সমাজ সংস্কারক মূহাম্মাদ (সাঃ) । জুমুয়ার খুতবা । Social Reformer Muhammad (PBUH) | المصلح الاجتماعي محمد (صلى الله عليه وسلم)

 

সমাজ সংস্কারক মূহাম্মাদ (সাঃ) । জুমুয়ার খুতবা । Social Reformer Muhammad (PBUH) | المصلح الاجتماعي محمد (عليه الصلاة والسلام)
সমাজ সংস্কারক মুহাম্মাদ (সাঃ)

الحمد لله رب العالمين، والعاقبه للمتقين، والصلاه والسلام على سيد الانبياء والمرسلين وعلى اله واصحابه اجمعين، اشهد ان لا اله الا الله واشهد ان محمدا عبده ورسوله

সমস্ত প্রশংসা বিশ্ব জাহানের প্রতিপালক আল্লাহর জন্য।  আর আল্লাহ ভীরুদের জন্য রয়েছে শুভ পরিণাম। দুরুদ ও সালাম প্রিয় নবী (সাঃ), তাঁর পরিবারবর্গ ও সমস্ত সাহাবা কেরামের প্রতি। আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, এক আল্লাহ ছাড়া অন্য কোন ইলাহ নেই। তাঁর কোন অংশীদার নেই। আমি আরো সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, মুহাম্মদ (সাঃ) আল্লাহর বান্দা ও রাসূল।

ايها الحاضرون الكرام،  موضوع الخطبه في هذه اليوم المصلح الاجتماعي محمد (صلى الله عليه وسلم)

সম্মানিত উপস্থিতি! আজকে আমাদের খুতবার আলোচ্য বিষয় সমাজ সংস্কারক মুহাম্মাদ (সাঃ)। 

বিশ্ব মানবতার মুক্তির দিশারী রাসূল (সাঃ) ছিলেন মানবতার জন্য রহমত স্বরূপ। তাইতো আল্লাহ তাআলা বলেন,

وَمَاۤ اَرۡسَلۡنٰکَ اِلَّا رَحۡمَۃً لِّلۡعٰلَمِیۡنَ

আমি আপনাকে বিশ্ববাসীর জন্যে রহমত স্বরূপই প্রেরণ করেছি।

(সূরা আম্বিয়া ২১:৭)

কিতাব দ্বারা সমাজ সংস্কার

প্রিয়নবী (সাঃ) এর সমাজ সংস্কারের মূলমন্ত্র ছিল আল্লাহর পক্ষ থেকে নাজিলকৃত ওহী। আর সেই ওহীর মাধ্যমেই তিনি তৎকালীন আরবের একটি বর্বর জাতিকে পৃথিবীর ইতিহাসের শ্রেষ্ঠ জাতিতে রূপান্তর করলে। কিতাব দ্বারা সমাজ সংস্কারের বিষয়ে আল্লাহ বলেন,

لَقَدۡ مَنَّ اللّٰہُ عَلَی الۡمُؤۡمِنِیۡنَ اِذۡ بَعَثَ فِیۡہِمۡ رَسُوۡلًا مِّنۡ اَنۡفُسِہِمۡ یَتۡلُوۡا عَلَیۡہِمۡ اٰیٰتِہٖ وَیُزَکِّیۡہِمۡ وَیُعَلِّمُہُمُ الۡکِتٰبَ وَالۡحِکۡمَۃَ ۚ وَاِنۡ کَانُوۡا مِنۡ قَبۡلُ لَفِیۡ ضَلٰلٍ مُّبِیۡنٍ

আল্লাহ ঈমানদারদের উপর অনুগ্রহ করেছেন যে, তাদের মাঝে তাদের নিজেদের মধ্য থেকে নবী পাঠিয়েছেন। তিনি তাদের জন্য তাঁর আয়াতসমূহ পাঠ করেন। তাদেরকে পরিশোধন করেন এবং তাদেরকে কিতাব ও কাজের কথা শিক্ষা দেন। বস্তুতঃ তারা ছিল পূর্ব থেকেই পথভ্রষ্ট।

(সূরা আলে ইমরান ৩:১৬৪)

আর সেই আসমানী কিতাবের ছায়াতলে আসার কর যখন চারিদিকে বইতে লাগলো শান্তির সমীরণ তখন আল্লাহ পবিত্র কুরআনের আয়াত নাজিল করে ঘোষণা দিলেন আজ থেকে দ্বীন হিসেবে ইসলাম পরিপূর্ণতা লাভ করলো। আল্লাহ বলেন,  

اَلۡیَوۡمَ اَکۡمَلۡتُ لَکُمۡ دِیۡنَکُمۡ وَاَتۡمَمۡتُ عَلَیۡکُمۡ نِعۡمَتِیۡ وَرَضِیۡتُ لَکُمُ الۡاِسۡلَامَ دِیۡنًا ؕ

আজ আমি তোমাদের জন্যে তোমাদের দ্বীনকে পূর্নাঙ্গ করে দিলাম, তোমাদের প্রতি আমার অবদান সম্পূর্ণ করে দিলাম এবং ইসলামকে তোমাদের জন্যে দ্বীন হিসেবে পছন্দ করলাম।

(সূরা মায়েদা ৫:৩)

আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআলা তার রাসূল (সাঃ) কে আদেশ দেন নাজিল কৃত সকল আয়াত যেন উম্মতের নিকট পৌঁছিয়ে দেন। আল্লাহ বলেন,

یٰۤاَیُّہَا الرَّسُوۡلُ بَلِّغۡ مَاۤ اُنۡزِلَ اِلَیۡکَ مِنۡ رَّبِّکَ ؕ وَاِنۡ لَّمۡ تَفۡعَلۡ فَمَا بَلَّغۡتَ رِسَالَتَہٗ ؕ وَاللّٰہُ یَعۡصِمُکَ مِنَ النَّاسِ ؕ اِنَّ اللّٰہَ لَا یَہۡدِی الۡقَوۡمَ الۡکٰفِرِیۡنَ

হে রসূল, পৌছে দিন আপনার প্রতিপালকের পক্ষ থেকে আপনার প্রতি যা অবতীর্ণ হয়েছে। আর যদি আপনি এরূপ না করেন, তবে আপনি তাঁর পয়গাম কিছুই পৌছালেন না। আল্লাহ আপনাকে মানুষের কাছ থেকে রক্ষা করবেন। নিশ্চয় আল্লাহ কাফেরদেরকে পথ প্রদর্শন করেন না।

(সূরা মায়েদাহ ৫:৬৭)

আসমানী কিতাব তথা আল কুরআনের দিক নির্দেশনা মানুষের জীবনের সকল চাহিদা পূর্ণ হতে লাগলো। আর ইসলামের বিধান অনুযায়ী একটি কল্যাণকর রাষ্ট্রের উৎপত্তি হল। তখন তাদের রাষ্ট্র পরিচালনার মূল সংবিধান ছিল আর কুরআন। তাইতো যারা রাষ্ট্র পরিচালনা করবে তাদের বিশেষ ৪টি (চারটি) কাজের কথা আল্লাহ তাআলা সূরা হাজ্জ্বে উল্লেখ করে বলেন,   

اَلَّذِیۡنَ اِنۡ مَّکَّنّٰہُمۡ فِی الۡاَرۡضِ اَقَامُوا الصَّلٰوۃَ وَاٰتَوُا الزَّکٰوۃَ وَاَمَرُوۡا بِالۡمَعۡرُوۡفِ وَنَہَوۡا عَنِ الۡمُنۡکَرِ ؕ وَلِلّٰہِ عَاقِبَۃُ الۡاُمُوۡرِ

তারা এমন লোক যাদেরকে আমি পৃথিবীতে শক্তি- সামর্থবান করলে তারা 

(১) নামায কায়েম করবে

(২) যাকাত দেবে এবং 

(৩) সৎকাজে আদেশ ও 

(৪) অসৎকাজে নিষেধ করবে। প্রত্যেক কর্মের পরিণাম আল্লাহর এখতিয়ারভূক্ত।

(সূরা আল হাজ্জ্ব ২২:৪১)

অপরাধের কঠিন শাস্তি প্রবর্তন

সমাজ সংস্কারের অংশ হিসেবে আল্লাহর রাসূল প্রণয়ন করেন কিছু কঠিন নীতিমালা। মূলত যারা অপরাধী তাদের জন্য কঠিন হলেও সেগুলো ছিল সমাজে শান্তির মূল মন্ত্র। অপরাধের কঠিন শাস্তি প্রবর্তন করে আল্লাহ সূরা বাক্বারায় বলেন,

یٰۤاَیُّہَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا کُتِبَ عَلَیۡکُمُ الۡقِصَاصُ فِی الۡقَتۡلٰی ؕ اَلۡحُرُّ بِالۡحُرِّ وَالۡعَبۡدُ بِالۡعَبۡدِ وَالۡاُنۡثٰی بِالۡاُنۡثٰی ؕ فَمَنۡ عُفِیَ لَہٗ مِنۡ اَخِیۡہِ شَیۡءٌ فَاتِّبَاعٌۢ بِالۡمَعۡرُوۡفِ وَاَدَآءٌ اِلَیۡہِ بِاِحۡسَانٍ ؕ ذٰلِکَ تَخۡفِیۡفٌ مِّنۡ رَّبِّکُمۡ وَرَحۡمَۃٌ ؕ فَمَنِ اعۡتَدٰی بَعۡدَ ذٰلِکَ فَلَہٗ عَذَابٌ اَلِیۡمٌ - وَلَکُمۡ فِی الۡقِصَاصِ حَیٰوۃٌ یّٰۤاُولِی الۡاَلۡبَابِ لَعَلَّکُمۡ تَتَّقُوۡنَ

হে ঈমানদারগন! তোমাদের প্রতি নিহতদের ব্যাপারে কেসাস গ্রহণ করা বিধিবদ্ধ করা হয়েছে। স্বাধীন ব্যক্তি স্বাধীন ব্যক্তির বদলায়, দাস দাসের বদলায় এবং নারী নারীর বদলায়। অতঃপর তার ভাইয়ের তরফ থেকে যদি কাউকে কিছুটা মাফ করে দেয়া হয়, তবে প্রচলিত নিয়মের অনুসরণ করবে এবং ভালভাবে তাকে তা প্রদান করতে হবে। এটা তোমাদের পালনকর্তার তরফ থেকে সহজ এবং বিশেষ অনুগ্রহ। এরপরও যে ব্যাক্তি বাড়াবাড়ি করে, তার জন্য রয়েছে বেদনাদায়ক আযাব।

হে বুদ্ধিমানগণ! কেসাসের মধ্যে তোমাদের জন্যে জীবন রয়েছে, যাতে তোমরা সাবধান হতে পার।

(সূরা আল বাক্বারা ২:১৭৮-১৭৯)

চুরির মত অপরাধ যেন সমাজে না ঘটে সে বিষয়ে হুঁশিয়ারি দিয়ে আল্লাহ বলেন,

وَالسَّارِقُ وَالسَّارِقَۃُ فَاقۡطَعُوۡۤا اَیۡدِیَہُمَا جَزَآءًۢ بِمَا کَسَبَا نَکَالًا مِّنَ اللّٰہِ ؕ وَاللّٰہُ عَزِیۡزٌ حَکِیۡمٌ

যে পুরুষ চুরি করে এবং যে নারী চুরি করে তাদের হাত কেটে দাও তাদের কৃতকর্মের সাজা হিসেবে। আল্লাহর পক্ষ থেকে হুশিয়ারী। আল্লাহ পরাক্রান্ত, জ্ঞানময়।

(সূরা আল মায়েদা ৫:৩৮)

যারা ইসলামী রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে অবস্থান নিবে এবং সমাজে দাঙ্গা সৃষ্টি করার চেষ্টা চালাবে তাদের উদ্দেশ্যে আল্লাহ সূরা মায়েদার মধ্যে বলেন,

اِنَّمَا جَزٰٓؤُا الَّذِیۡنَ یُحَارِبُوۡنَ اللّٰہَ وَرَسُوۡلَہٗ وَیَسۡعَوۡنَ فِی الۡاَرۡضِ فَسَادًا اَنۡ یُّقَتَّلُوۡۤا اَوۡ یُصَلَّبُوۡۤا اَوۡ تُقَطَّعَ اَیۡدِیۡہِمۡ وَاَرۡجُلُہُمۡ مِّنۡ خِلَافٍ اَوۡ یُنۡفَوۡا مِنَ الۡاَرۡضِ ؕ  ذٰلِکَ لَہُمۡ خِزۡیٌ فِی الدُّنۡیَا وَلَہُمۡ فِی الۡاٰخِرَۃِ عَذَابٌ عَظِیۡمٌ ۙ

যারা আল্লাহ ও তাঁর রসূলের সাথে সংগ্রাম করে এবং দেশে হাঙ্গামা সৃষ্টি করতে সচেষ্ট হয়, তাদের শাস্তি হচ্ছে এই যে, তাদেরকে হত্যা করা হবে অথবা শূলীতে চড়ানো হবে অথবা তাদের হস্তপদসমূহ বিপরীত দিক থেকে কেটে দেয়া হবে অথবা দেশ থেকে বহিষ্কার করা হবে। এটি হল তাদের জন্য পার্থিব লাঞ্ছনা আর পরকালে তাদের জন্যে রয়েছে কঠোর শাস্তি।

(সূরা আল মায়েদা ৫:৩৩)

ব্যভিচারের মত মহা অন্যায় থেকে সমাজকে পবিত্র রাখতে এই বিষয়ে প্রবর্তন করা হয় কঠিন শাস্তি। সূরা নূরে আল্লাহ ব্যভিচারের শাস্তি উল্লেখ করে বলেন,

اَلزَّانِیَۃُ وَالزَّانِیۡ فَاجۡلِدُوۡا کُلَّ وَاحِدٍ مِّنۡہُمَا مِائَۃَ جَلۡدَۃٍ ۪ وَّلَا تَاۡخُذۡکُمۡ بِہِمَا رَاۡفَۃٌ فِیۡ دِیۡنِ اللّٰہِ اِنۡ کُنۡتُمۡ تُؤۡمِنُوۡنَ بِاللّٰہِ وَالۡیَوۡمِ الۡاٰخِرِ ۚ وَلۡیَشۡہَدۡ عَذَابَہُمَا طَآئِفَۃٌ مِّنَ الۡمُؤۡمِنِیۡنَ

ব্যভিচারিণী নারী ব্যভিচারী পুরুষ; তাদের প্রত্যেককে একশ করে বেত্রাঘাত কর। আল্লাহর বিধান কার্যকর কারণে তাদের প্রতি যেন তোমাদের মনে দয়ার উদ্রেক না হয়, যদি তোমরা আল্লাহর প্রতি ও পরকালের প্রতি বিশ্বাসী হয়ে থাক। মুসলমানদের একটি দল যেন তাদের শাস্তি প্রত্যক্ষ করে।

(সূরা আন নূর ২৪:২)

বিচার ব্যবস্থায় ইনসাফ প্রতিষ্ঠা

বিচার সবার জন্য সমান, বিশেষ কোন গোত্র বা বংশের মানুষকে আলাদা ভাবে সুযোগ দিয়ে সাধারণ জনগণকে যেন ন্যায় বিচার থেকে বঞ্চিত করার না হয় তাইতো বিশ্বনবী (সাঃ) বলেন,

عَنْ عَائِشَةَ ـ رضى الله عنها أَنَّ قُرَيْشًا، أَهَمَّهُمْ شَأْنُ الْمَرْأَةِ الْمَخْزُومِيَّةِ الَّتِي سَرَقَتْ، فَقَالَ وَمَنْ يُكَلِّمُ فِيهَا رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالُوا وَمَنْ يَجْتَرِئُ عَلَيْهِ إِلاَّ أُسَامَةُ بْنُ زَيْدٍ، حِبُّ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم، فَكَلَّمَهُ أُسَامَةُ، فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏"‏ أَتَشْفَعُ فِي حَدٍّ مِنْ حُدُودِ اللَّهِ ‏"‏‏.‏ ثُمَّ قَامَ فَاخْتَطَبَ، ثُمَّ قَالَ ‏"‏ إِنَّمَا أَهْلَكَ الَّذِينَ قَبْلَكُمْ أَنَّهُمْ كَانُوا إِذَا سَرَقَ فِيهِمُ الشَّرِيفُ تَرَكُوهُ، وَإِذَا سَرَقَ فِيهِمُ الضَّعِيفُ أَقَامُوا عَلَيْهِ الْحَدَّ، وَايْمُ اللَّهِ، لَوْ أَنَّ فَاطِمَةَ ابْنَةَ مُحَمَّدٍ سَرَقَتْ لَقَطَعْتُ يَدَهَا ‏"‏‏.‏

আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

মাখযূম গোত্রের এক চোর নারীর ঘটনা কুরাইশের গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গকে অত্যন্ত উদ্বিগ্ন করে তুলল। এ অবস্থায় তারা বলাবলি করতে লাগল এ ব্যাপারে আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সঙ্গে কে আলাপ করতে পারে? তার বলল, একমাত্র রসূল(সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)এর প্রিয়তম উসামা বিন যায়িদ (রাঃ) এ ব্যাপারে আলোচনা করার সাহস করতে পারেন। উসামা নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সঙ্গে কথা বললেন। নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, তুমি কি আল্লাহ্‌র নির্ধারিত সীমাঙ্ঘনকারিণীর সাজা মাওকুফের সুপারিশ করছ? অতঃপর নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) দাঁড়িয়ে খুত্‌বায় বললেন, তোমাদের পূর্বের জাতিসমূহকে এ কাজই ধ্বংস করেছে যে, যখন তাদের মধ্যে কোন বিশিষ্ট লোক চুরি করত, তখন তারা বিনা সাজায় তাকে ছেড়ে দিত। অন্যদিকে যখন কোন অসহায় গরীব সাধারণ লোক চুরি করত, তখন তার উপর হদ্‌ জারি করত। আল্লাহ্‌র কসম, যদি মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কন্যা ফাতিমা চুরি করত তাহলে আমি তার অবশ্যই তার হাত কেটে দিতাম।

(সহিহ বুখারী, হাদিস নং ৩৪৭৫)

একজন মুসলমান জীবনের সর্বাবস্থায় ইসলামের বিধানকে সঠিক বলেই মেনে নিবে। এমনকি সিদ্ধান্ত তার বিরুদ্ধে গেলেও। ইসলামী বিধানের অস্বীকার করা কোন ভাবেই একজন মুসলমানের পক্ষে বৈধ নয়। এই বিষয়ে আল্লাহ সূরা নিসায় বলেন,

فَلَا وَرَبِّکَ لَا یُؤۡمِنُوۡنَ حَتّٰی یُحَکِّمُوۡکَ فِیۡمَا شَجَرَ بَیۡنَہُمۡ ثُمَّ لَا یَجِدُوۡا فِیۡۤ اَنۡفُسِہِمۡ حَرَجًا مِّمَّا قَضَیۡتَ وَیُسَلِّمُوۡا تَسۡلِیۡمًا

অতএব, তোমার পালনকর্তার কসম, সে লোক ঈমানদার হবে না, যতক্ষণ না তাদের মধ্যে সৃষ্ট বিবাদের ব্যাপারে তোমাকে ন্যায়বিচারক বলে মনে না করে। অতঃপর তোমার মীমাংসার ব্যাপারে নিজের মনে কোন রকম সংকীর্ণতা পাবে না এবং তা হূষ্টচিত্তে কবুল করে নেবে।

(সূরা নিসা ৪:৬৫)

সকল ফায়সালা হবে আল্লাহর প্রেরিত কুরআন অনুযায়ী। বিশ্বাসী তথা মুমিন কখনো এই বিধানের বিরুদ্ধে অবস্থান নিতে পারবেনা। যারা অবস্থান নিবে তাদের বিষয়ে আল্লাহ সূরা মায়েদায় বলেন,

وَمَنۡ لَّمۡ یَحۡکُمۡ بِمَاۤ اَنۡزَلَ اللّٰہُ فَاُولٰٓئِکَ ہُمُ الۡکٰفِرُوۡنَ

যেসব লোক আল্লাহ যা অবতীর্ণ করেছেন, তদনুযায়ী ফায়সালা করে না, তারাই কাফের।

(সূরা মায়েদা ৫:৪৪)

মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা

মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় পৃথিবীর ইতিহাসে একমাত্র সফল ব্যক্তি হলেন মুহাম্মাদ (সাঃ)। যার জীবনের প্রতিটি অধ্যায়ই স্বর্ণাক্ষরে লিখে রাখার দাবীদার। মানবাধিকার তথা নারী পুরুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় আল্লাহ সূরা বাক্বারায় বলেন,

وَلَہُنَّ مِثۡلُ الَّذِیۡ عَلَیۡہِنَّ بِالۡمَعۡرُوۡفِ ۪  وَلِلرِّجَالِ عَلَیۡہِنَّ دَرَجَۃٌ ؕ  وَاللّٰہُ عَزِیۡزٌ حَکِیۡمٌ

আর পুরুষদের যেমন স্ত্রীদের উপর অধিকার রয়েছে, তেমনি ভাবে স্ত্রীদেরও অধিকার রয়েছে পুরুষদের উপর নিয়ম অনুযায়ী। আর নারীরদের ওপর পুরুষদের শ্রেষ্ঠত্ব রয়েছে। আর আল্লাহ হচ্ছে পরাক্রমশালী, বিজ্ঞ।

(সূরা বাক্বারা ২:২২৮)

بارك الله لي ولكم في القرآن العظيم، ونفعني وإياكم بالآيات والذكر الحكيم،  أستغفر الله لي ولكم، ولسائر المسلمين من كل ذنب فاستغفروه إنه هو الغفور الرحيم.

 

মহান আল্লাহ তাআলা মহাগ্রন্থ আল কুরআনের মাধ্যমে আমাকে ও আপনাকে বরকত দান করুন এবং তাঁর আয়াত সমূহ ও শিক্ষণীয় বাণী দ্বারা উপকৃত করুন।আমি আল্লাহর কাছে আমার নিজের,আপনাদের এবং পৃথিবীর সকল মুসলমানের পক্ষ থেকে সকল পাপের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করছি। আমি আবারো ক্ষমা প্রার্থনা করছি কেননা তিনি ক্ষমাশীল এবং দয়াময়।

ডাউনলোড করুন

পিডিএফ । ওয়ার্ড । পাওয়ারপয়েন্ট