ইসলামিক সামরিক জীবন: আদর্শ, ফজিলত ও আধুনিক বিশ্বে প্রয়োজনীয়তা । জুমুয়ার খুতবা বাংলা
![]() |
| সামরিক জীবনে ইসলামের আদর্শ,গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা |
সামরিক জীবন হলো
শৃঙ্খলা,
সাহস, নিষ্ঠা ও দেশপ্রেমের
মূর্ত প্রতীক। ইসলাম এই মহান পেশাকে বিশেষ মর্যাদা দিয়েছে এবং সামরিক জীবনে ইসলামের
আদর্শ অনুসরণের মাধ্যমে একজন সৈনিক যেমন আধ্যাত্মিক শক্তি অর্জন করে, তেমনি জাতির সুরক্ষায় অবদান রাখে। ইসলামে জিহাদ কেবল যুদ্ধের
ময়দানেই সীমাবদ্ধ নয়, বরং এটি আত্মশুদ্ধি, ন্যায় প্রতিষ্ঠা ও মানবকল্যাণের একটি ব্যাপক ধারণা। সামরিক বাহিনীতে
ইসলামের নৈতিক শিক্ষা,ন্যায়পরায়ণতা, সহিষ্ণুতা ও দায়িত্ববোধ সৈনিকদেরকে আদর্শ যোদ্ধা হিসেবে গড়ে
তোলে।
ইসলাম সামরিক জীবনে
ন্যায়ভিত্তিক আচরণ, শত্রুর প্রতি মানবিক
দৃষ্টিভঙ্গি এবং আল্লাহর প্রতি আস্থাশীল থাকার নির্দেশ দেয়। রাসুল (সা.) ও খুলাফায়ে
রাশিদিনের যুগে সামরিক নেতৃত্বে ইসলামের নীতিমালা অনুসরণ করে বিজয় অর্জিত হয়েছে। বর্তমান
সময়েও সামরিক কর্মীদের জন্য ইসলামের শিক্ষা অপরিহার্য, কারণ তা তাদেরকে আত্মসংযমী, নিষ্ঠাবান ও দায়িত্বশীল করে তোলে। সামরিক জীবনে ইসলামের আদর্শ চর্চা শান্তি, ন্যায়বিচার ও মানবিক মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা
রাখে।
এই প্রবন্ধে সামরিক
জীবনে ইসলামের আদর্শ, এর গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা
নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে, যা মুসলিম সৈনিকদের
জন্য পথনির্দেশক হিসেবে কাজ করবে।
সামরিক জীবন
নির্দিষ্ট সময় প্রশিক্ষণ
গ্রহণ করে, দেশ, জাতি, ধর্ম এবং দেশের স্বাধীনতা
ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য যে জীবন অতিবাহিত হয়, তাকে সামরিক জীবন বলে।
১। আনুগত্য পরায়ণতা
আনুগত্য পরায়ণতা
সামরিক জীবনের জন্য এক অবিচ্ছেদ্য বিষয়। আনুগত্য ছাড়া সামরিক জীবন কল্পনা করা যায় না।
ইসলাম অধীনস্তদেরকে তাদের উর্ধ্বতন দায়িত্বশীলদের আদেশ পালন করতে নির্দেশ দিয়েছে। আল্লাহ
রাব্বুল আলামীন বলেন:
یٰۤاَیُّهَا
الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡۤا اَطِیۡعُوا اللّٰهَ وَ اَطِیۡعُوا الرَّسُوۡلَ وَ اُولِی
الۡاَمۡرِ مِنۡكُمۡ
হে ঈমানদারগণ। তোমরা
আল্লাহ ও রাসূলের আনুগত্য করো, আর আনুগত্য করো তোমাদের
মধ্যে যারা কর্তৃত্বশীল তাদের। (সূরা আন-নিসা ৪:৫৯)
রাসূলুল্লাহ (সাঃ)
বলেছেন
وَعَنْ
أَنَسٍ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ:
«اسْمَعُوا وَأَطِيعُوا وَإِنِ اسْتُعْمِلَ عَلَيْكُمْ عَبْدٌ حَبَشِيٌّ كَأَنَّ
رَأْسَهُ زَبِيبَةٌ» . رَوَاهُ البُخَارِيّ
তোমরা শ্রবণ কর ও
আনুগত্য কর, যদিও কিশমিশের মত মাথা বিশিষ্ট কোন
হাবশী গোলামকে তোমাদের শাসক নিয়োগ করা হয়। (বুখারী ৭১৪২, ইবনু মাজাহ ২৮৬০, আহমাদ ১২১২৬, সহীহ আল জামি ৯৮৫)
২।
প্রতিশ্রুতি পালন করা সামরিক বাহিনীর সকল সদস্য তাদের
মৌলিক প্রশিক্ষণ শেষে পবিত্র কুরআন স্পর্শ করে যে শপথবাক্য পাঠ করে এটি প্রতিশ্রুতি
বা ওয়াদা। কুরআন স্পর্শ করে ওয়াদা করার অর্থ আল্লাহর কাছে ওয়াদাবদ্ধ হওয়া।
اِنَّ الَّذِیۡنَ یُبَایِعُوۡنَكَ اِنَّمَا یُبَایِعُوۡنَ اللّٰهَ ؕ
یَدُ اللّٰهِ فَوۡقَ اَیۡدِیۡهِمۡ ۚ فَمَنۡ نَّكَثَ فَاِنَّمَا یَنۡكُثُ عَلٰی
نَفۡسِهٖ ۚ وَ مَنۡ اَوۡفٰی بِمَا عٰهَدَ عَلَیۡهُ اللّٰهَ فَسَیُؤۡتِیۡهِ اَجۡرًا
عَظِیۡمًا
নিশ্চয় যারা আপনার
হাতে বায়আত গ্রহণ করে, তারা তো আল্লাহর
হাতেই বায়আত করে। আল্লাহর হাত তাদের হাতের ওপর। এরপর যে তা ভঙ্গ করে, তা ভঙ্গ করার পরিণাম তারই এবং যে আল্লাহর সাথে অঙ্গীকার পূর্ণ
করে,
তিনি অবশ্যই তাকে মহা পুরস্কার দিবেন। (সূরা আল-ফাতহ ৪৮:১০)
আল্লাহ তা'আলা আরও বলেন:
وَ
اَوۡفُوۡا بِالۡعَهۡدِ ۚ اِنَّ الۡعَهۡدَ كَانَ مَسۡـُٔوۡلًا
আর তোমরা প্রতিশ্রুতি
পালন কর,
নিশ্চই প্রতিশ্রুতি পালন সম্পর্কে তোমাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ করা
হবে। (সূরা বানী ইসরাইল ১৭:৩৪)
রাসূলুল্লাহ (সাঃ)
বলেছেন:
عَنْ أَنَسِ
بْنِ مَالِكٍ قَالَ مَا خَطَبَنَا نَبِيُّ اللهِ ﷺ إِلَّا قَالَ لَا
إِيْمَانَ لِمَنْ لَا أَمَانَةَ لَهُ وَلَا دِينَ لِمَنْ لَا عَهْدَ لَهُ
আর যার প্রতিশ্রুতি
পালন নেই তার কোন ধর্ম নেই। (মাআরিফুল হাদীস হা: নং ১/৪৬, বায়হাকী)।
৩।
আমানতদারী রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে দেশের স্বাধীনতা
ও স্বার্বভৌমত্ব রক্ষার যে দায়িত্ব সেনাবাহিনীর উপর অর্পণ করা হয়েছে এটি প্রতিটি সৈনিকের
জন্য একটি পবিত্র আমানত। এই আমানত রক্ষা করা প্রতিটি সৈনিকের অপরিহার্য কর্তব্য। যার
আমানতদারী নেই, তার কোন ঈমান নেই। আল্লাহ তাআলা বলেন:
وَ
الَّذِیۡنَ هُمۡ لِاَمٰنٰتِهِمۡ وَ عَهۡدِهِمۡ رٰعُوۡنَ ۙ
আর তারা তাদের আমানত
ও প্রতিশ্রুতিকে রক্ষা করে। (সূরা মুমিনূন ২৩:৮)
অন্যত্র আল্লাহ ইরশাদ
করেন:
اِنَّ
اللّٰهَ یَاۡمُرُكُمۡ اَنۡ تُؤَدُّوا الۡاَمٰنٰتِ اِلٰۤی اَهۡلِهَا ۙ
নিশ্চয় আল্লাহ তাআলা
তোমাদেরকে আদেশ দিচ্ছেন যে, তোমরা আমানতসমূহ
তার হক্বদারদের নিকট পৌঁছে দিবে। (সূরা আন- ৪:৫৮)
রাসূলুল্লাহ (সাঃ)
বলেছেন:
لَا
إِيْمَانَ لِمَنْ لَا أَمَانَةَ لَهُ
যার আমানতদারী নেই
তার ঈমান নেই। (মাআরিফুল হাদীস হা: নং ১/৪৬, বায়হাকী)
৪।
প্রশিক্ষণ যে কাজটি একজন সৈনিক
করতে পারেন না, প্রশিক্ষণ নিলে তিনি তা করতে পারবেন।
যে কাজটি করতে পারেন, প্রশিক্ষণ দিলে তিনি
সেটি আরও ভালভাবে করতে পারবেন। যে কাজটি তিনি ভালভাবে করতে পারেন, প্রশিক্ষণ নিলে সেটি দক্ষতার সাথে করতে পারবেন। যে কাজটি দক্ষতার
সাথে করতে পারেন, প্রশিক্ষণ নিলে সে
কাজ কম সময়ে করতে পারবেন এবং সে কাজে অন্যদের ছাড়িয়ে এগিয়ে যেতে এবং উপরে উঠে যেতে
পারবেন। তাই এক কথায় বলা যায়, সামরিক জীবনের পুরোটাই
প্রশিক্ষণ নির্ভর। প্রশিক্ষণ ছাড়া সামরিক জীবন কল্পনা করা যায় না। প্রশিক্ষণের গুরুত্ব
সম্পর্কে আল্লাহ রাব্বুল আলামীন বলেন:
وَ اَعِدُّوۡا لَهُمۡ مَّا اسۡتَطَعۡتُمۡ مِّنۡ قُوَّۃٍ وَّ مِنۡ
رِّبَاطِ الۡخَیۡلِ تُرۡهِبُوۡنَ بِهٖ عَدُوَّ اللّٰهِ وَ عَدُوَّكُمۡ وَ اٰخَرِیۡنَ
مِنۡ دُوۡنِهِمۡ ۚ لَا تَعۡلَمُوۡنَهُمۡ ۚ اَللّٰهُ یَعۡلَمُهُمۡ ؕ
তোমরা তাদের মুকাবিলার
জন্য যথাসাধ্য শক্তি ও অশ্ববাহিনী প্রস্তুত রাখবে। এর মাধ্যমে তোমরা ভীত রাখবে আল্লাহর
শত্রুকে,
তোমাদের শত্রুকে এবং এতদ্ব্যতীত অন্যদেরকে যাদেরকে তোমরা জান
না,
আল্লাহ তাদেরকে জানেন। (সূরা আনফাল
৮:৬০)
আলোচ্য আয়াতটিতে
যুদ্ধের জন্য যে শক্তি, সমরাস্ত্র ও সামর্থ
সঞ্চয়ের কথা বলা হয়েছে তা সমস্ত যুদ্ধোপকরণ, অস্ত্রশস্ত্র, যানবাহন এবং তদসংশ্লিষ্ট
প্রশিক্ষণ প্রভৃতি অন্তর্ভুক্ত। তাছাড়া শরীরচর্চা ও সমর বিদ্যা শিক্ষা করাও এরই অন্তর্ভুক্ত।
সেই শক্তি প্রত্যেক যুগ, দেশ ও স্থান অনুযায়ী
বিভিন্ন রকম হতে পারে। তৎকালীন সময়ে অস্ত্র ছিল তীর-তলোয়ার, বর্শা প্রভৃতি। তারপরে বন্দুক-তোপের যুগ এসেছে। তারপর এখন চলছে
বোমা,
রকেটের যুগ। শক্তি শব্দটি সকল ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য। (মাআরেফুল কোরআন-সৌদী-৫৪২)
এ সম্পর্কে রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন:
عَن عُقْبَةَ
بْنِ عَامِرٍ قَالَ: سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ
وَهُوَ عَلَى الْمِنْبَرِ يَقُول: وَأَعدُّوا لَهُ مَا
استطَعْتُمْ منْ قُوَّةٍ - أَلَا إِنَّ الْقُوَّةَ
الرَّمْيُ أَلَا إِنَّ الْقُوَّةَ الرَّمْيُ أَلَا إِنَّ الْقُوَّةَ الرَّمْيُ
তোমরা তাদের মোকাবিলার
জন্য যথাসাধ্য শক্তি প্রস্তুত রাখবে। (সূরা আনফাল-৬০) জেনে রাখ, শক্তির অর্থ হল ক্ষেপনাস্ত্র। জেনে রাখ, শক্তি বলতে বুঝায় তীরন্দাজি। (আবু দাউদ-২৫১৬)
یٰۤاَیُّهَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا خُذُوۡا حِذۡرَكُمۡ فَانۡفِرُوۡا
ثُبَاتٍ اَوِ انۡفِرُوۡا جَمِیۡعًا
হে মুমিনগণ। তোমরা
সতর্কতা অবলম্বন কর। এরপর হয় দলে দলে বিভক্ত হয়ে অগ্রসর হও অথবা একসঙ্গে অগ্রসর হও। (সূরা নিসা ৪:৭১)
রাসূলুল্লাহ (সাঃ)
বলেছেন:
عَنْ
عُقْبَةَ بْنِ عَامِرٍ رضي الله عنه قَالَ: سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى
اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ: إِنَّ اللَّهَ عَزَّ وَجَلَّ يُدْخِلُ
بِالسَّهْمِ الْوَاحِدِ ثَلَاثَةَ نَفَرٍ الْجَنَّةَ: صَانِعَهُ يَحْتَسِبُ فِي
صَنْعَتِهِ الْخَيْرَ، وَالرَّامِيَ بِهِ، وَالْمُنْبِلَ بِهِ. وَارْمُوا
وَارْكَبُوا، وَأَنْ تَرْمُوا أَحَبُّ إِلَيَّ مِنْ أَنْ تَرْكَبُوا
আল্লাহ তাআলা একটি
তীরের কারণে তিন ব্যক্তিকে জান্নাতে দাখিল করবেন। (১) তীর নির্মাণকারী, যে যুদ্ধে ব্যবহারে সৎ উদ্দেশ্যে তৈরী করেছে (২) তীর চালনাকারী
এবং (৩) তীর ধারণকারী। তোমরা তীর নিক্ষেপ কর এবং যানবাহনে আরোহণ কর। (রিয়াদুস সালিহীন-১৩৩৩, আবু দাউদ)
৫।
প্রশিক্ষণে অবহেলা করার পরিণাম রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন:
قَالَ رَسُولُ اللهِ ﷺ مَنْ عُلِّمَ الرَّمْيَ ثُمَّ تَرَكَهُ
فَلَيْسَ مِنَّا أَوْ فَقَدْ عَصَى
যে ব্যক্তি তীর পরিচালনা
শিখলো তারপর সে অভ্যাস ছেড়ে দিল, সে আমাদের অন্তর্ভুক্ত
নয়,
অথবা পাপ করলো। (মুসলিম-৪৭৯৬)
وَمَنْ تَرَكَ الرَّمْيَ بَعْدَ مَا عَلِمَهُ رَغْبَةً عَنْهُ،
فَإِنَّهَا نِعْمَةٌ تَرَكَهَا ، أَوْ قَالَ كَفَرَهَا
যে ব্যক্তি তীরন্দাজী
শেখার পর অনাগ্রহ বশতঃ তা ছেড়ে দেয়, সে মূলত একটি নিয়ামত বর্জন করলো অথবা এই নিয়ামতের অকৃতজ্ঞ হলো। (রিয়াদুস সালিহীন-১৩৩৩, আবু দাউদ)
৬।
প্রশিক্ষণধর্মী খেলাধুলা হাদিসে উল্লেখ রয়েছে:
عَنْ
عَائِشَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا قَالَتْ: وَاللَّهِ لَقَدْ رَأَيْتُ رَسُولَ
اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُومُ عَلَى بَابِ حُجْرَتِي
وَالْحَبَشَةُ يَلْعَبُونَ بِحِرَابِهِمْ فِي مَسْجِدِ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى
اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، يَسْتُرُنِي بِرِدَائِهِ لِكَيْ أَنْظُرَ إِلَى
لَعِبِهِمْ، ثُمَّ يَقُومُ مِنْ أَجْلِي حَتَّى أَكُونَ أَنَا الَّتِي أَنْصَرِفُ،
فَاقْدِرُوا قَدْرَ الْجَارِيَةِ الْحَدِيثَةِ السِّنِّ، الْحَرِيصَةِ عَلَى
اللَّهْوِ.
আয়েশা (রাযিয়াল্লাহু
আনহা) বলেন:
আল্লাহর শপথ! আমি রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-কে
দেখেছি,
তিনি আমার ঘরের দরজায় দাঁড়িয়ে ছিলেন,
আর হাবশীরা (ইথিওপিয়ানরা) মসজিদে নববীতে তাদের বর্শা নিয়ে খেলা
করছিল। তিনি আমাকে তাঁর চাদর দিয়ে ঢেকে দিয়েছিলেন, যাতে আমি তাদের খেলা দেখতে পারি। তিনি আমার জন্য সেখানে দাঁড়িয়ে
থাকতেন,
যতক্ষণ না আমি নিজে থেকে ফিরে আসতাম। সুতরাং তোমরা একটি কম বয়সী
মেয়ের আগ্রহ বুঝতে পার, যে খেলাধুলায় উৎসাহী।
(সহীহ বুখারী ৯৫০, মুসলিম ৮৯২)
৭।
শৃঙ্খলা শৃঙ্খল সামরিক জীবনের জন্য এক অবিচ্ছিন্ন
বিষয়। কারণ শৃঙ্খলা ছাড়া এ জীবন কল্পনা করা যায় না। একজন সৈনিক সার্বক্ষণিক ইসলামের
হুকুম আহকাম মেনে চললে সে একজন সুশৃঙ্খল সৈনিকে পরিণত হবে। যারা সুশৃঙ্খল জীবন যাপন
করবেন,
আল্লাহ রাব্বুল আলামীন তাদেরকে ভালোবাসবেন। মহান আল্লাহ রাব্বুল
আলামীন বলেন।
اِنَّ اللّٰهَ یُحِبُّ الَّذِیۡنَ یُقَاتِلُوۡنَ فِیۡ سَبِیۡلِهٖ
صَفًّا كَاَنَّهُمۡ بُنۡیَانٌ مَّرۡصُوۡصٌ
নিশ্চয়ই আল্লাহ ঐ
সমস্ত ব্যক্তিদের (যোদ্ধাদেরকে) ভালবাসেন, যারা তাঁর পথে সীসাঢালা প্রাচীরের ন্যায় কাতারবদ্ধ হয়ে লড়াই করে। (সূরা ছফ ৬১:৪)
৮।
দায়িত্ববোধ । সামরিক জীবনে প্রধান কর্তব্য হল প্রতিটি কাজ দায়িত্ব
নিয়ে সমাধান করা এবং এ ব্যাপারে নিজের মধ্যে জবাবদিহীর অনুভূতি জাগ্রত করা। রাসূলুল্লাহ
(সাঃ) বলেছেন:
وَعَنْ
عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ
وَسلم: «أَلا كلُّكُمْ راعٍ وكلُّكُمْ مسؤولٌ عَنْ
رَعِيَّتِهِ فَالْإِمَامُ الَّذِي عَلَى النَّاسِ رَاعٍ وَهُوَ مسؤولٌ عَنْ
رَعِيَّتِهِ وَالرَّجُلُ رَاعٍ عَلَى أَهْلِ بَيْتِهِ وَهُوَ مسؤولٌ عَنْ
رَعِيَّتِهِ وَالْمَرْأَةُ رَاعِيَةٌ عَلَى بَيْتِ زَوْجِهَا وولدِهِ وَهِي
مسؤولةٌ عَنْهُمْ وَعَبْدُ الرَّجُلِ رَاعٍ عَلَى مَالِ سَيِّدِهِ وَهُوَ مسؤولٌ
عَنهُ أَلا فكلُّكُمْ راعٍ وكلكُمْ مسؤولٌ عَن رعيتِه»
(সাবধান)। তোমাদের প্রত্যেকেই একজন দায়িত্বশীল এবং তোমাদের প্রত্যেকেই তার দায়িত্বপূর্ণ বিষয়
সম্পর্কে জিজ্ঞাসিত হবেন। শাসক একজন দায়িত্বশীল, তিনি তার দায়িত্ব সম্পর্কে জিজ্ঞাসিত হবেন। একজন পুরুষ তার পরিবারের দায়িত্বশীল, তিনি তার পারিবারিক দায়িত্ব সম্পর্কে জিজ্ঞাসিত হবেন। নারী তার
স্বামী গৃহের কর্ত্রী, তাকে তার দায়িত্ব
সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হবে। খাদেম তার মনিবের সম্পদের ব্যাপারে দায়িত্বশীল, তাকেও তার দায়িত্ব সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হবে। তোমরা সবাই রক্ষণাবেক্ষণকারী
এবং সবাইকে তার দায়িত্ব সম্পর্কে প্রশ্ন করা হবে। (বুখারী ৭১৩৮, মুসলিম ১৮২৯, আবূ দাঊদ ২৯২৮, তিরমিযী
১৭০৫, আহমাদ ৫১৬৭, সহীহ আত্ তারগীব ১৯২২)
৯।
পবিত্রতা ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা
। একজন ভাল সৈনিকের উল্লেখযোগ্য গুণ হল পরিষ্কার-পরিচ্ছনতা।
অর্থাৎ নোংরা বা অপরিষ্কার থাকা একজন সৈনিকের জন্য মোটেও সমীচীন নয়। ইসলাম তার অনুসারীদের
জন্য এই শিক্ষাটি বিশেষভাবে দিয়ে থাকে। ইসলামের বিধি-বিধান পালনের মধ্যমে এ গুণটি সহজেই
অর্জন করা সম্ভব। যেমন: সালাত আদায় করতে হলে তাকে অবশ্যই অযু করতে হবে। আবার গোসলের
প্রয়োজন হলে গোসল করে পাক-সাফ হতে হবে। আল্লাহ পাক বলেন:
یٰۤاَیُّهَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡۤا اِذَا قُمۡتُمۡ اِلَی الصَّلٰوۃِ
فَاغۡسِلُوۡا وُجُوۡهَكُمۡ وَ اَیۡدِیَكُمۡ اِلَی الۡمَرَافِقِ وَ امۡسَحُوۡا
بِرُءُوۡسِكُمۡ وَ اَرۡجُلَكُمۡ اِلَی الۡكَعۡبَیۡنِ
হে মুমিনগন। যখন
তোমরা সালাতের জন্য দন্ডায়মান হও, তখন স্বীয় মুখমন্ডল
এবং হাতসমূহ কনুই পর্যন্ত ধৌত করবে। মাথা মাসেহ করবে এবং নিজের পায়ের গিটসহ ধৌত করবে।
(সূরা মায়েদাহ-৫:৬)
یٰبَنِیۡۤ اٰدَمَ خُذُوۡا زِیۡنَتَكُمۡ عِنۡدَ كُلِّ مَسۡجِدٍ وَّ
كُلُوۡا وَ اشۡرَبُوۡا وَ لَا تُسۡرِفُوۡا ۚ اِنَّهٗ لَا یُحِبُّ الۡمُسۡرِفِیۡنَ
হে বনী-আদম! তোমরা
প্রত্যেক সালাতের সময় সাজসজ্জা পরিধান করবে এবং আহার খাও ও পান করবে এবং অপব্যয় করো
না। তিনি অপচয়কারীদেরকে পছন্দ করেন না। ( সূরা আল আরাফ ৭:৩১)
অন্যত্র আল্লাহ বলেন:
وَ ثِیَابَكَ
فَطَهِّرۡ ۪
এবং তোমার পরিচ্ছদ
পবিত্র রাখ। (সূরা মুদ্দাসির ৭৪:৪)
তাহলে বুঝা গেল যে, যে সৈনিক নিয়মিত সালাত আদায় করবে, সে সবসময় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার গুণটি অর্জন করতে পারবে।
১০।
সময়ানুবর্তিতা । আদর্শবান সৈনিকের আর একটি অন্যতম গুণ হল সময়ানুবর্তিতা। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত
তাকে যে কাজগুলো করতে হয় তার সবগুলোই নির্দিষ্ট সময়ের সাথে আবদ্ধ। কাজেই সময়ের প্রতি
সচেতনতা না থাকলে এটা মোটেই সম্ভব হবে না। ইসলাম ধর্মের প্রায় প্রতিটি অনুশাসনই আমাদেরকে
এই সময়ানুবর্তীতা শিক্ষা দেয়। যেমন সালাত, সাওম,
হজ্জ, যাকাত ইত্যাদি ইবাদত
সময়ের সাথে সম্পর্কিত। সালাত সম্পর্কে মহান আল্লাহ তাআলা বলেছেন:
فَاَقِیۡمُوا الصَّلٰوۃَ ۚ اِنَّ الصَّلٰوۃَ كَانَتۡ عَلَی
الۡمُؤۡمِنِیۡنَ كِتٰبًا مَّوۡقُوۡتًا
অতএব তোমরা সালাত
আদায় করবে। নির্ধারিত সময়ে সালাত কায়েম করা মুমিনদের জন্য অবশ্য কর্তব্য। (সূরা নিসা ৪:১০৩)
১১।
সাহসিকতা ও উন্নত মনোবল । আল্লাহ তাআলা বলেন
یٰۤاَیُّهَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡۤا اِذَا لَقِیۡتُمۡ فِئَۃً
فَاثۡبُتُوۡا وَ اذۡكُرُوا اللّٰهَ كَثِیۡرًا لَّعَلَّكُمۡ تُفۡلِحُوۡنَ
হে ঈমানদারগণ, তোমরা যখন কোন বাহিনীর সাথে সংঘাতে লিপ্ত হবে, তখন সুদৃঢ় থাকবে এবং আল্লাহকে অধিক পরিমাণে সস্মরণ করবে যাতে
তোমরা কৃতকার্য হও। (সূরা আনফাল-৮:৪৫)
১২।
ধৈর্যধারণ কর,
یٰۤاَیُّهَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوا اصۡبِرُوۡا وَ صَابِرُوۡا وَ
رَابِطُوۡا ۟ وَ اتَّقُوا اللّٰهَ لَعَلَّكُمۡ تُفۡلِحُوۡنَ
হে ঈমানদারগণ! তোমরা
ধৈর্যধারণ কর, ধৈর্যে অটল থাক এবং (শত্রুর) মোকাবেলায়
দৃঢ়তা অবলম্বন কর। আর আল্লাহকে ভয় করতে থাক যাতে তোমরা তোমাদের উদ্দেশ্য লাভে সমর্থ
হতে পার। (সূরা আলে ইমরান ৩:২০০)
বিশেষ করে যখন শত্রুদের শক্তি ও জনবল মুমিনদের চেয়ে বেশি হবে তখন তাদের বিরুদ্ধে জয় লাভের জন্য ধৈর্য হল পূর্বশর্ত। রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেন:
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ عَنِ النَّبِيِّ ﷺ قَالَ:«لَا
تَتَمَنَّوْا لِقَاءَ الْعَدُوِّ، وَاسْأَلُوا اللهَ الْعَافِيَةَ، فَإِذَا
لَقِيتُمُوهُمْ فَاصْبِرُوا».
তোমরা শত্রুর মোকাবেলা
কামনা করবে না এবং আল্লাহর নিকট নিরাপত্তার দোয়া করবে। তারপর যখন তোমরা শত্রুর সম্মুখীন
হবে তখন তোমরা ধৈর্যধারণ করবে। (বুখারী-৩০৬৩, জিহাদ অধ্যায়)
আল্লাহ তাআলা বলেন:
كَمۡ مِّنۡ فِئَۃٍ قَلِیۡلَۃٍ غَلَبَتۡ فِئَۃً كَثِیۡرَۃًۢ بِاِذۡنِ
اللّٰهِ ؕ وَ اللّٰهُ مَعَ الصّٰبِرِیۡنَ
আল্লাহর হুকুমে কত
ক্ষুদ্রদল অতি বৃহৎ দলকে পরাভূত করেছে তারা বার বার বলতে লাগল, সামান্য দলই বিরাট দলের মোকাবেলায় জয়ী হয়েছে আল্লাহর হুকুমে।
আল্লাহ ধৈর্যশীলদের সঙ্গে রয়েছেন। (সূরা বাকারা ২:২৪৯)
১৩।
পরস্পর বিবাদ করা যাবে না। আল্লাহ তাআলা বলেন:
وَ اَطِیۡعُوا اللّٰهَ وَ رَسُوۡلَهٗ وَ لَا تَنَازَعُوۡا
فَتَفۡشَلُوۡا وَ تَذۡهَبَ رِیۡحُكُمۡ وَ اصۡبِرُوۡا ؕ اِنَّ اللّٰهَ مَعَ
الصّٰبِرِیۡنَ
আর তোমরা আল্লাহ
ও তাঁর রাসূলের আনুগত্য কর এবং পরস্পর ঝগড়া করো না, তাহলে তোমরা সাহসহারা
হয়ে যাবে এবং তোমাদের শক্তি নিঃশেষ হয়ে যাবে। আর তোমরা ধৈর্য ধর, নিশ্চয় আল্লাহ
ধৈর্যশীলদের সাথে আছেন। (সূরা আনফাল ৮:৪৬)
১৪।
বেসামরিক এলাকা ও অধিবাসীদের প্রতি আস্থাপূর্ণ ব্যবহার
একজন সৈনিককে দেশের
প্রতিরক্ষা অথবা জনসাধারণের কল্যাণে প্রায়শঃ বেসামরিক এলাকায় গমন করতে হয়। তখন খুব
গভীরভাবে লক্ষ্য করতে হবে যাতে সেনাবাহিনীর দ্বারা এলাকার লোকদের আবাদ, শস্যের কোন ক্ষয়ক্ষতি না হয়, জনগণের গৃহপালিত জন্তু-জানোয়ারের কোন অনিষ্ট না হয়। এক কথায় জন দুর্ভোগ হ্রাস করতে
যেন দুর্ভোগ বৃদ্ধি না পায় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। হাদীসে রয়েছে:
عَنِ ابْنِ
عُمَرَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا قَالَ: وُجِدَتِ امْرَأَةٌ مَقْتُولَةً فِي
بَعْضِ مَغَازِي رَسُولِ اللهِ ﷺ، فَنَهَى رَسُولُ اللهِ ﷺ عَنْ قَتْلِ النِّسَاءِ
وَالصِّبْيَانِ.
ইবনে উমর (রাঃ) থেকে
বর্ণিত, তিনি বলেন: রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর কোনো এক
যুদ্ধে একজন নারীকে নিহত অবস্থায় পাওয়া গেলে তিনি নারী ও শিশু হত্যা করতে নিষেধ করেন।
(সহিহ বুখারি, হাদিস নং ৩০৫২, জিহাদ অধ্যায়)
অন্য হাদিসে রয়েছে:
عَنْ أَنَسِ
بْنِ مَالِكٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قَالَ: كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ
عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِذَا بَعَثَ بَعْثًا أَمَرَهُمْ فَقَالَ: «إِذَا رَأَيْتُمْ مَسْجِدًا، أَوْ سَمِعْتُمْ
مُؤَذِّنًا، فَلَا تَقْتُلُوا أَحَدًا».
রাসূলুল্লাহ (সাঃ)
যখন কোন বাহিনীকে অভিযানে প্রেরণ করতেন তখন (বিদায়ের পূর্বে) তাদেরকে বলে দিতেন (ব্রিফ
দিতেন) যে, যখন তোমরা কোথাও মসজিদ দেখবে অথবা
মুয়াজ্জিনের আযান শুনতে পাবে তবে সেখানকার কাউকে হত্যা করবে না। (তিরমিযি শরীফ-হা: নং-১৬৩৫)
অন্য হাদিসে
এসেছে,
عَنْ عَبْدِ
اللَّهِ بْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا قَالَ: كَانَ رَسُولُ
اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِذَا بَعَثَ جَيْشًا أَوْصَاهُمْ
قَائِلًا: «لَا تَقْتُلُوا الرُّهْبَانَ الَّذِينَ يَعْتَكِفُونَ فِي
الصَّوَامِعِ»
হযরত আব্দুল্লাহ
ইবনে আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাঃ)-কোন সেনাবাহিনী যুদ্ধে পাঠানোর। সময় তাদেরকে
সতর্ক করে দিতেন, যেন তারা ঐ সমস্ত
রাহিব (সন্ন্যাসী) কে কখনও হত্যা না করে যারা তাদের কুঠুরীতে (আশ্রম, পেগোডা ইত্যাদিতে) উপাসনারত আছে। (মুসান্নাফে
ইবনে আবী শায়বা-৬ষ্ঠ খন্ড, ৪৮৮ পৃষ্ঠা)
১৫।
হযরত আবু বকর ছিদ্দিক (রাঃ) এর নির্দেশনাঃ
عَنْ عَبْدِ
الرَّحْمَنِ بْنِ عُمَرَ، أَنَّ أَبَا بَكْرٍ الصِّدِّيقَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ
كَانَ إِذَا بَعَثَ جَيْشًا أَوْصَاهُمْ بِهَذِهِ الْوَصِيَّةِ:«لَا
تَقْتُلُوا طِفْلًا، وَلَا امْرَأَةً، وَلَا شَيْخًا كَبِيرًا، وَلَا تَقْطَعُوا
شَجَرًا مُثْمِرًا، وَلَا تُعْقِرُوا بَهْمَةً، وَلَا تُحْرِقُوا نَخْلًا، وَلَا
تُغَرِّقُوهُ بِالْمَاءِ، وَلَا تَغُلُّوا، وَلَا تَجْبُنُوا»
হযরত আবু বকর (রাঃ)
একটি সেনাদলকে যুদ্ধে পাঠিয়ে দেয়ার পূর্বে তাদেরকে নিম্নের নির্দেশগুলি প্রদান করতেন:
ক। কোন শিশুকে কখনও হত্যা করবে না।
খ। কোন মহিলার উপর কখনও হাত তুলবে না।
গ। কোন দুর্বল বৃদ্ধকে প্রহার করবে না।
ঘ। কোন ফলবান বৃক্ষ কাটবে না।
ঙ। কোন বকরী,উট ইত্যাদিকে অযথা যবেহ করবে না।
চ। কোন বাগান পুড়িয়ে দেবে না।
ছ। কোন বাগানের পানি ছেড়ে দিয়ে সেটাকে ধ্বংস করবে না।
জ। ভীরুতা দেখাবে না।
ঝ। গনীমতের মাল খেয়ানত করবে না। (মুসান্নাফে
ইবনে আবী শায়বা-৬ষ্ঠ খন্ড, ৪৮৭ পৃষ্ঠা)
১৬।
স্বপ্রনোদিত হয়ে যুদ্ধে না জড়ানো
যুদ্ধই একমাত্র শান্তির
পথ নয়। তাছাড়া যুদ্ধে জান-মালের ক্ষয়-ক্ষতি অনিবার্য। এজন্য শত্রুর সাথে স্বপ্রনোদিত
হয়ে যুদ্ধে জড়ানো উচিত হবে না। ইসলামের এটিই শিক্ষা।
রাসূলুল্লাহ (সাঃ)
বলেছেন:
عَنْ أَبِي
هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ
عَلَيْهِ وَسَلَّمَ «لَا
تَتَمَنَّوْا لِقَاءَ الْعَدُوِّ، وَاسْأَلُوا اللَّهَ الْعَافِيَةَ، فَإِذَا
لَقِيتُمُوهُمْ فَاصْبِرُوا»
তোমরা শত্রুদের মোকাবেলা
কামনা কর না। যখন তোমরা তাদের মুখোমুখি হয়ে যাও তখন ঐ সময় ধৈর্য ধারণ কর (অর্থাৎ ধৈর্যের
সাথে তাদের মোকাবেলা কর)। (রিয়াদুস সালিহীন-১৩৪৯, বুখারী)
১৭।
কোন কারণে মোকাবেলা হয়ে গেলে মজবুত থাকা
আল্লাহ রাব্বুল আলামীন
বলেন:
يَا
أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا إِذَا لَقِيتُمْ فِئَةً فَاثْبُتُوا وَاذْكُرُوا
اللَّهَ كَثِيرًا لَّعَلَّكُمْ تُفْلِحُون
হে ঈমানদারগণ, তোমরা যখন কোন দলের সম্মুখীন হবে তখন সুদৃঢ় থাকবে এবং আল্লাহকে
অধিক স্মরণ করবে যাতে তোমরা সফলকাম হও। (সূরা আনফাল-৪৫)
یٰۤاَیُّهَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡۤا اِذَا لَقِیۡتُمُ الَّذِیۡنَ
كَفَرُوۡا زَحۡفًا فَلَا تُوَلُّوۡهُمُ الۡاَدۡبَارَ - وَ مَنۡ یُّوَلِّهِمۡ یَوۡمَئِذٍ
دُبُرَهٗۤ اِلَّا مُتَحَرِّفًا لِّقِتَالٍ اَوۡ مُتَحَیِّزًا اِلٰی فِئَۃٍ فَقَدۡ
بَآءَ بِغَضَبٍ مِّنَ اللّٰهِ وَ مَاۡوٰىهُ جَهَنَّمُ ؕ وَ بِئۡسَ الۡمَصِیۡرُ
হে ঈমানদারগণ, তোমরা যখন যোদ্ধা-বাহিনীরূপে কাফিরদের সম্মুখীন হও, তখন তাদেরকে
পৃষ্ঠপ্রদর্শন করবে না।
এমন দিনে
যুদ্ধে কৌশল অবলম্বন বা নিজ দলের সঙ্গে মিলিত হওয়ার উদ্দেশ্য ছাড়া কেউ তাদেরকে পৃষ্ঠপ্রদর্শন
করলে সে তো আল্লাহর গজবে পরিবেষ্টিত হয়ে পড়ল, জাহান্নামই তার ঠিকানা
আর তা কতই না নিকৃষ্ট প্রত্যাবর্তনস্থল। (সূরা আনফাল ৮:১৫-১৬)
১৮।
ধর্মীয় অনুশাসন
একজন সৈনিক যত মহৎ
কাজেই নিয়োজিত থাকুক না কেন, সে যে আল্লাহ তাআলার
দাস,
আল্লাহ তাআলা তাকে যে একমাত্র তাঁরই এ ইবাদতের জন্য সৃষ্টি করেছেন
সে কথা ভুলে গেলে চলবে না। তাছাড়া শুধু মাত্র বৈষয়িক শক্তি-সামর্থ্য দ্বারাই কেবল বিজয়
অর্জন করা যায় না, আল্লাহ তাআলার রহমতেরও
বিশেষ প্রয়োজন। তাই সময়ে সময়ে তার আদেশ-উপদেশ পালনের মাধ্যমে তার সুদৃষ্টি কামনা করা
চাই। বিশেষতঃ সালাতের ব্যপারে অধিক সচেতন থাকতে হবে। যুদ্ধের জন্য সালাতে মাফ নেই।
যুদ্ধের সময় কিভাবে সালাত আদায় করা সম্ভব মহানবী (সাঃ) বাস্তবে তা দেখিয়ে দিয়েছেন।
১৯।
সালাতুল খাওফ হাদীসে রয়েছে:
عَنْ صَالِحِ
بْنِ خَوَّاتٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ - وَكَانَ مِمَّنْ صَلَّى مَعَ النَّبِيِّ
صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ صَلَاةَ الْخَوْفِ فِي غَزْوَةِ ذَاتِ
الرِّقَاعِ - قَالَ: «فَصَفَّ
النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ طَائِفَةً مِنْهُمْ خَلْفَهُ،
وَطَائِفَةً مُقَابِلَ الْعَدُوِّ، فَصَلَّى بِالَّذِينَ مَعَهُ رَكْعَةً، ثُمَّ
ثَبَتَ قَائِمًا، فَأَتَمُّوا لِأَنْفُسِهِمْ، ثُمَّ انْصَرَفُوا فَصَفُّوا
مُقَابِلَ الْعَدُوِّ، وَجَاءَتِ الطَّائِفَةُ الْأُخْرَى، فَصَلَّى بِهِمُ
الرَّكْعَةَ الْأُخْرَى، ثُمَّ ثَبَتَ جَالِسًا، فَأَتَمُّوا لِأَنْفُسِهِمْ، ثُمَّ
سَلَّمَ بِهِمْ»
সালিহ ইবনে খাওয়াত
(রাঃ) থেকে বর্ণিত,
যিনি যাতুর রিকা অভিযানে রাসূলুল্লাহ
(সাঃ)-এর পিছনে সালাতুল খাওফ আদায়কারী সাহাবীদের অন্তর্ভুক্ত ছিলেন। তিনি বলেন: নবী
(সাঃ) তাদের একদলকে তাঁর পিছনে সারিবদ্ধভাবে দাঁড় করালেন এবং অন্যদলকে শত্রুর মুখোমুখি
রাখলেন। তিনি তাঁর সাথে থাকা দল নিয়ে এক রাকআত আদায় করে দাঁড়িয়ে রইলেন। তারা নিজেরা
বাকি এক রাকআত পূর্ণ করে শত্রুর দিকে চলে গেল। এরপর অন্যদল এসে তিনি তাদের নিয়ে বাকি
এক রাকআত আদায় করে বসে রইলেন। তারা নিজেরা বাকি রাকআত পূর্ণ করে নিল। শেষে তিনি তাদের
সকলকে নিয়ে সালাম ফিরালেন। (সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৩৮২৫, সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৮৪২)
২০।
দেশের সীমান্ত প্রহরা
দেশ প্রেমে উদ্বুদ্ধ
হয়ে যারা সীমান্ত পাহারা দেয় তাদের সম্পর্কে হাদিসে বলা হয়েছে:
عَنْ سَهْلِ
بْنِ سَعْدٍ السَّاعِدِيِّ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ
عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «رِبَاطُ يَوْمٍ فِي سَبِيلِ اللهِ خَيْرٌ
مِنَ الدُّنْيَا وَمَا عَلَيْهَا»
রাসূলুল্লাহ (সাঃ)
বলেন: একদিন আল্লাহর রাস্তায় সীমানা পাহারা দেয়া পৃথিবী ও পৃথিবীর উপরস্থ সব কিছু থেকে
উত্তম। (বুখারী-২৬৯০ ই.ফা, ২৬৭ ই.সে)
অপর এক হাদীসে এসেছে।
عَنْ
سَلْمَانَ الْفَارِسِيِّ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى
اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «رِبَاطُ يَوْمٍ وَلَيْلَةٍ خَيْرٌ مِنْ
صِيَامِ شَهْرٍ وَقِيَامِهِ، وَإِنْ مَاتَ جَرَى عَلَيْهِ عَمَلُهُ الَّذِي كَانَ
يَعْمَلُهُ، وَأُجْرِيَ عَلَيْهِ رِزْقُهُ، وَأَمِنَ الْفَتَّانَ»
সালমান (রাঃ) থেকে
বর্ণিত,
তিনি বলেন আমি রাসুল (সাঃ)-কে বলতে শুনেছি, একদিন ও একরাত রাষ্ট্রের সীমানা পাহারা দেয়া একমাস সাওম আদায়
করা ও রাতে ইবাদতের চেয়েও উত্তম। আর যদি এ অবস্থায় সে মারা যায় তবে এ আমলের সওয়াব জারী
এবং তার (শহীদ মূলত) অব্যহত এবং সে ব্যক্তি ফিৎনা থেকে নিরাপদ থাকবে। [সহীহ মুসলিম (ইমারত অধ্যায়, হাদিস নং ১৯১৩) সুনান আত-তিরমিজী (জিহাদের
ফযীলত অধ্যায়, হাদিস নং ১৬২১) মুসনাদ আহমাদ (হাদিস নং ২৩৭০৬)]
রাসূলুল্লাহ (সাঃ)
এর বাণী:
عَنْ أَبِي
هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ
قَالَ:«عَيْنَانِ
لَا تَمَسُّهُمَا النَّارُ: عَيْنٌ بَكَتْ مِنْ خَشْيَةِ اللهِ، وَعَيْنٌ بَاتَتْ
تَحْرُسُ فِي سَبِيلِ اللهِ»
দুইটি চোখকে জাহান্নামের আগুন স্পর্শ করবে না। যে চোখ আল্লাহর ভয়ে
কেঁদেছে এবং যে চোখ আল্লাহর পথে রাত জেগে পাহারা দিয়েছে। (তিরমিজি-১৬৩৯ জিহাদ অধ্যায়)
২১।
সংখ্যালঘু নাগরিকদেরকে হত্যা না করা হাদিস শরীফে রয়েছে:
عَنْ عَبْدِ
اللهِ بْنِ عَمْرٍو رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ
عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ:«مَنْ قَتَلَ مُعَاهَدًا لَمْ يَرِحْ
رَائِحَةَ الْجَنَّةِ، وَإِنَّ رِيحَهَا لَتُوجَدُ مِنْ مَسِيرَةِ أَرْبَعِينَ
عَامًا»
হযরত আব্দুল্লাহ
ইবন আমর (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন: মুসলিম রাষ্ট্রে শান্তিপূর্ণভাবে
(চুক্তির অধিনে) বসবাসকারী অমুসলিমকে যে হত্যা করবে, সে জান্নাতের ঘ্রাণও পাবে না, যদিও জান্নাতের ঘ্রাণ
চল্লিশ বছরের দূরত্ব থেকে পাওয়া যায়। (বুখারী-হাঃ নং-৩২০২)
বাংলাদেশ বিভিন্ন
ধর্মের লোকদের সহ-অবস্থানের দেশ। অন্যান্য ধর্মের লোকদের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হয় এমন
যে কোন কাজ থেকে বিরত রাখা সেনাবাহিনীর পবিত্র দায়িত্ব।
২২।
পরস্পর বিচ্ছিন্ন না হয়ে মিলে মিশে থাকা
সহযোদ্ধাগণ সকলেই
পরস্পর সংঘবদ্ধ ও সুসংঘঠিত থাকলে অন্তরে শক্তি ও মনোবলের সৃষ্টি হয়। তাছাড়া শত্রুরাও
অনৈক্যের সুযোগ নিতে ভুল করবে না। তাইতো প্রবাদে আছে একতাই শক্তি। এই জন্য সৈনিকদেরকে
সর্বদা পরস্পর বিচ্ছিন্ন না থেকে একতাবদ্ধ হয়ে, একে অন্যের সাথে মিল-মহব্বতে থাকা আবশ্যক। হাদীসে রয়েছে:
كَانَ النَّاسُ إِذَا نَزَلَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم
مَنْزِلاً - تَفَرَّقُوا فِي الشِّعَابِ وَالأَوْدِيَةِ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ
صلى الله عليه وسلم " إِنَّ تَفَرُّقَكُمْ فِي هَذِهِ الشِّعَابِ
وَالأَوْدِيَةِ إِنَّمَا ذَلِكُمْ مِنَ الشَّيْطَانِ " . فَلَمْ يَنْزِلْ
بَعْدَ ذَلِكَ مَنْزِلاً إِلاَّ انْضَمَّ بَعْضُهُمْ إِلَى بَعْضٍ
এক সফরে লোকেরা কোন
এক স্থানে যাত্রা বিরতি করলেন এবং পাহাড়-উপত্যকার পাদদেশে ছড়িয়ে পড়লেন। সে কারণে রাসূলুল্লাহ্
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছিলেন, তোমাদের এ সকল পাহাড়ী
উপত্যকায় বা জঙ্গলে বিভক্ত হয়ে পড়া শয়তানের কাজ। এরপর হতে সর্বদা যখনই কোন স্থানে অবস্থান
করতেন, তখনই সৈন্যদলে সকলে পরস্পরে একত্রে অবস্থান করতেন। (রিয়াদুস সালিহীন-৯৬৩, আবু দাউদ -২৬২০)
২৩।
ঐক্যবদ্ধ বা সংঘবদ্ধ জীবন
সৈনিকদের অধিকাংশ
কাজই একতাবদ্ধভাবে তথা সংঘবদ্ধভাবে করতে হয়। যুদ্ধ, যুদ্ধের প্রস্তুতি, যুদ্ধের প্রশিক্ষণ, যুদ্ধের মহড়া ইত্যাদি কোন কাজই একা একা সফলভাবে সম্পাদন করা
সম্ভব নয়। এই একতা বা সংঘবদ্ধতা ইসলামের অন্যতম শিক্ষা।
আল্লাহ তাআলা বলেন:
وَاعْتَصِمُوا
بِحَبْلِ اللَّهِ جَمِيعًا وَلَا تَفَرَّقُوا
আর তোমরা সকলে আল্লাহর
রজ্জুকে (কুরআনকে) সুদৃঢ়ভাবে ধর; আর পরস্পর বিচ্ছিন্ন
হয়ো না। (সূরা আলে ইমরান ৩:১০৩)
وَأَقِيمُوا
الصَّلَاةَ وَآتُوا الزَّكَاةَ وَارْكَعُوا مَعَ الرَّاكِعِينَ
আর তোমরা সালাত কায়েম
ও যাকাত দাও এবং রুকু কারীদের সাথে রুকু কর। (সূরা বাকারা, ২:৪৩)
২৪।
ভ্রাতৃত্ববোধ
একজন আদর্শবান সৈনিকের
অন্যতম গুণ হল সহযোদ্ধাদের প্রতি তার ভ্রাতৃত্ববোধ প্রকাশ করা। সামরিক জীবন হলো এক
চ্যালেঞ্জের জীবন। নিজের পরম আত্মীয়-স্বজন ছেড়ে দেশের বিভিন্ন প্রান্তের বিভিন্ন প্রকৃতির
নওজোয়ানদের নিয়ে সেনাবাহিনী গঠিত হয়েছে। সকলকে একসাথে সেনা ব্যারাকে জীবন যাপন করতে
হয়। প্রত্যেকের উঠা-বসা, খাওয়া-দাওয়া, প্রশিক্ষণ, মহড়া, যুদ্ধ সব কিছুই একত্রে করতে হয়। তাই পরস্পরের মধ্যে গভীর ভ্রাতৃত্ববোধ
একান্ত অপরিহার্য। ইসলামের বিধান পালনের মাধ্যমে এ গুণটি সহজেই অর্জিত হয়। ইসলামে এই
শিক্ষা রয়েছে। আল্লাহ রাব্বুল আলামীন বলেন:
إِنَّمَا الْمُؤْمِنُونَ إِخْوَةٌ فَأَصْلِحُوا بين أخويكُمْ
وَاتَّقُوا اللَّهَ لَعَلَّكُمْ تُرْحَمُونَ
মুমিনরা তো পরস্পর
ভাই-ভাই। অতএব, তোমরা তোমাদের দুই ভাইয়ের মধ্যে মীমাংসা
করবে এবং আল্লাহকে ভয় করবে-যাতে তোমরা অনুগ্রহপ্রাপ্ত হও। (সূরা হুজুরাত, আয়াত-১০)
মুসলিম সেনাবাহিনীর
মধ্যে তীব্র ভ্রাতৃত্ববোধ দিয়েই ইসলামের গৌরবময় যুগের সুচনা হয়েছিল। দেশের পর দেশ, জাতির পর জাতিকে পদানত করেছে। মুসলিম বাহিনীর এ ভ্রাতৃত্ববোধের
কারণে যুদ্ধের ময়দানে অসংখ্য মুসলিম আহত অবস্থায় তীব্র পিপাসার মধ্যেও সামান্য পানি
নিজে পান না করে অপর ভাইকে বাড়িয়ে দিয়েছেন। এভাবে একে একে নিঃস্বার্থভাবে অপরের কষ্টের
গুরুত্ব দিয়ে সকলে শাহাদাতের পিয়ালার স্বাদ গ্রহণ করেছেন। এ হলো মুসলিম সেনাবাহিনীর
ভ্রাতৃত্ববোধের ইতিহাস।
উপসংহার
মহান আল্লাহ পাক
আমাদের সামরিক বাহিনীর সকল সদস্যকে তার মনোনীত পবিত্র ধর্ম এবং সুন্নাহর নির্দেশিত
পথে চলে আদর্শ সৈনিক ও সৎ চরিত্রবান হয়ে সৈনিকের মর্যাদা ও পুরস্কার পাওয়ার তৌফিক দান
করুন। আমীন।
পিডিএফ ডাউনলোড
