পবিত্র মাহে রমজানের ১০ম তারাবীতে তেলাওয়াত করা হবে সূরা
ইউসুফ এর ৫৩ নং আয়াত থেকে শেষ পর্যন্ত, সূরা রাদ, সূরা ইব্রাহিমের ১ম আয়াত থেকে
শেষ পর্যন্ত। অর্থাৎ ১৩তম পারার প্রথম পৃষ্ঠা শেষ পর্যন্ত। তেলাওয়াতের অংশ থেকে
উল্লেখযোগ্য কয়েকটি আয়াত
১।
মানুষের মন মন্দ কর্মপ্রবণ
وَمَاۤ اُبَرِّیٴُ نَفۡسِیۡ ۚ اِنَّ النَّفۡسَ
لَاَمَّارَۃٌۢ بِالسُّوۡٓءِ اِلَّا مَا رَحِمَ رَبِّیۡ ؕ اِنَّ رَبِّیۡ غَفُوۡرٌ
رَّحِیۡمٌ
আমি নিজেকে
নির্দোষ বলি না। নিশ্চয় মানুষের মন মন্দ কর্মপ্রবণ কিন্তু সে নয়-আমার পালনকর্তা
যার প্রতি অনুগ্রহ করেন। নিশ্চয় আমার পালনকর্তা ক্ষমাশীল, দয়ালু। (সূরা ইউসুফ ১২:৫৩)
২।
কুরআনিক মোটিভেশন
قَالَ اِنَّمَاۤ اَشۡکُوۡا بَثِّیۡ وَحُزۡنِیۡۤ اِلَی
اللّٰہِ وَاَعۡلَمُ مِنَ اللّٰہِ مَا لَا تَعۡلَمُوۡنَ
তিনি বললেনঃ আমি
তো আমার দুঃখ ও অস্থিরতা আল্লাহর সমীপেই নিবেদন করছি এবং আল্লাহর পক্ষ থেকে আমি
যা জানি,
তা তোমরা জান না। (সূরা ইউসুফ ১২:৮৬)
৩।
বিশ্বাসীরা আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হয় না
یٰبَنِیَّ اذۡہَبُوۡا فَتَحَسَّسُوۡا مِنۡ یُّوۡسُفَ
وَاَخِیۡہِ وَلَا تَایۡـَٔسُوۡا مِنۡ رَّوۡحِ اللّٰہِ ؕ اِنَّہٗ لَا یَایۡـَٔسُ
مِنۡ رَّوۡحِ اللّٰہِ اِلَّا الۡقَوۡمُ الۡکٰفِرُوۡنَ
বৎসগণ! যাও, ইউসুফ ও তার ভাইকে তালাশ কর এবং আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ
হয়ো না। নিশ্চয় আল্লাহর রহমত থেকে কাফের সম্প্রদায়, ব্যতীত অন্য কেউ নিরাশ হয় না। (সূরা ইউসুফ ১২:৮৭)
৪।
কিছু কিছু বিশ্বাসী শিরক করে
وَمَا یُؤۡمِنُ اَکۡثَرُہُمۡ بِاللّٰہِ اِلَّا وَہُمۡ
مُّشۡرِکُوۡنَ
অনেক মানুষ
আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করে, কিন্তু সাথে সাথে শিরকও করে। (সূরা ইউসুফ ১২:১০৬)
৫। গোপন, প্রকাশ্য সকল বিষয়ে আল্লাহ অবগত
عٰلِمُ الۡغَیۡبِ وَالشَّہَادَۃِ الۡکَبِیۡرُ الۡمُتَعَالِ
তিনি সকল গোপন
ও প্রকাশ্য বিষয় অবগত, মহোত্তম, সর্বোচ্চ মর্যাদাবান। (সূরা আর রা'দ ১৩:৯)
৬।
বিদ্যুৎ এবং মেঘমালা তৈরির উদ্দেশ্য
ہُوَ الَّذِیۡ یُرِیۡکُمُ الۡبَرۡقَ خَوۡفًا
وَّطَمَعًا وَّیُنۡشِیٴُ السَّحَابَ الثِّقَالَ ۚ
তিনিই
তোমাদেরকে বিদ্যুৎ দেখান ভয়ের জন্যে এবং আশার জন্যে এবং উক্ষিত করেন ঘন মেঘমালা।(সূরা
আর রা'দ ১৩:১২)
৭।
পরকালে তাদের জন্য গৃহ রয়েছে
وَالَّذِیۡنَ صَبَرُوا ابۡتِغَآءَ وَجۡہِ رَبِّہِمۡ
وَاَقَامُوا الصَّلٰوۃَ وَاَنۡفَقُوۡا مِمَّا رَزَقۡنٰہُمۡ سِرًّا وَّعَلَانِیَۃً وَّیَدۡرَءُوۡنَ
بِالۡحَسَنَۃِ السَّیِّئَۃَ اُولٰٓئِکَ
لَہُمۡ عُقۡبَی الدَّارِ ۙ
এবং যারা স্বীয়
পালনকর্তার সন্তুষ্টির জন্যে সবর করে, নামায প্রতিষ্টা করে আর আমি তাদেরকে যা দিয়েছি, তা থেকে গোপনে ও প্রকাশ্য ব্যয় করে এবং যারা মন্দের বিপরীতে ভাল করে, তাদের জন্যে রয়েছে পরকালের গৃহ। (সূরা আর রা'দ ১৩:২২)
৮।
সবরকারীদের জন্য সালাম
سَلٰمٌ عَلَیۡکُمۡ بِمَا صَبَرۡتُمۡ فَنِعۡمَ عُقۡبَی
الدَّارِ ؕ
বলবেঃ তোমাদের
সবরের কারণে তোমাদের উপর শান্তি বর্ষিত হোক। আর তোমাদের এ পরিণাম-গৃহ কতই না
চমৎকার। (সূরা আর রা'দ ১৩:২৪)
৯। আখিরাতের
তুলনায় দুনিয়ার জীবন অতি নগণ্য
اَللّٰہُ یَبۡسُطُ الرِّزۡقَ لِمَنۡ یَّشَآءُ
وَیَقۡدِرُ ؕ وَفَرِحُوۡا بِالۡحَیٰوۃِ الدُّنۡیَا ؕ وَمَا الۡحَیٰوۃُ
الدُّنۡیَا فِی الۡاٰخِرَۃِ اِلَّا مَتَاعٌ
আল্লাহ যার
জন্যে ইচ্ছা রুযী প্রশস্ত করেন এবং সংকুচিত করেন। তারা পার্থিব জীবনের প্রতি মুগ্ধ। পার্থিবজীবন
পরকালের সামনে অতি সামান্য সম্পদ বৈ নয়। (সূরা আর রা'দ ১৩:২৬)
১০।
আল্লাহর জিকির এ অন্তর প্রশান্তি পায়
اَلَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا وَتَطۡمَئِنُّ قُلُوۡبُہُمۡ
بِذِکۡرِ اللّٰہِ ؕ اَلَا بِذِکۡرِ اللّٰہِ تَطۡمَئِنُّ الۡقُلُوۡبُ ؕ
যারা বিশ্বাস
স্থাপন করে এবং তাদের অন্তর আল্লাহর যিকির দ্বারা শান্তি লাভ করে; জেনে রাখ, আল্লাহর যিকির
দ্বারাই অন্তর সমূহ শান্তি পায়। (সূরা আর রা'দ ১৩:২৮)
১১।
অবিশ্বাসীদের অবকাশ দেয়া হয়
وَلَقَدِ اسۡتُہۡزِیٴَ بِرُسُلٍ مِّنۡ قَبۡلِکَ
فَاَمۡلَیۡتُ لِلَّذِیۡنَ کَفَرُوۡا ثُمَّ اَخَذۡتُہُمۡ ۟ فَکَیۡفَ کَانَ عِقَابِ
আপনার পূর্বে কত
রাসূলের সাথে ঠাট্টা করা হয়েছে। অতঃপর আমি কাফেরদেরকে কিছু অবকাশ দিয়েছি। , এর পর তাদেরকে পাকড়াও করেছি। অতএব কেমন ছিল আমার শাস্তি। (সূরা আর রা'দ ১৩:৩২)
১২।
পাপীদের শাস্তি দুনিয়াতেই শুরু হয়
لَہُمۡ عَذَابٌ فِی الۡحَیٰوۃِ الدُّنۡیَا وَلَعَذَابُ
الۡاٰخِرَۃِ اَشَقُّ ۚ وَمَا لَہُمۡ مِّنَ اللّٰہِ مِنۡ وَّاقٍ
দুনিয়ার জীবনেই
এদের জন্য রয়েছে আযাব এবং অতি অবশ্য আখেরাতের জীবন কঠোরতম। আল্লাহর কবল থেকে
তাদের কোন রক্ষাকারী নেই। (সূরা আর রা'দ ১৩:৩৪)
১৩।
মুত্তাকীদের জন্য নির্ধারিত জান্নাতের উদাহরণ
مَثَلُ الۡجَنَّۃِ الَّتِیۡ وُعِدَ الۡمُتَّقُوۡنَ ؕ
تَجۡرِیۡ مِنۡ تَحۡتِہَا الۡاَنۡہٰرُ ؕ اُکُلُہَا دَآئِمٌ وَّظِلُّہَا ؕ تِلۡکَ
عُقۡبَی الَّذِیۡنَ اتَّقَوۡا ٭ۖ وَّعُقۡبَی
الۡکٰفِرِیۡنَ النَّارُ
পরহেযগারদের
জন্যে প্রতিশ্রুত জান্নাতের অবস্থা এই যে, তার নিম্নে নির্ঝরিণীসমূহ প্রবাহিত হয়। তার ফলসমূহ চিরস্থায়ী এবং ছায়াও। এটা
তাদের প্রতিদান, যারা সাবধান হয়েছে এবং কাফেরদের
প্রতিফল অগ্নি। (সূরা আর রা'দ ১৩:৩৫)
১৪।
নভোমন্ডল ও ভূমন্ডলের মালিক
اللّٰہِ الَّذِیۡ لَہٗ مَا فِی السَّمٰوٰتِ وَمَا فِی
الۡاَرۡضِ ؕ وَوَیۡلٌ لِّلۡکٰفِرِیۡنَ مِنۡ عَذَابٍ شَدِیۡدِۣ ۙ
তিনি আল্লাহ; যিনি নভোমন্ডল ও ভূ-মন্ডলের সবকিছুর মালিক। কাফেরদের জন্যে
বিপদ রয়েছে, কঠোর আযাব; (সূরা ইব্রাহিম
১৪:২)
১৫।
নবী-রাসূলরা স্বজাতির ভাষাতেই আদিষ্ট হয়েছেন
وَمَاۤ اَرۡسَلۡنَا مِنۡ رَّسُوۡلٍ اِلَّا بِلِسَانِ
قَوۡمِہٖ لِیُبَیِّنَ لَہُمۡ ؕ فَیُضِلُّ اللّٰہُ مَنۡ یَّشَآءُ وَیَہۡدِیۡ مَنۡ
یَّشَآءُ ؕ وَہُوَ الۡعَزِیۡزُ الۡحَکِیۡمُ
আমি সব
পয়গম্বরকেই তাদের স্বজাতির ভাষাভাষী করেই প্রেরণ করেছি, যাতে তাদেরকে পরিষ্কার বোঝাতে পারে। অতঃপর আল্লাহ যাকে
ইচ্ছা,
পথঃভ্রষ্ট করেন এবং যাকে ইচ্ছা সৎপথ প্রদর্শন করেন। তিনি
পরাক্রান্ত, প্রজ্ঞাময়। (সূরা ইব্রাহিম
১৪:৪)
১৬।
নেয়ামতের শুকরিয়া আদায় করলে নেয়ামত বাড়িয়ে দেয়া হয়
وَاِذۡ تَاَذَّنَ رَبُّکُمۡ لَئِنۡ شَکَرۡتُمۡ
لَاَزِیۡدَنَّکُمۡ وَلَئِنۡ کَفَرۡتُمۡ اِنَّ عَذَابِیۡ لَشَدِیۡدٌ
যখন তোমাদের
পালনকর্তা ঘোষণা করলেন যে, যদি কৃতজ্ঞতা
স্বীকার কর, তবে তোমাদেরকে আরও দেব এবং যদি
অকৃতজ্ঞ হও তবে নিশ্চয়ই আমার শাস্তি হবে কঠোর। (সূরা ইব্রাহিম ১৪:৭)
১৭।
জাহান্নামীদের অবস্থা
یَّتَجَرَّعُہٗ وَلَا یَکَادُ یُسِیۡغُہٗ وَیَاۡتِیۡہِ
الۡمَوۡتُ مِنۡ کُلِّ مَکَانٍ وَّمَا ہُوَ بِمَیِّتٍ ؕ وَمِنۡ وَّرَآئِہٖ عَذَابٌ
غَلِیۡظٌ
ঢোক গিলে তা
পান করবে। এবং গলার ভিতরে প্রবেশ করতে পারবে না। প্রতি দিক থেকে তার কাছে মৃত্যু
আগমন করবে এবং সে মরবে না। তার পশ্চাতেও রয়েছে কঠোর আযাব। (সূরা ইব্রাহিম
১৪:১৭)
১৮।
বিশ্বাসিদের সম্ভাষণ
وَاُدۡخِلَ الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا وَعَمِلُوا
الصّٰلِحٰتِ جَنّٰتٍ تَجۡرِیۡ مِنۡ تَحۡتِہَا الۡاَنۡہٰرُ خٰلِدِیۡنَ فِیۡہَا
بِاِذۡنِ رَبِّہِمۡ ؕ تَحِیَّتُہُمۡ فِیۡہَا سَلٰمٌ
এবং যারা
বিশ্বাস স্থাপণ করে এবং সৎকর্ম সম্পাদন করে তাদেরকে এমন উদ্যানে প্রবেশ করানো হবে, যার পাদদেশ দিয়ে নির্ঝরিনী সমূহ প্রবাহিত হবে তারা তাতে
পালনকর্তার নির্দেশে অনন্তকাল থাকবে। যেখানে তাদের সম্ভাষণ হবে সালাম। (সূরা ইব্রাহিম
১৪:২৩)
১৯।
আল্লাহর নিয়ামত গুনে শেষ করা যাবে না
وَاٰتٰىکُمۡ مِّنۡ کُلِّ مَا سَاَلۡتُمُوۡہُ ؕ وَاِنۡ
تَعُدُّوۡا نِعۡمَتَ اللّٰہِ لَا تُحۡصُوۡہَا ؕ اِنَّ الۡاِنۡسَانَ لَظَلُوۡمٌ
کَفَّارٌ
যে সকল বস্তু
তোমরা চেয়েছ, তার প্রত্যেকটি থেকেই তিনি
তোমাদেরকে দিয়েছেন। যদি আল্লাহর নেয়ামত গণনা কর, তবে গুণে শেষ করতে পারবে না। নিশ্চয় মানুষ অত্যন্ত অন্যায়কারী, অকৃতজ্ঞ। (সূরা ইব্রাহিম ১৪:৩৪)
২০।
নেককার সন্তানের জন্য কুরআনীক দোয়া
رَبِّ اجۡعَلۡنِیۡ مُقِیۡمَ الصَّلٰوۃِ وَمِنۡ
ذُرِّیَّتِیۡ ٭ۖ رَبَّنَا وَتَقَبَّلۡ دُعَآءِ
হে আমার
পালনকর্তা, আমাকে নামায কায়েমকারী করুন এবং
আমার সন্তানদের মধ্যে থেকেও। হে আমাদের পালনকর্তা, এবং কবুল করুন আমাদের দোয়া। (সূরা ইব্রাহিম ১৪:৪০)
২১।
পিতা মাতার জন্য কুরআনিক দোয়া
رَبَّنَا اغۡفِرۡ لِیۡ وَلِوَالِدَیَّ
وَلِلۡمُؤۡمِنِیۡنَ یَوۡمَ یَقُوۡمُ الۡحِسَابُ
হে আমাদের পালনকর্তা, আমাকে, আমার
পিতা-মাতাকে এবং সব মুমিনকে ক্ষমা করুন, যেদিন হিসাব কায়েম হবে। (সূরা ইব্রাহিম ১৪:৪১)
পিডিএফ ডাউনলোড লিংক
পরবর্তী সকল আপডেট পেতে এখানে ক্লিক করে আমাদের Facebook পেজে ফলো করুন।
WhatsApp গ্রুপ
লিংক