি। কেয়ামতের দিন বের করে দেখাব তাকে একটি কিতাব, যা সে খোলা অবস্থায় পাবে। (সূরা বনী ইসরাঈল ১৭:১৩)

৬। হিসাব গ্রহণের জন্য ব্যক্তি নিজেই যথেষ্ট

اِقۡرَاۡ کِتٰبَکَ ؕ  کَفٰی بِنَفۡسِکَ الۡیَوۡمَ عَلَیۡکَ حَسِیۡبًا ؕ

পাঠ কর তুমি তোমার কিতাব। আজ তোমার হিসাব গ্রহণের জন্যে তুমিই যথেষ্ট। (সূরা বনী ইসরাঈল ১৭:১৪)

৭। পাপাচারী জনপদ কে ধ্বংস করেন

وَاِذَاۤ اَرَدۡنَاۤ اَنۡ نُّہۡلِکَ قَرۡیَۃً اَمَرۡنَا مُتۡرَفِیۡہَا فَفَسَقُوۡا فِیۡہَا فَحَقَّ عَلَیۡہَا الۡقَوۡلُ فَدَمَّرۡنٰہَا تَدۡمِیۡرًا

যখন আমি কোন জনপদকে ধ্বংস করার ইচ্ছা করি তখন তার অবস্থাপন্ন লোকদেরকে উদ্ধুদ্ধ করি অতঃপর তারা পাপাচারে মেতে উঠে। তখন সে জনগোষ্টীর উপর আদেশ অবধারিত হয়ে যায়। অতঃপর আমি তাকে উঠিয়ে আছাড় দেই। (সূরা বনী ইসরাঈল ১৭:১৬)

৮। যে দুনিয়া কামনা করে আল্লাহ তাকে তা দ্রুত দেন

مَنۡ کَانَ یُرِیۡدُ الۡعَاجِلَۃَ عَجَّلۡنَا لَہٗ فِیۡہَا مَا نَشَآءُ لِمَنۡ نُّرِیۡدُ ثُمَّ جَعَلۡنَا لَہٗ جَہَنَّمَ ۚ یَصۡلٰىہَا مَذۡمُوۡمًا مَّدۡحُوۡرًا

যে কেউ ইহকাল কামনা করে, আমি সেসব লোককে যা ইচ্ছা সত্ত্বর দিয়ে দেই। অতঃপর তাদের জন্যে জাহান্নাম নির্ধারণ করি। ওরা তাতে নিন্দিত-বিতাড়িত অবস্থায় প্রবেশ করবে। (সূরা বনী ইসরাঈল ১৭:১৮)

৯। যে আখেরাত কামনা করে তার প্রতিদান সে পেয়ে থাকে

وَمَنۡ اَرَادَ الۡاٰخِرَۃَ وَسَعٰی لَہَا سَعۡیَہَا وَہُوَ مُؤۡمِنٌ فَاُولٰٓئِکَ کَانَ سَعۡیُہُمۡ مَّشۡکُوۡرًا

আর যারা পরকাল কামনা করে এবং মুমিন অবস্থায় তার জন্য যথাযথ চেষ্টা-সাধনা করে, এমন লোকদের চেষ্টা স্বীকৃত হয়ে থাকে। (সূরা বনী ইসরাঈল ১৭:১৯)

১০। উপাস্য হিসেবে আল্লাহ ছাড়া কাউকে মানা যাবে না

لَا تَجۡعَلۡ مَعَ اللّٰہِ اِلٰـہًا اٰخَرَ فَتَقۡعُدَ مَذۡمُوۡمًا مَّخۡذُوۡلًا

স্থির করো না আল্লাহর সাথে অন্য কোন উপাস্য। তাহলে তুমি নিন্দিত ও অসহায় হয়ে পড়বে। (সূরা বনী ইসরাঈল ১৭:২২)

১১। পিতা-মাতার দেয় কষ্টে 'উহ' শব্দ ও বলা যাবে না

وَقَضٰی رَبُّکَ اَلَّا تَعۡبُدُوۡۤا اِلَّاۤ اِیَّاہُ وَبِالۡوَالِدَیۡنِ اِحۡسَانًا ؕ اِمَّا یَبۡلُغَنَّ عِنۡدَکَ الۡکِبَرَ اَحَدُہُمَاۤ اَوۡ کِلٰہُمَا فَلَا تَقُلۡ لَّہُمَاۤ اُفٍّ وَّلَا تَنۡہَرۡہُمَا وَقُلۡ لَّہُمَا قَوۡلًا کَرِیۡمًا

তোমার পালনকর্তা আদেশ করেছেন যে, তাঁকে ছাড়া অন্য কারও এবাদত করো না এবং পিতা-মাতার সাথে সদ্ব-ব্যবহার কর। তাদের মধ্যে কেউ অথবা উভয়েই যদি তোমার জীবদ্দশায় বার্ধক্যে উপনীত হয়; তবে তাদেরকে উহ শব্দটিও বলো না এবং তাদেরকে ধমক দিও না এবং বল তাদেরকে শিষ্ঠাচারপূর্ণ কথা। (সূরা বনী ইসরাঈল ১৭:২৩)

১২। পিতা মাতার জন্য কুরআনিক দোয়া

وَاخۡفِضۡ لَہُمَا جَنَاحَ الذُّلِّ مِنَ الرَّحۡمَۃِ وَقُلۡ رَّبِّ ارۡحَمۡہُمَا کَمَا رَبَّیٰنِیۡ صَغِیۡرًا ؕ

তাদের সামনে ভালবাসার সাথে, নম্রভাবে মাথা নত করে দাও এবং বলঃ হে পালনকর্তা, তাদের উভয়ের প্রতি রহম কর, যেমন তারা আমাকে শৈশবকালে লালন-পালন করেছেন। (সূরা বনী ইসরাঈল ১৭:২৪)

১৩। আত্মীয় স্বজনের হক বিষয়ে

وَاٰتِ ذَا الۡقُرۡبٰی حَقَّہٗ وَالۡمِسۡکِیۡنَ وَابۡنَ السَّبِیۡلِ وَلَا تُبَذِّرۡ تَبۡذِیۡرًا

আত্নীয়-স্বজনকে তার হক দান কর এবং অভাবগ্রস্ত ও মুসাফিরকেও। এবং কিছুতেই অপব্যয় করো না। (সূরা বনী ইসরাঈল ১৭:২৬)

১৪। অপচয়কারী শয়তানের ভাই

اِنَّ الۡمُبَذِّرِیۡنَ کَانُوۡۤا اِخۡوَانَ الشَّیٰطِیۡنِ ؕ وَکَانَ الشَّیۡطٰنُ لِرَبِّہٖ کَفُوۡرًا

নিশ্চয় অপব্যয়কারীরা শয়তানের ভাই। শয়তান স্বীয় পালনকর্তার প্রতি অতিশয় অকৃতজ্ঞ। (সূরা বনী ইসরাঈল ১৭:২৭)

১৫। দানের ক্ষেত্রে মধ্যপন্থা অবলম্বন করা

وَلَا تَجۡعَلۡ یَدَکَ مَغۡلُوۡلَۃً اِلٰی عُنُقِکَ وَلَا تَبۡسُطۡہَا کُلَّ الۡبَسۡطِ فَتَقۡعُدَ مَلُوۡمًا مَّحۡسُوۡرًا

তুমি একেবারে ব্যয়-কুষ্ঠ হয়োনা এবং একেবারে মুক্ত হস্তও হয়ো না। তাহলে তুমি তিরস্কৃতি, নিঃস্ব হয়ে বসে থাকবে। (সূরা বনী ইসরাঈল ১৭:২৯)

১৬। দারিদ্র্যের ভয়ে সন্তান হত্যা করা হারাম

وَلَا تَقۡتُلُوۡۤا اَوۡلَادَکُمۡ خَشۡیَۃَ اِمۡلَاقٍ ؕ نَحۡنُ نَرۡزُقُہُمۡ وَاِیَّاکُمۡ ؕ اِنَّ قَتۡلَہُمۡ کَانَ خِطۡاً کَبِیۡرًا

দারিদ্রের ভয়ে তোমাদের সন্তানদেরকে হত্যা করো না। তাদেরকে এবং তোমাদেরকে আমিই জীবনোপকরণ দিয়ে থাকি। নিশ্চয় তাদেরকে হত্যা করা মারাত্নক অপরাধ। (সূরা বনী ইসরাঈল ১৭:৩১)

১৭। ব্যভিচারের নিকটেও যাওয়া নিষেধ

وَلَا تَقۡرَبُوا الزِّنٰۤی اِنَّہٗ کَانَ فَاحِشَۃً ؕ وَسَآءَ سَبِیۡلًا

আর ব্যভিচারের কাছেও যেয়ো না। নিশ্চয় এটা অশ্লীল কাজ এবং মন্দ পথ। (সূরা বনী ইসরাঈল ১৭:৩২)

১৮ইনশা আল্লাহ বলার শিক্ষা

وَلَا تَقُوۡلَنَّ لِشَایۡءٍ اِنِّیۡ فَاعِلٌ ذٰلِکَ غَدًا ۙ اِلَّاۤ اَنۡ یَّشَآءَ اللّٰہُ ۫ وَاذۡکُرۡ رَّبَّکَ اِذَا نَسِیۡتَ وَقُلۡ عَسٰۤی اَنۡ یَّہۡدِیَنِ رَبِّیۡ لِاَقۡرَبَ مِنۡ ہٰذَا رَشَدًا

আপনি কোন কাজের বিষয়ে বলবেন না যে, সেটি আমি আগামী কাল করব। আল্লাহ ইচ্ছা করলে বলা ব্যতিরেকে। যখন ভুলে যান, তখন আপনার পালনকর্তাকে স্মরণ করুন এবং বলুনঃ আশা করি আমার পালনকর্তা আমাকে এর চাইতেও নিকটতম সত্যের পথ নির্দেশ করবেন। (সূরাহ কাহাফ ১৮:২৩-২৪)

১৯সন্তান-সন্ততি পার্থিব জীবনের সৌন্দর্য

اَلۡمَالُ وَالۡبَنُوۡنَ زِیۡنَۃُ الۡحَیٰوۃِ الدُّنۡیَا ۚ وَالۡبٰقِیٰتُ الصّٰلِحٰتُ خَیۡرٌ عِنۡدَ رَبِّکَ ثَوَابًا وَّخَیۡرٌ اَمَلًا

ধনৈশ্বর্য ও সন্তান-সন্ততি পার্থিব জীবনের সৌন্দর্য এবং স্থায়ী সৎকর্মসমূহ আপনার পালনকর্তার কাছে প্রতিদান প্রাপ্তি ও আশা লাভের জন্যে উত্তম। (সূরাহ কাহাফ ১৮:৪৬)

২০আমলনামা দেখে অপরাধীরা ভীত হবে

وَوُضِعَ الۡکِتٰبُ فَتَرَی الۡمُجۡرِمِیۡنَ مُشۡفِقِیۡنَ مِمَّا فِیۡہِ وَیَقُوۡلُوۡنَ یٰوَیۡلَتَنَا مَالِ ہٰذَا الۡکِتٰبِ لَا یُغَادِرُ صَغِیۡرَۃً وَّلَا کَبِیۡرَۃً اِلَّاۤ اَحۡصٰہَا ۚ  وَوَجَدُوۡا مَا عَمِلُوۡا حَاضِرًا ؕ  وَلَا یَظۡلِمُ رَبُّکَ اَحَدًا 

আর আমলনামা সামনে রাখা হবে। তাতে যা আছে; তার কারণে আপনি অপরাধীদেরকে ভীত-সন্ত্রস্ত দেখবেন। তারা বলবেঃ হায় আফসোস, এ কেমন আমলনামা। এ যে ছোট বড় কোন কিছুই বাদ দেয়নি-সবই এতে রয়েছে। তারা তাদের কৃতকর্মকে সামনে উপস্থিত পাবে। আপনার পালনকর্তা কারও প্রতি জুলুম করবেন না। (সূরাহ কাহাফ ১৮:৪৯)

২১ইবলিসের অবাধ্যতা

وَاِذۡ قُلۡنَا لِلۡمَلٰٓئِکَۃِ اسۡجُدُوۡا لِاٰدَمَ فَسَجَدُوۡۤا اِلَّاۤ اِبۡلِیۡسَ ؕ کَانَ مِنَ الۡجِنِّ فَفَسَقَ عَنۡ اَمۡرِ رَبِّہٖ ؕ اَفَتَتَّخِذُوۡنَہٗ وَذُرِّیَّتَہٗۤ اَوۡلِیَآءَ مِنۡ دُوۡنِیۡ وَہُمۡ لَکُمۡ عَدُوٌّ ؕ بِئۡسَ لِلظّٰلِمِیۡنَ بَدَلًا

যখন আমি ফেরেশতাদেরকে বললামঃ আদমকে সেজদা কর, তখন সবাই সেজদা করল ইবলীস ব্যতীত। সে ছিল জিনদের একজন। সে তার পালনকর্তার আদেশ অমান্য করল। অতএব তোমরা কি আমার পরিবর্তে তাকে এবং তার বংশধরকে বন্ধুরূপে গ্রহণ করছ? অথচ তারা তোমাদের শত্রু। এটা জালেমদের জন্যে খুবই নিকৃষ্ট বদল। (সূরাহ কাহাফ ১৮:৫০)

এছাড়াও এই সূরাতে গুহাবাসীদের ঘটনা, হযরত মুসা (আঃ) এবং হযরত খিজির (আঃ) এর ঘটনা বর্ণিত হয়েছে।

পিডিএফ ডাউনলোড লিংক

পরবর্তী সকল আপডেট পেতে এখানে ক্লিক করে আমাদের Facebook পেজে ফলো করুন।

WhatsApp গ্রুপ লিংক